মুহাম্মাদ সাইদুর রহমান - জামিআ রাহমানিয়া আরাবিয়া মুহাম্মাদপুর, ঢাকা

প্রশ্ন

(ক) বর্তমানে অর্থনীতি ও ব্যাংকিং বিষয়ে পড়াশোনার জন্য ছাত্রদেরকে জোর তাগিদ দেওয়া হয়। ফলে ছাত্ররা বিরাট চিন্তার সম্মুখীন হয় এবং ভাবতে থাকে একসঙ্গে এতগুলো বিষয়ের ইলম কীভাবে অর্জন করা সম্ভব। ফলে দেখা যায়, কিতাবী যোগ্যতা খুব কমই হয়। জনাবের নিকট আমার প্রশ্ন হল, এ বিষয়ে পান্ডিত্য অর্জনের মূল সময় কোনটি? কখন থেকে এ বিষয় নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করা আমাদের জন্য  উপযোগী হবে?

(খ) অর্থনীতি বিষয়টা অন্যের কাছে কেমন জানি না তবে আমার কাছে খুবই জটিল মনে হয়। এ সম্পর্কে বাংলায় অনেক বই আছে কিন্তু তা পড়ে কিছুই বুঝে আসে না। শত চেষ্টা করেও কোনো বিষয় আয়ত্ব করতে পারি না। তাই প্রাথমিক অবস্থায় কোন ধরনের বই পড়লে উপকৃত হতে পারি জানালে খুশি হব।


উত্তর

(ক)  ইলম হাসিলের একটি গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি হচ্ছে, ধারাবাহিকতা ও পর্যায়ক্রম। সালাফ বলেছেন, যে একসঙ্গে সবকিছু অর্জন করতে চায় সে সব হারায়। এজন্য এ নিয়ে  চিন্তার কোনো কারণ নেই। আপনি ভাবছেন কেন যে, সব কিছু আপনাকে এখনই হাসিল করতে হবে। ইলম হাসিলের সময় তো দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত। তবে কখন কোন বিষয়টা পড়তে হবে তার ফয়সালা প্রত্যেক তালিবে ইলমের তালীমী মুরববীই করতে পারেন। আপনিও আপনার তালীমী মুরববীর সঙ্গে পরামর্শ করুন।

এই বিষয়ের প্রাথমিক অধ্যয়ন কুদূরী-কানযের সঙ্গেই হতে পারে। তবে এই জামাতের উপযুক্ত মানসম্মত কিতাব পাওয়া যাবে কি না-এটাই প্রশ্ন। হিদায়া ছালিছের সঙ্গে এই বিষয়ের অধ্যয়ন অবশ্যই শুরু করা উচিত। তবে পারদর্শিতা অর্জনের জন্য দীর্ঘ সময় ও দীর্ঘ মেহনত প্রয়োজন। সেজন্য তো গোটা জীবনই রয়েছে। শর্ত হচ্ছে আগ্রহ ও নিযামুল আওকাতের পাবন্দী।

আপনার এই কথা ঠিক যে, প্রাথমিক পর্যায়ে তালিবে ইলমের জন্য মূল বিষয় হচ্ছে কিতাবী ইসতিদাদ পয়দা করা। যে তালিবে ইলমের জন্য যে কাজ এই বিষয়ে প্রতিবন্ধক হয় তার কর্তব্য হচ্ছে ওই বিষয় পরিহার করে পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে ইসতিদাদ তৈরির চেষ্টা করা।

(খ) মানুষের স্বভাব ও যোগ্যতা এক হয় না। তাই এমন হওয়া খুবই স্বাভাবিক যে, এক ব্যক্তি কোনো এক বিষয়ে খুবই আগ্রহী অথচ অন্য বিষয়ে মন দেওয়া তার জন্য খুবই কঠিন। তবে বিষয়টি যদি প্রয়োজনীয় হয় তাহলে নিজের উপর বল প্রয়োগ করে হলেও প্রয়োজন পরিমাণ জ্ঞান অর্জন করা উচিত। এখন আপনার জন্য কোন কিতাব উপযোগী হবে তা আপনার তালীমী মুরববীর নিকট থেকে জেনে নিন। আল্লাহ তাআলা আপনাকে তাওফীক দিন এবং ইলমের দ্বার আপনার জন্য উন্মুক্ত করে দিন।

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবদুর রহমান - ফরিদাবাদ মাদরাসা

প্রশ্ন

(ক) আমি মিশকাতের ছাত্র। আমার অবস্থা হল, আমি তরজমা ছাড়া ইবারত পড়তে পারি না। তরজমা জানলে ইবারত সহজেই পড়তে পারি। ইবারত থেকে মুবতাদা-খবর, হাল, মুতাআল্লিক ইত্যাদি নির্দিষ্ট করতে দেরি হয়।


(খ) আমার লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ খুবই কম। আগ্রহের সময় অনেক পৃষ্ঠা পড়ে ফেলতে পারি। তবে অধিকাংশ সময়ই আগ্রহ থাকে না। অতএব কীভাবে সব সময় আগ্রহ নিয়ে পড়তে পারি তার উপায় জানাবেন।


(গ) আমাদের উস্তাদে মুহতারাম হাফেযে হাদীস মাওলানা যিকরুল্লাহ সাহেব হুজুর মাদরাসায়, মসজিদে উলূমুল হাদীসসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর অনেক দরস দেন কিন্তু আমার দরসি কিতাব হল করতে অনেক সময় লেগে যায়। তাছাড়া পরিবারের পক্ষ থেকে চাপ আছে যেন পরীক্ষায় সিরিয়ালে থাকি।

এজন্য দরসী কিতাবের পিছনে সময় দিতে গিয়ে হুজুরের মজলিসে বসতে পারি না। অপর দিকে মনে খুব আফসোসও হয়। এ ক্ষেত্রে আমি কী করতে পারি?


উত্তর

(ক) তরজমার মোটামুটি ধারণা না থাকলে তো কোনো ইবারতই সঠিকভাবে পড়া সম্ভব নয়। মর্ম সম্পর্কে কিছুটা আঁচ করতে না পারলে আমিলমামূল ও মামূলের প্রকার কীভাবে নির্ণয় করবেন? আর কিছুটা বিলম্বে হলেও তো চিন্তা-ভাবনার দ্বারা মুবতাদা-খবর, হাল, মুতাআল্লিক ও অন্যান্য বিষয় নির্ণয় করতে পারেন। এটাও তো সামান্য নয়। ইনশাআল্লাহ মুতালাআ যত বাড়বে এবং যত বেশি চিন্তাভাবনা করা হবে ততই তা সহজ হতে থাকবে। ওয়াল্লাহুল মুয়াফফিক্ব।

 

(খ) অপ্রাসঙ্গিক চিন্তা ও ব্যস্ততা যত কম হবে এবং ইলমের সঙ্গে  সম্পর্ক ও মুহাববত যত গভীর হবে ততই আগ্রহ-উদ্দীপনা বৃদ্ধি পাবে। যে পরিমাণ আগ্রহ বিদ্যমান রয়েছে তা পূর্ণরূপে কাজে লাগালে তা বৃদ্ধি পায়। উদ্দীপনার সামান্য অংশও বিনষ্ট করবেন না। আর যখন উদ্দীপনা থাকে না তখন আল্লাহর কথা স্মরণ করে সবর ও ধৈর্য্যের সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। এভাবে কাজ করতে থাকলে একসময় আল্লাহ তাআলা জীবনকে কর্মোদ্দীপনায় পূর্ণ করে দিবেন এবং উদ্দীপনাহীন সময়েও কাজ করে যাওয়ার হিম্মত দান করবেন।

 

(গ) যদি দুটোর মধ্যে সামঞ্জস্য রক্ষা করা না যায় তাহলে সর্বাবস্থায় দরসী কাজকর্মকেই প্রাধান্য দিতে হবে। গায়রে দরসী কাজের ব্যাপারে মা লা ইউদরাকু কুল্লুহু লা ইউতরাকু কুল্লুহু  নীতি অনুসরণ করবেন।

আপনার কাছে একটি দরখাস্ত এই যে, নিজ উস্তাদের নিকট থেকেই ইলমী লকবসমূহের মর্ম ও প্রয়োগের নিয়মনীতি সম্পর্কে জেনে নিন এবং এটাও জেনে নিন যে, হাফিযুল হাদীসের সর্বনিম্ন পর্যায় কী?

শেয়ার লিংক

মাওলানা আদিল কাউছারী - চট্টগ্রাম

প্রশ্ন

 ...


উত্তর

আপনি সরাসরি সাক্ষাতে উত্তর জেনে নিবেন। 

শেয়ার লিংক

হাবীবা বিনতে আবদুস সামাদ - ৯৭/৮ পাটগুদাম ব্রীজ মোড়, ময়মনসিংহ

প্রশ্ন

জুমাদাল উলা ২৮হি. সংখ্যায় আপনার কাছে পরামর্শ নিয়ে কুরআন বোঝার মেহনত করছিলাম। আততরীক ইলাল আরাবিয়্যাহ, তামরীন, ছরফ, নাহব শেষ করে এখন আততরীক ইলাল কুরআন পড়ছি। পাশাপাশি তাফসীরুল কুরআন লিল আতফাল পড়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু সমস্যা হল, তাফসীরুল কুরআনের অর্থ বুঝতে খুব কষ্ট হচ্ছে। আলহামদুলিল্লাহ, ইবারতের যে অসুবিধা ছিল তা অনেকটা কেটে গেছে। ইবারত পড়তে পারি, কিন্তু অর্থ করতে পারি না। অনেক সময় এমন হয়, অর্থটা বুঝতে পারছি কিন্তু প্রকাশ করতে পারছি না। যেসব শব্দের অর্থ জানা নেই সেসব শব্দার্থ অভিধান দেখে তো বের করি কিন্তু পুরো বাক্যের অর্থ সাজাতে পারি না। সমস্যাটা আমার জন্য খুব জটির হয়ে যাচ্ছে। কীভাবে এই কিতাবের উপর মেহনত করব তারপর অন্যান্য কিতাব পড়ব বুঝতে পারছি না। হুজুর যদি এ ব্যাপারে দিক নির্দেশনা দিতেন তাহলে অত্যন্ত উপকৃত হতাম।


উত্তর

আপনার তালীমী হালত যা জানালেন তাতে তাফসীরুল কুরআন লিলআতফাল এত কঠিন হওয়ার কথা নয়। তবে একথাও ঠিক যে, কোনো নতুন কিতাব শুরু করলে তাতে কিছু জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়। এতে দুশ্চিন্তায় পড়ে যাওয়ার কারণ নেই। এ ধরনের সমস্যা উস্তাদের নিকট থেকে সমাধান করা যায়। এরপর কিতাবের সঙ্গে পরিচয় বৃদ্ধি পেলে সকল জটিলতা ধীরে ধীরে দূর হয়ে যাবে।

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ এনামুল হাসান - ফরিদপুর

প্রশ্ন

শরহে হাদীসের কিতাবে দুটো নাম পাওয়া যায় : ইবনুল কাত্তানআলকাত্তান। এঁরা কি দুজন না এক ব্যক্তি? দুজন হলে কি এঁরা পিতা-পুত্র না এদের মধ্যে এমন কোনো সম্পর্ক নেই?


উত্তর

এরা দুজন ভিন্ন ব্যক্তি। আলকাত্তান উপাধীতে প্রসিদ্ধ হলেন ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে সায়ীদ আলকাত্তান আলকূফী। তাঁর ইন্তেকাল ১৯৮ হিজরীতে। তিনি ইলমুল জরহ ওয়াত তাদীলের অন্যতম কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব। ইবনুল মাদীনী, ইবনে মায়ীন, আহমদ ইবনে হাম্বল ও তাদের সহপাঠীদের উস্তাদ। আর তাঁর   উস্তাদদের মধ্যে ইমাম আবু হানীফা রাহ. অন্যতম। তিনি ইমাম ছাহেবের ফিকহের অনুসারী ছিলেন।

পক্ষান্তরে ইবনুল কাত্তান নামে অধিক প্রসিদ্ধ ব্যক্তি হলেন আবুল হাসান আলী ইবনে মুহাম্মাদ আলফাছী। তাঁর মৃত্যু ৬২৮হিজরীতে।

তাঁর গ্রন্থাবলীর মধ্যে বয়ানুল ওয়াহামি ওয়াল ঈহাম আলওয়াকিআইনি ফী কিতাবিল আহকাম (লিআব্দিল হক আলইশবীলী) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। গ্রন্থটি মুদ্রিত ও প্রকাশিত। #

শেয়ার লিংক