যিলকদ ১৪৪৩ || জুন ২০২২

আবু সায়েম - মানিকগঞ্জ, ঢাকা

৫৭১০. প্রশ্ন

পজেশনে বিভিন্ন মার্কেটের দোকান-অফিস কেনাবেচা বৈধ কি না? যদি বৈধ না হয় তাহলে এমন দোকান-অফিসে ব্যবসা করে যে লাভ হয় সেটাও কি অবৈধ হবে?

উল্লেখ্য, বর্তমানে বিভিন্ন মার্কেটের দোকান-অফিস এভাবেই বেচাকেনা হয়।  আমার জানামতে পাকিস্তান আমল থেকেই এভাবে চলে আসছে। এর কোনো ব্যতিক্রম হয় না।

উত্তর

আমাদের দেশে দোকান, অফিস ইত্যাদির পজেশন বিক্রির যে প্রচলন রয়েছে, অর্থাৎ দোকান/মার্কেট মালিক প্রথমে কারো নিকট চড়া মূল্যে দোকানের পজেশন বিক্রি করে। অতঃপর পজেশন ক্রেতার কাছ থেকে উক্ত দোকান বা অফিসের আবার মাসে মাসে জমিদারির নামে ভাড়াও আদায় করা হয়, এটি শরীয়তসম্মত নয়; বরং পজেশন বিক্রির নামে একমুঠে যে অঙ্ক প্রথমে নেয়া হয় তা শরীয়তের দৃষ্টিতে এক প্রকারের রিশওয়াতের অন্তর্ভুক্ত, যা সম্পূর্ণ নাজায়েয। এটি না بيع (বেচাকেনা) না إجارة (ভাড়া চুক্তি)। বরং একটি জগাখিচুড়ি পদ্ধতি; যা শরীয়তের কোনো স্বীকৃত আক্দের (চুক্তির) আওতাতে পড়ে না। তাই এ পদ্ধতির লেনদেন থেকে বিরত থাকা কর্তব্য।

সঠিকভাবে লেনদেনটি করতে চাইলে হয়ত দোকান/অফিস সাফ কবলা দলীলমূলে বিক্রি করে দেবে এবং ক্রেতাকে তার সম্পূর্ণ মালিক বানিয়ে দেবে। এরপর বিক্রেতার উক্ত দোকান বা অফিসে কোনো ধরনের অধিকার থাকবে না এবং ক্রেতার কাছ থেকে উক্ত দোকান বা অফিসের ভাড়া বাবদ কোনো অর্থও গ্রহণ করতে পারবে না। আর সাফ কবলা দলীলমূলে বিক্রি না করতে চাইলে শুরু থেকেই কেবল ভাড়া পদ্ধতি গ্রহণ করবে। এক্ষেত্রে মালিক যদি ভাড়া গ্রহিতা থেকে একমুঠে বেশি অর্থ নিতে চায় তাহলে সময় ও ভাড়ার পরিমাণ নির্ধারণ করে এককালীন অগ্রিম ভাড়া নিয়ে নেবে।

অবশ্য প্রচলিত পজেশন ক্রয়-বিক্রয় অবৈধ হলেও কোনো ব্যক্তি যদি দোকানের পজেশন ক্রয় করে তাতে ব্যবসা করে আর তার ব্যবসার মূল কারবার বৈধ হয় এবং ব্যবসাও বৈধ পন্থায় করে তাহলে পজেশনের কারণে উক্ত ব্যবসা ও তার লাভ অবৈধ গণ্য হবে না; বরং তার মুনাফা ভোগ করা জায়েয হবে।

-গামযু উয়ূনিল বাছাইর ২/১৬৯; মুফীদুল হুসনা, শুরুম্বুলালী, পৃ. ৪৬; রদ্দুল মুহতার ৪/৫২১

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন