মাসউদ - বিয়ানী বাজার, সিলেট

৬৭৯৪. প্রশ্ন

বাস যোগে দূরের সফর করার কারণে যাত্রাপথে একবার আমার বমি হয় এতে জামার বিভিন্ন অংশে বমি লেগে যায় তাৎক্ষণিক টিস্যু দিয়ে বমি মুছে ফেলাতে জামায় বমির তেমন দাগ থাকেনি তাই এই জামা পরে আমি মাগরিবের নামায পড়ি

জানতে চাচ্ছি, আমার এই নামায কি সহীহ হয়েছে?

উল্লেখ্য, আমার সঙ্গে তখন অন্য জামাও ছিল এবং জামা পরিবর্তন করে নামায পড়ার সুযোগও ছিল

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বমি যদি মুখ ভরে হয়ে থাকে এবং জামায় যতটুকু বমি লেগেছে সবটুকু মিলে তা পরিমাণে এক দিরহামের (অর্থাৎ হাতের তালুর গভীরতা সমপরিমাণের) চেয়ে বেশি হয়, তাহলে ওই জামা পরে আপনি যেই নামায পড়েছেন তা সহীহ হয়নি তাই সেক্ষেত্রে ওই নামায পুনরায় পড়ে নেওয়া জরুরি কিন্তু পরিমাণে এক দিরহাম বা তার কম হলে ওই নামায আদায় হয়ে গেছে আর যদি বমি মুখ ভরে না হয়, তাহলে সেটি নাপাক নয় এবং নামাযও আদায় হয়ে গেছে

উল্লেখ্য, ভালো জামা সাথে থাকলে এ ধরনের কাপড়ে নামায আদায় না করে সবক্ষেত্রেই তা পরিবর্তন করে নেওয়া ভালো

* كتاب >الأصل< للشيباني /৪৬ : قلت: فإن صلى به، ولم يغسله؟ قال: إن كان أكثر من قدر الدرهم غسله، وأعاد الصلاة، وإن كان أقل من قدر الدرهم، لم يعد الصلاة، ولكن أفضل ذلك أن يغسله.

قلت: وكذلك لو أصاب يده القيء؟ قال: نعم.

বাদায়েউস সানায়ে ১/১৯৩, ২৩২; আলমুহীতুল বুরহানী ১/৩৭৪; আলজাওহারাতুন নাইয়িরা ১/৪৯; আলবাহরুর রায়েক ১/২২৮; আদ্দুররুল মুখতার ১/৩১৬

শেয়ার লিংক

আনাস - লালবাগ, ঢাকা

৬৭৯৫. প্রশ্ন

ট্যাপে ওযু করার সময় হাত ধোয়ার ক্ষেত্রে অনেককে কনুইয়ের দিক থেকে পানি প্রবাহিত করতে দেখি হুজুরের কাছে জানতে চাচ্ছি, এক্ষেত্রে নিয়ম কী? হাতের আঙুলের দিক থেকে পানি প্রবাহিত করা হবে, নাকি কনুইয়ের দিক থেকে? সমাধান জানালে উপকৃত হব

উত্তর

ওযুতে আঙুলের দিক থেকে হাত ধোয়া শুরু করা সুন্নত কনুইয়ের দিক থেকে হাত ধোয়া শুরু করা সুন্নত নিয়মের খেলাফ সুতরাং ট্যাপে ওযু করা হোক বা পাত্র থেকে পানি নিয়ে, সর্বাবস্থায় আঙুলের দিক থেকেই হাত ধোয়া শুরু করবে

* >بدائع الصنائع< /১১৪ : ومنها (أي سنن الوضوء) : البداءة فيه من رءوس الأصابع؛ لأن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يفعل ذلك.

আলমুহীতুর রাযাবী ১/৭৭; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৩; আযযিয়াউল মা‘নাবী ১/৪০১; ফাতহুল কাদীর ১/৩১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৮

শেয়ার লিংক

হাম্মাদ - কেরানীগঞ্জ, ঢাকা

৬৭৯৬. প্রশ্ন

একদিন ফজরের সময় প্রচণ্ড বৃষ্টি হয় বৃষ্টির কারণে মসজিদে যাওয়া সম্ভব হয়নি তাই কয়েকজন সাথি মিলে কামরায় ফজরের জামাত করি সাথিদের অনুরোধে আমাকে নামাযের ইমামতি করতে হয় ইমামতির জন্য আগে থেকে প্রস্তুত না থাকার কারণে নামাযে একটা সমস্যা হয় সূরা ফাতেহা পড়ার পর চিন্তা করা শুরু করি, কোন্ সূরা বা কোন্ আয়াত থেকে তিলাওয়াত করব এবং এতে খানিকটা বিলম্ব হয়ে যায় ফলে সতর্কতাবশত সাহু সিজদা দিয়ে নামায সমাপ্ত করি

জানার বিষয় হল, এ ধরনের ক্ষেত্রে সূরা আরম্ভ করতে কতটুকু বিলম্ব হলে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে?

উত্তর

সূরা ফাতেহা পড়া শেষ করার পর অন্য সূরা মিলাতে যদি বিলম্ব হয় এবং তিন তাসবীহ পরিমাণ (অর্থাৎ তিনবার سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ বা তিনবার سُبْحَانَ رَبِّيَ الْأَعْلَى বলা পরিমাণ) সময় চুপ থাকে, তাহলে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে কিন্তু তিন তাসবীহ পরিমাণ থেকে কম সময় চুপ থাকলে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে না

* >قنية المنية< للزاهدي، ص: ৭৩ : (ظم) فرغ من الفاتحة وتفكر ساكتا بأي سورة يقرأ مقدار ركن، يلزمه السهو.

কিতাবুল আছল ১/২২৭; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪০২; ফাতাওয়া কাসেম ইবনে কুতলূবুগা, পৃ. ১৫১; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৪৬৫; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলালমারাকী, পৃ. ২৫৮; মিনহাতুল খালিক ২/৯৮

শেয়ার লিংক

মারুফ - কেরানীগঞ্জ, ঢাকা

৬৭৯৭. প্রশ্ন

একদিন রাতে ঘুমাতে দেরি হওয়ায় ফজরের সময় ঘুমের অনেক চাপ ছিল এ অবস্থায়ই নামাযে দাঁড়াই প্রথম রাকাতে ইমাম সাহেব যখন প্রথম সিজদায় যান আমিও ইমামের সাথে সিজদায় যাই কিন্তু সিজদায় গিয়ে আমি তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ি এর মধ্যে ইমাম প্রথম সিজদা সম্পন্ন করে দ্বিতীয় সিজদা করেন দ্বিতীয় সিজদা থেকে তিনি যখন ওঠেন, তখন আমার ঘোর কাটে তখন আমি কী করব বুঝতে না পেরে ইমামের সাথে দাঁড়িয়ে যাই এবং ছুটে যাওয়া সিজদা আদায় না করেই ইমামের সাথে বাকি নামায শেষ করি

জানার বিষয় হল, আমার উক্ত নামায কি সহীহ হয়েছে? উক্ত অবস্থায় আমার কী করণীয় ছিল? জানিয়ে বাধিত করবেন

উত্তর

আপনার ওই নামায আদায় হয়নি তা পুনরায় পড়ে নেওয়া জরুরি কেননা নামাযে প্রতি রাকাতে দুই সিজদা করা ফরয একটি সিজদা ছুটে গেলেও নামায সহীহ হয় না

এক্ষেত্রে আপনার করণীয় ছিল, তন্দ্রাভাব কেটে যাওয়ার পর প্রথম সিজদা থেকে উঠে দ্বিতীয় সিজদাটি নিজে নিজে আদায় করে তারপর দাঁড়ানো এভাবে করলে আপনার নামায সহীহ হয়ে যেত

* >المبسوط< للسرخسي /২২২ : قال: (وإذا سلم في الرابعة ساهيا بعد قعود مقدار التشهد ولم يقرأ التشهد، أو كان عليه سجدة تلاوة أو سجدة صلاتية، عاد إلى قضاء ما عليه) ... وإن كان قد سلم عامدا فقد قطع صلاته بسلام العمد، فإن كان ما ترك سجدة صلاتية فعليه إعادة الصلاة؛ لأنها ركن.

* >الفتاوى الهندية< /৭০ : (ومنها السجود) السجود الثاني فرض كالأول بإجماع الأمة.

কিতাবুল হুজ্জাহ, ইমাম মুহাম্মাদ ১/১৯৩; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/১২০; খিযানাতুল আকমাল ১/৫৭; আলমুজতাবা, যাহেদী ১/২৩৪; হালবাতুল মুজাল্লী ২/১৬৫; জামিউর রুমূয ১/১৪৫; আদ্দুররুল মুখতার ১/৪৪৭

শেয়ার লিংক

আহমাদ লাবীব - দেওনা, গাজীপুর

৬৭৯৮. প্রশ্ন

গত জুমায় খুতবা চলাকালে মসজিদের বাইরের মাইকে সমস্যা দেখা দেয় আমি বাইরে জায়গা পেয়েছিলাম বিধায় খুতবা শুনতে পাচ্ছিলাম না তাই তখন বসে বসে সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করি

হুজুরের কাছে জানার বিষয় হল, আমার তখন কুরআন তিলাওয়াত করা ঠিক হয়েছে, নাকি খুতবা শোনা না গেলেও তখন চুপ থাকাই উচিত ছিল?

উত্তর

খুতবা চলাকালীন তা শোনা না গেলেও মুসল্লীদের দায়িত্ব, অন্যান্য কাজকর্ম ও কথাবার্তা বন্ধ করে চুপ থাকা তাই আপনারও তখন চুপ থাকা দরকার ছিল সে সময় কুরআন তিলাওয়াত করা ঠিক হয়নি সামনে থেকে বিষয়টি খেয়াল রাখবেন

* >المبسوط< للسرخسي /২৮فإن كان بحيث لا يسمع الخطبة فظاهر الجواب أنه يسكت؛ لأن المأمور به شيئان: الاستماع والإنصات، فمن قرب من الإمام، فقد قدر عليهما، ومن بعد عنه فقد قدر على أحدهما، وهو الإنصات، فيأتي بما قدر عليه.

আলফাতাওয়া মিন আকাবীলিল মাশায়েখ, পৃ. ৫৭; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/১৪২; আলমুহীতুর রাযাবী ২/৪০৪; আলহাবিল কুদসী ১/২৩৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৪৭

শেয়ার লিংক

খালেদ আহনাফ - উত্তরা, ঢাকা

৬৭৯৯. প্রশ্ন

কিছুদিন আগে ফজরের নামাযে সিজদার আয়াত পাঠ করার পর ভুলবশত সিজদা করা হয়নি

জানার বিষয় হল, উক্ত সিজদা কি এখন আদায় করে নেওয়া যাবে?

উত্তর

না, নামাযে ছুটে যাওয়া সিজদায়ে তিলাওয়াতটি এখন আর আদায়ের সুযোগ নেই নামাযের ভেতর নিজে সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করা বা ইমাম থেকে সিজদার আয়াত শোনার কারণে যে সিজদায়ে তিলাওয়াত ওয়াজিব হয়, তা নামাযের ভেতরই আদায় করা জরুরি নামাযের ভেতরে আদায় না করলে পরে তা আর আদায় করার সুযোগ থাকে না

এখন আপনার কর্তব্য হল, উক্ত ভুলের কারণে ইস্তেগফার করা সামনে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে

* >الفتاوى الهندية< /১৩৪ : والسجدة التي وجبت في الصلاة لا تؤدى خارج الصلاة، كذا في السراجية، وهكذا في الكافي، ويكون آثما بتركها، هكذا في البحر الرائق.

আলমাবসূত, সারাখসী ২/৯; ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ১৪; আলহাবিল কুদসী ১/২৩৩; আযযাখীরাতুল বুরহানিয়া ২/৩০০; ফাতহুল কাদীর ১/৪৭০; আলবাহরুর রায়েক ২/১২২

শেয়ার লিংক

আজম খান - যশোর

৬৮০০. প্রশ্ন

আমি পাইকারি ও খুচরা হোমিও ঔষধ বিক্রয় করি ঔষধ সংরক্ষণ ও বিক্রয়ের জন্য প্রস্তুত করা ইত্যাদি কাজের জন্য আমাকে অনেক বোতল কিনে রাখতে হয় আবার ক্রেতাদেরকে ঔষধ সাপ্লাইয়ের জন্যও বোতল রাখা হয়

প্রশ্ন হল, যাকাতবর্ষ শেষে এসব বোতলেরও কি যাকাত দিতে হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেসব বোতল নিজ দোকানে ঔষধ সংরক্ষণ ও সংগ্রহের কাজে ব্যবহারের জন্য রাখা হয়েছে; ক্রেতাদেরকে ঔষধের সাথে দেওয়ার জন্য ক্রয় করা হয়নি, তা যাকাতযোগ্য সম্পদের অন্তর্ভুক্ত নয় এ প্রকারের বোতলের যাকাত দিতে হবে না

কিন্তু যেসব বোতল ক্রেতাদেরকে ঔষধের সাথে দেওয়ার জন্য ক্রয় করা হয়েছে এবং ঔষধের সাথে এগুলোর মূল্যও ধরা হয়, সেসব বোতল যাকাতের হিসাবে গণ্য হবে যাকাতবর্ষ শেষে দোকানে রয়ে যাওয়া সেসব বোতলের মূল্য ধরে এর যাকাত দিতে হবে

