রবিউল আউয়াল ১৪৪২ || নভেম্বর ২০২০

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক -

৫২৩৮. প্রশ্ন

আজ থেকে ছয় মাস আগে আমাদের এক প্রতিবেশী তার নিকটাত্মীয় এক মেয়ের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। শুরুতে তাদের সংসার ভালোই চলছিল। কিছুদিন পর থেকে মেয়ে যে কারণেই হোক স্বামীর সাথে খারাপ আচরণ শুরু করে। স্বামী সর্বদা স্ত্রীর মন জয় করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় হঠাৎ একদিন স্ত্রী স্বামীকে কোনো কিছু বলা ছাড়াই তার পিত্রালয়ে চলে যায়। স্বামী তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করলেও সে আসতে চায়  না। এমনকি এখন সে স্বামী থেকে সম্পূর্ণরূপে পৃথক হয়ে যেতে চায়। কিন্তু স্বামী তাকে তালাক দিতে রাজি নয়। সর্বশেষ স্ত্রী মহরের বিনিময়ে খোলা করতে চাচ্ছে।

জানার বিষয় হল, এভাবে অর্থের বিনিময়ে তালাক দেওয়া জায়েয হবে কি না? এক্ষেত্রে বিনিময় স্বরূপ প্রদত্ত মহরের চেয়ে অতিরিক্ত গ্রহণ করা যাবে কি না? পরবর্তীতে তারা উভয়ে যদি পুনরায় ঘর সংসার করতে চায় তাহলে সেটার কোনো বৈধ সুরত আছে কিনা?

উত্তর

কোনো মহিলার জন্য যদি তার স্বামীর সাথে পারস্পারিক অধিকার রক্ষা করে দাম্পত্য জীবন যাপন করা কঠিন হয়ে যায়, ফলে স্ত্রী স্বামী থেকে পৃথক হয়ে যেতে চায়। কিন্তু স্বামী তালাক দিতে রাজী না হয় তাহলে ঐ মহিলার জন্য অর্থের বিনিময়ে খোলা করার সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে বাস্তবে স্বামীর ত্রুটির কারণেই যদি খোলা করা হয়ে থাকে তাহলে স্বামীর জন্য খোলার বিনিময়ে কোনো অর্থ গ্রহণ করা জায়েয হবে না। আর যদি খোলা গ্রহণের মুখ্য কারণ হয়ে থাকে স্ত্রীর ত্রুটিই তাহলে স্বামী খোলার বিনিময় নিতে পারবে। তবে এক্ষেত্রেও সে স্ত্রীকে যে অলঙ্কার, মহর ও বিভিন্ন দামী দামী জিনিসপত্র উপহার দিয়েছিল এসবের মূল্যের অতিরিক্ত গ্রহণ করা ঠিক হবে না। বিনিময় স্বরূপ এসব জিনিসের সমপরিমাণ কিংবা এর চেয়ে কম গ্রহণ করা উচিত হবে।

প্রকাশ থাকে যে, খোলার দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয়। তাই এ ধরনের তালাকের পর স্বামী-স্ত্রী যদি পুনরায় ঘর সংসার করতে চায় তাহলে দু’জন সাক্ষীর উপস্থিতিতে নতুন মহর ধার্য করে যথানিয়মে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ১৮৮৩০, ১৮৭৩৬, ১৮৭৪৬; কিতাবুল আছল ৪/৫৫৮; বাদায়েউস সানায়ে ৩/২৩৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৩/১৮৪; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ২/১৬১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪৮৮; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৪৪৫, ৪৪৩

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন