মুহাম্মাদ জহিরুল ইসলাম - জামিআতুল আবরার, কামরাঙ্গিরচর, ঢাকা

প্রশ্ন

হযরত তাকী উসমানী দামাত বারাকাতুহুম-কৃত উলূমুল কুরআন-এর ৩৩০ পৃষ্ঠায় ‘তাফসীরুল কুরআন বিলকুরআন’ এর একটি নীতি উল্লেখ করা হয়েছে। তা এই যে, কখনো কোনো বিষয় এক কিরাতে মুবহাম থাকলে অন্য কিরাত দ্বারা স্পষ্ট হয়ে যায়। যেমন : فاغسلوا وجوهكم وايديكم الى المرافق وامسحوا برؤوسكم وارجلكم الى الكعبين. এই আয়াতে ارجلكم শব্দে ‘জর’ ও ‘নসব’ দুই কিরাত রয়েছে। জরের সূরতে তরজমা দুই ভাবে হয় : ক. তোমরা মাথা মাসেহ কর এবং পা ধৌত কর, খ. মাথা ও পা মাসেহ কর। অতএব আয়াতের মর্ম মুবহাম। কিন্তু নসবের ক্ষেত্রে তরজমা নির্দিষ্ট ও স্পষ্ট। ফলে তা জরের সূরতের অস্পষ্টতাকে দূর করেছে। অর্থাৎ জরের সূরতে প্রথম অর্থই উদ্দেশ্য। এখন প্রশ্ন হল, জরের সূরতে দ্বিতীয় তরজমা তো رؤوسكم এর উপর আতফ হিসাবে। কিন্তু প্রথম তরজমা (তোমরা মাথা মাসেহ কর এবং পা ধৌত কর) কীভাবে হয়েছে-তা বুঝতে পারছি না। দয়া করে জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

বিষয়টি উলূমুল কুরআনে কিছুটা সংক্ষিপ্ত আকারে বলা হয়েছে। পূর্ণ বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়নি। সেজন্য আপনি উস্তাদে মুহতারামের তাকরীরের সংকলন ‘দরসে তিরমিযী’র (উর্দূ) ১/২৫৩-২৫৬ পর্যন্ত আলোচনাটি পড়তে পারেন। বিষয়টি সহজেই বোধগম্য হবে বলে আশা রাখি।

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আশরাফ বিন আলতাফ - জামিয়া মাদানিয়া ফেনী

প্রশ্ন

‘আলমাদখাল ইলা উলূমিল হাদীসিশ শরীফ’ কিতাব বিষয়ে সার্বিক দিকনির্দেশনা দিলে বা কোথায় তা পাওয়া যাবে তা জানালে অত্যন্ত উপকৃত হব। উক্ত কিতাবের ২য় সংস্করণের ১০৫নং পৃষ্ঠার টীকায় একটি বিষয়ের জন্য ‘আছারুল হাদীসিশ শরীফ’ এর ১৪১-১৫১ পৃষ্ঠা জরুরি ভিত্তিতে দেখার জন্য বলা হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ, মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বার সাথে পেয়েছি। কিন্তু এখানে السبب الثالث বলে যে আলোচনা শুরু হয়েছে তার সাথে পূর্বের আলোচনার মিল খুঁজে পাচ্ছি না। তাই প্রশ্ন এই যে, মাদখালের হাওয়ালায় কি السبب الثالث উদ্দেশ্য, নাকি অন্য কোনো নুসখার হাওয়ালা দেওয়া হয়েছে? বিষয়টি জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

মাদখালের হাওয়ালাটি ‘আছারুল হাদীসের দ্বিতীয় সংস্করণের। কিন্তু যে সংস্করণটি আপনি দেখেছেন তা আছারুল হাদীসের পঞ্চম সংস্করণ। তাই এই সমস্যা হয়েছে। অতএব আপনি চতুর্থ ‘সাবাবে’র উপর আরোপিত তিনটি সন্দেহ-সংশয়ের মধ্যে তৃতীয় সংশয়-সম্পর্কিত পূর্ণ আলোচনাটি পড়ে নিন। মাদখালে এই আলোচনার দিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে, যা মুসান্নাফের সাথে মুদ্রিত পঞ্চম সংস্করণের ২০৮ হতে ২২২ পৃষ্ঠায় রয়েছে। আলোচনাটি আছারুল হাদীসের চতুর্থ সংস্করণে ১৮২-১৯২ পৃষ্ঠায় বিদ্যমান আছে। আর মাদখাল যে উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে তা সঠিকভাবে অর্জন করতে হলে অবশ্যই ‘তাদাররুবে আমলী’রও প্রয়োজন। বিশেষত যে সকল কিতাবের আলোচনা মাদখালে করা হয়েছে, সরাসরি ঐসব কিতাবের ভূমিকা ও পরিশিষ্ট পড়তে হবে, কিতাবের বিভিন্ন সংস্করণ ও এর বৈশিষ্ট্যাবলির সাথে পরিচিত হতে হবে, মুহাক্কিকদের আলোচনা পড়তে হবে সর্বোপরি ঐসব কিতাব থেকে ফায়দা হাসিলের পথ ও পদ্ধতি জেনে কিতাবের সাথে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক গড়ে তুললেই মাদখাল লেখা ও পড়ার পূর্ণাঙ্গ লক্ষ্য অর্জিত হবে বলে আশা করা যায়।

শেয়ার লিংক

আহমদ - মালিবাগ, ঢাকা

প্রশ্ন

আমি আগামী বছর মিশকাত জামাতে পড়ব ইনশাআল্লাহ। তাই এ বছর উলূমুল হাদীস বিষয়ে কিছু কিতাব মুতালাআ করার ইচ্ছা করেছি। কিন্তু কোন কিতাব মুতালাআ করব তা বুঝতে পারছি না। আমার সংগ্রহে তাইসীরু মুসতালাহিল হাদীস, আলমাদখাল ইলা উলুমিল হাদীসিশ শরীফ, যাফারুল আমানী, আসসুন্নাহ ওয়া মাকানাতুহা ফিত্‌ তাশরীয়িল ইসলামী, দিফাউন আনিস সুন্নাহ, নুখবাতুল ফিকার, ছালাছু রাসাইলা ফী ইলমি মুসতালাহিল হাদীস, তারীখে হাদীস ও মুহাদ্দিসীন নামক কিতাবগুলো আছে। এগুলি থেকে কোনটি আগে কোনটি পরে বা কীভাবে পড়ব কিংবা উলূমুল হাদীস বিষয়ে আর কী কী উপকারী কিতাব আছে জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

আপনার সংগৃহীত কিতাবগুলো থেকে আপনি ‘আলমাদখাল’ দিয়ে আপনার মুতালাআ শুরু করতে পারেন। দ্বিতীয় পর্যায়ে ড. আমর আবদুল মুনঈমের ‘তাইসীরু উলূমিল হাদীস; সংগ্রহ করে পড়ুন। এরপর আবদুল হাই লাখনোভী রাহ.-এর ‘আলআজবিবাতুল ফাযিলা’ (মুহাক্কাক নোস্‌খা) সংগ্রহ করুন। এটি এবং এর সাথে আপনার সংগৃহীত ‘সালাসু রাসাইল’টাও পড়ে নিন। আর শায়খ আবু যুহরা-এর ‘তারীখে হাদীস ও মুহাদ্দিসীন’সহ আপনার সংগৃহীত অন্যান্য কিতাব পরবর্তী মুনাসিব সময়ে পড়ে নিতে পারেন। আল্লাহই তাওফীকদাতা।

শেয়ার লিংক