* >المحيط الرضوي< /৪৯৩ : وأصله أن كل عين يبقى أثرها في المحل، كالعصفر والزعفران ونحوهما، ففيه الزكاة؛ لأنه تتحقق فيه معنى التجارة؛ لأنه يصير معتاضا عن الصبغ القائم في الثوب، وما لا يبقى له أثر في العين، كالصابون والحرض والخطب والملح ونحوها، فلا زكاة فيه؛ لأنه لا تتحقق فيه معنى التجارة، وكذا الدباغ يشتري العفص ليدبغ الجلد، أو الدهن والشحم ليدهن به الجلود، فلا زكاة فيه، وآلات الصناع الذين يعملون بها وظروف أمتعة التجار، فلا زكاة فيها؛ لأنها غير معدة للتجارة.

উয়ূনুল মাসায়েল, পৃ. ৩৪; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৫১; আযযাখীরাতুল বুরহানিয়া ২/৫০৪; ফাতহুল কাদীর ২/১৬৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৮০

শেয়ার লিংক

যাহিদ - চট্টগ্রাম

৬৮০১. প্রশ্ন

বন্যার সময় আমার এক বন্ধুর বাড়িঘর অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয় বন্যা শেষ হওয়ার পর সে বাড়ির কাজ শুরু করে কিন্তু আর্থিক সংকটে পড়ে যায় তাই আমি তাকে করযে হাসানা হিসেবে পাঁচ লক্ষ টাকা দিই এবং সেটা পরিশোধের জন্য তিন বছরের সময় দিই তিন বছর পর পুরো টাকা একত্রে পরিশোধ করার কথা

জানার বিষয় হল, এই তিন বছর এ টাকার যাকাত কে আদায় করবে? যদি আমাকেই আদায় করতে হয়, তাহলে কি প্রত্যেক বছর যাকাত আদায়ের জন্য ওই পরিমাণ টাকা তার থেকে নিতে পারব? সেটা আমার পাওনা টাকা থেকেই বাদ যাবে কিন্তু ঋণের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে কি তার কাছ থেকে আমি তা চাইতে পারব?

উত্তর

ঐ টাকার যাকাত আপনাকেই আদায় করতে হবে কেননা ঐ টাকার মালিক আপনি তবে এ টাকা হাতে পাওয়ার আগে তার যাকাত আদায় করা জরুরি নয়; বরং তিন বছর পর বা আগে-পরে যখন আপনি টাকাগুলো হাতে পাবেন, তখন একত্রে পেছনের অনাদায়ি সব বছরের যাকাত আদায় করলেও হবে

আর ঋণগ্রহীতা থেকে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই প্রতি বছর যাকাত আদায়ের জন্য ঋণের টাকা থেকে চাওয়া এবং তা নেওয়া নাজায়েয হবে না তবে তার সামর্থ্য না থাকলে দিতে বাধ্য করা বা চাপ দেওয়া ঠিক হবে না

আলমাবসূত, সারাখসী ২/১৯৪; বাদায়েউস সানায়ে ২/৮৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৩৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩০৫

শেয়ার লিংক

শরীফ আলী - উল্লাপাড়া, সিরাজগঞ্জ

৬৮০২. প্রশ্ন

আমার মাইগ্রেনের অসুবিধা আছে ফলে বিভিন্ন কারণে মাথাব্যথা হয় এ বছর হজে¦ আরাফার ময়দানে রোদে দাঁড়ানোর কারণে তীব্র মাথাব্যথা শুরু হয় তারপর আস্তে আস্তে তা বাড়তে থাকে ব্যথার যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে তখন আমি একটি রুমাল পেঁচিয়ে পাগড়ি বানিয়ে মাথায় বাঁধি দুপুর (আনুমানিক পৌনে দুইটা) থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এভাবে মাথায় পাগড়ি পরে থাকি সন্ধ্যার পর পাগড়ি খুলে ফেলি

প্রশ্ন হল, এ কারণে কি আমার ওপর কোনো জরিমানা আসবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ওপর একটি সদকাতুল ফিতর পরিমাণ সদকা করা ওয়াজিব হয়েছে কেননা ইহরাম অবস্থায় মাথার এক চতুর্থাংশ বা তার বেশি এক ঘণ্টা বা এর বেশি, তবে বারো ঘণ্টার কম সময় ঢেকে রাখলে (যদিও তা ওযরবশত হয়) একটি সদকাতুল ফিতর পরিমাণ সদকা করা ওয়াজিব হয় আর এই সদকা হেরেম এলাকার গরিবদেরকে দেওয়া উত্তম অবশ্য নিজ দেশে বা অন্য এলাকার দরিদ্রদেরকে দিলেও আদায় হয়ে যাবে

* >المبسوط< للسرخسي /১২৮وإن غطى المحرم ربع رأسه أو وجهه يوما فعليه دم، وإن كان دون ذلك فعليه صدقة.

