মাজেদা - নারায়ণগঞ্জ

৬৭৪৮. প্রশ্ন

সর্দির কারণে মাঝে মাঝেই আমার নাক বন্ধ হয়ে থাকে বিশেষত ঘুম থেকে ওঠার পর এ সমস্যাটা বেশি হয় তখন ওযু করার পরও নাক ঝাড়লে প্রায়ই চাকার মতো জমাট বাঁধা রক্ত বের হয়ে আসে

জানতে চাই, নাক ঝাড়ার সময় এ রকম রক্তের চাকা বের হলে কি ওযু ভেঙে যাবে?

উত্তর

নাক ঝাড়ার সময় ভেতর থেকে জমাট বাঁধা রক্ত বের হলে ওযু নষ্ট হয় না তাই এক্ষেত্রে আপনাকে পুনরায় ওযু করতে হবে না

* >خلاصة الفتاوى< /১৫ : الرجل إذا استنثر، فخرج من أنفه علق قدر العدسة، لا ينقض الوضوء.

আলমুহীতুল বুরহানী ১/২০৩; আলবাহরুর রায়েক ১/৩৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১১; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ১৩৬; রদ্দুল মুহতার ১/১৩৯

শেয়ার লিংক

যুহাইর মুহাম্মাদ - পল্লবী, ঢাকা

৬৭৪৯. প্রশ্ন

আমাদের মাদরাসার একটি নলকূপ স্থাপনের সময় তার গোড়ায় গরুর গোবর ব্যবহার করা হয় এখন জানার বিষয় হল, ওযু-গোসলে এর পানি ব্যবহার করা যাবে?

উত্তর

নলকূপ স্থাপনের সময় যদি গোবর ব্যবহার করা হয়, তাহলে প্রথমে বিপুল পরিমাণ পানি উঠিয়ে ফেলে দেবে এরপর যদি স্বচ্ছ পানি আসা শুরু হয় এবং গোবর আসা বন্ধ হয়, তাহলে তা পাক বলে গণ্য হবে এবং ওযু-গোসলেরও কাজে তা ব্যবহার করা যাবে

* كتاب >الأصل< للشيباني /৫৬ : قلت: أرأيت الشاة إذا بالت في بئر الماء؟ قال: ينزح ماء البئر كله إلى أن يغلبهم الماء. قلت: وكذلك بول ما يؤكل لحمه وما لا يؤكل لحمه، إذا بال شيء منها في بئر الماء، أمرت أن ينزف ماء البئر كله حتى يغلبهم الماء؟ قال: نعم. قلت: وكذلك أرواثها؟ قال: نعم.

ফাতহুল কাদীর ১/৯১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৩১২; মিনহাতুল খালিক ১/৮৫; আদ্দুররুল মুখতার ১/২১২

শেয়ার লিংক

মাহমুদ হাসান - সদর দক্ষিণ, কুমিল্লা

৬৭৫০. প্রশ্ন

একদিন আমি ছাগলের দুধ দোহন করছিলাম ইত্যবসরে ছাগল মলত্যাগ করা শুরু করে ফলে ২/৪ টি বিষ্ঠা দুধের পাত্রে পড়ে যায় আমি সঙ্গে সঙ্গেই বিষ্ঠাগুলো তুলে ফেলে দেই তাড়াতাড়ি তুলে নেওয়ার কারণে দুধে বিষ্ঠার রং প্রকাশ পায়নি

জানার বিষয় হল, এ দুধ পান করা কি জায়েয হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে পাত্রে পড়া বিষ্ঠাগুলো যেহেতু পরিমাণে সামান্য ছিল এবং পড়ার পর বিলম্ব না করে ফেটে যাওয়ার আগেই তা তুলে নিয়েছেন, তাই ঐ দুধ নাপাক গণ্য হবে না তা পান করতে কোনো অসুবিধা নেই

তবে যদি বিষ্ঠা পরিমাণে বেশি হয়, কিংবা পরিমাণে কম হলেও তৎক্ষণাৎ তা না ওঠানো হয়, যার কারণে বিষ্ঠার রং দুধে প্রকাশ পায় কিংবা তা ফেটে যায়, তাহলে এসব ক্ষেত্রে উক্ত দুধ নাপাক গণ্য হবে সেক্ষেত্রে তা পান করা, বিক্রি করা জায়েয হবে না

الفتاوى من أقاويل المشايخ< (فتاوى النوازل) للسمرقندي ص ১৬ : وسئل أبو نصر عن البعرة تقع في اللبن، فقال: متى يسلم من هذا؟ وعن محمد بن مقاتل أنه سئل عن ذلك، قال: لا بأس به ما لم يظهر فيه اللون. وسئل خلف بن أيوب عن رجل حلب شاة، فوقعت في اللبن بعرة أو بعرتان، فيلقيها من ساعته، قال: لا بأس به. وعن نصير، قال: سألت الحسن بن زياد عن بعر الشاة إذا وقعت في اللبن، قال: إن رمى بها قبل أن تتفتت فيه فلا بأس به.

আলমাবসূত, সারাখসী ১/৮৮; ফাতহুল কাদীর ১/৮৭; আলবাহরুর রায়েক ১/২৩১; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ১৬১; আদ্দুররুল মুখতার ১/২২১

শেয়ার লিংক

শাহীন মুস্তাফি - মানিকনগর, ঢাকা

৬৭৫১. প্রশ্ন

কুরবানীর ঈদের দিন অনেক মানুষকে বিশেষত কসাইদের দেখা যায়, সালাম ফেরানোর পর খুতবা না শুনে মসজিদ থেকে বের হয়ে যায় এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তারা এ বলে উত্তর দেয় যে, গরু জবাই করার জন্য আমাদেরকে ছুরি নিয়ে আগে থেকে প্রস্তুত থাকতে হয় বিলম্ব করলে আমাদের জবাইয়ের জন্য নির্ধারিত গরুগুলো হাতছাড়া হয়ে যায় তাই খুতবা না শুনে বের হয়ে পড়তে হয়

হুজুরের কাছে জানতে চাচ্ছি, ঈদের খুতবার হুকুম কী এবং তাদের খুতবা না শুনে এভাবে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে কি?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অজুহাতে খুতবা না শুনে মসজিদ থেকে বের হয়ে যাওয়া খুবই অন্যায় খুতবা দেওয়াই হয় মুসল্লীদের উদ্দেশে তাদের দায়িত্ব হল, চলে না গিয়ে সেখানে থেকে খুতবা শ্রবণ করা প্রশ্নোক্ত বিষয়টি খুতবা না শুনে চলে যাওয়ার মতো কোনো ওজরও নয় এছাড়া এটি অসুন্দর ও দৃষ্টিকটুও বটে যে, ইমাম খুতবা দিচ্ছেন আর একদল মুসল্লী উঠে চলে যাচ্ছেন তা মুসলমানদের জামাতের ঐক্য ও সৌন্দর্য নষ্ট করে

* >بدائع الصنائع< /৬১৯ : وكيفية الخطبة في العيدين كهي في الجمعة، ... ويستمع لها القوم وينصتوا؛ لأنه يعلمهم الشرائع ويعظهم، وإنما ينفعهم ذلك إذا استمعوا.

মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৫৭৩৪; আলমাবসূত, সারাখসী ৪/৫৪; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪৮৩; আলবাহরুর রায়েক ২/১৫৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৫৯

শেয়ার লিংক

ইলিয়াস শরীফ - নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা

৬৭৫২. প্রশ্ন

গত সপ্তাহে জুমার দিন আমরা কয়েকজন এক আত্মীয়ের বাসায় যাই জুমার আগ মুহূর্তে হঠাৎ মুষলধারে বৃষ্টি আরম্ভ হয় ফলে আমাদের পক্ষে আর মসজিদে যাওয়া সম্ভব হয়নি মসজিদও ছিল বাসা থেকে একটু দূরে তাই আমরা সেখানেই জুমার নামায পড়ে নিই আমরা ছিলাম পাঁচজন

জানার বিষয় হল, আমাদের জুমার নামায কি আদায় হয়েছে? আর যদি না হয়ে থাকে, তাহলে এখন কী করণীয়?

উত্তর

অতিবৃষ্টির কারণে জুমার নামাযের জন্য মসজিদে যেতে না পারলে নিয়ম হল, একাকী যোহর পড়ে নেওয়া; নিজেরা বাড়িতে জুমার জামাত (যোহরের জামাতও) না করা কিন্তু কেউ যদি আযান ও খুতবাসহ ন্যূনতম চারজন মিলে ঘরেও জুমা পড়ে নেয়, তাহলে জুমা সহীহ হওয়ার ন্যূনতম শর্ত পাওয়া যাওয়ার কারণে সেটি আদায় হয়ে যাবে এবং তাদেরকে আর ঐ দিনের যোহর পড়তে হবে না যদিও সেটি সঠিক  কাজ হবে না

* >الأجناس< للناطفي /১৩১والمسافرون إذا حضروا في مصر يوم الجمعة ليس عليهم الجمعة، ويصلون الظهر فرادى، وليس لهم أن يصلوها بالجماعة، وكذلك أهل المصر إذا فاتتهم الجمعة.

আযযাখিরাতুল বুরহানিয়া ২/৩৯৯; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২১১; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৭৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৪৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৫১

শেয়ার লিংক

ফজলে বারী - মহিপাল, ফেনী

৬৭৫৩. প্রশ্ন

গত রমযানে এক মসজিদে আমি তারাবীর নামায পড়ি বিতির নামাযের তৃতীয় রাকাতে ইমাম সাহেব কেরাতের পর তাকবীর বলে রুকুতে চলে যান ভুলে দুআয়ে কুনূত ছেড়ে দেন কিন্তু আমরা কজন মুসল্লী উপরের তলায় নামায পড়েছি বিধায় ইমাম যখন তাকবীর বলেছেন, আমরা মনে করেছি, তিনি এখন দুআয়ে কুনূত পড়ছেন এজন্য আমরাও দুআয়ে কুনূত পড়তে থাকি এরপর ইমাম যখন سمع الله لمن حمده বলে রুকু থেকে ওঠেন, তখন আমরা বুঝতে পারি, তিনি দুআয়ে কুনূত পড়েননি এরপর আমরা সঙ্গে সঙ্গে রুকু করে নিই এবং ইমামের সঙ্গে শরীক হই

উল্লেখ্য, ইমাম সাহেব দুআয়ে কুনূত না পড়ার কারণে সাহু সিজদা করেন আমরাও তার সঙ্গে সাহু সিজদা করি জানার বিষয় হল, আমাদের এ নামায কি সহীহ হয়েছে?

