মুহাম্মাদ শাহাদাত হুসাইন - চিটাগাং বিল্ডার্স মেশিনারী লি.

২৬৩০. প্রশ্ন

অনেক লোক আছে, যারা নামায পড়ে, নিজেদেরকে মুসলমান বলে দাবি করে এবং তাওহীদে বিশ্বাসী, তথাপি তারা মনে করে, বিপদ-আপদ, দুঃখ-কষ্ট দূর করা ও কল্যাণ সাধনের ক্ষেত্রে পীর-বুযুর্গদের অনেক ক্ষমতা আছে। তাই তারা সরাসরি মৃত ও জীবিত পীরের নিকট প্রার্থনা করে, সাহায্য চায় এবং তাদের কাছে মুক্তি চায়। অথচ আমরা জানি, এ ধরনের ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কারো নেই। সঠিক বিষয়টি জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

কল্যাণ-অকল্যাণ, ভালো-মন্দ, উপকার-অপকার, দুঃখ-কষ্ট ইত্যাদির সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী একমাত্র আল্লাহ রাববুল আলামীন। তিনি ব্যতীত অন্য কারো এ ধরনের কোনো ক্ষমতা নেই। এর উপর ঈমান ও বিশ্বাস রাখা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অপরিহার্য। তাই বিপদ-আপদ বা দুঃখ-কষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়া বা কল্যাণ-অকল্যাণে সাহায্য চাওয়ার ক্ষেত্রে মুমিনের কর্তব্য হল, একমাত্র আল্লাহ রাববুল আলামীনের শরণাপন্ন হওয়া এবং তাঁর কাছেই সাহায্য চাওয়া। এগুলো আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো কাছে চাওয়া শিরক। কোনো পীর-বুযুর্গের নিকট বিপদ-আপদ থেকে মুক্তি লাভের জন্য এ মর্মে প্রার্থনা করা যে, আপনি আমাকে অমুক বিপদ থেকে উদ্ধার করেন বা অমুক বিষয়ে সাহায্য করেন-এটা সম্পূর্ণ শিরকি ও কুফরী কাজ।

উপায়-উপকরণের উর্ধ্বের কোনো বিষয়ে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে সাহায্য চাওয়া শিরক ফিল ইসতিআনা, যা  اياك  نستعين এর অঙ্গীকার পরিপন্থী। আল্লাহ তাআলা আমাদের হেফাযত করুন।

তবে যদি জীবিত কোনো হক্কানী পীর-বুযুর্গ বা আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের নিকট এ মর্মে দুআ চাওয়া হয় যে, আপনি আল্লাহর কাছে দুআ করেন যেন আল্লাহ তাআলা আমাকে বিপদ-আপদ থেকে উদ্ধার করে দেন এবং এক্ষেত্রে দুআপ্রার্থীর এ বিশ্বাস থাকে যে, তিনি আল্লাহর মাহবুব ও নৈকট্যভাজন বান্দা হিসেবে আশা করা যায় যে, আল্লাহ তাআলা তাঁর  দুআ কবুল করবেন। তাহলে এতে কোনো সমস্যা নেই। বরং এটি হাদীস ও সাহাবীগণের আমল দ্বারা প্রমাণিত।-ফাতাওয়া উলামাইল বালাদিল হারাম ৬০-৬২

কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-তোমাদের প্রতিপালক বলেছেন, আমাকে ডাক, আমি তোমাদের দুআ কবুল করব।-সূরা মুমিন : ৬০

অন্যত্র ইরশাদ করেছেন, বলে দাও, আমি (মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)  তোমাদের কোনো ক্ষতি করার এখতিয়ার রাখি না এবং কোনো উপকার করারও না।-সূরা জিন : ২১

অপর এক আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ যদি তোমাকে কোনো কষ্ট দেন তবে এমন কেউ নেই তিনি ছাড়া, যে তা দূর করবে আর তিনি যদি তোমার কোনো মঙ্গলের ইচ্ছা করেন তবে এমন কেউ নেই, যে তার অনুগ্রহ রদ করবে। তিনি নিজ বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা অনুগ্রহ করেন। তিনি অতিক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।-সূরা ইউনুস : ১০৭

আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে সম্বোধন করে বলেছেন, হে বৎস! তুমি যদি ( কোনো কিছু) চাও তবে আল্লাহর নিকট চাও। আর যদি সাহায্য প্রার্থনা কর তবে আল্লাহর কাছেই সাহায্য প্রার্থনা কর। জেনে রেখো, যদি সকল মানুষ সংঘবদ্ধভাবে তোমার উপকার করতে চায় তবে তারা ততটুকু উপকারই করতে পারবে যতটুকু আল্লাহ তোমার জন্য লিখে রেখেছেন। আর যদি তারা তোমার ক্ষতি সাধন করতে চায় তবে ততটুকুই ক্ষতি করতে পারবে যতটুকু আল্লাহ নির্ধারণ করে রেখেছেন।

-জামে তিরমিযী, হাদীস : ২৫১৬; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২৬৬৯; তাফসীরে রূহুল মাআনী ৬/১২৮; আলবাহরুর রায়েক ২/২৯৮; হাশিয়াতুত তহতাবী আলালমারাকী ৩৭৮

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আরিফ - ঢাকা

২৬৩১. প্রশ্ন

আমাদের বাড়িতে বালতিতে পানি রাখা থাকে। সাধারণত আমি বালতি থেকে বদনা বা মগ দিয়ে পানি নিয়ে অযু করি।  মাঝেমধ্যে তাড়াহুড়ার কারণে বা পাত্র না পাওয়ার কারণে বালতিতে ডান হাত (কব্জি পর্যন্ত) ডুবিয়ে পানি নিয়ে অযুর জন্য হাত ধুই। একদিন আমাকে এভাবে অযু করতে দেখে আমার এক আত্মীয় বললেন, পানিতে হাত ডুবানোর কারণে তো পানি মুস্তামাল ও ব্যবহৃত হয়ে গেল। সুতরাং সেই পানি দ্বারা তো আর অযু হবে না। প্রশ্ন হল, আমি এভাবে অযু করে যে নামাযগুলো আদায় করেছি সেগুলো দোহরাতে হবে কিনা। জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

পানি নেওয়ার জন্য কোনো পাত্রে হাত ঢুকালেই তা ব্যবহৃত হয়ে যায় না। তাই এক্ষেত্রে আপনার ঐ সকল অযু ও নামায সহীহ হয়েছে। অবশ্য এক্ষেত্রে প্রথমে ছোট কোনো পাত্র দিয়ে পানি নিয়ে উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত ধুয়ে নেওয়া ভালো।

-আলমুহীতুল বুরহানী ১/২৮০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৬; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৫; রদ্দুল মুহতার ১/১১২

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ নূরুল ইসলাম - দিনাজপুর

২৬৩২. প্রশ্ন

আমি কুরবানীর পশু খরিদ করার জন্য হাটে যাই। অসতর্কতাবশত একটি গরুর পায়ের নিচে পা পড়ে আমার পায়ের অগ্রভাগ মারাত্মক জখম হয়। ডাক্তার ক্ষতস্থানে ব্যান্ডেজ করে দিয়েছেন। তিনি ব্যান্ডেজ খোলা ও সেখানে পানি লাগাতে নিষেধ করেছেন। এ অবস্থায় আমি কীভাবে অযু করব?

 

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় সুস্থ হওয়া পর্যন্ত অযু-গোসলের জন্য ব্যান্ডেজের উপর মাসেহ করবেন এবং পায়ের অবশিষ্ট সুস্থ অংশটুকু সম্ভব হলে অন্যান্য অঙ্গের ন্যায় ধুয়ে নিবেন। আর যদি তা ধুতে গেলে ব্যান্ডেজ ভিজে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে তাহলে পায়ের এ অংশও মাসেহ করতে পারবেন।

-সুনানে বায়হাকী ১/২২৮; আলমুহীতুল বুরহানী ১/৩৫৭; বাদায়েউস সানায়ে ১/৯০; শরহুল মুনইয়া ১১৬-১১৭; আলবাহরুর রায়েক ১/১৮৭

শেয়ার লিংক

বিনতে ইহসান - নেত্রকোণা

২৬৩৩. প্রশ্ন

ঋতুস্রাব চলাকালে গিলাফ সহকারে বা অন্য কোনো পবিত্র কাপড় দিয়ে কুরআন মজীদ স্পর্শ করতে কোনো সমস্যা আছে কি? জানিয়ে কৃতজ্ঞ করবেন।

উত্তর

ঋতুকালে বা অপবিত্র অবস্থায় কুরআন মজীদ স্পর্শ করা নাজায়েয। হ্যাঁ, এ অবস্থায় কুরআন মজীদ ধরার প্রয়োজন হলে গিলাফ বা অন্য কোনো পবিত্র কাপড় দিয়ে ধরা যাবে। তবে পরিহিত বস্ত্রের আঁচল বা তার অন্য কোনো অংশ দ্বারা স্পর্শ করা উচিত নয়।

-আলমুহীতুল বুরহানী ১/৪০২; রদ্দুল মুহতার ১/২৯৩; আলবাহরুর রায়েক ১/২০১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৯

শেয়ার লিংক

এম এ হান্নান ভুইয়া - ১০/এ-২ তল্লাবাগ, ঢাকা

২৬৩৪. প্রশ্ন

যোহর ও আসরের নামায কাযা হয়েছে। মাগরিবের ওয়াক্ত শেষ হওয়ার ২/৩ মিনিট বাকি আছে। এক্ষেত্রে কোন ওয়াক্তের নামায আগে আদায় করবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বাস্তবেই যদি মাগরিব শেষ হতে মাত্র দুই তিন মিনিটই বাকি থাকে তাহলে মাগরিবের ফরয নামাযটি আগে আদায় করে নিবে। যেন মাগরিবের নামাযও কাযা না হয়ে যায়। এরপর যোহর ও আসরের কাযা নামাযগুলো পড়বে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৪৮; আলবাহরুর রায়েক ২/৮২; শরহুল মুনয়াহ ৫৩০

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ মাহবুবুর রশীদ - ৩৬ পূর্ব কাজীপাড়া, মিরপুর, ঢাকা

২৬৩৫. প্রশ্ন

মাঝেমধ্যে বৃষ্টির কারণে আমাদের অফিসেই জামাতের সাথে নামায আদায় করতে হয়। জানার বিষয় হল, আযান না দিয়ে অফিসে জামাতের সাথে নামায আদায় করা সহীহ হবে কি?

উত্তর

বাসা বা অফিসে জামাতের জন্য মহল্লার মসজিদের আযানই যথেষ্ট। তাই অফিসে আযান না দিয়েও জামাতে নামায পড়া যাবে। অবশ্য এক্ষেত্রেও আযান দেওয়া মুস্তাহাব।

উল্লেখ্য, ছাতার ব্যবস্থা থাকলে সাধারণ বৃষ্টির কারণে মসজিদের জামাত ত্যাগ করা উচিত নয়। কেবল প্রবল বর্ষণের ক্ষেত্রেই মসজিদের জামাতে উপস্থিত না হওয়ার অনুমতি রয়েছে।

-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ২/৩৫৯; মাবসূত, সারাখসী ১/১৩৩; আলবাহরুর রায়েক ১/২৬৫; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৭৮

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - মিরপুর, ঢাকা

২৬৩৬. প্রশ্ন

আমি প্রায় দুই সপ্তাহ ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত ছিলাম। জ্বরের তীব্রতায় কয়েক ওয়াক্ত নামায বসে আদায় করেছি। মাঝে একদিন শরীর হালকা লাগছিল তাই দাঁড়িয়ে নামায শুরু করি। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই ক্লান্তি ও চোখে অন্ধকার বোধ করায় অর্ধেক নামায বসে আদায় করি। এভাবে আমার নামায আদায় হয়েছে কি?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে নামায শুরু করার পর বাকি নামায বসে পড়ার কারণে নামাযের কোনো ক্ষতি হয়নি। কেননা দাঁড়িয়ে নামায পড়া অধিক কষ্টকর হলে বসে নামায পড়া জায়েয। এমনকি নামাযের মাঝে দাঁড়ানো কষ্টকর হয়ে গেলেও অবশিষ্ট নামায বসে আদায় করা জায়েয।

-সহীহ বুখারী ১/১৫০; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৪; আলবাহরুর রায়েক ২/১১৬; মাবসূত, সারাখসী ১/২১৮; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৮৮

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ রশীদ আহমদ - সদর দক্ষিণ, কুমিল্লা

২৬৩৭. প্রশ্ন

আমার বন্ধু সাঈদ। তার বাড়ি কুমিল্লা লাকসাম। সে চট্টগ্রামে এক ঔষধ কোম্পানিতে চাকরি করে। বাড়ি থেকে ঐ কোম্পানির দূরত্ব প্রায় দুইশত কিলোমিটার। তাই ওখানে অস্থায়ীভাবে একটি বাড়ি নির্মাণ করে এবং সেখানে সাত, আট দিন থাকার নিয়তে কুমিল্লা থেকে বের হয় এবং সাত আট দিন থাকার পর পরই কুমিল্লায় ফিরে আসে। এখন জানতে চাই, ঐ বাড়িতে থাকা অবস্থায় সে কি মুকীম হবে, নাকি মুসাফির? জানালে কৃতজ্ঞ থাকব। উল্লেখ্য, ঐ বাড়িতে সে একাই থাকে।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় আপনার বন্ধু চট্টগ্রামের ঐ বাড়িতে এক নাগাড়ে ১৫ দিন অবস্থানের নিয়ত না করা পর্যন্ত মুসাফির থাকবে। সুতরাং একবার যদি তিনি সেখানে ১৫ দিন বা তার বেশি সময় অবস্থানের নিয়ত করেন তাহলে পরবর্তীতে ঐ এলাকার বসবাস ত্যাগ না করা পর্যন্ত অল্প সময়ের জন্যও সেখানে গেলে মুকীম গণ্য হবেন।

-বাদায়েউস সানায়ে ১/২৬৮, ১/১৮০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৫; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩১; মাজমাউল আনহুর ১/২৪৩

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ রহিমা খাতুন - বরিশাল

২৬৩৮. প্রশ্ন

আমার স্বামী মৃত্যুশয্যায় শায়িত। আমি সবসময় তার খেদমতে নিয়োজিত। এখন আমার একান্ত ইচ্ছা, তার ইন্তিকালের পর তাকে নিজ হাতে গোসল দিব। আমি জানতে চাই, আমার জন্য এটা জায়েয হবে কি?

উত্তর

হ্যাঁ, আপনার মৃত স্বামীকে আপনি গোসল দিতে পারবেন। বিশুদ্ধ বর্ণনায় এসেছে যে, হযরত আবু বকর রা.-এর ইন্তিকালের পর তার স্ত্রী আসমা বিনতে উমাইস রা. তাকে গোসল দিয়েছিলেন। 

(মুআত্তা মালিক, পৃ: ১৭৯); সুনানে আবু দাউদ ৪/৩০, হাদীস : ৩১৩৩; শরহু মুখতাসারিত তহাবী ২/২০৪; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩৩; আলমাবসূত সারাখসী ২/৬৯; আলবাহরুর রায়েক ২/১৭৪; রদ্দুল মুহতার ২/১৯৮

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আতাউল্লাহ - নেত্রকোণা

২৬৩৯. প্রশ্ন

রোযা রাখা অবস্থায় গোসল করতে গিয়ে আমার কানে পানি ঢুকে গেছে। এতে আমার রোযার কোনো সমস্যা হয়েছে কি? দয়া করে জানাবেন।

উত্তর

রোযা অবস্থায় কানের ভেতর পানি গেলে রোযার ক্ষতি হয় না। তাই আপনার ঐ রোযা আদায় হয়ে গেছে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৪৭; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৯৬; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৯

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবুল হাসান - টেকেরহাট, মাদারীপুর

২৬৪০. প্রশ্ন

পিঠে তীব্র ব্যথার কারণে গত মহররমের রোযা অবস্থায় আমি শিঙ্গা লাগিয়েছি। এতে আমার রোযা ভঙ্গ হয়েছে কি? জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

শিঙ্গা লাগালে বা শরীর থেকে রক্ত বের হলে রোযা ভঙ্গ হয় না। তাই আপনার রোযাও ভঙ্গ হয়নি।

উল্লেখ্য, শিঙ্গা লাগানোর দ্বারা যদি এত বেশি দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কা হয়, যার দরুণ রোযা রাখা কষ্টকর হয়ে যায়, তবে সেক্ষেত্রে তা মাকরূহ হবে।

-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২৫৯৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৩৯৫; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৩; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৯৫

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - মুহাম্মদপুর, ঢাকা

২৬৪১. প্রশ্ন

গত বছর শাবান মাসের ২৯ তারিখ দুপুরে আমার পিতা সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন। আঘাত পেয়ে তিনি এক দিনেরও কিছু বেশি সময় অচেতন থাকেন। পরের দিন শুরু হয়েছিল রমযান মাস। পহেলা রমযানে আসরের কিছুক্ষণ আগে জ্ঞান ফিরে পেয়ে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবশিষ্ট সময় পানাহার না করে কাটান। এখন প্রশ্ন হল, আমার পিতার ঐ রোযাটি আদায় হয়েছে কি?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার পিতার ঐ দিনের রোযা আদায় হয়নি। ঐ রোযা পরে কাযা করে নিতে হবে। কেননা তিনি ঐ দিন অনাহারে থাকলেও অচেতন থাকার কারণে যথাসময়ে তার রোযার নিয়ত করা হয়নি। আর রোযা সহীহ হওয়ার জন্য যথাসময়ে নিয়ত করা জরুরি। নিয়ত ছাড়া শুধু পানাহার থেকে বিরত থাকা যথেষ্ট নয়। আর রমযানের রোযা সহীহ হওয়ার জন্য রোযার পূর্বের দিনের সূর্যাস্তের পর থেকে রোযার দিনের অর্ধেকের আগে আগে নিয়ত করা আবশ্যক।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৪৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৫২; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৩০; মাবসূত, সারাখসী ৩/৮৭; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৩২

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ তাওহীদুল ইসলাম - সদর দক্ষিণ, কুমিল্লা

২৬৪২. প্রশ্ন

আমি গত রমযানে একদিন দিনের বেলা ভুলক্রমে খেয়ে ফেলি। খাওয়া শেষে রোযা ভেঙ্গে গেছে মনে করে ইচ্ছাকৃতভাবে আরো খাই। প্রশ্ন হল, এ অবস্থায় আমাকে ঐ রোযার কাযা এবং কাফফারা দুটোই আদায় করতে হবে, নাকি শুধু কাযা আদায় করে নিলেই চলবে? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

প্রশ্নে বর্ণিত অবস্থায় আপনাকে রোযাটির কাযা আদায় করতে হবে, কাফফারা আদায় করতে হবে না।

প্রকাশ থাকে যে, রোযা অবস্থায় ভুলবশত পানাহার করলে রোযা নষ্ট হয় না। তাই প্রশ্নোক্ত অবস্থায় ভুলবশত খাওয়ার পর ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করা ঠিক হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে নিজ থেকে সিদ্ধান্ত না নিয়ে কোনো আলিম থেকে মাসআলা জেনে নেওয়া আবশ্যক ছিল।

-আলজামিউস সগীর, ইমাম মুহাম্মাদ রাহ. ১৪১; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২১৬; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪০১; আলবাহরুর রায়েক ২/২৯৩; বাদয়েউস সানায়ে ২/২৫৭

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ বজলু খান - বাড্ডা, ঢাকা

২৬৪৩. প্রশ্ন

আমার দাদা প্রায় প্রতি বছরই রমযানের শেষ দশ দিন ইতিকাফ করেন। গত বছরও ইতিকাফ করেছেন। কিন্তু তিনি এত অসুস্থ ছিলেন যে, রোযা রাখতে সক্ষম হননি। তাই রোযা ছাড়াই ইতিকাফ পূর্ণ করেছেন। জানতে চাই, দাদার ইতিকাফ কি আদায় হয়েছে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার দাদার ইতিকাফটি সুন্নত ইতিকাফ হয়নি। নফল ইতিকাফ হয়েছে। কারণ সুন্নত ইতিকাফের জন্য রোযা রাখা শর্ত। উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত আছে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রোযা ছাড়া ইতিকাফ হয় না।-সুনানে বায়হাকী ৪/৩১৭; মুসতাদরাকে হাকেম ২/৮১

অন্য বর্ণনায় আছে, সাহাবী আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, ইতিকাফকারীর জন্য রোযা রাখা আবশ্যক।

-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৬/৩০০; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২২১; আহকামুল কুরআন, জাসসাস ১/২৪৫; রদ্দুল মুহতার ২/৪৪২

শেয়ার লিংক

সাঈদুর রহমান - নাটোর

২৬৪৪. প্রশ্ন

এক মহিলা হজ্ব করবে। তার বড় ভাই সৌদীতে চাকরি করে। ঢাকা বিমান বন্দর পর্যন্ত তার সঙ্গে তার ছোট ভাই থাকবে। ঢাকা থেকে জেদ্দা বিমানবন্দর পর্যন্ত মামাতো বোন ও তার স্বামী সাথে থাকবে। জেদ্দা বিমানবন্দর থেকে তার বড় ভাই তাকে নিয়ে যাবে এবং তার সঙ্গেই হজ্ব করবে। প্রশ্ন হল, সে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে জেদ্দা পর্যন্ত তার মামাতো বোন ও তার স্বামীর সাথে হজ্ব করার জন্য যেতে পারবে কি?

উত্তর

মাহরাম ছাড়া নারীর জন্য হজ্বের সফরে যাওয়াও নিষেধ। মামাতো বোনের স্বামী মাহরাম নয়। তাই প্রশ্নোক্ত মহিলা মামাতো বোন ও তার স্বামীর সাথে হজ্বে যেতে পারবে না। বরং স্বামী বা কোনো মাহরামের সাথেই যেতে হবে। হাদীস শরীফে এসেছে, ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোনো মহিলা তার মাহরাম ব্যতিরেকে সফর করবে না এবং কোনো পুরুষ মাহরাম ছাড়া কোনো মহিলার নিকট যাবে না। অতপর এক ব্যক্তি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি অমুক সৈন্যদলের সাথে জিহাদে যেতে চাই আর আমার স্ত্রী হজ্বে যেতে চায়। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমিও তার সাথে হজ্বে যাও।

-সহীহ বুখারী ১/১৪৭, ১/২৫০; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৯৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৬৪; মুখতাসারুত তহাবী ৫৯; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৭৭; যুবদাতুল মানাসিক ৩২

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ মাসুম - মোমেনশাহী

২৬৪৫. প্রশ্ন

আমার এক প্রতিবেশী বেশ অর্থ-সম্পদের মালিক। হজ্বের ইচ্ছা থাকলেও বিভিন্ন কারণে তার হজ্বে যাওয়া পিছিয়ে যাচ্ছিল। গতবার ঠিক করেছিলেন হজ্বে যাবেন। কিন্তু হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর আগে বদলি হজ্বের ওসিয়ত করে যেতে পারেননি। এখন তার ছেলে পিতার পক্ষ থেকে বদলি হজ্ব করাতে চায়। অসিয়ত ছাড়া মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে বদলি হজ্ব করা জায়েয আছে কি? এবং এর মাধ্যমে মাইয়্যেতের জিম্মায় থাকা ফরয হজ্ব আদায় হবে কি? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

মৃত ব্যক্তি অসিয়ত না করে গেলেও তার পক্ষ থেকে বদলি হজ্ব করা জায়েয এবং এর মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির জিম্মায় থাকা ফরয হজ্ব আদায় হয়ে যাওয়ার আশাও করা যায়। তবে এক্ষেত্রে যারা উদ্যোগ গ্রহণ করবে হজ্বের ব্যয়ভার তাদের জিম্মায় থাকবে। মৃত ব্যক্তির ইজমালি সম্পদ থেকে তা নেওয়া যাবে না। আবদুল্লাহ ইবনে বুরাইদা রাহ. তার পিতা বুরাইদাহ রা. থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, জনৈকা মহিলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে এসে আরজ করলেন যে, আমার মা হজ্ব না করেই মৃত্যু বরণ করেছেন। আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ্ব করতে পারি? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন, হ্যাঁ, তুমি তার পক্ষ থেকে হজ্ব কর।-জামে তিরমিযী ২/২৫৭, হাদীস : ৯২৯

প্রকাশ থাকে যে, হজ্ব ইসলামের অন্যতম ফরয বিধান। সামর্থ্যবানদের জন্য বিলম্ব না করে তা আদায় করে নেওয়া জরুরি। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও বিলম্ব করা গুনাহ।

-কিতাবুল আছল ২/৫১১; রদ্দুল মুহতার ২/৫৯৯; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৬৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৫৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/৬০৪; মানাসিক মোল্লা আলী কারী পৃ. ৪৩৪

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ হেলালুদ্দীন - কালাপানি, মিরপুর, ঢাকা

২৬৪৬. প্রশ্ন

আমি গত বছর হজ্বে গিয়েছিলাম। ইহরাম অবস্থায় একদিন হোঁচট খেয়ে পড়ে যাই। ফলে ডান পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলির নখটির বেশিরভাগ ভেঙ্গে যায়। ওটা ঝুলে থাকায় খুব কষ্ট হচ্ছিল। তাই কেটে ফেলে দিই। এতে কি আমার উপর কোনো দম বা সদকা ওয়াজিব হয়েছিল? কুরআন-হাদীসের আলোকে জানাবেন।

উত্তর

ইহরাম অবস্থায় ভেঙ্গে যাওয়া  নখ কেটে ফেলার অনুমতি আছে। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ভাঙ্গা নখটি কেটে ফেলার কারণে আপনার উপর কোনো কিছু ওয়াজিব হয়নি। এক বর্ণনায় এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, ইহরাম অবস্থায় নখ ভেঙ্গে গেলে কেটে ফেলবে।

-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৮/৫৩, হাদীস : ১২৯০৩; মুয়াত্তা মালেক ১৩৯; কিতাবুল আছল ২/৪৩৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৪৪; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮৯; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪২৫

শেয়ার লিংক

আবদুল্লাহ মাহমুদ - ঢাকা

২৬৪৭. প্রশ্ন

আমরা উত্তরাধিকার সূত্রে অনেক অর্থ-সম্পত্তির মালিক হয়েছি। এ বছর আমি ও আমার আম্মু হজ্বে যাব। আমার এক ছোট ভাই আছে। সে এখনও সাবালক হয়নি। তবে এতটুকু বুঝমান যে, আমাদের দেখাদেখি হজ্বের সকল বিধি-বিধান পালন করতে পারবে। এখন সে আমাদের সাথে হজ্ব করলে বালেগ হওয়ার পর তাকে পুনরায় হজ্ব করতে হবে কি?

উত্তর

নাবালেগের উপর হজ্ব ফরয নয়। নাবালেগ অবস্থায় হজ্ব করলে তা নফল হিসেবে গণ্য হবে। তাই নাবালেগ অবস্থায় হজ্ব করলে বালেগ হওয়ার পর হজ্ব করার সামর্থ্য থাকলে নিজের ফরয হজ্ব করা জরুরি হবে।

-মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস : ১৮১২; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ৩০৫০; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৩; মানাসিক ৩৭; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮১

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম - শেরপুর

২৬৪৮. প্রশ্ন

আমার ছোট দুটি মেয়ে আছে। একজনের বয়স চার বছর। আরেকজনের বয়স ছয় বছর। মোট আট ভরি স্বর্ণ দিয়ে দুই মেয়ের জন্য আমি দুটি গলার হার এবং দুই জোড়া কানের দুল তৈরি করেছি। তারা যেহেতু এখনো ছোট তাই তাদেরকে হস্তান্তর করিনি। বর্তমানে সেগুলো আমার কাছেই আছে। তবে আমার স্ত্রী এবং দুই ছেলেকে বলে রেখেছি যে, অলঙ্কারগুলোর মালিক দুই মেয়ে। অন্য কেউ নয়। জানতে চাই,

হস্তান্তর না করার কারণে এগুলো কি আমার মালিকানায় রয়ে গেছে? আমার কি এগুলোর যাকাত আদায় করতে হবে?

 

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে অলঙ্কারগুলোর মালিক আপনার দুই মেয়েই।  কেননা পিতা তার নাবালেগ সন্তানকে শুধু মৌখিকভাবে কোনো কিছু দিলেই সন্তান ঐ বস্ত্তর মালিক হয়ে যায়। এর জন্য নাবালেগদের হস্তগত করা আবশ্যক নয়। অতএব আপনাকে এগুলোর যাকাত আদায় করতে হবে না। আর এখন ঐ মেয়েরাও যেহেতু নাবালেগ তাই তাদের উপরও এখন সেগুলোর যাকাত আদায় করা ফরয নয়। তবে তারা যখন বালেগ হবে তখন অলঙ্কারগুলো যদি অন্যান্য সম্পদের সাথে মিলে নেসাব পরিমাণ হয়, তাহলে নিয়মানুযায়ী মেয়েরা এর যাকাত আদায় করবে।

-মুয়াত্তা ইমাম মালেক ৩২২; আসসুনানুল কুবরা ৬/১৭০; জামিউ আহকামিস সিগার ১/৪৯, ২৫০; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/২৭৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৫৯; আলবমাবসূত, সারাখসী ১২/৫১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৭২

শেয়ার লিংক

শিববীর আহমদ - নেত্রকোণা

২৬৪৯. প্রশ্ন

আমার ছোট ভাই বিদেশ থাকে। সে বাড়ি নির্মাণের জন্য ত্রিশ লাখ টাকা পাঠিয়েছে। কিন্তু যে জমিতে বাড়ি নির্মাণের কথা ছিল তা নিয়ে তখন মামলা চলছিল। তাই নির্মাণ কাজে হাত দেওয়া যায়নি। এদিকে মামলা নিষ্পত্তি হতে এক বছর লেগে গেল। এখন এই টাকার যাকাত দিতে হবে কি? জানিয়ে কৃতজ্ঞ করবেন।

উত্তর

প্রশ্নে বর্ণিত টাকাগুলো বাড়ি নির্মাণের জন্য বরাদ্দ হলেও এর উপর বছর অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার কারণে তার যাকাত আদায় করতে হবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ২/৯২; রদ্দুল মুহতার ২/২৬২; আলবাহরুর রায়েক ২/২০৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/১৫৪

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ ফারুক - আদর্শ নগর, কালশী, ঢাকা

২৬৫০. প্রশ্ন

আমার ব্যাংক একাউন্টে কিছু টাকা জমা আছে। তার কিছু সুদও আছে। প্রতি বছর যাকাত আদায় করার সময় পেরেশান হয়ে যাই এই ভেবে যে, মূল টাকার সাথে সুদী টাকার যাকাত দিব কি না? কিন্তু কোনো মুফতী সাহেবের কাছে জিজ্ঞাসা না করে প্রতি বছরই মূল টাকার যাকাতের সাথে সুদী টাকারও যাকাত দিতাম। এক বন্ধু আমকে বলল, সুদের উপর তো যাকাত ফরয হয় না। এখন আমি মুফতী সাহেবের কাছে সঠিক বিষয়টি জানতে চাই।

উত্তর

আপনার ব্যাংক একাউন্টে গচ্ছিত মূল টাকার আড়াই পার্সেন্ট যাকাত দিবেন। আর সুদী টাকা পুরোটাই ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া হারামের বোঝা থেকে নিষ্কৃতির জন্য সদকা করে দিবেন।

উল্লেখ্য, যাকাত একটি আর্থিক ইবাদত, যা একমাত্র হালাল সম্পদের উপর আসে এবং তা হালাল সম্পদ দ্বারাই আদায় করতে হয়। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তাআলা একমাত্র হালাল বস্ত্তই কবুল করেন।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৪১০

অন্য বর্ণনায় এসেছে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, হারাম সম্পদ থেকে সদকা কবুল করা হয় না।

-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ২২৪; আননুতাফ ফিলফাতাওয়া ১১২; ফাতহুল বারী ৩/৩২৮; ফিকহুন নাওয়াযিল ৩/১৪৪

শেয়ার লিংক

মাওলানা মিনহাজ - মুন্সিগঞ্জ

২৬৫১. প্রশ্ন

আমার ছোট ছেলের কিছু টাকা আমার নিকট আছে। যা একটি একাউন্টে রাখা হয়েছে। বর্তমানে তার বয়স ৪। এ মুহূর্তে তার টাকার কোনো জরুরত নেই। কেননা তার সব খরচ আমাদের উপর। এক্ষেত্রে আমার জিজ্ঞাসা হল, আমি তার টাকা ঋণ হিসেবে ব্যবহার করতে পারব কি?

 

 

উত্তর

নাবালেগ সন্তানের টাকা পিতার জন্য ঋণ হিসেবে ব্যবহার করা বৈধ। তাই আপনি ঐ ছেলের টাকা ঋণ হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।

-ফয়যুল কাদীর ৩/৫০; ফাতহুল কাদীর ৬/৪০৫; জামিউ আহকামিস সীগার ১/২৭৮; আলবিনায়াহ ১১/২৭৭

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আতহার আলী - পাকা হল রোড, ঢাকা

২৬৫২. প্রশ্ন

একজন কবিরাজ চিকিৎসার জন্য তিনটি পুতুল বানিয়ে মানুষের মতো জানাযা পড়িয়ে দাফন করতে বলেছে। এভাবে চিকিসা গ্রহণ করা কি জায়েয?

 

 

উত্তর

কবিরাজের নির্দেশিত ঐ চিকিৎসা পদ্ধতিটি সম্পূর্ণ শরীয়তপরিপন্থী। সুতরাং তার কথা অনুযায়ী আমল করার কোনো সুযোগ নেই। কেননা এতে একাধিক শরীয়তবিরোধী কাজ রয়েছে। যথা-

১. পুতুল বানানো, যা নাজায়েয। হাদীসে এ বিষয়ে কঠিন সতর্কবাণী এসেছে। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের দিন সবচেয়ে কঠিন শাস্তি হবে তাদের, যারা প্রতিকৃতি তৈরি করে।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫৯৫০

২. পুতুলের জানাযা পড়া। জানাযা শরীয়তের একটি নির্ধারিত ইবাদত, যা মৃতের মাগফিরাতের উদ্দেশ্যে বিশেষ পদ্ধতিতে আদায় করা হয়। কোনো পুতুলের জন্য জানাযা পড়া শরয়ী হুকুমের চরম বিকৃতি, যা বিদআত হওয়ার পাশাপাশি কুফরি তুল্য গুনাহ।

৩. চিত্র, মূর্তি, ভাস্কর্য সামনে রেখে পূজা-অর্চনা করা মুশরিক-পৌত্তলিক সম্প্রদায়ের কাজ। পুতুল সামনে রেখে জানাযা পড়ার দৃশ্যটি সেসব শিরকী কাজের সঙ্গেই সাদৃশ্যপূর্ণ। আর এভাবেই মূর্তিপূজার দ্বার উন্মোচন হয়।

৪. এছাড়া মৃত ব্যক্তির মতো করে পুতুল দাফন করা একটি গর্হিত কাজ, শরয়ী বিধানের সাথে ঠাট্টার শামিল। তাই কোনো ঈমানদারের জন্য এ পদ্ধতি অবলম্বন করা সম্পূর্ণ হারাম। আর এ ধরনের কবিরাজ থেকে ঝাড়-ফুঁক নেওয়া ও তদবীর গ্রহণ করাও নাজায়েয।

-সহীহ বুখারী, ১/১১২, হাদীস : ৪৩৪; আলইলাম, ইবনে হাজার হায়তামী ২/৩৪৮; আলবাহরুর রায়েক ২/১৭০; ফাতহুল বারী ১০/২০৬; মাজমাউল আনহুর ২/৫১০

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ - বরিশাল

২৬৫৩. প্রশ্ন

আমি এক আত্মীয়ের কাছ থেকে ৪০,০০০/- টাকা ঋণ নিই এবং সেই টাকা নিয়ে আমার বেশ উপকার হয়। সে আমাকে বলেছে, তোমার যে পরিমান ইচ্ছা বাড়িয়ে দিও। আমার উপকারের বিনিময় হিসেবে তাকে অতিরিক্ত কিছু দেওয়া যাবে কি?

 

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঋণদাতা যেহেতু ঋণের ৪০,০০০/- টাকা থেকে কিছু অতিরিক্ত দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাই এ অতিরিক্ত দেওয়া-নেওয়া সুদ হবে।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবী ফুযালাহ বিন উবায়দ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যে ঋণের সাথে অতিরিক্ত কিছু দেওয়া নেওয়ার শর্ত থাকে তা সুদ।-আসসুনানুল কুবরা, বায়হাকী ৫/৩৫০

এমনিভাবে ইবনে সীরিন রাহ. থেকে বর্ণিত, জনৈক ব্যক্তি অপর এক ব্যক্তিকে তার ঘোড়ায় আরোহণের শর্তে কিছু দিরহাম ঋণ দিল। ইবনে মাসউদ রা.কে তা জানানো হলে তিনি বললেন, তার জন্য ঘোড়ায় আরোহণ করাটা সুদ হয়েছে।-প্রাগুক্ত

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তাআলা সুদ দাতা, গ্রহীতা, সাক্ষী ও লেখক সকলকে অভিসম্পাত করেন।

-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৩৭২৫; ইলাউস সুনান ১৪/৫১৫; মাবসূত, সারাখসী ১৪/৩৫; বাদায়েউস সানায়ে ৬/৫১৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৯/৩৮৮

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ হুযায়ফা - শুক্রাবাদ, ঢাকা

২৬৫৪. প্রশ্ন

আমি অগ্রিম ভাড়া প্রদান করে জনৈক ব্যক্তি থেকে দশ বছর মেয়াদে একটি গুদাম ভাড়া নেই। যার পাঁচ বছর অতিবাহিত হয়ে গেছে। এখন মালিক বিশেষ প্রয়োজনে ছয় মাসের জন্য ঐ গুদামটি আমার কাছ থেকে ভাড়ায় নিতে চাচ্ছে। জানার বিষয় হল, আমার জন্য গুদামটি মালিকের নিকট ভাড়া দেওয়া বৈধ হবে কি?

 

 

উত্তর

না, মালিকের নিটক দোকানটি ভাড়া দেওয়া বৈধ হবে না। কারণ ভাড়া নেওয়া বস্ত্ত পুনরায় মালিকের নিকট ভাড়া দেওয়া বৈধ নয়।

এক্ষেত্রে মালিককে যে ছয় মাসের জন্য দোকানটি দিতে চাচ্ছেন সেই ছয় মাসের জন্য আপনার ভাড়া চুক্তি বাতিল করতে হবে। মালিক এ কয় মাসের ভাড়া আপনাকে ফেরত দিয়ে দিবে। আপনি ছয় মাসের জন্য যত টাকা তাকে প্রদান করেছিলেন  তত টাকাই ফেরত নিতে পারবেন। এর চেয়ে বেশি নেওয়া-দেওয়া জায়েয হবে না।

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৫/৫১; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৯১; আলমুহীতুল বুরহানী ১১/২৭০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৪২৫

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ সাদেকুর রহমান - বিবিরবাগিচা, যাত্রাবাড়ি, ঢাকা

২৬৫৫. প্রশ্ন

কিছুদিন পূর্বে আমার বন্ধু শাকেরের বিবাহ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করি। খাবারের পর বিবাহ পড়ানো হবে। তাই উভয় পক্ষের সকলেই উপস্থিত হল। মেয়ে পক্ষের ওকিল অর্থাৎ মেয়ের বাবা কাযী সাহেবকে বিবাহ পড়ানোর সম্পূর্ণ অধিকার দিয়েছে। অতপর কাযী সাহেব কনের পক্ষ থেকে বরের (শাকের) নিকট প্রস্তাব রাখলেন, কিন্তু বর শাকের মহরের পরিমাণে নারাজ হয়ে কিছু না বলে চুপ করে থাকে। এরপর আমি এবং তার পিতা তাকে দূরে নিয়ে এসে বুঝালাম। এতে সে শান্ত হয় এবং কবুল করতে সম্মতি দেয়। অতপর আমরা এসে দেখি, কাযী সাহেব চলে গেছেন। আমরা মেয়ের পিতাকে বললে তিনি বলেন, আজকে নয়, বিয়ে পরে হবে। কিন্তু বর (শাকের) ঘটনাস্থলে উপস্থিত সবার সামনে বলেছে, আমি কবুল করিলাম।

আমি জানতে চাই, উল্লেখিত অবস্থায় শাকেরের বিবাহ সহীহ হয়েছে কি? যদি না হয়ে থাকে তাহলে সহীহভাবে বিবাহ হওয়ার পদ্ধতি কী? জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী এ বিবাহ সহীহ হয়নি। কারণ বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য প্রস্তাব এবং গ্রহণ একই মজলিসে হওয়া জরুরি। এক পক্ষের প্রস্তাবের পর অপর পক্ষ সম্মতিদানের পূর্বে মজলিস ছেড়ে চলে গেলে ঐ প্রস্তাব বাতিল বলে গণ্য হয়। তাই এরপর পূর্বোক্ত প্রস্তাবের ভিত্তিতে কবুল বললে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।

এখন যদি উভয় পক্ষ বিবাহ করতে সম্মত হয় তাহলে মোহর নির্ধারণ করে দুইজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে নতুন করে ইজাব-কবুল করে নিতে হবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৯০; আদ্দুররুল মুখতার ৩/১৪; আলবাহরুর রায়েক ৩/৮৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৬৯

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ সানাউল্লাহ - বরিশাল

২৬৫৬. প্রশ্ন

নাঈম আমার খালাতো ভাই। আমার আম্মু অসুস্থ থাকার কারণে ছোটকালে দীর্ঘদিন আমি এই খালার দুধ পান করেছি। এখন  নাঈম আমার আপন ছোট বোনকে বিয়ে করতে চায়। তার জন্য কি আমার ছোট বোনকে বিয়ে করা বৈধ হবে?

