জুমাদাল উলা ১৪২৮ || জুন ২০০৭

মুহা. সুলতান উদ্দিন - দারুল হুদা কাসেমুল উলুয মাদরাসা <br> সাচাইল, তাড়াইল, কিশোরগঞ্জ

প্রশ্ন

বাদ সালাম, আমি শরহে বেকায়া জামাতের একজন ছাত্র। মহোদয়ের নিকট আমার জানার বিষয় হল,

(ক) দৈনন্দিন সবক পাঠ ও সামনের সবকের মুতালাআ কী নিয়মে করলে কিতাব বেশি হল হবে এবং অল্প সময়ে কীভাবে সবগুলো কিতাবের সবক পাঠ ও মুতালাআ করা যাবে। কেননা সময়ের স্বল্পতার কারণে কী ভাবে অনেক সময় সবগুলো কিতাবের সবক পাঠ ও মুতালাআ করা সম্ভব হয় না।

(খ) আরবী প্রশ্নপত্রের উত্তর কি করে আরবীতে দেওয়া যাবে। এর জন্য আমার করণীয় কী?

মহোদয়ের নিকট আমার আকুল আবেদন, উপরোল্লিখিত বিষয়গুলো সহজভাবে জানিয়ে আমাকে উপকৃত করবেন।

উত্তর

(ক) আমাদের এই অভ্যাস রয়েছে যে, আমরা সর্বদা সময়-স্বল্পতার অভিযোগ করে থাকি। অথচ এখন যে নিয়মে সময় অতিবাহিত হয়, পৃথিবীর সূচনাকাল থেকেই তা এভাবেই অতিবাহিত হচ্ছে। বরং এখন তো বিজ্ঞানের বিভিন্ন আবিস্কারের কারণে সময়ের বাহ্যিক বরকত আগের চেয়ে অনেক বেশি হয়েছে। তাই আসল কথা এই যে, আমরা যদি আমাদের সময়গুলো অর্থহীন গল্পগুজব ও অপ্রয়োজনীয় কাজকর্মে ব্যয় না করি এবং গাফলতের ঘুমে (স্বাস্থ্য রক্ষার প্রয়োজনীয় ঘুমের কথা বলছি না) সময় বিনষ্ট না করি এবং গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করি, তাহলে আমাদের সময়েও সালাফে সালেহীনের মতো বাতেনী বরকত হবে। ইনশাআল্লাহ তখন সময়-স্বল্পতার অভিযোগও আর থাকবে না। এটা হল সর্বদা স্মরণে রাখার মতো একটি মৌলিক কথা। আর আপনি যে প্রশ্নটি করেছেন সে সম্পর্কে আমি আলকাউসারে লিখেছি, যার সার কথা এই যে, যদি সকল কিতাব পূর্ণরূপে মুতালাআ করা সম্ভব না হয় তাহলে তালীমী মুরব্বীর সামনে আপনার বিস্তারিত অবস্থা জানিয়ে তুলনামূলক অধিক গুরুত্বপূর্ণ কিতাবগুলো নির্বাচন করুন এবং সেগুলোর পিছনেই বেশি সময় ব্যয় করুন। অন্য কিতাবগুলো প্রয়োজন মতো কিংবা যতদূর সম্ভব মুতালাআ করুন। এটা হল সাময়িক ব্যবস্থা। আর প্রকৃত সমাধান হল, ইসতিদাদ মজবুত করতে থাকুন, যাতে অল্প সময়ে কিতাব হল করা সম্ভব হয়।  তাকওয়া, সালাতুল হাজত ও দুআর প্রতি মনোযোগী হোন, এতে সময়ে বাতেনী বরকতও হতে থাকবে।

(খ) এর জন্য মূলত আরবী লেখার তামরীণ জরুরি। দ্বিতীয় পর্যায়ে দুটি বিষয় সহায়ক হতে পারে।

এক. সংশ্লিষ্ট কিতাবের আরবী হাশিয়া বা আরবী শরাহ মুতালাআ করা।

দুই. আরবী শরাহ ও হাশিয়া সামনে রেখে পুরনো কোনো প্রশ্নের উত্তর লেখা। এরপর সম্ভব হলে উস্তাদের কাছ থেকে লেখাটি সংশোধন করিয়ে নেওয়া। এভাবে কিছুদিন তামরীন অব্যাহত রাখলে আরবীতে উত্তর লেখার বিষয়ে ভয়-ভীতি কেটে যাবে। নিয়মিত অনুশীলন চলতে থাকলে আরবী ভাষায় উন্নতি হতে থাকবে। প্রথমদিকে এমন হতে পারে যে, আরবীতে উত্তরের একটি বাক্যও আপনার নিজের হল না, পুরোটাই শরাহ বা হাশিয়া থেকে নেওয়া হল, কিন্তু এতে হিম্মত হারানোর কিছু নেই। মেহনতের শুরুটা এমনই হয়ে থাকে। এরপর দেখবেন, ধীরে ধীরে এমন একটা অবস্থা সৃষ্টি হবে যে, উত্তরের জন্য আপনি যে শরাহ ও হাশিয়া সামনে রেখেছিলেন তার একটি বাক্যও আপনার লেখাতে আসেনি। অথচ তথ্য ও আলোচনা আপনি ওই শরাহ ও হাশিয়া থেকেই গ্রহণ করছেন। সে পর্যায়ে আপনি উদুর্ কিতাব পড়েও আরবীতে উত্তর লিখতে সক্ষম হবেন।

এই সংখ্যার অন্যান্য শিক্ষা পরামর্শসমূহ পড়ুন