উত্তর

হাঁ, আপনাদের উক্ত নামায সহীহ হয়েছে আপনারা রুকু করার আগে ইমাম রুকু থেকে উঠে গেলেও যেহেতু ইমামের পর আপনারা নিজে নিজে রুকুটি আদায় করে নিয়েছেন, এবং বাকি নামায ইমামের সাথে যথানিয়মে সম্পন্ন করেছেন, তাই আপনাদের ঐ নামায আদায় হয়ে গেছে তা পুনরায় পড়তে হবে না

* >بدائع الصنائع< /৩৪৭ : إذا أدرك أول صلاة الإمام، ثم نام خلفه أو سبقه الحدث، فسبقه الإمام ببعض الصلاة، ثم انتبه من نومه أو عاد من وضوئه، فعليه أن يقضي ما سبقه الإمام به، ثم يتابع إمامه لما يذكر.

হাশিয়াতুশ শিলবী ১/২৭৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৯২; আদ্দুররুল মুখতার ১/৫৯৫; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ১/২৫৪

শেয়ার লিংক

কুদরতুল্লাহ - ঢাকা

৬৭৫৪. প্রশ্ন

মুহতারাম, আমি আগে থেকেই নানাবিধ রোগে আক্রান্ত ছিলাম তার ওপর কিছুদিন আগে আমার হার্টের রোগ দেখা দেয় আমার পক্ষে এখন দাঁড়িয়ে বা বসে নামায আদায় করা সম্ভব নয় এমনকি কোনো কিছুতে হেলান দিয়ে বসেও নামায আদায় করা সম্ভব নয় ডাক্তার আমাকে বলেছেন, চেয়ারে বসে নামায পড়তে

আমার প্রশ্ন হল, এমতাবস্থায় আমি কি চেয়ারে বসে নামায পড়তে পারব? চেয়ারে বসে নামায পড়লে রুকু-সিজদা কীভাবে করব?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বাস্তবেই যদি আপনার পক্ষে দাঁড়িয়ে বা যে কোনো পদ্ধতিতে নিচে বসে এমনকি কোনো কিছুতে হেলান দিয়ে হলেও নামায আদায় করা সম্ভব না হয়, তাহলে আপনি চেয়ারে বসে নামায আদায় করতে পারবেন এক্ষেত্রে আপনি ইশারায় রুকু ও সিজদা আদায় করবেন রুকুর সময় মাথা যতটুকু নিচু করবেন সিজদার সময় মাথা তার চেয়ে আরেকটু বেশি নিচু করবেন আর চেয়ারে বসে ইশারায় সিজদা করার সময় হাত হাঁটুতেই রাখবেন মাটিতে সিজদা করার মতো হাত উঠিয়ে চেহারা বরাবর রাখবেন না এটি ভুল পদ্ধতি তদ্রƒপ সিজদার জন্য সামনে টেবিল বা এজাতীয় অন্য কিছু রাখবেন না এটিও ভুল পদ্ধতি এসবের কোনো প্রয়োজন নেই

 

* كتاب >الأصل< /১৮৭ : قلت: أرأيت المريض الذي لا يستطيع أن يقوم، ولا يقدر على السجود، كيف يصنع؟ قال: يومئ على فراشه إيماء، ويجعل السجود أخفض من الركوع.

সহীহ বুখারী, হাদীস ১১১৭; মুখতাসারু যাওয়াইদিল বায্যার, ইবনে হাজার ১/২৭৫ (বর্ণনা ৪০৪); আততামহীদ ১/১৩৫; আলমাবসূত, সারাখসী ১/২১২; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৮৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৬; আদ্দুররুল মুখতার ২/৯৫

শেয়ার লিংক

সাইফুর রহমান - চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা

৬৭৫৫. প্রশ্ন

ইমাম সাহেব সিজদায় থাকাবস্থায় অনেক মুসল্লী মসজিদে এসে উপস্থিত হন কেউ কেউ তাকবীর বলে ঐ অবস্থাতেই ইমামের সঙ্গে শরীক হয়ে যান আর কেউ দাঁড়িয়ে থেকে ইমাম পরবর্তী রাকাত শুরু করার অপেক্ষা করতে থাকেন এরপর তাকবীর বলে ইমামের সঙ্গে নামাযে শরীক হন এক্ষেত্রে সঠিক পদ্ধতি কোন্টি? জানালে কৃতজ্ঞ হব

উত্তর

ইমামকে সিজদায় পেলে ইমামের দাঁড়ানোর অপেক্ষা না করে তখনই ইমামের সঙ্গে সিজদায় শরীক হয়ে যাবে

হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন

إِذَا أَتَى أَحَدُكُمُ الصَّلَاةَ وَالإِمَامُ عَلَى حَالٍ فَلْيَصْنَعْ كَمَا يَصْنَعُ الإِمَامُ.

তোমাদের কেউ যখন নামাযে উপস্থিত হবে, তখন ইমামকে যে অবস্থায় পাবে, সেও যেন সেই অবস্থায়ই ইমামের সাথে শরীক হয়ে যায় (জামে তিরমিযী, হাদীস ৫৯১)

আরেক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন

إِذَا جِئْتُمْ إِلَى الصَّلَاةِ وَنَحْنُ سُجُودٌ فَاسْجُدُوا، وَلَا تَعُدُّوهَا شَيْئًا، وَمَنْ أَدْرَكَ الرَّكْعَةَ، فَقَدْ أَدْرَكَ الصَّلَاةَ.

অর্থাৎ, তোমরা যখন নামাযে এসে আমাদেরকে সিজদায় পাবে তখন তোমরাও সিজদায় শামিল হয়ে যাবে তবে উক্ত সিজদাকে নামাযের রাকাত হিসেবে গণ্য করবে না; বরং যে ব্যক্তি রুকু পাবে সে-ই নামায পেয়েছে (অর্থাৎ ঐ রাকাত পেয়েছে) (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৮৮৫)

হিশাম ইবনে উরওয়া তার পিতা উরওয়া রাহ. থেকে বর্ণনা করেন

أَنَّهُ كَانَ يَكْرَهُ لِلرَّجُلِ إذَا جَاءَ وَالإِمَامُ سَاجِدٌ أَنْ يَتَمَثَّلَ قَائِمًا حَتَّى يَتْبَعَهُ.

কেউ ইমামকে সিজদায় পেলে (তখনই নামাযে শরীক না হয়ে) ইমামের দাঁড়ানো পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকাকে তিনি অপছন্দ করতেন (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ২৬২৮)

 

* >الحاوي القدسي< /১৮৫ : وفي أي حال أدرك الإمام دخل معه. ويستحب للرجل إذا دخل المسجد والإمام راكع أن يأتي الصف بالسكينة والوقار، ولا يكبر ولا يركع حتى يصل إلى الصف، فإن أدركه في الركوع، افتتح الصلاة قائما، ثم يكبر أخرى للركوع، ويشارك الإمام فيه، ... وإن أدركه في السجود أو القعود، شاركه فيه مع الذكر المسنون.

সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৩৬; উমদাতুল কারী ৫/১৫২; আলমাবসূত, সারাখসী ১/৩৫; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৮৮; হালবাতুল মুজাল্লী ২/১২৫

শেয়ার লিংক

সাজিদুর রহমান - নাসির নগর, বি-বাড়িয়া

৬৭৫৬. প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় মায়্যেতকে দাফন করার পর মুসল্লীরা কবরের পাশে দাঁড়িয়ে তার জন্য দুআ করে থাকে

জানতে চাই, দাফনের পর এভাবে দুআ করা কি শরীয়তসম্মত?

উত্তর

দাফনের পর কেবলামুখী হয়ে মায়্যেতের জন্য দুআ করা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত আছে

উসমান রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন

كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، إِذَا فَرَغَ مِنْ دَفْنِ الْمَيِّتِ وَقَفَ عَلَيْهِ، فَقَالَ: اسْتَغْفِرُوا لِأَخِيكُمْ، وَسَلُوا لَهُ بِالتَّثْبِيتِ، فَإِنَّهُ الْآنَ يُسْأَلُ.

নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মায়্যেতের দাফনের কাজ শেষ করে সেখানে অবস্থান করতেন এবং বলতেন, তোমরা তোমাদের ভাইয়ের জন্য ইস্তিগফার কর, তার জন্য দৃঢ়তার দুআ কর (যেন সে সঠিক উত্তর দিতে পারে) কেননা এখন তাকে প্রশ্ন করা হবে (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩২১৩)

আরেক হাদীসে আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন

وَاللهِ لَكَأَنِّي أَرَى رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي غَزْوَةِ تَبُوكَ، وَهُوَ فِي قَبْرِ عَبْدِ اللهِ ذِي الْبِجَادَيْنِ وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ رَضِيَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُمْ، يَقُولُ: أَدْلِيَا مِنِّي أَخَاكُمَا، وَأَخَذَهُ مِنْ قِبَلِ الْقِبْلَةِ حَتَّى أَسْنَدَهُ فِي لَحْدِهِ، ثُمَّ خَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَوَلَّاهُمَا الْعَمَلَ، فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ دَفْنِهِ، اسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ رَافِعًا يَدَيْهِ يَقُولُ: اللهُمَّ إِنِّي أَمْسَيْتُ عَنْهُ رَاضِيًا، فَارْضَ عَنْهُ.

তাবুক যুদ্ধে আমি দেখলাম, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবদুল্লাহ যুল বিজাদাইনের কবরে নামেন আবু বকর ও উমর রা. তার সাথে ছিলেন নবীজী বলেন, তোমাদের ভাইকে আমার কাছে দাও তিনি তাকে কেবলার দিক থেকে নিয়ে কবরে রাখেন অতঃপর তিনি কবর থেকে উঠে বাকি কাজ আবু বকর ও উমর রা.-কে করতে দেন দাফন থেকে ফারেগ হয়ে নবীজী কেবলামুখী হয়ে হাত তুলে এই দুআ করেন

اللهُمَّ إِنِّي أَمْسَيْتُ عَنْهُ رَاضِيًا، فَارْضَ عَنْهُ.

হে আল্লাহ, আমি তার প্রতি সন্তুষ্ট সুতরাং আপনিও তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যান (হিলইয়াতুল আউলিয়া ১/১২২; মারিফাতুস সাহাবা ৩/১৩৫)

 

* >حلبة المجلي< /৬২৫ : ثم إذا سوى التراب عليه، يستحب لمشيعيه أن يقفوا على قبره، ويسألوا له التثبيت.

মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ১১৮২৭; ফাতহুল বারী ১১/১৪৮; আলজাওহারাতুন নায়্যিরা ১/১৪১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৬; রদ্দুল মুহতার ২/২৩৭

শেয়ার লিংক

রুকনুদ্দীন - কানাইঘাট, সিলেট

৬৭৫৭. প্রশ্ন

আমাদের এলাকার জনসাধারণের ধর্মীয় শিক্ষার অবস্থা খুবই নাজুক অনেক দ্বীনদার পরিবারের যুবক ছেলেরাও নিত্য প্রয়োজনীয় সূরা-কেরাতও শুদ্ধভাবে পড়তে পারে না এই অবস্থা কাটিয়ে তুলতে মসজিদের ইমাম ও মুতাওয়াল্লী সাহেব কিছু উদ্যোগ নিতে চাচ্ছেন

১. ইমাম সাহেবের দুইজন সহকারী নিয়োগ দিয়ে সাবাহী মক্তব চাঙ্গা করা

২. মসজিদে বয়স্ক কুরআন শিক্ষা চালু করা

৩. সন্ধ্যাকালীন কুরআনের দরস চালু করা

কিন্তু শিক্ষকদের বেতনসহ এ সংক্রান্ত খরচাদির বিষয়টি নিয়ে তারা চিন্তিত তা তারা জোগান দিতে অক্ষম প্রতি মাসেই মসজিদ মার্কেট থেকে প্রাপ্ত আয় দিয়ে মসজিদের যাবতীয় ব্যয় নির্বাহের পরেও পর্যাপ্ত টাকা থেকে যায়

জানার বিষয় হল, এমতাবস্থায় মসজিদ ফান্ডের টাকা দিয়ে দ্বীনী তালীমের উপরোক্ত কার্যক্রমের ব্যয় নির্বাহ করা যাবে কি না?

উত্তর

কুরআন ও দ্বীনী বিষয়াদি শিক্ষা দেওয়া মসজিদের কাজ ও উদ্দেশ্যের অন্তর্ভুক্ত তাই দ্বীনী তালীমের উপরোক্ত কার্যক্রমের ব্যয় নির্বাহের জন্য মসজিদ মার্কেটের আয় থেকে খরচ করা যাবে এবং অনুদানকারীগণের মাঝে ব্যাপকভাবে জানাজানি হলে মসজিদের সাধারণ ফান্ডের টাকা থেকেও খরচ করা যাবে

প্রকাশ থাকে যে, মসজিদভিত্তিক দ্বীনী তালীম-তরবিয়তের ধারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের যুগ থেকে চলে আসছে তাই আপনাদের মসজিদের প্রশ্নোক্ত উদ্যোগ প্রশংসনীয় এবং অন্যদের জন্য অনুসরণীয়ও বটে

শরহু মুসলিম, নববী ৫/৫৫; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৪; বাদায়েউস সানায়ে ৫/৩৩০; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৩৬৭

শেয়ার লিংক

জুনাইদ আহমদ - নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা

৬৭৫৮. প্রশ্ন

আমাদের বাজারে সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার হাঁস, মুরগি ও এজাতীয় অন্য পশু-পাখির অস্থায়ী হাট বসে সে হাটের অধিকাংশ ব্যাপারী চরাঞ্চল থেকে আসে হাট শেষে তাদের কাছে কোনো পণ্য যদি অবিক্রীত থেকে যায়, তাহলে তারা এগুলোকে বাজার দর থেকে কিছু কম দামে, একটি নির্ধারিত দামে বিক্রি করে দেওয়ার জন্য স্থানীয় ব্যাপারীদের কাছে রেখে যায় নির্ধারিত ঐ দামের অতিরিক্ত যত টাকা লাভে স্থানীয় ব্যাপারী বিক্রি করতে পারবে, তাই তার মজুরী হিসাবে গণ্য হবে আর নির্ধারিত মূল্যটা মালিক নিয়ে যাবে

উদাহরণস্বরূপ একটি মুরগির বাজার দর ৪০০ টাকা মুরগির মালিক স্থানীয় ব্যাপারীকে বিক্রয়মূল্য ৩৭৫ টাকা নির্ধারণ করে দিল এরপর স্থানীয় ব্যাপারী মুরগিটি বিক্রি করল ৪২০ টাকায় তাহলে এর থেকে মুরগির মালিক নেবে ৩৭৫ টাকা আর বাদ বাকি ৪৫ টাকা স্থানীয় ব্যাপারী তার শ্রমের বিনিময় হিসেবে রেখে দেবে

জানার বিষয় হল, এভাবে কারবার করা জায়েয আছে কি?

উত্তর

না, স্থানীয় ব্যাপারীদের সাথে প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিতে চুক্তি করার প্রচলনটি শরীয়তসম্মত নয় কেননা এক্ষেত্রে স্থানীয় ব্যাপারীরা হল বিক্রয় প্রতিনিধি অন্যদের হাস-মুরগি বিক্রির শ্রম প্রদানের বিনিময়ে পারিশ্রমিকের হকদার হয় আর শ্রমচুক্তি সহীহ হওয়ার জন্য চুক্তির সময় শ্রমদাতার মজুরী সুনির্ধারিত হওয়া জরুরি কিন্তু প্রশ্নোক্ত চুক্তিতে তাদের পারিশ্রমিক অনির্ধারিত থেকে যায়

তাছাড়া মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের সাথে এভাবে চুক্তি করার কারণে তারা ভোক্তাদের থেকে অধিক লাভ নেওয়ার সুযোগ পেয়ে যায় ফলে ক্রেতাদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে যার দরুন বাজার প্রভাবিত হওয়ার পথ তৈরি হয় তাই এ পদ্ধতি থেকে বিরত থাকতে হবে

এক্ষেত্রে শরীয়তসম্মত পন্থা হল

১. চুক্তির সময়ই স্থানীয় ব্যাপারীদের পারিশ্রমিক সুনির্ধারিত করে দেবে সে মুরগিটি বিক্রি করে দিলে তাকে এত টাকা দেওয়া হবে যেমন একটি মুরগির জন্য ৩০ টাকা সে পারিশ্রমিক পাবে এক্ষেত্রে মুরগির বিক্রীত মূল্য পুরোটাই মালিকের হবে

২. তাদের কাছে বিক্রি করে দেওয়ার জন্য না রেখে মুরগিগুলো সরাসরি তাদের কাছেই সুনির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করে দিয়ে আসবে এবং তা বাকিতেও হতে পারে এরপর এটি পাইকারগণ তাদের নিজের পণ্য হিসেবে অন্যের কাছে বিক্রি করবে, এবং মূল মালিককে পূর্বচুক্তি অনুযায়ী তার প্রাপ্য মূল্য আদায় করে দেবে অতিরিক্ত মূল্য পেলে সেটি তাদের নিজেদের লাভ বলে বিবেচিত হবে

 

* >الفتاوى الخانية< /৩২৬ : رجل دفع إلى رجل ثوبا، وقال بعه بعشرة، فما زاد فهو بيني وبينك، قال أبو يوسف رحمه الله تعالى : إن باعه بعشرة أو لم يبعه، فلا أجر له، وإن تعنى في ذلك وتعب. ... والفتوى على قول أبي يوسف رحمه الله تعالى.

মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ২০৭৭৬, ২০৭৭৭; উমদাতুল কারী ১২/৯৩; আযযাখিরাতুল বুরহানিয়া ১১/৪৩০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৩/১২৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৪১০

শেয়ার লিংক

আবূ মূসা - ফেনী

৬৭৫৯. প্রশ্ন

আমি ও আমার বড় ভাইয়ের যৌথ মালিকানাধীন একটি বাড়ি ছিল তাতে আমাদের উভয়ের সমান মালিকানা ছিল দুই মাস আগে আমরা উভয়ে মিলে বাড়িটি বিশ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দিই কয়েকদিন আগে ক্রেতা আমার বড় ভাইয়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বাড়ির মূল্য বাবদ দশ লক্ষ টাকা পাঠালে সেখান থেকে আমাকে পাঁচ লক্ষ টাকা দিয়ে দিতে বড় ভাইয়ের কাছে আবেদন করি কিন্তু তিনি বলছেন আমার অ্যাকাউন্টে পাঠানো এই মূল্য আমার অংশের বাকি অনাদায়ী দশ লক্ষ টাকা তোমার অংশের তা পরে তুমি ক্রেতা থেকে বুঝে নিয়ো

জানতে চাই, শরীয়তের দৃষ্টিতে আদায়কৃত এ দশ লক্ষ টাকার মালিক কি আমার বড় ভাই এককভাবে হবেন, নাকি তাতে আমারও সমান মালিকানা সাব্যস্ত হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনারা উভয়েই যেহেতু বাড়িটির সমানভাবে মালিক ছিলেন, তাই ক্রেতা কর্তৃক বাড়িটির মূল্য বাবদ প্রদানকৃত দশ লক্ষ টাকার আপনারা দুজনই সমানভাবে মালিক এ টাকা আপনারা দুজনে সমান পাঁচ লক্ষ টাকা করে নেবেন বড় ভাইয়ের অ্যাকাউন্টে টাকা আসার কারণে সে এর একক মালিক বলে বিবেচিত হবে না তার অ্যাকাউন্টে আসার কারণে পুরো টাকার একক মালিকানা দাবি করা গ্রহণযোগ্য নয়

* >المحيط البرهاني< /৪০০ : كل دين وجب لاثنين على واحد بسبب واحد حقيقة وحكما، كان الدين مشتركا بينهما، فإذا قبض أحدهما شيئا منه، كان للآخر أن يشاركه في المقبوض.

ফাতহুল কাদীর ৫/৩৭৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৭/৫০৬; আলবাহরুর রায়েক ৫/১৬৬; আননাহরুল ফায়েক ৩/২৯৪; আদ্দুররুল মুখতার ৫/৬৪০

শেয়ার লিংক

জসীমুদ্দীন - চৌমুহনী, নোয়াখালী

৬৭৬০. প্রশ্ন

আমরা চার ভাই, এক বোন আমাদের আব্বু মারা যাওয়ার পর অনেক বছর হয়ে গেলেও তার রেখে যাওয়া জায়গা-জমি এখনো অবণ্টিত অবস্থায় আছে কিছুদিন আগে সম্পত্তি ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে আমাদের মাঝে কথা উঠলে বড় ভাই বাকি তিন ভাইয়ের তুলনায় কিছু জমি অতিরিক্ত পাবেন বলে দাবি করেন কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আমার বোনের অংশ নাকি তিনি কিনে নিয়েছেন, আর বোনও তা স্বীকার করেন

এখন জানার বিষয় হল, আমাদের মাঝে জায়গা জমি ভাগ হয়ে যার যার অংশ সে বুঝে পাওয়ার আগেই বোন থেকে যে বড় ভাই তার অংশ কিনে নিয়েছেন, তা কি সহীহ হয়েছে?

উত্তর

হাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্রয়-বিক্রয়টি সহীহ হয়েছে কেননা যৌথ মালিকানাধীন সম্পদ ভাগ-বাঁটোয়ারার আগেও কোনো এক অংশীদারের নিজের অংশ বিক্রি করা জায়েয আছে সম্পদ ভাগ না হওয়ার কারণে এই বিক্রি অগ্রহণযোগ্য বলে গণ্য হবে না কারণ, বিক্রেতা তার নিজ অংশই বিক্রি করছে; অন্যেরটা নয়

ইবনে জুরাইজ রাহ. আতা রাহ. থেকে বর্ণনা করেন

عَنْ عَطَاءٍ: فِي رَجُلَيْنِ وَرِثَا أَمْوَالاً وَمَتَاعًا، يَبِيعُ أَحَدُهُمَا صَاحِبَهُ قَبْلَ أَنْ يَقْتَسِمَا. قَالَ: نَعَمْ.

আতা রাহ.-কে জিজ্ঞাসা করা হল, দুইজন ব্যক্তি মীরাসসূত্রে ধন-সম্পদের মালিক হওয়ার পর তাদের একজন অন্যজনের কাছে বণ্টনের আগেই এই সম্পদ বিক্রি করতে পারবে?

উত্তরে তিনি বললেন, হাঁ, (বিক্রি করতে পারবে) (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ২৩৮৩৬)

* >المحيط البرهاني< ২২/২১১ : والشركة متى تثبت بالإرث والشراء، وما يجري مجراهما، يجوز بيع أحدهما نصيبه من الشريك، ومن الأجنبي بإذن شريكه، وبغير إذن شريكه، ولا يملك التصرف فى غير نصيب صاحبه إلا بإذنه.

আলইখতিয়ার ২/৪৪০; আলমুজতাবা, যাহিদী ৩/২৯৪; ফাতহুল কাদীর ৫/৩৭৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৩০১; মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়া, মাদ্দাহ ১০৮৮

শেয়ার লিংক

মেরাজ - নোয়াখালী

৬৭৬১. প্রশ্ন

আমার আম্মার পালিত মুরগিগুলো বাড়ির পাশের বাগানে ছিল হঠাৎ একটি বেজি মুরগিগুলোর ওপর আক্রমণ করে আম্মা মুরগির আওয়াজ শুনে দ্রুত সেখানে গেলেন গিয়ে দেখেন একটি মুরগির মাথা বেজি কামড় দিয়ে নিয়ে গেছে মুরগিটির পূর্ণ গলা অক্ষত ছিল তখন মুরগিটি ছটফট করা অবস্থায় আম্মা এনে দ্রুত জবাই করে ফেলেন এখন জানার বিষয় হল, এ মুরগিটি খাওয়া জায়েয হবে?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী যেহেতু মুরগিটির পূর্ণ গলা অক্ষত ছিল, তাই নিশ্চিত প্রাণ থাকা অবস্থায় এটিকে নিয়মানুযায়ী জবাই করে নেওয়া হলে মুরগিটি হালাল গণ্য হবে এবং এর গোশত খাওয়া যাবে

* >الفتاوى البزازية< /৩০৮ : ولو انتزع الذئب رأس الشاة، وبقيت حية تحل بالذبح بين اللبة واللحيين.

ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৩৯২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৮৬; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/১৫৮; রদ্দুল মুহতার ৬/৩০৮

শেয়ার লিংক

শুয়াইব - সোনাইমুড়ী, নোয়াখালী

৬৭৬২. প্রশ্ন

বর্তমানে আমার বয়স ২৫ বছর আল্লাহর ওপর ভরসা করে আগামী বছর বিবাহ করার ইচ্ছা আছে পরিবারের লোকজন এখন থেকে আমার জন্য মেয়ে দেখা শুরু করেছেন কিন্তু এ বয়সেই আমার মাথার কিছু চুল সাদা হয়ে যাওয়ায় আমি তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি আমার এক বন্ধু সমাধান হিসেবে কালো খেযাব ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছে

তাই জানতে চাই, এমতাবস্থায় শরীয়তের দৃষ্টিতে আমার জন্য কালো খেযাব ব্যবহার করা জায়েয হবে কি?

উত্তর

আপনার যেহেতু বয়স কম এখনো চুল-দাড়ি সাদা হওয়ার মতো পর্যায়ে পৌঁছায়নি, তাই এ অবস্থায় আপনার জন্য কালো খেযাব ব্যবহার করার সুযোগ রয়েছে কারণ, এটি কোনো রোগের কারণে হয়েছে এ অবস্থায় তা কালো করে ফেললে কেউ আপনার বয়স নিয়ে সন্দেহে পড়বে না তবে বয়স বেড়ে গেলে (অর্থাৎ যে বয়সে সাধারণত মানুষের চুল-দাড়ি সাদা হয়ে থাকে) আর কালো খেযাব লাগানো যাবে না

হাদীস শরীফে এসেছে, জাবের রা. বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন আবু বকর রা.-এর পিতা আবু কুহাফা রা.-কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে উপস্থিত করা হল, তার চুল-দাড়ি ছিল ধবধবে সাদা তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন

غَيِّرُوْا هَذَا بِشَيْءٍ، وَاجْتَنِبُوْا السَّوَادَ.

বার্ধক্যের এই চিহ্নকে (চুল-দাড়ির সাদা রং) কোনো কিছু দিয়ে পরিবর্তন করে দাও তবে কালো রং বর্জন করবে (সহীহ মুসলিম, হাদীস ২১০২)

অপর এক হাদীসে এসেছে, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন

غَيِّرُوْا الشَّيْبَ، وَلَا تَشَبَّهُوْا بِالْيَهُوْدِ وَاجْتَنِبُوْا السَّوَادَ.

(খেযাবের মাধ্যমে) তোমাদের বার্ধক্যের চিহ্ন পরিবর্তন করো ইহুদীদের সাদৃশ্য অবলম্বন করো না তবে কালো রঙের খেযাব ব্যবহার থেকে বিরত থাকবে (সুনানে কুবরা, বায়হাকী ৭/৩১১)

ইমাম যুহরী রাহ. বলেন

كُنَّا نُخَضِّبُ بِالسَّوَادِ إِذْ كَانَ الْوَجْهُ جَدِيدًا، فَلَمَّا نَغَضَ الْوَجْهُ وَالْأَسْنَانُ تَرَكْنَاهُ.

যখন আমাদের চেহারায় লাবণ্য ছিল (আমরা যুবক ছিলাম) তখন আমরা কালো রঙের খেযাব ব্যবহার করতাম কিন্তু যখন চেহারা ম্লান হয়ে গেল ও দাঁত দুর্বল হয়ে পড়ল, তখন আমরা এর ব্যবহার ছেড়ে দিয়েছি (ফাতহুল বারী ১০/৩৬৭)

অবশ্য কালো খেযাবের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি মূলত বয়স্কদের জন্য হলেও হাদীস শরীফে যেহেতু কালো খেযাব ব্যবহার সম্পর্কে সতর্কবাণী এসেছে, তাই অল্প বয়সে চুল পেকে গেলে সেক্ষেত্রেও পুরোপুরি কালো রঙের খেযাব ব্যবহার না করে কালোর সাথে কিছুটা মেহেদী রঙ বা লালচে রঙের খেযাব মিশিয়ে ব্যবহার করা সব ক্ষেত্রেই উত্তম

* >إمداد الأحكام< /৩৯০ : ومن شاب قبل أوان المشيب أو خضب لإرهاب العدو في الحرب، يجوز له الخضاب بالسواد.

রদ্দুল মুহতার ৬/৭৫৬; তুহফাতুল আহওয়াযী ৫/১৫৪; তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ৪/১৪৯; জাওয়াহিরুল ফিকহ ২/২২৮ 

শেয়ার লিংক