 

 

উত্তর

হ্যাঁ, নাঈমের জন্য আপনার ছোট বোনকে বিবাহ করা জায়েয। কেননা আপনি নাঈমের মায়ের দুধ পান করার কারণে আপনার বোনের সাথে নাঈমের দুধ সম্পর্ক হয়নি।

-বাদায়েউস সানায়ে ৩/৪০০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৪৩; আলবাহরুর রায়েক ৩/২২৭; আদ্দুররুল মুখতার ৩/২১৭

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ ইকবাল হাসান - লক্ষীপুর

২৬৫৭. প্রশ্ন

আমার একটি গাভী আছে। কয়েক মাস আগে মারাত্মক অসুস্থ হয়। তখন আমি মান্নত করলাম যে, গাভীটি সুস্থ হলে আল্লাহর ওয়াস্তে কুরবানী করব। আল্লাহর রহমতে গাভীটি সুস্থ হয়। কিছুদিন পর একটি বাচ্চা দেয়। আমার জানার বিষয় হল এই বাছুরটি কী করব? তা আমি নিজের জন্য রাখতে পারব কি? আর গাভীটি কুরবানী করার পর তার গোশত আমি খেতে পারব কি না? উল্লেখ্য, আমার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়।

 

 

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে শর্তপূর্ণ হওয়ার কারণে গাভীটি মান্নতের পশু হয়ে গেছে। অতএব এর বাছুরটি আপনি নিজের জন্য রাখতে পারবেন না। বরং তা সদকা করে দিবেন। এক্ষেত্রে বাছুরটির মূল্য দান করে দিলেও চলবে। তবে সরাসরি বাছুরটি দান করা উত্তম। আর গাভীটি কুরবানী করার পর তার গোশত, চামড়া ইত্যাদিও সদকা করে দিতে হবে। এ থেকে আপনি, আপনার স্ত্রী ও সন্তানাদি এবং অন্য কোনো ধনী লোক খেতে পারবে না।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯২; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫৪; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭৪১

শেয়ার লিংক

শরীফুল ইসলাম - রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ

২৬৫৮. প্রশ্ন

গত বছর আমাদের কুরবানী পশুটির ট্রাক থেকে নামানোর সময় এক পায়ে আঘাত পেয়ে ফুলে যায়। যার ফলে স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে একটু কষ্ট হত। এবং হাঁটাচলার সময় ঐ পাটি তুলনামূলক কম ব্যবহার করত। আমার প্রশ্ন হল, উক্ত পশু দ্বারা আমাদের কুরবানী সহীহ হয়েছে কি?

উত্তর

হ্যাঁ, উক্ত পশু দ্বারা কুরবানী করা সহীহ হয়েছে। তবে পশুর কোনো পা যদি একেবারে অচল হয়ে যায়, যার ফলে পশু হাঁটতেই পারে না সেক্ষেত্রে তা দ্বারা কুরবানী সহীহ হবে না।

-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৮০২; জামে তিরমিযী, হাদীস : ১৪৯৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬৬; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৬; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৬ আরো জানতে দেখুন : তাফসীরে তবারী ৭/৫৫৪; তাফসীরে কুরতুবী ১০/৪২-৪৩; তাফসীরে ফখরে রাযী ১৯/২২১; তাফসীরে রূহুল মাআনী ১৪/৮৭; তাফসীরে মাআরিফুল কুরআন ৫/৩১৩

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আনাস - বুড়িশ্চর, চট্টগ্রাম

২৬৫৯. প্রশ্ন

আমাদের মসজিদ সংলগ্ন পূর্ব দিকে একটি মাঠ ও পশ্চিম দিকে একটি মাঠ আছে। পূর্ব দিকের মাঠটি মসজিদের জন্য ওয়াকফকৃত। আর পশ্চিম দিকেরটি আমাদের নিজস্ব। আমরা এতে একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এজন্য আমরা নিয়ত করেছি, পশ্চিম দিকের মাঠটি মাদরাসার জন্য দান করব। এরপর মসজিদটি পশ্চিম পার্শ্বে মাদরাসার জায়গায় নিয়ে আসব এবং মাদরাসাটি পূর্ব দিকে মসজিদের জায়গায় নিয়ে যাব।

কেননা আমাদের পশ্চিম দিকের মাঠটির আয়তন একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠার জন্য যথেষ্ট নয়। আর মসজিদের খালি মাঠটি বেশ বড়সড়। যেখানে মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। জমির আয়তন প্রায় উনিশ শতাংশ এবং এটি নিকটবর্তী সময়ে মসজিদের কাজে আসার সম্ভাবনা নেই।

খ) যদি মসজিদের জায়গা রদবদল করা না যায় তাহলে পশ্চিমের মাঠটিতে মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করে পূর্ব দিকে মসজিদের ওয়াকফকৃত জায়গায় মদারাসার জন্য কোনো ঘর বা ভবন নির্মাণ করা যাবে কি?

 

 

উত্তর

ক) প্রশ্নোক্ত মসজিদটি স্থানান্তর করা জায়েয হবে না। বরং মসজিদটিকে তার স্থানেই বহাল রাখতে হবে। কেননা কোনো স্থানে মসজিদ হয়ে গেলে তা মসজিদের জন্যই নির্ধারিত হয়ে যায়। তাই তা মসজিদ হিসেবে বহাল রাখা জরুরি।-আলমুহীতুল বুরহানী ৯/১২৯; ফাতহুল কাদীর ৫/৪৪০; রদ্দুল মুহতার ৪/৩৮৪; ফাতাওয়া সিরাজিয়া ৯৩

খ) মসজিদের জন্য ওয়াকফকৃত জায়গা মসজিদের কাজে ব্যবহার করাই শরীয়তের বিধান। সুতরাং প্রশ্নোক্ত মসজিদের খালি জায়গাতে স্থায়ীভাবে মাদরাসা ভবন নির্মাণ করা যাবে না। তবে উক্ত খালি জায়গাটি যেহেতু এখনি মসজিদের প্রয়োজন হচ্ছে না আর দ্বীনী তালীমও যেহেতু মসজিদের মাকসাদের অন্তর্ভুক্ত তাই মসজিদ কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে সাময়িকভাবে সেখানে মাদরাসার জন্য ঘর বানানো যাবে এবং তাতে মাদরাসার কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে। পরবর্তীতে যখন ঐ জায়গা মসজিদের প্রয়োজন হবে তখন তা মসজিদের জন্য ছেড়ে দিতে হবে।-আদ্দুররুল মুখতার ৪/৩৬০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৪৬২, ৩৬২; নিযামুল ফাতাওয়া ৪/২/৪৮

শেয়ার লিংক