সফর ১৪৪৭ || আগস্ট ২০২৫

রাজু - বারিধারা, ঢাকা

৬৭৭৭. প্রশ্ন

বর্তমানে বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে ডিপিএস করা যায় এতে ইসলামিক ডিপিএস-এরও অপশন আছে তারা একে শরীয়তসম্মত ও বৈধ বলে প্রচার করে থাকে

মুহতারামের কাছে জানতে চাই, এটি কি বাস্তবেই শরীয়তসম্মত? এতে টাকা জমা রেখে মুনাফা ভোগ করা কি বৈধ হবে?

উত্তর

প্রচলিত ব্যাংকগুলোতে ফিক্সড ডিপোজিট কিংবা অন্যান্য সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলা এবং এর থেকে মুনাফার নামে প্রাপ্ত অর্থ ভোগ করা জায়েয নয় কারণ, এসব মুনাফা সরাসরি সুদ যা কুরআন-সুন্নাহর সুস্পষ্ট দলীল দ্বারা  হারাম এদেশের মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসগুলোর (যেমন, বিকাশ)-ও একই হুকুম

আর আমাদের দেশে বর্তমানে প্রচলিত ইসলামী ব্যাংকগুলো কাগজে-কলমে ইসলামী হওয়ার দাবি করলেও প্রকৃত পক্ষে শরীয়া নীতিমালা অনুসরণ করে পরিচালিত হয় না তাদের বিনিয়োগ কার্যক্রমগুলোর অধিকাংশই যথাযথভাবে শরীয়তসম্মত পন্থায় সম্পাদিত হয় না এমনকি অর্থ জমাকারীদের সাথে তাদের লেনদেনও পুরোপুরি বৈধ পন্থায় হয় না ফিকহুল মুআমালাত ও প্রচলিত ব্যাংক ব্যবস্থার ওপর সঠিক ধারণা রাখেন এমন কারো কাছেই বিষয়গুলো অস্পষ্ট নয় আর তাদের কারবারগুলো শরীয়াসম্মত না হওয়ার বড় আরেকটি প্রমাণ তো ভুয়া ও বে-আইনী লেনদেন করে অনেকগুলো ইসলামী ব্যাংকের দেওলিয়ার কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া

তাছাড়া বিকাশ ইসলামিক ডিপিএস-এর সার্ভিস ঢাকা ব্যাংক পিএলসিসিটি ব্যাংক পিএলসি-এর মাধ্যমে দিয়ে থাকে আর এ দুটিই হচ্ছে সুদী বাণিজ্যিক ব্যাংক তাদের কেবল ইসলামী উইন্ডো বা শাখা রয়েছে এদিক থেকে বিকাশের ইসলামী নামের সেভিং সার্ভিসগুলো শরীয়তপরিপন্থি ও অবৈধ হওয়া আরও স্পষ্ট কেননা ব্যাংকের মূল সিস্টেম সুদী রেখে এর কোনো শাখা বা শাখারও একটি অংশকে ইসলামী দাবি করা ইসলামের নামে প্রহসন ছাড়া কিছু নয় যেখানে ইসলামী ব্যাংকগুলোই ঠিকমতো ইসলাম মেনে চলে না, সেখানে তারা কীভাবে সুদের রমরমা ব্যবসার মাঝে একটি টেবিলে ইসলাম বাস্তবায়ন করে ফেলে

অতএব বিকাশে ইসলামিক ডিপিএস-এ টাকা জমা রাখা এবং এর থেকে মুনাফার নামে দেওয়া টাকা ভোগ করা জায়েয হবে না এ থেকে বিরত থাকা জরুরি

এ দেশে ব্রাক-এর ইসলাম পরিপন্থি তৎপরতা কারো অজানা নয় তারাই কিনা নিজেদের প্রতিষ্ঠান বিকাশ-এ ইসলামিক ডিপিএস সার্ভিস খুলেছে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের চোখ ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা করার এহেন তৎপরতা বন্ধ হওয়া উচিত

উল্লেখ্য, সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষও অনৈসলামিক ব্যাংকগুলোর ইসলামী উইন্ডো বন্ধ হওয়া দরকার বলে মতামত প্রদান করেছেন

বাদায়েউস সানায়ে ৪/৪২৬; আলমাআয়ীরুশ র্শইয়্যাহ, পৃ.  ১৫৬, ২১০-২১৬, ২৪২-২৫৫; মাজাল্লাতু মাজমাইল ফিকহিল ইসলামী, সংখ্যা ৫, ২/১৫৩৯, ১৫৯৯; সংখ্যা ১২, ১/৬৯৭

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন