যিলক্বদ ১৪৩৮ || আগস্ট ২০১৭

ইবনে আবদুস সামাদ - সদর, মোমেনশাহী

৪১৩৩. প্রশ্ন

আমরা তো জানি, যে সমস্ত নামাযে নিম্নস্বরে কেরাত পড়তে হয়, সেগুলোতে ইমাম সাহেব ভুলে ছোট তিন আয়াত বা বড় এক আয়াত সশব্দে পড়লে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়। এমনিভাবে যে সমস্ত নামাযে সশব্দে কেরাত পড়তে হয় সেগুলোতে ঐ পরিমাণ কেরাত নিম্নস্বরে পড়লে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়।

একজন বললেন, সূরা ফাতিহার ক্ষেত্রে হুকুম একটু ভিন্ন। আমি জানতে চাচ্ছি, এক্ষেত্রে সূরা ফাতিহা ও অন্যান্য সূরার মাঝে হুকুমে কোনো পার্থক্য আছে কি না?

একজনের কাছে শুনেছি, বেহেশতী জেওরে বলা হয়েছে, এক্ষেত্রে ভুলে দুই-তিন শব্দ সশব্দে বা নিম্নস্বরে পড়ে ফেললেও সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়ে যায়।

বেহেশতী জেওরের এ মাসআলা কি সঠিক? সঠিক হলে কি তা শুধু সূরা ফাতেহার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, না সকল সূরার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য?

উত্তর

নামাযে আস্তে কেরাতের ক্ষেত্রে ভুলে সশব্দে বা জোরে কেরাতের ক্ষেত্রে নিম্নস্বরে পড়ার কারণে সাহু সিজদা ওয়াজিব হওয়ার মাসআলায় বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী সূরা ফাতেহা ও অন্যান্য সূরার মাঝে কোনো পার্থক্য নেই। অন্যান্য সূরার মত সূরা ফাতেহারও তিন আয়াত ভুলে সশব্দে বা নিম্নস্বরে পড়ে ফেললে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়।

বেহেশতী জেওরের উদ্ধৃতিতে যে মাসআলা আপনি শুনেছেন তা ঠিক শুনেননি। সশব্দে বা নিম্নস্বরে কেরাত পড়ার কারণে সাহু সিজদা ওয়াজিব হওয়ার মাসআলাটি বেহেশতী  জেওরে উল্লেখ করা হয়নি।

তবে বেহেশতী জেওরের পরিশিষ্ট বেহেশতী গাওহারে এ মাসআলাটি উল্লেখিত হয়েছে। সেখানে বরং উল্টো কথা আছে। তা হল, দুই-তিন শব্দ সশব্দে বা নিম্নস্বরে পড়ে ফেললে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয় না। বরং নামাযে সর্বনিম্ন যতটুকু পরিমাণ কেরাত পড়া ফরজ ততটুকু পরিমাণ ভুলে সশব্দে বা নিম্নস্বরে পড়লে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়। (দেখুন : বেহেশতী গাওহার পৃ. ৬৬)

-তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৪৭৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২৮; শরহুল মুনয়া পৃ. ৪৫৭; ফাতহুল কাদীর ১/৪৪০; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৪৩৬

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন