রবিউল আউয়াল ১৪৪৭ || সেপ্টেম্বর ২০২৫

যুলফা আক্তার - বারিধারা

৬৭৮৩. প্রশ্ন

আমার বড় বোন সন্তান প্রসব করার পর তার নেফাস চল্লিশ দিনের বেশি ছিল এটিই তার প্রথম সন্তান আমি চল্লিশ দিনের পর তাকে নামায আদায় করতে বললে তিনি নেফাস মনে করে নামায শুরু করেননি এরপর আরো দশ দিন ব্লাড এসেছিল এখন নেফাস বন্ধ হয়েছে প্রায় তিন-চার মাস কিন্তু এর ভেতর একবারও হায়েয আসেনি সন্তান গর্ভধারণের পূর্বে মাসের কোন্ তারিখে তার হায়েয আসত, সেটাও তিনি ভুলে গেছেন এতদিন তিনি নামায চালুই রেখেছেন

প্রশ্ন হল, তিনি কি হায়েয না আসলেও মাসের নির্দিষ্ট একটি সময়কে হায়েযের জন্য নির্ধারণ করে নামায পড়া থেকে বিরত থাকবেন, নাকি নিয়মিত নামায পড়তে পারবেন?

উত্তর

কোনো নারীর দীর্ঘদিন কোনো স্রাব দেখা না গেলেও যতদিন স্রাব আসবে না ততদিন সে পবিত্রই থাকবে এবং তার ওপর তখন নিয়মিত নামায (এবং রোযার সময় রোযা) আদায় করা ফরয এক্ষেত্রে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট কিছু দিনকে হায়েয ধরার কোনো সুযোগ নেই সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার বড় বোনের যতদিন ঋতুস্রাব দেখা না দেবে ততদিন তার নিয়মিত নামায আদায় করা জরুরি

আর সন্তান প্রসবের পর চল্লিশ দিন পূর্ণ হওয়ার পর থেকে (স্রাব চলমান থাকলেও) তার নামায না পড়া বড়ই ভুল কাজ হয়েছে কেননা নেফাস (সন্তান প্রসবোত্তর স্রাব)-এর মেয়াদ সর্বোচ্চ চল্লিশ দিন এরপর রক্ত দেখা গেলেও তা নেফাস নয়; বরং ইস্তেহাযা তাই এরপর থেকে তার ওপর নামায আদায় করা ফরয ছিল তা না করে ঐ দিনগুলোতে তার নামায আদায় থেকে বিরত থাকা বড় গুনাহের কাজ হয়েছে তার ওপর জরুরি হল, যত দ্রুত সম্ভব ঐ নামাযগুলোর কাযা করে নেওয়া এবং আল্লাহ তাআলার নিকট তাওবা-ইস্তেগফার করা আর ভবিষ্যতে দ্বীনী যে কোনো বিষয়ে নিজের ধারণা মতো আমল না করে বিজ্ঞ আলেম থেকে সঠিক মাসআলা জেনে সে অনুযায়ী আমল করা

উল্লেখ্য, নারীদের কর্তব্য হল, মাসিকের দিন-তারিখের হিসাব গুরুত্বের সঙ্গে স্মরণ রাখা কেননা নামায, রোযা, স্বামী-সহবাস, ইদ্দতসহ শরীয়তের বহু বিধান এর সাথে সংশ্লিষ্ট তাই এ ব্যাপারে উদাসীনতা কোনোক্রমেই ঠিক নয়

* >بدائع الصنائع< /১৫৬ : وأما أكثر الطهر فلا غاية له، حتى أن المرأة إذا طهرت سنين كثيرة، فإنها تعمل ما تعمل الطاهرات بلا خلاف بين الأئمة.

কিতাবুল আছল ১/২৯৪; আলমাবসূত, সারাখসী ৩/১৪৮; আলইনায়া শরহুল হিদায়া ১/১৫৫, ১৬৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/১৭৯

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন