মুহাম্মদ আল আমীন - শাহমদপুর, সিরাজগঞ্জ

১৫৫৪. প্রশ্ন

সমাজের বাস্তবতা হল মেয়েদেরকে পিতার মীরাছ থেকে বঞ্চিত করা হয়। যদি কেউ কখনও তার প্রাপ্য সম্পদ দাবি করে বা নিয়ে নেয় তাহলে তার জন্য ভাইদের দখলে থাকা বাপ-দাদার ভিটায় যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়। ভাইদের কাছে বোনদের কোনো মূল্য থাকে না। ছেলে-মেয়েরা মামার বাড়িতে গিয়ে আদর পায় না। অনেক সময় এমন কথাও শুনতে হয়, যা পাওয়ার তা তো নিয়েই গেছ। এখন আবার জ্বালাতন করতে আস কেন?

এসব ভেবে অনেক মেয়েই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তার প্রাপ্য সম্পদ দাবি করে না এবং ভাইয়েরাও দেওয়ার কোনো আগ্রহ প্রকাশ করে না। আর দিলেও সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এমন করা ঠিক কি না? বাড়ির ভিটার অংশ মেয়েরা পাবে কি না?

 


উত্তর

পিতা-মাতার সকল সম্পদে ছেলের হিস্যা যেমন নিশ্চিত তেমনিভাবে মেয়ের হিস্যাও নিশ্চিত। পিতামাতার মৃত্যুর সাথে সাথে পরিত্যাক্ত সকল সম্পদে ছেলে-মেয়ে সবাই নিজ নিজ হিস্যা অনুযায়ী মালিক হয়ে যায়। সুতরাং বোনদের প্রত্যেকের অংশ পুরোপুরি দিয়ে দেওয়া ভাইদের উপর ফরয। বাড়ির ভিটা বসতবাড়িসহ মৃতের রেখে যাওয়া সব কিছুই মিরাছের অন্তর্ভুক্ত। যা নির্ধারিত হিস্সা অনুযায়ী বন্টনের নিয়ম অনুসারে প্রত্যেককে বুঝিয়ে দিতে হবে। তাদের অংশ দিতে যদি বিলম্ব করা হয় কিংবা কম দেওয়া হয় তবে তাদের হক নষ্ট করার গুনাহ হবে। অন্যের সম্পদ আটকে রাখাটা অনেক বড় গুনাহ, যা জাহান্নামে যাওয়ারও কারণ হতে পারে। তাই বোনদের প্রাপ্য অংশ অবিলম্বে দিয়ে দেওয়া জরুরি। আর তাদের প্রাপ্য অংশ দিয়ে দিলে তাদের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করাও মারাত্মক গুনাহ। হাদীস শরীফে আছে-কিয়ামতের দিন আত্মীয়তার সম্পর্ক নিজেই সম্পর্ক ছিন্নকারীর বিরুদ্ধে আল্লাহ তাআলার দরবারে অভিযোগ করবে। তাই এসব বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি।

-সূরা নিসা ৭-১৪; ফাতাওয়া রহীমিয়া ১০/২৫৩

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - সিলেট

১৫৫৫. প্রশ্ন

আমার বন্ধু খালেদ অযু করে বাসে আরোহন করে সায়েদাবাদের উদ্দেশ্যে। কিছুক্ষণ পর ঝিমুনি আসলে সে সিটে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। প্রায় দশ মিনিট ঘুমানোর পর জাগ্রত হয় এবং একটু পরই গন্তব্যস্থলে নেমে মাগরিবের  নামায পূর্বের অযুতেই আদায় করে। তার নামায কি সহীহ হয়েছে?

 


উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সিটে বসে ঘুমানো অবস্থায় লোকটির কোমরের নিচের অংশ সিটের সাথে ভালোভাবে এঁটে লেগে থাকলে তার অযু নষ্ট হয়নি বলে ধরা হবে। এক্ষেত্রে ঐ অযু দিয়ে মাগরিবের নামায আদায় করা সহীহ হয়েছে। তবে এধরনের ক্ষেত্রে সতর্কতামূলক পুনরায় অযু করে নেওয়া ভালো। আর যদি ঘুমন্ত অবস্থায় সিট থেকে কোমরের নীচের অংশ পৃথক হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে অযু নষ্ট হয়ে গেছে বলে ধরা হবে। এক্ষেত্রে ঐ নামায পুনরায় পড়ে নিতে হবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ১/১৩৫; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৪১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৯

শেয়ার লিংক

আবদুর রহমান - সিলেট

১৫৫৭. প্রশ্ন

একদিন আসরের নামাযের তৃতীয় রাকাতে ইমাম সাহেব তিনটি সেজদা করে। কিছু মুকতাদী তৃতীয় সেজদায় ইমাম সাহেবের অনুসরণ করেন। আর কিছু মুকতাদী অনুসরণ করেননি। ইমাম সাহেব নামায শেষে সেজদায়ে সাহুও করেননি। এখন তাদের নামাযের হুকুম কী?

 


উত্তর

ইমাম সাহেব অতিরিক্ত সেজদা করার কারণে  ইমাম এবং সকল মুকতাদীর উপর সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হয়েছে। কিন্তু সেজদায়ে সাহু না করার কারণে ইমাম মুক্তাদী সকলের জন্য নামাযটি পুনরায় পড়ে নেওয়া জরুরি। উল্লেখ্য এ ধরনের ভুলের ক্ষেত্রে ইমামের অনুসরণ না করাই নিয়ম। কিন্তু অনুসরণ না করলেও ইমামের ভুলের কারণে সকলের উপর সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়ে যায়।

-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৬১; শরহুল মুনয়া পৃ. ৫২৮, ৪৫৬; রদ্দুল মুহতার ১/৪৫৭

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবু সুফিয়ান - চাদপুর

১৫৫৯. প্রশ্ন

গাড়ি দুর্ঘটনায় আমার বাম হাতের কব্জি থেকে আঙ্গুল পর্যন্ত ক্ষত হয়। ডাক্তার ক্ষত অংশটুকুসহ আরো কিছু অংশ  ব্যান্ডেজ করে দেন। কনুই পর্যন্ত বাকি অংশ খোলা আছে। অযুর সময় ব্যান্ডেজটি খুলে ক্ষত স্থানের আশপাশ ধৌত করাও বেশ কষ্টকর। অযুর সময় আমার করণীয় কী?


উত্তর

এধরনের ক্ষেত্রে অযু-গোসলের নিয়ম হল, ব্যান্ডেজকৃত অংশের উপর মাসেহ করা। অর্থাৎ ভেজা হাত দিয়ে পুরো ব্যান্ডেজের উপর মুছে দেওয়া। ভালো অংশের ব্যান্ডেজের উপরও মাসেহ করবে। তা খোলার প্রয়োজন নেই। আর ঐ হাতের অবশিষ্ট খোলা অংশ ধৌত করবে।

-সুনানে আবু দাউদ ৪৯; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৫০

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ মাছুম - জকিগঞ্জ, সিলেট

১৫৬০. প্রশ্ন

শীতকালে আমার হাত-পা ফেটে যায়। তাই শীতকাল এলে হাত-পায়ে বেশি করে তেল বা লোশন মাখতে হয়। জানার বিষয় হল, অযু করার সময় যেহেতু পানি তেল লোশনের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় তাই এতে কি অযু শুদ্ধ হবে?

 


উত্তর

হ্যাঁ, তেল বা লোশন ব্যবহারের পর তৈলাক্ত অঙ্গসমূহে স্বাভাবিকভাবে পানি পৌঁছালেই অযু হয়ে যাবে। তৈলাক্ততা দূর করে পানি পৌঁছানো জরুরি নয়।

-আদ্দুররুল মুখতার ১/১৫৪; ইমদাদুল ফাত্তাহ পৃ. ৭০

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবদুল হাফীয - চট্টগ্রাম

১৫৬১. প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি ভোরে ঘুম থেকে উঠতে না পারায় সেহরী না খেয়েই সকালে নফল রোযা রাখার নিয়ত করেছে। আমার প্রশ্ন হল, সেহরী না খেয়ে রোযা রাখার দ্বারা রোযাটি হয়েছে কি?

 


উত্তর

রোযার জন্য সেহরী খাওয়া জরুরি নয়; বরং মুস্তাহাব। সেহরী না খেলেও রোযা হয়ে যায়। রোযার কোন ক্ষতি হয় না।

-সহীহ বুখারী ১৯২৩; উমদাতুল কারী ১০/৩০০; রদ্দুল মুহতার ২/৪১৯

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - লালবাগ

১৫৬২. প্রশ্ন

আমাদের ঘরে ব্যাঙের উপদ্রব একটু বেশি। একদিন মেঝেতে পড়ে থাকা আমার গেঞ্জির মধ্যে একটি ব্যাঙ প্রস্রাব করে দেয় এবং প্রায় পাঁচ আঙ্গুল পরিমাণ ছড়িয়ে পড়ে। অতঃপর আমি তা না ধুয়ে পরিধান করে আসরের নামায আদায় করি। আমার নামায কি আদায় হয়েছে?

 


উত্তর

ডাঙ্গায় বসবাসকারী ব্যাঙের প্রস্রাব নাজাসাতে গলীজা। তাই প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী গেঞ্জিটি নাপাক হয়ে গেছে। অতএব ঐ গেঞ্জি পরিধান করে যে নামায পড়া হয়েছে তা সহীহ হয়নি। ঐ নামায পুনরায় পড়ে নেওয়া জরুরি।

-আননাহরুল ফায়েক ১/১৪৮; শরহুল মুনয়া পৃ. ১৪৬; ইমদাদুল ফাতাওয়া ১/৭৫

শেয়ার লিংক

ইমাদুদ্দীন - লালমনিরহাট

১৫৬৩. প্রশ্ন

আমার অনেক সময় জামাতে এক দুই রাকাত ছুটে যায়। জানার বিষয় হল, ছুটে যাওয়া রাকাতগুলো আদায় করার সময় শুরুতে সূরা ফাতেহা পাঠ  করব নাকি সানা পড়ে তারপর সূরা ফাতিহা পড়ব?

 


উত্তর

ছুটে যাওয়া রাকাত আদায়ের সময় সানা দিয়ে শুরু করা উত্তম।

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/১০৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৯১

শেয়ার লিংক

আবদুল মুমিন - রাজশাহী

১৫৬৪. প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় কুরবানীর পশু সাধারণত ইমাম সাহেব বা অন্য কোনো হুজুরকে দিয়ে জবাই করানো হয়। ইমাম সাহেব একটু কাটার পরই বাকিটুকু কসাই জবাই করে। এখানে আমার প্রশ্ন হল, এক্ষেত্রে উভয়কেই বিসমিল্লাহ বলতে হবে নাকি শুধু ইমাম সাহেব বললেই চলবে?

 


উত্তর

জবাইকারী একাধিক হলে প্রত্যেককে পৃথক পৃথক বিসমিল্লাহ বলতে হবে। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ইমাম সাহেব জবাই সম্পন্ন না করে কসাই বা অন্য কাউকে দিয়ে দিলে দ্বিতীয় ব্যক্তিকেও বিসমিল্লাহ বলতে হবে। এক্ষেত্রে দ্বিতীয়জন ইচ্ছাকৃত বিসমিল্লাহ না বললে জবাই সহীহ হবে না এবং এ পশুর গোশত খাওয়া যাবে না। কুরবানীর ও সহীহ হবে না। অবশ্য প্রথম ব্যক্তিই যদি জবাইয়ের মৌলিক পর্ব শেষ করে ফেলে (অর্থাৎ খাদ্যনালী, শ্বাসনালী এবং শাহরগের কোনো একটি কেটে ফেলে) তাহলে এরপর অন্য কেউ ছুরি চালালে তার বিসমিল্লাহ বলা জরুরি নয়, তবে বলে নেওয়া ভালো। 

-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/২৫৫; রদ্দুল মুহতার ৬/৩০২

শেয়ার লিংক

রুকাইয়া সুমি - বাসাবো, ঢাকা

১৫৬৫. প্রশ্ন

আমার একটা ছাগল আছে। সামনের ঈদে ১০/১১ মাস পূর্ণ হবে। আমার প্রশ্ন হল মোটাতাজা হওয়ার কারণে দেখতে ১ বছর ছাগলের মতো লাগলে। সামনের ঈদে কুরবানী দিতে পারব কি?

 


উত্তর

ছাগল কুরবানীর যোগ্য হওয়ার জন্য পূর্ণ এক বছর বয়স হওয়া জরুরি। এক বছরের কম বয়সের ছাগল মোটাতাজা হওয়ার কারণে দেখতে এক বছর বয়সী মনে হলেও তা দ্বারা কুরবানী জায়েয হবে না। অতএব প্রশ্নোক্ত ছাগল দ্বারা আগামী ঈদে কুরবানী সহীহ হবে না।

-সহীহ মুসলিম ২/১৫৪; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৬

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আতাউল মুহসিন - ঢাকা

১৫৬৬. প্রশ্ন

আমি যোহরের নামাযের শেষ বৈঠকে ছিলাম। এ সময় আমার দুই বছরের ছোট ছেলেটি কোলে এসে বসে পড়ে এবং এ অবস্থায় পেশাব করে দেয়। কিন্তু তার পরনে যেহেতু পেম্পারস ছিল তাই পেশাব পেম্পারসের ভিতরই থেকে যায়। তাই আমার গায়ে  মোটেও পেশাব লাগেনি। এ অবস্থায় আমার নামাযটি কি সহীহ হয়েছে?

 


উত্তর

হ্যাঁ, সহীহ হয়েছে। ঐ শিশুর অপবিত্রতার কারণে আপনার নামায নষ্ট হয়নি।

-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৭৮

শেয়ার লিংক

শরীফ হোসাইন - লালবাগ

১৫৬৭. প্রশ্ন

আমি একটি বইয়ে পড়েছি যে, তাকবীরে তাহরীমার পূর্বে জায়নামাযে দাড়িয়ে ইন্নি ওয়াজ্জাহতু ... দুআটি পড়তে হয়। একে জায়নামাযের দুআ বলে। এ সম্পর্কে আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেবকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, এই দুআটি পড়া ঠিক নয়। জানার বিষয় হল, বইয়ের কথা ঠিক নাকি ইমাম সাহেবের কথা ঠিক? সঠিক সমাধান দিয়ে সঠিক আমলের সুযোগ দিবেন।

 


উত্তর

প্রশ্নে বর্ণিত দুআটি জায়নামাযে দাড়িয়ে তাকবীরে তাহরীমার পূর্বে পড়াটা প্রমাণিত নয়। হাঁ, হাদীস শরীফে নফল নামাযে তাকবীরে তাহরীমার পর পড়ার কথা রয়েছে। এ সংক্রান্ত হাদীসের আলোকে ফিকাহবিদগণ নফল নামাযে তাকবীরে তাহরীমার পর সানার পূর্বে এ দুআ পড়াকে উত্তম বলেছেন।

-সুনানে নাসাঈ ১/১০৪; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৭১

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আহসান হাবীব - ডেমরা, ঢাকা

১৫৬৮. প্রশ্ন

আমি একটি পাঞ্জাবি ধোয়ার জন্য বালতির পানিতে ভিজিয়ে রাখি। কিছুক্ষণ পর বলতি থেকে উঠিয়ে তা ধুয়েই নিই। একটু পর আমার অনুপস্থিতিতে আমার এক সহপাঠি এসে বালতির ঐ পানি দ্বারা অযু করে নামায আদায় করে। জানার বিষয় হল, তার নামায কি আদায় হয়েছে? উল্লেখ্য, ঐ পাঞ্জাবিটা অপবিত্র ছিল না।

 


উত্তর

ব্যবহৃত পাক কাপড় পানিতে ভিজানোর দ্বারা ঐ পানি ব্যবহৃত পানির হুকুমে হয় না বা নাপাকও হয় না। তাই ঐ ব্যক্তির অযু হয়ে গেছে এবং ঐ অযু দ্বারা আদায়কৃত নামাযও সহীহ হয়েছে।

-সহীহ মুসলিম ১/৩৮৪; আদ্দুররুল মুখতার ১/৩৫০; উমদাতুল ফিকহ ১/২৪৫

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবু মুসা - নেত্রকোনা

১৫৬৯. প্রশ্ন

পুরুষের মতো কি মহিলাদের জন্যও মিসওয়াক করা সুন্নত? হাদীসে মহিলাদের মিসওয়াক করা সম্পর্কে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় কি?


উত্তর

মহিলাদের জন্যও মিসওয়াক করা সুন্নত। হাদীস শরীফে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-আমার উম্মতের উপর কষ্টের আশঙ্কা না হলে তাদের উপর প্রত্যেক নামাযে মিসওয়াক করা জরুরি করে দিতাম। (সহীহ বুখারী ১/১২২)

সুনানে আবু দাউদের ১/৮ এক বর্ণনায় আম্মাজান হযরত আয়েশা রা.-এর মিসওয়াক করার কথা উল্লেখ আছে।

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ খালেদ - যাত্রাবাড়ি

১৫৭০. প্রশ্ন

এক ব্যক্তির ফরয গোসল শেষ হওয়ার পর মনে পড়ল যে, সে নাকে পানি পৌঁছায়নি। এ অবস্থায় কি সে পুনরায় শুরু থেকে গোসল করবে না শুধু নাকে পানি দেওয়াই যথেষ্ট হবে?


উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে শুধু নাকে পানি দেওয়াই যথেষ্ট। পুনরায় গোসল করতে হবে না।

-মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা ১/৩৭৪; ইলাউস সুনান ১/২১৬; শরহুল মুনয়া পৃ. ৫০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - সিলেট

১৫৭১. প্রশ্ন

অযুর পর কালেমায়ে শাহাদাত পড়া কী? এতে কি কোনো ফযীলত আছে? অনেককে আবার কালেমায়ে শাহাদাত পড়ার সময় আকাশের দিকে তাকাতে দেখা যায়। এটার হুকুমও জানতে চাই।


উত্তর

অযুর পর কালেমায়ে শাহাদাত পড়া মুস্তাহাব। রাসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-অর্থ : যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অযু করার পর আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়ারাসূলুহু বলবে তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজাই খুলে দেওয়া হবে। সে যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারবে। (সহীহ মুসলিম ১/১২২)

অন্য এক বর্ণনায় কালেমায়ে শাহাদাত পড়ার সময় আকাশের দিকে তাকানোর কথাও আছে। তাই সম্ভব হলে এর উপর আমল করাও ভালো।

-সুনানে আবু দাউদ ১/২৩; মুসনাদে আহমদ ১/২৭৪; সুনানে তিরমিযী ১/১৮; মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা ১/২৩৬, ১৫/৪২৩

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ হোসাইন মাহমুদ - তারাব

১৫৭২. প্রশ্ন

অযুর মধ্যে ঘন দাড়ি ধৌত করতে হবে নাকি মাসহ করলেও চলবে? যদি ধোওয়াই ফরয হয় তাহলে কী পরিমাণ ধৌত করতে হবে? আর যদি মাসহ করতে হয় তাহলেও কী পরিমাণ?

উল্লেখ্য, বেকায়া কিতাবে আছে দাড়ির এক চতুর্থাংশ মাসহ করা ফরয কথাটি কি ঠিক?

 

 


উত্তর

অযুতে ঘন দাড়ি ধোয়ার নিয়ম হল, চেহারার সীমার ভিতরের পুরো দাড়ির উপরিভাগ ধৌত করা ফরয। এ অংশ মাসহ করা যথেষ্ট নয়।

আর চেহারার সীমার বাইরের দাড়ি ধোয়া লাগবে না। এ অংশ মাসহ করা সুন্নত। প্রশ্নে বেকায়া কিতাবের যে মতটি উল্লেখ করা হয়েছে তা গ্রহণযোগ্য নয়। হানাফী মাযহাবের একাধিক নির্ভরযোগ্য গ্রন্থে যেমন ফাতাওয়া শামী ১/১১৭; আলবাহরুর রায়েক ১/১৬ ও শরহে বেকায়ার সুপ্রসিদ্ধ শরহ আসসিআয়ায় ১/৯৬-৯৮ ইত্যাদিতে এমতটিকে অগ্রহণযোগ্য বলা হয়েছে। আরো দেখুন : ফাতহুল কাদীর ১/১২; বাদায়েউস সানায়ে ১/৬৭; আননাহরুল ফায়েক ১/৩৬

শেয়ার লিংক

তাহিয়া আবির - মালিবাগ

১৫৭৩. প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি দুই রাকাত বিশিষ্ট নামাযের দ্বিতীয় রাকাতে বসে তাশাহহুদ পড়ে ভুলে দাড়িয়ে যায়। দাড়ানোর কিছুক্ষণ পর ভুল বুঝতে পারে এবং সাথে সাথে বসে পড়ে। বসে দরূদ শরীফ পাঠ করে সাহু সেজদা করে। অতঃপর তাশাহহুদ, দরূদ শরীফ ও দুআ পড়ে সালামের মাধ্যমে নামায শেষ করে। জানার বিষয় হল, ঐ ব্যক্তির জন্য বসার পর দরূদ শরীফ পড়ে সাহু সেজদা করা ঠিক হয়েছে কি? আর তার নামায আদায় হয়েছে কি?

 


উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সাহু সেজদা করার কারণে নামায হয়ে গেছে। তবে দাড়ানো থেকে বসার পর দরূদ শরীফ পড়া নিয়মসম্মত হয়নি; বরং সঠিক নিয়ম হল শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ পড়ার পর ভুলে দাড়িয়ে গেলে ভুল বুঝামাত্র বসে পড়বে। এরপর তাশাহহুদ, দরূদ শরীফ ইত্যাদি কিছু না পড়ে সাহু সেজদার জন্য সালাম ফিরাবে এবং সাহু সিজদা করে তাশাহহুদ ইত্যাদি যথা নিয়মে পড়ে নামায শেষ করবে।

-শরহুল মুনয়া পৃ. ৪৬৩; রদ্দুল মুহতার ২/৮৭

শেয়ার লিংক

আবিদ হোসাইন - কুমিল্লা

১৫৭৪. প্রশ্ন

একব্যক্তি তার স্ত্রীর আগের ঘরের মেয়ের মেয়েকে বিবাহ করতে চাচ্ছে। আমার প্রশ্ন হল, তার জন্য ঐ মেয়েকে বিবাহ করা জায়েয হবে কি? জানালে উপকৃত হব।

উল্লেখ্য যে, সে তার স্ত্রীর  সাথে ঘরসংসার করছে।

 


উত্তর

স্ত্রীর পূর্বের স্বামী থেকে যে সন্তানাদি হয়েছে পরবর্তী স্বামীর জন্য তারাও মাহরাম। তাই প্রশ্নোক্ত ব্যক্তির জন্য আগের ঘরের মেয়ের মেয়েকে বিবাহ করা সম্পূর্ণ হারাম। তার সাথে স্ত্রী হিসাবে বসবাস করলে ব্যভিচারের গুনাহ হবে এবং বর্তমান স্ত্রীর সাথেও বৈবাহিক সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাবে।

-সূরা নিসা ২৩; রূহুল মাআনী ৪/৬৩৪; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৩৪; রদ্দুল মুহতার ৩/৩১

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ খালেদ - যাত্রাবাড়ি, ঢাকা

১৫৭৫. প্রশ্ন

আমাদের এলাকার জনৈক মুরববী অযুতে হাত কনুই থেকে ধোয়া শুরু করেন। হাত ধোয়ার সঠিক নিয়ম কি? সঠিক মাসআলা জানালে উপকৃত হব।


উত্তর

অযুতে হাত ধোয়ার সুন্নত নিয়ম হল, আঙ্গুলের দিক থেকে ধোয়া। কনুই এর দিক থেকে ধোয়া সুন্নত নিয়ম নয়।

-সহীহ বুখারী ১/২৮; বাদায়েউস সানায়ে ১/১১৪

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আসআদ - সিলেট

১৫৭৬. প্রশ্ন

একব্যক্তি কাপড়ের মোজার উপর চামড়ার মোজা পরিধান করে তার উপর মাসহ করে। তার মাসহ কি সঠিক হয়েছে?

 


উত্তর

হ্যাঁ, কাপড়ের মোজার উপর চামড়ার মোজা পরিধান করলেও মাসহ করা জায়েয। অবশ্য চামড়ার মোজা পায়ের সাথে এঁটে থাকতে হবে এবং এতে অন্যান্য শর্তও থাকতে হবে।

-শরহুল মুনয়া পৃ. ১১২; রদ্দুল মুহতার ১/২৬৯

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ হাবীবুল্লাহ - সিলেট

১৫৭৭. প্রশ্ন

আমার এক সহপাঠী অযুতে চেহারা ধোয়ার সময় চোখ বন্ধ করে ফেলে। আমি তাকে বললাম, চোখ বন্ধ রাখলে তো চোখের ভিতরে পানি প্রবেশ করে না। তাই আপনার অযু হবে না। সে বলল, চোখের ভিতরে পানি পৌঁছানো জরুরি নয়। সঠিক মাসআলা জানতে চাই।

 


উত্তর

অযু-গোসলে চোখের ভেতরের অংশ ধোয়ার হুকুম নেই। তবে চোখের পাতার উপরের সর্বত্র পানি পৌঁছানো জরুরি। তাই অযুর সময় চোখ বেশি এঁটে বন্ধ করবে না। কেননা, এতে পাতার ভাঁজে পানি না পৌঁছার আশঙ্কা থাকে।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪; রদ্দুল মুহতার ১/৯৭

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবদুল হক - সিলেট

১৫৭৮. প্রশ্ন

একব্যক্তি জানাযার নামাযের জন্য অযু করে জানাযার নামায আদায় করে। কিছুক্ষণ পর আসরের সময় হলে সে ঐ অযু দ্বারাই আসরের নামায আদায় করে। বিষয়টি একজনকে জানানো হলে সে বলল, জানাযার জন্য কৃত অযু দ্বারা অন্য নামায আদায় করা যায় না। তাই তার নামায হয়নি। আসল মাসআলা জানতে চাই।


উত্তর

লোকটির কথা ঠিক নয়। জানাযার উদ্দেশ্যে কৃত অযু দ্বারাও ফরয, নফল সব ধরনের নামাযই আদায় করা জায়েয। তাই ঐ অযু দ্বারা আদায়কৃত আসরের নামাযটি সহীহ হয়েছে। শরয়ী তরীকায় অযু করলে তা দ্বারা যে কোনো নামাযই আদায় করা যায় এবং ঐ সকল আমল করা যায় যার জন্য অযু জরুরি।

-ইমদাতুল ফাতাওয়া ১/৭

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ মাহমুদুল হাসান - সাভার, ঢাকা

১৫৭৯. প্রশ্ন

আমার ছোট ছেলে ঘরের মেঝেতে প্রস্রাব করে। স্থানটি একটি ভেজা কাপড় দিয়ে ভালো করে দুই বার মুছে নেয়ার পর ফ্যানের বাতাসে মেঝেটি শুকিয়ে যায়। এতে পেশাবের গন্ধও ছিল না। অতঃপর নামাযের জন্য অযু করার পর অসতর্কতাবশত পেশাবের স্থানটিতে ভেজা পা পড়ে যায়। এ অবস্থায় পা না ধুয়েই নামায পড়ে নিয়েছি। আমার নামায কি সহীহ হয়েছে? পা ধোয়া কি জরুরি ছিল?

 


উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার নামায সহীহ হয়েছে। ভেজা পায়ে ঐ জায়গায় চলাচলের দরুণ আপনার পা নাপাক হয়নি। কারণ মেঝেটি মোছার পর তা শুকিয়ে যাওয়া ও নাপাকীর প্রভাব নিঃশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার দ্বারা তা পাক হয়ে  গেছে।

-মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা ১/৪৩১; নাসবুর রায়া ১/২৭৭; ইলাউস সুনান ১/৩৯৬; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৪২

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আরিফুল ইসলাম - সাভার, ঢাকা

১৫৮০. প্রশ্ন

অযুতে হাত পায়ের আঙ্গুল খিলাল করার বিধান কী? পায়ের আঙ্গুল খিলাল করার সঠিক নিয়ম জানতে চাই।

 


উত্তর

স্বাভাবিকভাবে আঙ্গুলের ফাঁকে পানি পৌঁছে গেলে খিলাল করা সুন্নাত। আর খিলাল ব্যতীত পানি না পৌঁছলে খিলাল করা ফরয।

পায়ের আঙ্গুল খিলাল করার নিয়ম হল, খিলালের জন্য বাম হাতের কনিষ্ঠা ব্যবহার করবে এবং ডান পায়ের কনিষ্ঠা থেকে শুরু করবে। খিলালের সময় পায়ের উপর দিক দিয়ে আঙ্গুল প্রবেশ করাবে অতঃপর আঙুলের গোড়া থেকে উপরের দিকে টেনে নিয়ে যাবে।

-সুনানে আবু দাউদ ১/১৯-২০; জামে তিরমিযী ১/১৬; মুসনাদে আহমদ ২৯/৩৮৮, ২৬/৩০৯; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২২; বাদায়েউস সানায়ে ১/১১৪; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৩৭; রদ্দুল মুহতার ১/১১৭

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আহমাদুল্লাহ - ঢাকা

১৫৮১. প্রশ্ন

শীতকালে অনেককে দেখা যায় অযুর পূর্বে প্রথমে পা ভিজিয়ে নেয়। এটা কেমন?

 


উত্তর

শীতকালে শুষ্কতার কারণে চামড়ার ভাঁজে সহজে পানি পৌঁছে না। পা ভিজিয়ে নিলে ধোয়া সহজ হয়। তাই সতর্কতামূলক আগে পা ভিজিয়ে নেওয়া বা পানি ছিটিয়ে দেওয়া ভালো। এতে দোষের কিছু নেই।

-বাদায়েউস সানায়ে ১/১১৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৯; ইলাউস সুনান ১/১৩৩; রদ্দুল মুহতার ১/১৩১

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ সানওয়ার হুসাইন - বগুড়া

১৫৮২. প্রশ্ন

আমার একটি দোকান অনেক দিন যাবত খালি পড়ে আছে। একদিন আমার এক বন্ধু বলল, তোর দোকানটি তো খালিই পড়ে আছে আমার কাছে কিছু টাকা আছে তা দিয়ে একটি ফটোস্ট্যাট মেশিন ক্রয় করে তোর দোকানে ব্যবসা করব। যা মুনাফা হবে তা থেকে ৩০% তোকে দিব। এতে আমি রাজি হয়েছি। এখন আমার প্রশ্ন হল, আমাদের উক্ত চুক্তিটি কি শরীয়তসম্মত হয়েছে? না হলে শরীয়তের বিধান জানিয়ে উপকৃত করবেন।

 


উত্তর

আপনাদের উক্ত চুক্তিটি সহীহ  হয়নি। কারণ একজনের দোকান ও অন্যের মেশিন এবং স্থান মিলে যৌথ মূলধনী কারবার হয় না। সুতরাং যৌথ ব্যবসার মতো লাভের অংশ থেকে আপনার পাওনা ধার্য করা ঠিক হয়নি। এক্ষেত্রে সঠিক পদ্ধতি হল, দোকানের জন্য একটি ভাড়া ধার্য করা, যা মেয়াদান্তে পরিশোধ করতে হবে। চাই ব্যবসায় লাভ হোক বা না হোক।

-মাজাল্লা, মাদ্দাহ ১৩৪৪; পৃ. ২৫২; শরহুল মাজাল্লা খালিদ আতাসী ৪/২৬৪; আলবাহরুর রায়েক ৫/১৮৪

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ শামসুল হুদা - বগুড়া

১৫৮৩. প্রশ্ন

আমি একবার খুব জটিল রোগে আক্রান্ত হলাম। তো অসুস্থ অবস্থায় মান্নত করলাম, আল্লাহ তাআলা যদি আমাকে সুস্থতা দান করেন তাহলে আমি হজ্ব করব। তখন আমার আর্থিক অবস্থায় এমন ছিল যে, আমার  উপর হজ্ব ফরয। প্রশ্ন হল, আমার উপর আগে থেকেই হজ্ব ফরয হয়ে আছে। এখন যদি আমি হজ্ব করি তাহলে কোনটি হবে? আমার ফরয হজ্ব এবং মান্নতের হজ্ব উভয়টিই কি আদায় হবে?

 

 


 

উত্তর

আপনি যদি নিজের ফরয হজ্ব ও মান্নতের হজ্ব উভয়টির নিয়তে হজ্ব আদায় করেন তাহলে এক হজ্ব দ্বারাই দুটিই আদায় হয়ে যাবে।

-মানাসিকে মুল্লা আলী পৃ. ৪৬৭-৪৬৮; গুনয়াতুন নাসিক পৃ. ৩৪৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৭৭; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৭২

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ শহীদুল ইসলাম - ঢাকা

১৫৮৪. প্রশ্ন

আমি হজ্বের এহরাম অবস্থায় একদিন পায়ের গোছা খুব চুলকাই। এতে আমার ৬/৭টি পশম পড়ে যায়। জানতে চাই যে, এতে কি আমার কোনো কাফফারা দিতে হবে? দিতে হলে তা কি দেশে দেওয়া যাবে?

 


উত্তর

উক্ত কারণে আপনার উপর একটি ফেতরা পরিমাণ খাদ্যশস্য বা তার মূল্য সদকা করা ওয়াজিব। এই সদকা আপনি এখানেও আদায় করতে পারেন। তবে হরম এলাকায় দেওয়া উত্তম।

-বাদায়েউস সানায়ে ২/৪২২; মানাসিকে মুল্লা আলী পৃ. ৩২৭; গুনয়াতুন নাসিক পৃ. ২৬৩,২৫৬

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ কাউসার - কচুয়া, চাদপুর

১৫৮৫. প্রশ্ন

আমাদের দেশে অনেক সময় ফুটপাত বা নিম্ন মানের দোকানগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতার মাঝে পণ্যের দরকষাকষি হয়। ক্রেতা একটি দাম বলে কিন্তু দেখা যায় যে, ক্রেতা তার কাঙ্খিত দামে পণ্যটি না পেয়ে সেখান থেকে চলে আসে। কিছু দূরে আসার পর বিক্রেতা ঐ দামেই পণ্যটি নেওয়ার জন্য ক্রেতাকে ডাকতে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে ক্রেতা ফিরে না আসলে তাকে বকাবকি পর্যন্ত করে থাকে। আমার প্রশ্ন হল, এরূপ ক্ষেত্রে শরীয়তের দৃষ্টিতে ক্রেতা ওই পণ্যটি ক্রয় করতে বাধ্য কি না? এবং ক্রয় না করলে সে ভৎর্সনার যোগ্য হবে কি না?

 


উত্তর

ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে একপক্ষ পণ্যের মূল্য প্রস্তাব করার পর অপর পক্ষ তাতে সম্মত না হলে ঐ প্রস্তাব বাতিল  হয়ে যায়। তদ্রূপ একপক্ষ মূল্য প্রস্তাবের পর অপর পক্ষ সম্মত হওয়ার পূর্বে দুজনের কেউ প্রস্থান করলে বা অস্বীকৃতি জানালেও ঐ প্রস্তাব বাতিল গণ্য হয়।

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের উভয় দিক পাওয়া গেছে। তাই ক্রেতার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হয়ে গেছে। ফলে ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন হয়নি। সুতরাং পরবর্তীতে বিক্রেতা ঐ মূল্যে বিক্রির জন্য রাজি হওয়াটা তার পক্ষ থেকে নতুন প্রস্তাব বলে বিবেচিত হবে। অতএব এখন ক্রেতা ঐ মূল্যে পণ্যটি ক্রয় করতে বাধ্য নয়; বরং এক্ষেত্রে সে পূর্ণ স্বাধীন। ঐ মূল্যে সে ক্রয় করতেও পারে এবং নাও করতে পারে। ক্রয় না করলে তাকে ভৎর্সনা করা বকাবকি করা অন্যায় হবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/৩২৪; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৭২; হিদায়া ২/২৩; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৫২৭

শেয়ার লিংক