নাহিদুল ইসলাম - নেত্রকোনা
৬৮০৪. প্রশ্ন
আমি সৌদি আরব ছিলাম। পারিবারিক কিছু বিষয় নিয়ে প্রায়ই আমার স্ত্রীর সাথে আমার ঝগড়া হত। একদিন রাগের মাথায় ফোনে আমি তাকে এক তালাক দিয়ে দিই। তালাকের পর সে আমার নম্বর ব্লক করে দিয়ে বাবার বাড়ি চলে যায়। এরপর থেকে আমাদের মাঝে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। এবং মাঝখানে আমি তাকে রাজআতও করিনি।
চার মাস পর আমি যখন দেশে আসি, তখন তার তিনটি ঋতুস্রাব অতিবাহিত হয়ে গেছে। আমি তাকে পুনরায় স্ত্রী হিসেবে ফিরিয়ে নিতে চাচ্ছিলাম। তাই আমি তার পরিবারের সাথে আলোচনা চালিয়ে যেতে থাকি। কিন্তু তার পরিবার ফিরিয়ে দিতে সম্মত ছিল না। তাই তখন আমি তাকে চূড়ান্তভাবে তিন তালাক দিয়ে দিই।
ইদানীং আমাদের দুই পক্ষের সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়েছে। আমার স্ত্রীর পরিবার আমার স্ত্রীকে পুনরায় আমার কাছে ফিরিয়ে দিতে সম্মত হয়েছে।
হুজুরের কাছে জানতে চাই, এখন পুনরায় আমাদের ঘর-সংসার করার কি কোনো সুযোগ আছে? দ্বিতীয়বার আমি যখন তালাক দিই, তখন তো তার তিনটি ঋতুস্রাব অতিবাহিত হয়ে গিয়েছিল। এক্ষেত্রে ওই তালাকগুলো কি তার ওপর পতিত হয়েছিল?
উল্লেখ্য, আমি ইতিপূর্বে তাকে আর কোনো তালাক দিইনি।
উত্তর
প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী বাস্তবেই যদি প্রথমবার এক তালাক দেওয়ার পর তিনটি ঋতুস্রাব অতিবাহিত হয়ে গিয়ে থাকে, আর দ্বিতীয়বারের তালাকটি এর পর হয়ে থাকে, তাহলে আপনার ওই তালাকটি তার ওপর পতিত হয়নি; বরং সেগুলো অনর্থক হয়েছে।
অতএব এখন আপনারা পুনরায় সুষ্ঠুরূপে ঘর-সংসার করতে চাইলে নতুন মহর ধার্য করে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে নতুন করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবেন।
প্রকাশ থাকে যে, এক্ষেত্রে তাকে নতুন করে বিবাহ করার পর ভবিষ্যতে আপনি কেবল দুই তালাকের অধিকারী থাকবেন। তাই পরবর্তীতে তাকে দুই তালাক দিলেই পূর্বের এক তালাকসহ মোট তিন তালাক হয়ে আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন হয়ে যাবে এবং আপনারা একে অপরের জন্য পরিপূর্ণ হারাম হয়ে যাবেন। এরপর আপনাদের পুনরায় বিবাহ করেও একসাথে থাকার সুযোগ থাকবে না। তাই ভবিষ্যতে তালাকের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
* >المحيط البرهاني< ৪/৩৯০ : شرط صحة إضافة الطلاق قيام القيد فى المرأة نكاحا كان أو عدة، وقيام حل جواز العقد، ولا يكفي أحدهما لصحة الطلاق. ... وأما قيام حل جواز العقد وحده، فإنه بعد ما طلقها واحدة أو ثنتين، وانقضت عدتها وطلقها، لا يصح طلاقه.
–আলমাবসূত, সারাখসী ৬/১৯; আলমুহীতুর রাযাবী ৩/২১২; আলজাওহারাতুন নাইয়িরা ২/৬৪; আননাহরুল ফায়েক ২/৪২০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৪৮; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৪০৯