সফর ১৪৩৬ || ডিসেম্বর ২০১৪

আবু সালেহ মুহাম্মাদ মুসা - নতুন হাসপাতাল রোড, নেত্রকোণা

৩২৩৬. প্রশ্ন

 জামাতে নামায আদায় করার সময় কারো অযু ছুটে গেলে নিয়ত ছেড়ে দিয়ে রুকু-সিজদায় ইমামের অনুসরণ করা হয় তাহলে তা জায়েয হবে কি? 

একটি কিতাবে তা জায়েয বলা হয়েছে। কিন্তু আমাদের মসজিদের ইমাম ছাহেব বলছেন, এটা জায়েয হবে না। সঠিক মাসআলাটি জানতে চাই।

উত্তর

জামাতে নামায পড়া অবস্থায় কোনো ব্যক্তির অযু ছুটে গেলে সম্ভব হলে তৎক্ষণাৎ অযুর জন্য বের হয়ে যাবে। ইমামের নামায শেষ হওয়ার অপেক্ষায় বসে থাকবে না। সাহাবা-তাবেয়ীদের একাধিক আছার দ্বারা এ বিষয়টি প্রমাণিত।

যেমন আমর ইবনুল হারেস থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নামাযরত ব্যক্তির নাক দিয়ে রক্ত বের হলে কী করণীয় এ সম্পর্কে উমর ইবনুল খাত্তাব রা. বলেন, সে অযুর জন্য বের হয়ে যাবে এবং অযু করে আসবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৫৯৫০)

সালমান ফারেসী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তোমাদের মধ্যে কারো যদি নামাযে অযু ছুটে যায় তাহলে সে যেন বের হয়ে অযু করে আসে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৫৯৫৪)

আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা.-এর নাক থেকে নামায অবস্থায় রক্ত বের হলে তিনি ফিরে গিয়ে অযু করে আসতেন। (মুআত্তা মালেক, হাদীস : ৫০)

ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেছেন, নামায অবস্থায় যে ব্যক্তির নাক দিয়ে রক্ত বের হবে অথবা অযু ছুটে যাবে সে (মসজিদ থেকে) বের হয়ে যাবে এবং অযু করে আসবে। (কিতাবুল আছার ১/১৬২)

সাহাবা-তাবেয়ীন থেকে এ ধরনের আরো বর্ণনা রয়েছে। এ সকল বর্ণনা থেকে এ কথা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, নামাযে অযু ছুটে গেলে অযুর জন্য বের হয়ে যাবে।

অবশ্য মসজিদে মুসল্লী সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণে কাতারের মাঝখান থেকে বের হওয়া সম্ভব না হলে সেক্ষেত্রে নামায শেষ হওয়ার অপেক্ষায় বসে থাকতে পারবে। তবে এক্ষেত্রেও অযু ছুটে যাওয়ার পর লজ্জা, সংকোচ বা অন্য কোনো কারণে বিনা অযুতে ইমামের সাথে রুকু সিজদা করতে থাকা ঠিক হবে না। কোনো নির্ভরযোগ্য কিতাবে এমনটি করার কথা পাওয়া যায়নি। প্রশ্নোক্ত কিতাবের ঐ বক্তব্য ঠিক নয়।

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন