মুহাম্মাদ মাহবুবুর রশীদ - ৩৬ পূর্ব কাজীপাড়া, মিরপুর

২৩৯৯. প্রশ্ন

বেশিরভাগ আন্তনগর ট্রেনে বেশিরভাগ নামাযের কক্ষ আছে। তবে ট্রেন চলা অবস্থায় দাঁড়িয়ে নামায পড়া কঠিন হয়। কারণ ঝাঁকুনির দরুণ পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয় বা পড়েও যাই। আবার নামায অবস্থায় ট্রেন দিক পরিবর্তন করলে কেবলা ঠিক রাখা মুশকিল হয়। এমতাবস্থায় কিভাবে নামায আদায় করব জানা প্রয়োজন।


উত্তর

সম্ভব হলে ফরয নামায দাঁড়িয়ে আদায় করা ফরয। তাই ট্রেনেও ভ্রমণকালে যথাসম্ভব দাঁড়িয়ে নামায পড়তে চেষ্টা করবে। প্রয়োজনে কিছু ধরেও দাঁড়াতে পারবে। অবশ্য যদি দাঁড়িয়ে নামায পড়া সম্ভব না হয় তবে সেক্ষেত্রে বসে নামায পড়তে পারবে।

আর ট্রেনেও নামায শুরু করার সময় কেবলার দিক নিশ্চিত করে সেদিকে ফিরে নামায পড়তে হবে। অতপর নামায অবস্থায় ট্রেন ঘুরে যাওয়ার কারণে কিবলার দিক পরিবর্তন হয়ে গেলে নামাযী তা বুঝামাত্র কিবলার দিকে ঘুরে যাবে। কিবলার দিক পরিবর্তন হয়ে গেছে জানা সত্ত্বেও নামাযে কিবলার দিকে না ঘুরলে ঐ নামায পুনরায় পড়ে নিতে হবে। তবে শুরুতে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়ানোর পর নামাযের ভিতর কিবলা পরিবর্তনের বিষয়ে জানতে না পারার কারণে যদি ঐভাবেই নামায শেষ করে তার নামায আদায় হয়ে যাবে।

উল্লেখ্য যে, চলন্ত ট্রেনে ঐ সময় নামাযে দাঁড়ানো উচিত যখন ট্রেনটি একদিকে চলতে থাকে তাহলে নামাযের ভিতর কিবলা পরিবর্তন করতে হবে না।

-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ২/৮১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৫৪১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৪৪; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৭৬ বাদায়েউস সানায়ে ১/২৯১; রদ্দুল মুহতার ২/১০২

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ সানাউল্লাহ - আজিমুদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়

২৪০০. প্রশ্ন

 

কিছুদিন হল আমি নামায শুরু করেছি। আমি নামাযে এভাবে সিজদা করি যে, বাহুর সাথে পাঁজর এবং উরুর সাথে পেট মিলিয়ে রাখি। কিন্তু একজন মাওলানা সাহেব বললেন, সিজদার মধ্যে বাহু পাঁজর থেকে এবং পেট উরু থেকে পৃথক রাখতে হবে। এখন জানতে চাই, মাওলানা সাহেবের কথা কতটুকু সঠিক?


 

উত্তর

 

মাওলানা সাহেব যথার্থই বলেছেন। পুরুষের জন্য সিজদার মধ্যে বাহুকে পাঁজর থেকে এবং পেটকে উরু থেকে পৃথক রাখা সুন্নত। হযরত 

মায়মুনা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সিজদা করতেন তখন তাঁর উভয় বাহুকে পৃথক রাখতেন, এমনকি যদি কোনো ছাগলছানা তাঁর বাহুর নিচ দিয়ে গমন করার ইচ্ছা করত তাও সম্ভব হত।

 

-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৮৯৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৭৫; মাবসূত ১/২২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১২৬; ফাতহুল কাদীর ২/২৬৬

শেয়ার লিংক

আবদুল মালেক - খানকায়ে এমদাদিয়া আশরাফিয়া সুলাইমান নগর, খুলনা

২৪০১. প্রশ্ন

বর্তমান সমাজে ব্যাপকভাবে প্রচলন রয়েছে যে, কারো মৃত্যু হলে নিকটাত্মীয়-স্বজনদের উপস্থিতির জন্য  মাইয়েতের গোসল, কাফন-দাফন, জানাযা ইত্যাদি বিলম্ব করা হয়।

জানার বিষয় হল, মাইয়েতের নিকটাত্মীয়ের জন্য কাফন-দাফন বিলম্ব করা যেতে পারে কি না এবং এভাবে প্রচলিত নিয়মে বিলম্ব করা বৈধ হবে কি না? উত্তর প্রদান করে উপকৃত করার আবেদন রইল।


উত্তর

কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার গোসল, কাফন, জানাযা ও দাফনের কাজ যথাসম্ভব দ্রুত সম্পাদন করা উচিত। হাদীস শরীফে এ বিষয়ে বিশেষভাবে তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

আর মৃতের নিকটাত্মীয়, বন্ধু-বান্ধব ও পাড়া প্রতিবেশীদেরকে তার মৃত্যুর সংবাদ দেওয়া মুস্তাহাব। যাতে তারা জানাযায় শরিক হতে পারে। তবে কোনো আত্মীয়ের উপস্থিতি বা তাদের দেখানোর জন্য মৃতের দাফনে বিলম্ব করা অনুচিত। বিশেষ করে বর্তমান সমাজে প্রচলিত প্রথা-আত্মীয় স্বজন যত দূরেই থাকুক, মৃতের মুখ দেখানোর অপেক্ষায় গোসল, কাফনদাফন ঘণ্টার পর ঘণ্টা, এমনকি দিনের পর দিনও বিলম্ব করা হয়-যা কোনো ক্রমেই শরীয়তসম্মত নয়।

-সহীহ বুখারী ১/১৭৫; ফাতহুল বারী ৩/২১৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৯৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৩; আলবাহরুর রায়েক ২/১৭১

শেয়ার লিংক

সামিন সালেহ - সিলেট

২৪০২. প্রশ্ন

আমার নানু ঢাকার একটি ফ্ল্যাট বাসায় থাকেন। বাসাটি চার রুমবিশিষ্ট। তিনি যে রুমটিতে থাকেন সাধারণত সে রুমেরই এক পার্শ্বে নামায পড়েন। তবে গরমের কারণে কখনো ড্রইং রুমেও নামায আদায় করেন। তিনি আগামী রমযানে ইতিকাফ করার নিয়ত করেছেন। উক্ত দুই রুম ব্যতীত অপর আরেকটি রুমে ইতিকাফ করা তার জন্য সুবিধাজনক। যে রুমে সাধারণত নামায পড়েন না। এখন সে রুমে ইতিকাফ করা তার জন্য কি সহীহ হবে?


উত্তর

আপনার নানু বাসাটির অন্য কক্ষেও ইতিকাফ করতে পারবেন। তবে যে কক্ষে ইতিকাফ করতে চাচ্ছেন ঐ কক্ষকে আপাতত তার নামায-ঘর হিসেবে নির্দিষ্ট করে নিতে হবে এবং ইতিকাফের পূর্ণ সময় এ ঘরেই অবস্থান করতে হবে।

-মাবসূত, সারাখসী ৩/১১৯; আলবিনায়াহ ৪/৩৮৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৭৯; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/২২৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১১; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৪১

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আফফান বিন নুমান - সোনারগাও, নারায়ণগঞ্জ

২৪০৩. প্রশ্ন

যায়েদ এক রমযানের ১০ টি রোযা রাখার পর শয়তানের ধোকায় সুস্থ অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করে তা ভেঙ্গে ফেলে। সে ঐ রোযাগুলোর কাফফারাও আদায় করেনি। কিন্তু এখন সে অনুতপ্ত এবং এ বিষয়ে শরীয়তের সমাধান জানতে আগ্রহী। ঐ ব্যক্তির উপর কি ইচ্ছাকৃত পানাহার করার কারণে কাফফারা ওয়াজিব হয়েছে? যদি ওয়াজিব হয়ে থাকে তবে সে কি প্রত্যেকটি রোযার পরিবর্তে পৃথক পৃথক কাফফারা আদায় করবে, না সবগুলো রোযার পরিবর্তে একটি কাফফারা আদায় করলেই যথেষ্ট হবে?


উত্তর

রোযাগুলো ভেঙ্গে ফেলার কারণে তার উপর প্রত্যেক রোযার পরিবর্তে একটি করে কাযা আদায় করা ওয়াজিব হয়েছে। আর একই রমযানে কয়েকটি রোযার কাফফারা ওয়াজিব হওয়ায় এখন সবগুলোর জন্য একটি কাফফারা আদায় করলেই যথেষ্ট হয়ে যাবে।

হাদীস শরীফে আছে, জনৈক ব্যক্তি রমযান মাসে দিনের বেলা আহার করে ফেলার পর রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে একটি গোলাম আযাদ করা বা ধারাবাহিক ষাটটি রোযা রাখা অথবা ষাটজন মিসকীনকে খানা খাওয়ানোর আদেশ দিয়েছেন।

-সুনানে দারাকুতনী ২/১৯১; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২১৩, ২১৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৫৬, ২৬০; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৫৪, ২৫৯; ফাতহুল কাদীর ২/২৬১; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৭; রদ্দুল মুহতার ২/৪১৩

শেয়ার লিংক

ইরবায আমীন - আড়াইহাজার

২৪০৪. প্রশ্ন

শ্রদ্ধাভাজন মুফতী সাহেবের নিকট বিনীত আরজ এই যে, নিম্নোল্লেখিত মাসআলার সঠিক সমাধান জানিয়ে আমাকে বাধিত করবেন। ফিদয়া আদায় করার ক্ষেত্রে মিসকীনকে খানা না খাইয়ে এর মূল্য সদকা করে দিতে চাইলে কাউকে মালিক বনানো কি জরুরি? কোনো কারণবশত খানা খাওয়াতে না পারলে এর মূল্য অন্যান্য নফল সদকার মতো মসজিদে দেওয়া, মাদরাসার বিল্ডিং নির্মাণ বা জনকল্যাণমূলক অন্য কোনো কাজে ব্যয় করা যাবে কি না?


উত্তর

না খাইয়ে অর্থ দিয়ে ফিদয়া দিতে চাইলে দু বেলা খাবারের ন্যায্য মূল্য কোনো মিসকীনকে মালিক বানিয়ে দিতে হবে। অর্থাৎ খানা খাওয়ানোর পরিবর্তে এর মূল্য দিতে চাইলে উপযুক্ত ব্যক্তিকে মালিক বানিয়ে দেওয়া আবশ্যক।

আর যেহেতু ব্যক্তিকে মালিক বানিয়ে দেওয়া আবশ্যক, তাই ফিদয়ার মূল্য মসজিদে দেওয়া, মাদরাসার বিল্ডিং মেরামত করা বা অন্য কোনো জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা যাবে না।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৬০-২৬১; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২০৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৮৮

শেয়ার লিংক

উম্মে ইশফাক - বারিধারা, ঢাকা

২৪০৫. প্রশ্ন

বর্তমানে স্বর্ণের ক্রয়মূল্য ৬৪ হাজার টাকা আর বিক্রয়মূল্য ৪০ হাজার টাকা। এখন আমার প্রশ্ন হল, আমার স্বর্ণের যাকাত প্রদান করব ক্রয়মূল্যে নাকি বিক্রয়মূল্যে? বিস্তারিত জানাবেন।


উত্তর

যাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে নিজের মালিকানাধীন স্বর্ণ-রূপার বর্তমান বাজার দর ধর্তব্য। অর্থাৎ নিজের অলংকারাদি বিক্রি করলে যত টাকা পাওয়া যাবে তার যাকাত আদায় করতে হবে।

উল্লেখ্য যে, ভালো মানের স্বর্ণের ক্রয় ও বিক্রয় মূল্যে এত বেশি তফাৎ হওয়ার কথা নয়। বিষয়টি ভালোভাবে যাচাই করে নেওয়া উচিত।

-কিতাবুল আমওয়াল, আবু উবায়েদ কাসিম ইবনে সাল্লাম পৃ. ৫২১; আবহাছুন ফিকহিয়্যাহ ১/৪২-১৪৩; ফিকহী মাকালাত ৩/১৫০

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ মাহবুবুর রশীদ - ৩৬ পূর্ব কাজীপাড়া, ঢাকা

২৪০৬. প্রশ্ন

আমার স্ত্রীর কাছে আমার শ্বশুরের দেওয়া ১ ভরি স্বর্ণ আছে।  এছাড়া তার কাছে নগদ টাকা বা যাকাতযোগ্য অন্য কোনো সম্পদ নেই। জানতে চাই, আমার যাকাত হিসাব করার সময় ঐ ১ ভরি স্বর্ণের দাম ধরতে হবে কি না।


উত্তর

আপনার যাকাত শুধু আপনার নিজস্ব মালিকানাধীন সম্পদের উপর আসবে। স্ত্রীর স্বর্ণ এবং তার মালিকানাধীন অন্য কোনো সম্পদ আপনার যাকাতের হিসাবে ধর্তব্য হবে না। আর তার স্বর্ণও যেহেতু যাকাতের নেসাব পরিমাণ নয় তাই তাকেও ঐ স্বর্ণের যাকাত আদায় করতে হবে না।

-আদ্দুররুল মুখতার ২/২৫৯; হেদায়া ২/১১৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৭২; আলবাহরুর রায়েক ২/২০৩; ফাতহুল কাদীর ২/১১৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/৯৯

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ নাফিউদ্দীন - ১১০ বিকে মেইন রোড, খুলনা

