জুমাদাল আখিরাহ ১৪২৮ || জুলাই ২০০৭

হা. বুরহানুদ্দীন - তাকমীল, রেলওয়ে কলোনী, সিরাজগঞ্জ

প্রশ্ন

বাদ তাসলীম উস্তাদে মুহতারাম মাওলানা আবদুল মালিক ছাহেব রাহ.-এর নিকট আমার জানার বিষয় এই যে, ইমাম মুসলিম রাহ. সহীহ মুসলিম-এর মুকাদ্দিমায়-

فنقسمها على ثلاثة أقسام وثلاث طبقات. صـ

বলে কী বুঝিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে আলিমদের মতামত জানতে ইচ্ছুক। যেমন ইমাম মুসলিম ثلاثة أقسام উক্তি দ্বারা হাদীসের কোন ধরনের শ্রেণী বিভাগ উদ্দেশ্য করেছেন। তিনি তার কিতাবে তিন শ্রেণীর হাদীস তার ওয়াদা অনুযায়ী উল্লেখ করেছেন কি না? হুজুরের নিকট আমার আকুল আবেদন, উপরের প্রশ্নগুলির সঠিক সমাধান দিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

এ প্রসঙ্গে কাযী ইয়াজ রাহ.-এর তাহকীক সঠিক। তার আলোচনা ইকমালুল মুলিম-এ রয়েছে এবং শরহুন নববীতেও উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এটুকু তাসামুহ রয়েছে যে, তিনি ইমাম মুসলিম রাহ.-এর তবাকায়ে ছালিছা কে রাবিয়া আখ্যা দিয়েছেন এবং মুসলিম রাহ.-এর তবাকায়ে ছানিয়া তবাকায়ে ছালিছা-এর মধ্যবর্তী রাবী যাদেরকে ইমাম মুসলিম স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেননি, তাদেরকে তবাকায়ে ছালিছা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। মুসলিম রাহ.-এর তবাকায়ে উলার রাবীদের হাদীস যদি শুযুয ইল্লত থেকে মুক্ত থাকে তবে তা মুতাআখখিরীনের পরিভাষায় সহীহ লি যাতিহী বা সহীহ লিগায়রিহী-এর পর্যায়ের হয়ে থাকে। তবাকায়ে ছানিয়া-এর রাবীদের কিছু রেওয়ায়াত হাসান লি যাতিহী এবং কিছু রেওয়ায়াত হাসান লি গায়রিহী হয়ে থাকে। কাযী ইয়াজ রাহ. মুসলিম রাহ.-এর তবাকায়ে ছালিছার পূর্বে যে তবাকা কে উল্লেখ করেছেন এবং একে ছালিছা নামে ব্যক্ত করেছেন তাদের রেওয়ায়াত শুধু মুতাআবাত ও শাওয়াহিদ হিসেবে চলতে পারে এবং কিছু শর্ত-শরায়েতের সঙ্গে এদের কিছু কিছু রেওয়ায়াত হাসান লি গায়রিহী-এর পর্যায়েও পৌঁছতে পারে।

এ টুকু হল এ প্রসঙ্গে সংক্ষিপ্ত কথা। তবে কার্যক্ষেত্রে নেমে আইম্মায়ে ফনের বাস্তব সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে চিন্তা-ভাবনা না করা পর্যন্ত পূর্ণ তৃপ্তি হাসিল হবে না। নীতি হিসেবে মোটামুটি কথা এ টুকুই, যা আমি উল্লেখ করেছি।

ইমাম মুসলিম রাহ. যাদেরকে তবাকায়ে ছালিছা বলে চিহ্নি করেছেন তাদের কারও কোনো হাদীস তার কিতাবে নেই এবং তা থাকাও উচিত নয়। কেননা, তিনি নিজেই বলেছেন যে, এই তবাকার রাবীদের দিকে তিনি ভ্রূপেক্ষপই করবেন না। তবাকায়ে উলার (যাদের মধ্যে স্তর-বিভাগ রয়েছে) রাবীদের হাদীস তিনি স্বতন্ত্র দলীলরূপে উল্লেখ করেছেন এবং তবাকায়ে ছানিয়ার রাবীদের যে সকল হাদীসের শাওয়াহিদ বিদ্যমান রয়েছে সেখান থেকে নির্বাচন করে হাদীস এনেছেন। তবাকায়ে ছানিয়ার কোনো রাবীর হাদীসে ফরদ যা শায বা মুনকার শ্রেণীভুক্ত, তা তিনি তার কিতাবে আনেননি। আর কাযী ইয়াজের তবাকায়ে ছালিছা প্রকৃতপক্ষে ইমাম মুসলিমের তবাকায়ে ছানিয়ারই শেষ স্তর। সংক্ষিপ্ত আকারে এ পর্যন্ত আলোচনা করলাম। আরও বিস্তারিত জানতে হলে ছালাছু রাসাইল ফী মুসতালাহিল হাদীস কিংবা অন্তত শুরুহুল আইম্মাতিল খামসা লিলহাযিমী এবং তাঁর হাশিয়াগুলো মুতালাআ করবেন।

এই সংখ্যার অন্যান্য শিক্ষা পরামর্শসমূহ পড়ুন