জুমাদাল উলা ১৪২৮ || জুন ২০০৭

মুহাম্মদ ইলইয়াস - জামিয়াতুল উলূমিল ইসলামিয়া ঢাকা <br> তেঁজগাও-২২৩, শিল্প এলাকা

প্রশ্ন

ওরিয়েনটালিস্ট  (Orientalist) বলতে কাদেরকে বুঝায়, কখন কোথায় কী উদ্দেশ্যে এদের উৎপত্তি হয়?

এরা কী কী কাজ করেছে এবং এদের কাজ দ্বারা জগতে কী ধরনের প্রভাব পড়ছে? এদের সম্পর্কে কীভাবে জানতে পারি এবং এর প্রতিকার হিসাবে কী করতে পারি? বিস্তারিত জানতে চাই।

উত্তর

এ বিষয়ে আলোচনা করা শিক্ষা পরামর্শ বিভাগের সংক্ষিপ্ত পরিসরে সম্ভব নয়। এর জন্য একটি দীর্ঘ প্রবন্ধ; বরং একটি গ্রন্থই প্রয়োজন। আলকাউসারের যিলকদ ২৬ হি. মোতাবেক ডিসেম্বর ০৫ ও যিলহজ্ব ২৬ হি. মোতাবেক জানুয়ারী ০৬  সংখ্যায় মাওলানা আ.ফ.ম. খালিদ হোসাইন সাহেবের একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল, তা আপনি পড়তে পারেন। তবে বিস্তারিত জানার জন্য এ বিষয়ের বই-পত্রগুলো অধ্যয়ণ করতে হবে। কয়েকটি বইয়ের নাম নিচে দেওয়া হল।

১. আলইসলাম ওয়াল মুসতাশরিকুন, ড. মুস্তফা সিবায়ী (আরবী)

২. কিংবা তার উদুর্ অনুবাদ ইসলাম আওর মুসতাশরিকীন সালমান শামসী নদভী

৩. ইসলামিয়্যাত আওর মাগরীবী মুসতাশরিকীন ও মুসলমান মুসান্নিফীন মাওলানা আবুল হাসান আলী নদভী

৪. ইসলাম আওর মুসতাশরিকীন, সংকলনে সাইয়েদ মিসবাহ উদ্দীন আব্দুর রহমান (দারুল মুসান্নিফীন, শিবলী একাডেমী, আজমগড়), ইউ. পি. ইন্ডিয়া

এ কিতাবটির মোট ছয়টি খণ্ড রয়েছে। আরও কিছু খণ্ড থাকতে পারে, তবে তা আমার জানা নেই।

এ প্রসঙ্গে সারকথা এই যে, পাশ্চাত্যের যে লোকেরা প্রাচ্যের, অর্থাৎ মাশরিকের ইলমী মিরাস ও তাহযীবকে তাদের অধ্যয়ণ ও চিন্তা-ভাবনার বিষয়বস্তু হিসেবে গ্রহণ করেছে তাদেরকে মুসতাশরিক বলে। আর তাদের পেশার পারিভাষিক নাম হল ইসতিশরাক। এদের গবেষণা কখনো শুধু গবেষণার জন্যই হয়ে থাকে, তবে তাদের অধিকাংশ লোকেরই উদ্দেশ্য থাকে খৃষ্টধর্ম বরং বলুন, সেন্টপলের ধমীর্য় মতবাদের সমর্থন দেওয়া এবং ইসলামের ক্ষতিসাধন করা। মাওলানা আলী মিয়া রহ.-এর কথা অনুযায়ী ইসতিশরাক-এর উদ্দেশ্য হল, মুসলমানদেরকে তাদের বর্তমান সম্পর্কে বিমুখ, অতীত সম্পর্কে বীতশ্রদ্ধ আর ভবিষ্যত সম্পর্কে হতাশ বানানো। বলা বাহুল্য, যারা মুসতাশরিক স¤প্রদায় বা তাদের ভাব শীষ্যদের রচিত বইপত্রের  মাধ্যমে ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করেছেন তাদের মধ্যে উপরের তিনটি ব্যধিই পূর্ণমাত্রায় লক্ষ করা যায়।

এই ফিতনাকে মোকাবেলা করার জন্য সবচেয়ে বেশি কাজ হয়েছে আরবী ভাষায়, কিন্তু তা-ও প্রয়োজন অনুপাতে যথেষ্ট নয়। উদূর্ ভাষাতেও কিছু কাজ হয়েছে। আর বাংলা ভাষার ভাণ্ডার এ বিষয়ে প্রায় শূন্য আল্লাহ তায়ালা যদি কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এ কাজ করিয়ে নেন, তবে তা তাঁর মেহেরবানী। মারকাযুদ দাওয়ার দারুত তাসনীফেরও এ বিষয়ে কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে। দুআ করুন আল্লাহ যেন তাওফীক দান করেন।

এই সংখ্যার অন্যান্য শিক্ষা পরামর্শসমূহ পড়ুন