২৪০৭. প্রশ্ন

আমাদের শহরে একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচীতে ঢাকা থেকে আগত জনৈক ব্যক্তি মডার্ণ পাবলিশার্স, ২৩০ নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫ কর্তৃক প্রকাশিত ও ছবির সাহায্যে পবিত্র হজ্বের দর্শণীয় স্থানসমূহ বিষয়ক মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী কর্তৃক প্রণীত একটি পুস্তক হজ্বব্রত পালনেচ্ছুক প্রশিক্ষণরত ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করেন। উক্ত পুস্তকের ৬ নং পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে যে, ‘‘প্রথম চার চক্করে রমল বা দৌড় দিয়ে জোরে হাঁটতে হবে। বাকি তিন চক্করে স্বাভাবিকভাবে হাটতে হবে। ইহরামের কাপড় স্বাভাবিকভাবে পরা থাকবে।’’ অথচ হজ্ব বিষয়ক বিভিন্ন

পুস্তক-পুস্তিকায় যে তাওয়াফের পর সাঈ আছে তার প্রথম তিন চক্করে রমলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং ইজতিবা প্রথম চক্কর থেকে শেষ চক্কর পর্যন্ত বহাল থাকা সুন্নতে মুআক্কাদা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আর এভাবেই ৩ চক্করে রমল ও চার চক্করে স্বাভাবিক অবস্থায় ইজতিবাসহ তাওয়াফ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এখন আমার প্রশ্ন হল, তাওয়াফের প্রথম তিন চক্করে রমল করতে হবে, নাকি চার চক্করে রমল করতে হবে? আর ইজতিবা প্রথম  চক্কর থেকে শেষ চক্কর পর্যন্ত থাকবে, নাকি যে চক্করগুলোতে রমল করা হবে শুধু সেগুলোতেই ইজতিবা করা হবে? সঠিক মাসআলা জানিয়ে বাধিত করবেন।


উত্তর

যে তাওয়াফের পর সাঈ আছে পুরুষের জন্য সে তাওয়াফের প্রথম তিন চক্করে রমল করা সুন্নত। (রমল অর্থ কাঁধ হেলিয়ে একটু দ্রুতপদে বীরদর্পে হাঁটা)। আর ঐ তাওয়াফের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ইজতিবা (অর্থাৎ গায়ের চাদর ডান বগলের নিচ দিয়ে বের করে বাম কাঁধের উপর রাখা।) অবস্থায় থাকা পৃথক একটি সুন্নত।

প্রকাশ থাকে যে, তিন চক্করে রমল করা এবং পুরো তাওয়াফে ইজতিবা করার বিষয়টি হাদীস ও আছার দ্বারা প্রমাণিত।

আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. বলেন, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বাইতুল্লাহর প্রথম তাওয়াফ (তাওয়াফে কুদুম) করেছেন তখন প্রথম তিন চক্করে রমল করেছেন। বাকি চার চক্করে স্বাভাবিকভাবে হেঁটেছেন। (সহীহ মুসলিম ১/৪১০)

ইয়ালা ইবনে উমাইয়া রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করেছেন। (পূর্ণ) তাওয়াফে ইজতিবা অবস্থায় ছিলেন। (জামে তিরমিযী, হাদীস :৮৫৯)

ইবনে জুরাইজ থেকে বর্ণিত, উমর ইবনে আবদুল আযীয রাহ. বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করেছেন এবং (পুরো) তাওয়াফে ইজতিবা অবস্থায় ছিলেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১৬১৪৬)

সুতরাং খলিলুর রহমান মাদানীর বইয়ে লিখিত প্রশ্নোক্ত বক্তব্যটি সঠিক নয়।

-আলবাহরুল আমীক ২/১১৫৯-৬৮; গুনইয়াতুন নাসিক ১১৮

শেয়ার লিংক

আবছি - কিশোরগঞ্জ

২৪০৮. প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি তাওয়াফে যিয়ারতের পর অসুস্থ হওয়ার কারণে আইয়ামে নাহরে সায়ী করতে পারেনি। অতপর পনের দিন পর সে আরোগ্য লাভ করে। জানার বিষয় হল, এখন যদি সে সায়ী করে তবে তা আদায় হবে কি না আর এ কারণে তাকে কোনো দম বা সদকা দিতে হবে কি না।


 

উত্তর

হ্যাঁ, ঐ ব্যক্তি এখন সায়ী করে নিলে তা আদায় হয়ে যাবে।

উল্লেখ্য যে, তাওয়াফে যিয়ারতের পর ১২ তারিখ সূর্যাস্তের আগেই সায়ী করে নেওয়া উত্তম। এর চেয়ে বিলম্ব করা মাকরূহ। তবে পরে আদায় করলেও তা সহীহ হয়ে যাবে। বিলম্বের কারণে কোনো দম বা সদকা ওয়াজিব হবে না।

-গুনইয়াতুন নাসিক ১৩২; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩২০; যুবদাতুল মানাসিক ১৪৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৪৭; মানাসিক ১৭৮

শেয়ার লিংক

মাওলানা জিয়াউল আমীন - শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া সিলেট

২৪০৯. প্রশ্ন

আকীকা কী? আকীকার হুকুম কী? আকীকার সময় কি নির্ধারিত? কেউ কি নিজের আকীকা নিজেই করতে পারবে? আকীকা আদায়ের নিয়ম কী? আকীকার গোশত কি পিতা-মাতা ও আত্মীয়স্বজনরা খেতে পারবে? জানিয়ে বাধিত করবেন।


উত্তর

সন্তান জন্মগ্রহণের শুকরিয়াস্বরূপ যে পশু যবাই করা হয় তাকে আকীকা বলে। আর আকীকা করা মুস্তাহাব।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, সন্তানের জন্য আকীকা করতে হয়। সুতরাং তোমরা তার পক্ষ থেকে যবাই কর এবং তার জঞ্জাল শ দূর কর (অর্থাৎ চুল চেছে ফেল)। (সহীহ বুখারী ২/৮২২)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো ইরশাদ করেন, যার সন্তান ভূমিষ্ট হয় সে যদি শিশুটির পক্ষ থেকে আকীকা করা পছন্দ করে তাহলে যেন তাই করে। (সুনানে নাসায়ী ২/১৬৭)

জন্মের সপ্তম দিনে আকীকা করা উত্তম। সপ্তম দিনে সম্ভব না হলে ১৪ বা ২১ তম দিনে করা ভালো। কেননা হাদীস শরীফে এই তিন দিনের উল্লেখ আছে। এ তিন দিনেও করা না হলে পরে যে কোনো দিন আকীকা করা যেতে পারে।

হযরত আমর ইবনে শুআইব-এর সূত্রে বর্ণিত হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবজাতকের সপ্তম দিনে আকীকা করা, নাম রাখা ও তার জঞ্জাল দূর করার (অর্থাৎ মাথার চুল কাটার) নির্দেশ দিয়েছেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ১২/৩২৬)

হযরত বুরাইদা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আকীকার পশু সপ্তম বা চৌদ্দতম বা একুশতম দিনে যবাই করা হবে। (আলমুজামুল আওসাত ৫/৪৫৭)

কারো আকীকা করা না হলে বড় হয়ে নিজের আকীকা নিজেও করতে পারবে।

হযরত আনাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবুওয়ত প্রাপ্তির পর নিজের আকীকা নিজে করেছেন। (প্রাগুক্ত ১/৫২৯; মাজমাউয যাওয়াইদ, হাদীস : ৬২০৩; আলমুফাসসাল ফী আহকামিল আকীকা, ড. হুসামুদ্দীন ইবনে মূসা, জামেয়াতুল  কূদস, পৃ. ১৪২)

হাসান বসরী রাহ. বলেন, তোমার যদি আকীকা না করা হয়ে থাকে তাহলে তুমি নিজের আকীকা করে নাও। যদিও তুমি ইতিমধ্যেই প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে গেছ। (আলমুহাল্লা ৬/২৪০)

পুত্র সন্তান হলে দুটি আর কন্যাসন্তান হলে একটি ছাগল/ভেড়া/দুম্বা দ্বারা আকীকা করা উত্তম। তবে পুত্রসন্তানের ক্ষেত্রে একটি যবাই করলেও আকীকার হক আদায় হয়ে যাবে। এছাড়া উট, মহিষ, গরু ইত্যাদি দ্বারা আকীকা করা যায়।

হযরত উম্মে কুরয রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আকীকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, পুত্রসন্তানের পক্ষ থেকে দুটি ছাগল আর কন্যাসন্তানের পক্ষ থেকে একটি ছাগল যবাই করবে। (জামে তিরমিযী ১/১৮৩)

হযরত ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত হাসান ও হুসাইন রা-এর পক্ষ থেকে একটি একটি ভেড়া আকীকা করেছেন। (আবু দাউদ ২/৩৯২)

হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যার কোনো সন্তান জন্মলাভ করে সে যেন উট, গরু অথবা ছাগল দ্বারা আকীকা করে। (আলমুজামুল আওসাত ২/৩৭১,

হাদীস : ৩৭১)

আকীকার গোশত পিতা-মাতা ও অন্যান্য আত্মীয়স্বজন ধনী-গরীব নির্বিশেষে সকলেই খেতে পারবে।

হযরত আয়েশা রা. বলেন, (আকীকার গোশত) নিজে খাবে, অন্যদের খাওয়াবে এবং সদকা করবে।

-মুসতাদরাকে হাকেম ৫/৩৩৮; আলমুগনী ১৩/৩৯৩, ৩৯৭, ৪০০; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ১২/৩২৭, হাদীস : ২৪৭৪৩, ২৪৭৩৭; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৪/৩২৯, ৩৩০, ৩৩১; তুহফাতুল মাওদূদ বি আহকামিল মাওলূদ ৭৮

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ ইউসুফ বিন আবছি - লাকসাম, কুমিল্লা

২৪১০. প্রশ্ন

আমরা তিনজন মিলে একটি গরু কুরবানী করেছি। গরুটির মূল্য সত্তর হাজার টাকা। মূল্যের আড়াই ভাগ টাকা আমি দিয়েছি। আড়াই ভাগ টাকা আমার বড় ভাই দিয়েছেন। বাকি দুই ভাগ টাকা আমার এক বন্ধু দিয়েছে। গোশত আমরা টাকা অনুপাতে ভাগ করে নিয়েছি। জানতে চাই, আমাদের কুরবানী কি সহীহ হয়েছে? এক ব্যক্তি বলেছে, ভগ্নাংশের কারণে আমাদের কুরবানী নাকি হয়নি।


উত্তর

কুরবানীর পশুতে এক সপ্তমাংশ বা এর অধিক অংশে অংশীদার হওয়া জায়েয। এক্ষেত্রে ভগ্নাংশ (যেমন-দেড় ভাগ, আড়াই ভাগ, সাড়ে তিন ভাগ) হলেও বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী কুরবানী সহীহ হয়ে যায়। সুতরাং প্রশ্নোক্ত অবস্থায় আপনাদের কুরবানী সহীহ হয়েছে। ভগ্নাংশের কারণে কুরবানীর ক্ষতি হয়নি।

উল্লেখ্য যে, ভগ্নাংশ যদি এক সপ্তমাংশের কম হয় যেমন কোনো শরিকের আট ভাগের এক ভাগ হয় তাহলে সেক্ষেত্রে কারো কুরবানীই সহীহ হবে না।

-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৫৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৮; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৪

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ ফয়জুদ্দীন - নেত্রকোণা

২৪১১. প্রশ্ন

 

এক মহিলা তার স্বামীর কাছে মহরের টাকা পেত। বিয়ের এক বছর পর মহিলা স্বামীকে স্বেচ্ছায় বলল, আমার মহরের টাকা দিতে হবে না। তা তোমাকে দিয়ে দিলাম। এর কিছুদিন পর কোনো এক বিষয় নিয়ে পরস্পর ঝগড়া হয়েছে। তখন থেকে মহিলা মহরের টাকা দাবি করছে। এখনও মহিলা স্বামীর কাছে মহরের টাকা চায়।

প্রশ্ন হল, স্বামীর জন্য ঐ মহরের টাকা পরিশোধ করতে হবে কি? উল্লেখ্য, মহিলা স্বতঃস্ফূর্তভাবেই এ কথা বলেছিল যে, মহরের টাকা দিতে হবে না। 


 

উত্তর

 

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী বাস্তবেই যদি ঐ মহিলা স্বতঃস্ফূর্তভাবে মহর মাফ করে দিয়ে থাকে তাহলে তা মাফ হয়ে গেছে।  সুতরাং এরপর মহিলার জন্য পুনরায় মহর দাবি করা অন্যায়। স্বামীর জন্য তার মহরের দাবি পূরণ করা জরুরি নয়। তবে সামর্থ্য থাকলে তা পুরো বা আংশিক আদায় করে দিলেই ভালো। 

উল্লেখ্য যে, মহর স্ত্রীর প্রাপ্য হক। তার উপর কোনো চাপ প্রয়োগ করে বা তাকে লজ্জায় ফেলে এ হক মাফ করানো যাবে না। অবশ্য মহিলা যদি স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিনা চাপে নিজ থেকে মহরের হক ছেড়ে দেয় তাহলে তা মাফ হয়ে যাবে।

 

-সূরা নিসা : ৪; আহকামুল কুরআন, কুরতুবী ৫/১৮; সহীহ বুখারী ১/৩৫২; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৯১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩৯৫, ৩৯৬, ৪০২; আলবাহরুর রায়েক ৩/১৫০; হেদায়া ৩/২৯০; রদ্দুল মুহতার ৩/১১৩

শেয়ার লিংক

হুযায়ফা - শুক্রাবাদ, ঢাকা

২৪১২. প্রশ্ন

সুমাইয়া খালেদের মায়ের দুধ পান করে। সুমাইয়ার মা নাবীলাও জীবিত আছেন। জানার বিষয় হল, খালেদ সুমাইয়ার মা নাবীলার সাথে দেখা করতে পারবে কি না?


উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে খালেদ তার দুধ বোনের মায়ের সাথে দেখা করতে পারবে না। সুতরাং তার সাথে পর্দা করা আবশ্যক। কেননা দুধ বোনের মা তার মাহরাম নয়।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৪৩; ফাতহুল কাদীর ৩/৩১১; আলবাহরুর রায়েক ৩/২২৩; রদ্দুল মুহতার ৩/২১৪

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আতীকুর রহমান - নেত্রকোণা

২৪১৩. প্রশ্ন

আমার একটি ছেলেসন্তান হয়েছে। জন্মের কিছুদিন পর সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই আমি মান্নত করেছিলাম, ছেলে সুস্থ হলে একটি খাশি আকীকা করব। আল্লাহর মেহেরবানিতে ছেলে সুস্থ হয়ে গেছে। এখন আমার প্রশ্ন হল, ছেলের আকীকা করতেই হবে কি না? না করার কোনো সুযোগ আছে কি? আকীকা করতে হলে খাশিই করতে হবে কি না?


 

উত্তর

আকীকা করা মুস্তাহাব। প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ছেলে সুস্থ হলে আকীকা করব-এ কথা বলার দ্বারা আপনার জন্য আকীকা করা জরুরি হয়ে যায়নি। তবে মুস্তাহাব হুকুম পালনের অঙ্গীকার করার দ্বারা এর  গুরুত্ব আরো বেড়েছে। তাই সামর্থ্য থাকলে আল্লাহ তাআলার সাথে কৃত এই ওয়াদা পূরণ করাই বাঞ্ছনীয়।

একবছর বয়সী যেকোনো ছাগল দ্বারা আকীকা করা যাবে।

ছেলে সন্তানের জন্য দুটি ছাগল আকীকা করা উত্তম। বিশিষ্ট সাহাবী আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসান ও হুসাইন রা.-এর পক্ষ থেকে দুটি করে দুম্বা আকীকা করেছেন। (সুনানে নাসায়ী ২/১৬৭)

প্রকাশ থাকে যে, প্রশ্নে আকীকার অঙ্গীকারকে আমি মান্নত করেছিলাম বলে ব্যক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এভাবে বলার দ্বারাও তা মান্নত হবে না। কারণ শরীয়তে যে সমস্ত ইবাদত ফরয বা ওয়াজিব যেমন, নামায-রোযা, সদকা, কুরবানী কেবল এ ধরনের ইবাদতের মান্নত করা সহীহ। এছাড়া অন্যান্য ইবাদতের মান্নত করলেও তা মান্নত হয় না।

-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫৪৭২; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৮৩৫; সুনানে নাসায়ী ২/১৬৭; মুসতাদরাকে হাকেম ৫/৩৩৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৪, ২২৮; রদ্দুল মুহতার ৬/৩৩৬, ৩/৭৩৫; আলমুগনী ১৩/৩৯৩; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৭৪; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৬; ইলাউস সুনান ১৭/১১৪

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আতাউর রহমান - মাদানী নগর, ঢাকা

২৪১৪. প্রশ্ন

আমি একটি বিষয়ে কসম করেছিলাম। কিন্তু কোনো কারণে তা রক্ষা করতে পারিনি। এখন কাফফারা আদায় করতে চাই। আমি জানি, কসমের কাফফারা হল ১০জন মিসকীনকে দু বেলা খানা খাওয়ানো। আমি জানতে চাই, আমার সুবিধার জন্য যদি একজন ফকীরকে ১০ দিন দু বেলা খানা খাইয়ে দেই তাহলে এতে আমার কাফফারা আদায় হবে কি না।


উত্তর

হ্যাঁ, একজন মিসকীনকে দশদিন দু বেলা তৃপ্তির সাথে খানা খাওয়ালেও আপনার কাফফারা আদায় হয়ে যাবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৬৪; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৩/৪৩০

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ মাহবুবুর রশীদ - কাজিপাড়া, ঢাকা

২৪১৫. প্রশ্ন

এক মহিলা চার ছেলে দুই মেয়ে রেখে মারা গেছে। তার পিতামাতা ও স্বামী পূর্বেই মারা গেছে। এখন আমার প্রশ্ন হল, ঐ মহিলার সম্পত্তি তার ছেলেমেয়ের মাঝে কীভাবে বণ্টন

করা হবে?


উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী মৃতের রেখে যাওয়া সমুদয় সম্পদ থেকে প্রথমে প্রয়োজন হলে তার কাফন-দাফন সংক্রান্ত খরচ আদায় করবে। এরপর তার কোনো ঋণ থাকলে তাও আদায় করতে হবে। এরপর তার শরীয়তসম্মত কোনো অসিয়ত থাকলে অবশিষ্ট এক তৃতীয়াংশ সম্পদ থেকে তা আদায় করতে হবে। তারপর তার অবশিষ্ট সকল স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জীবিত ওয়ারিশদের মাঝে (প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ৪ ছেলে ও ২ মেয়ে) নিম্নে বর্ণিত শতকরা হারে বণ্টিত হবে।

প্রত্যেক ছেলে শতকরা ২০% আর প্রত্যেক মেয়ে ১০% করে পাবে।

-সূরা নিসা : ১১; সহীহ বুখারী ২/৯৯৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৬/৪৪৮; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৭৭৫; মাবসূত সারাখসী ২৯/১৩৯; আলমুহীতুল বুরহানী ২৩/২৮৮; আহকামুল কুরআন, জাসসাস ২/৮৪

শেয়ার লিংক

ইবনে আবদুল বারী - কুনিয়া নেত্রকোণা

২৪১৬. প্রশ্ন

 

এক প্রতিবেশী আমার কাছে টাকা দিয়েছিলেন একটি চার্জ লাইট কিনে আনার জন্য। লাইটটি ক্রয় করে ব্যাগের মধ্যে রেখে সতর্কতার সাথে নিয়ে আসার পথে অনিচ্ছাকৃতভাবে হঠাৎ হাত থেকে ব্যাগটি পড়ে যায়। এতে লাইটটির একটি অংশ ফেটে যায়। তিনি লাইটের ফাটা দেখে বললেন, ফাটা লাইট নিব না। ভালো লাইট দিতে হবে কিংবা আমার টাকা ফেরত দিতে হবে। এখন আমার করণীয় কী?


 

উত্তর

প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী আপনার ইচ্ছাকৃত অবহেলা ছাড়াই যদি লাইটটি পড়ে ফেটে গিয়ে থাকে তাহলে ঐ প্রতিবেশীকে ভালো লাইট দেওয়া কিংবা এর টাকা ফেরত দেওয়া জরুরি নয়। লাইটটি যেভাবে আছে সেভাবেই তার নেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে আপনার নিকট ভিন্ন লাইট দাবি করা বা মূল টাকা ফেরত চাওয়া তার জন্য জায়েয নয়।

-হেদায়া ৩/১৮২-১৮৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/৫৮৭; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/১৫৮; বাদায়েউস সানায়ে ৫/৩৮; মাজাল্লাতু আহকামিল আদলিয়্যাহ, মাদ্দা : ১৪৬৩

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবদুল বাকী - মাদানী নগর, ঢাকা

২৪১৭. প্রশ্ন

আমার বড় ভাই একজন ভালো হাফেয। সে রীতিমতো দৈনিক সকাল-বিকাল কুরআন মজীদ তিলাওয়াত করে। কিন্তু সে সকালে কুরআন মজীদ তিলাওয়াতের সময় কখনো কুরআন মজীদের উপর ঘুমিয়ে পড়ে। কখনো কখনো কুরআন মজীদ খোলা রেখে কথা বলতে দেখা যায়। এ কাজগুলো কেমন অপরাধ? মুফতী সাহেবের নিকট কুরআন তিলাওয়াতের এ সম্পর্কিত আদাব জানতে চাই।


উত্তর

কুরআন মজীদ আল্লাহ তাআলার কালাম। কুরআন মজীদ তিলাওয়াতের বেশ কিছু আদব রয়েছে। প্রত্যেক তিলাওয়াতকারীর কর্তব্য হল সে আদবগুলো অনুসরণ করা। তন্মধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আদব এই-

ক) মন-মস্তিষ্ক সজাগ অবস্থায় পূর্ণ আগ্রহভরে তিলাওয়াত করা।

খ) ঘুমের চাপ থাকা অবস্থায় তিলাওয়াত না করা।

হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমাদের মধ্যে কেউ যখন রাতে নামায পড়তে দাঁড়ায় এবং (ঘুমের কারণে) কুরআন তার জিহবায় জড়িয়ে যায়, সে নিজেও জানে না সে কী পড়ছে, তাহলে সে যেন শুয়ে পড়ে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৭৮৭)

গ) কুরআন মজীদের উপর মাথা বা অন্য কোনো অঙ্গ দ্বারা ভর না দেওয়া। 

ঘ) তিলাওয়াত চলাকালে একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কারো সাথে কথা বলা থেকে বিরত থাকা।

হযরত নাফে রাহ. বলেন, হযরত ইবনে উমর রা. যখন কুরআন তিলাওয়াত করতেন তিলাওয়াত থেকে ফারেগ হওয়া পর্যন্ত কারো সাথে কথা বলতেন না।

-সহীহ বুখারী ২/৬৪৯; আততিযকার ফী আফজালিল আযকার পৃ. ১৯১; আততিবইয়ান ফী আদাবি হামালাতিল কুরআন ১১১; আদ্দুররুল মুখতার ১/১৭৭; তাফসীরে কুরতুবী ১/২২

শেয়ার লিংক