যিলক্বদ ১৪৩৫ || সেপ্টেম্বর ২০১৪

মাহফুজ - রংপুর

প্রশ্ন

হেদায়া গ্রন্থের হাদীস সম্পর্কে জানতে চাচ্ছি। হাদীসটি হলো الثيب تشاور في نفسها  (২য় খন্ড ৩১০ পৃষ্ঠা)। হাফেয যায়লায়ী রাহ. হাদীসটি সম্পর্কে ‘নসবুর রায়া’ গ্রন্থে বলেছেন।  غريب بهذا اللفظ আর হাফেয ইবনে হাজার রাহ. বলেছেন لم أره بهذا اللفظ । কাসেম ইবনে কুতলুবুগা রাহ.-এর ‘মুনইয়াতুল আলমায়ীতে হাদীসটি তালাশ করে পাইনি। মূল হাদীসটি তো ভিন্ন শব্দে কুতুবে সিত্তাহসহ অনেক কিতাবেই রয়েছে। কিন্তু হেদায়াগ্রন্থকার হাদীসটি যে শব্দে উল্লেখ করেছেন তা কোনো হাদীসের কিতাবে আছে কি? নাকি এটি তার ‘রিওয়ায়াত বিল মা‘না’। যদি রিওয়ায়াত বিল মা‘না হয়ে থাকে তবে তো খাস এই শব্দ দ্বারা দলীল পেশ করা সহীহ হবে না।

উত্তর

হেদায়া কিতাবে উল্লেখিত হাদীস সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে ইতোপূর্বে লেখা হয়েছে যে, হেদায়া ও অনুরূপ অন্যান্য ফিকহী কিতাবে যে হাদীস ও আছার উল্লেখিত হয়েছে তা পূর্ববর্তী হানাফী ইমামদের রচনাবলী থেকে গৃহীত। হাফেয যাইলায়ী ও হাফেয ইবনে হাজার আসকালানী হেদায়ার কতক হাদীস কেন পেলেন না বা তিনি যে শব্দে উল্লেখ করেছেন সে শব্দে কেন পেলেন না এসবের একটি কারণ হলো, ছাহিবে হেদায়া যেসব উৎস থেকে হাদীস গ্রহণ করেছন অর্থাৎ আইম্মায়ে মাযহাব এবং মুতাকাদ্দিমীন ফুকাহা-মুহাদ্দিসীনের হাদীস। ফিকহুল হাদীস ও আলফিকহুল মুদাল্লাল বিষয়ক কিতাবসমূহে তারা হাদীসগুলো অনুসন্ধান করেননি বরং পরবর্তী মুহাদ্দিসীনের প্রসিদ্ধ কিতাবসমূহে কেবল অনুসন্ধান করেছেন। এর একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছে প্রশ্নোক্ত হাদীসটি। কারণ ইমাম মুহাম্মাদ রাহ. হাদীসটি তাঁর ‘কিতাবুল আছল-এ (১০/১৯৭ নতুন সংস্করণ ১৪৩৩ হি.) এভাবে উল্লেখ করেছেন بلغنا عن رسول الله صلى الله عليه وسلم أنه قال : الثيب تشاور في نفسها  হাদীসটি উপরোক্ত শব্দে আবু বকর জাসসাস রাযী (৪৭০ হি.) ‘শরহু মুখতাসারিত তাহাবী’তে এবং ইমাম সারাখসী (৪৯০ হি.) ‘আল মাবসুত’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন।

আপনি আরো অবাক হবেন যে, ছাহিবে হেদায়া যে শব্দে হাদীসটি উল্লেখ করেছেন হুবহু সে শব্দে ইমাম আহমদ রাহ. সহীহ সনদে তাঁর প্রসিদ্ধ ‘মুসনাদ’ -এও রেওয়ায়াত করেছেন। (দেখুন ‘মুসনাদে আহমদ’ ১২/৩৩ হাদীস নং ৭১৩১, আরো দেখুন : আল আওসাত ; ইবনুল মুনযির ৮/২৭১ হাদীস ৭১৮৯; ‘সুনানু সাঈদ ইবনে মানসুর’ ১/১৮১ (৫৫৪)

আর হাফেয কাসেম ইবনে কুতলুবুগা রাহ. ‘মুনইয়াতুল আলমায়ী’ কিতাবে হাদীসটি যদিও তাখরীজ করেননি। কিন্তু হাফেয ইবনে হাজার রাহ.-এর ‘আদ-দিরাফ’-এর উপর যে হাশিয়া রয়েছে সেখানে তিনি হাদীসটি ইমাম হারেসীর সংকলিত ‘মুসনাদুল ইমাম আজম আবী হানীফা’-এর বরাতে উল্লেখ করেছেন।

 

বাকী থাকল হাদীসের উপরোক্ত শব্দ দ্বারা আলোচ্য মাসআলায় দলীল পেশ করা। তো ওজহে ইস্তেদলাল এবং দলীলে নকদ ও তাবসেরার জন্য ইবনুল হুমাম রাহ.-এর ‘ফাতহুল কাদীর’ দেখতে পারেন। 

এই সংখ্যার অন্যান্য শিক্ষা পরামর্শসমূহ পড়ুন