আলমুহীতুর রাযাবী ২/২৩৭; ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ৩৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৮০; আলহাবিল কুদসী ১/৩৪৭; মানাসিক, মোল্লা আলী কারী, পৃ. ৩০০; রদ্দুল মুহতার ২/৫৪৭

শেয়ার লিংক

আহমাদ আবরার - কুড়িগ্রাম

৬৮০৩. প্রশ্ন

কিছুদিন আগে আমি বিবাহ করেছি আমার আপন শাশুড়ি নেই আমার স্ত্রীর ছোটবেলাতেই তিনি ইন্তেকাল করেছেন এরপর শ্বশুর আরেক বিবাহ করেছেন

আমার জানার বিষয় হল, যখন আমি শ্বশুরবাড়িতে যাব, তখন কি আমার ওই সৎ শাশুড়ির সাথে দেখা দিতে পারব?

উত্তর

সৎ শাশুড়ি মাহরাম নয় তাই তার সাথে আপনার দেখা দেওয়া জায়েয হবে না

* كتاب >الأصل< للشيباني ১০/১৮৫ : قال: ولا بأس بأن يتزوج الرجل المرأة وابنة زوج قد كان لها قبله يجمع بينهما؛ لأنه لا قرابة بينهما ولا رحم.

মুসান্নাফে আবদুর রায্যাক, বর্ণনা ১৩৯৬৪; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/১০৬; আলগায়াহ, সারুজী ১০/১৭৯; আলবাহরুর রায়েক ৩/৯৮; মিরকাতুল মাফাতীহ ৬/২৫৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৭৭

শেয়ার লিংক

নাহিদুল ইসলাম - নেত্রকোনা

৬৮০৪. প্রশ্ন

আমি সৌদি আরব ছিলাম পারিবারিক কিছু বিষয় নিয়ে প্রায়ই আমার স্ত্রীর সাথে আমার ঝগড়া হত একদিন রাগের মাথায় ফোনে আমি তাকে এক তালাক দিয়ে দিই তালাকের পর সে আমার নম্বর ব্লক করে দিয়ে বাবার বাড়ি চলে যায় এরপর থেকে আমাদের মাঝে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি এবং মাঝখানে আমি তাকে রাজআতও করিনি

চার মাস পর আমি যখন দেশে আসি, তখন তার তিনটি ঋতুস্রাব অতিবাহিত হয়ে গেছে আমি তাকে পুনরায় স্ত্রী হিসেবে ফিরিয়ে নিতে চাচ্ছিলাম তাই আমি তার পরিবারের সাথে আলোচনা চালিয়ে যেতে থাকি কিন্তু তার পরিবার ফিরিয়ে দিতে সম্মত ছিল না তাই তখন আমি তাকে চূড়ান্তভাবে তিন তালাক দিয়ে দিই

ইদানীং আমাদের দুই পক্ষের সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়েছে আমার স্ত্রীর পরিবার আমার স্ত্রীকে পুনরায় আমার কাছে ফিরিয়ে দিতে সম্মত হয়েছে

হুজুরের কাছে জানতে চাই, এখন পুনরায় আমাদের ঘর-সংসার করার কি কোনো সুযোগ আছে? দ্বিতীয়বার আমি যখন তালাক দিই, তখন তো তার তিনটি ঋতুস্রাব অতিবাহিত হয়ে গিয়েছিল এক্ষেত্রে ওই তালাকগুলো কি তার ওপর পতিত হয়েছিল?

উল্লেখ্য, আমি ইতিপূর্বে তাকে আর কোনো তালাক দিইনি

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী বাস্তবেই যদি প্রথমবার এক তালাক দেওয়ার পর তিনটি ঋতুস্রাব অতিবাহিত হয়ে গিয়ে থাকে, আর দ্বিতীয়বারের তালাকটি এর পর হয়ে থাকে, তাহলে আপনার ওই তালাকটি তার ওপর পতিত হয়নি; বরং সেগুলো অনর্থক হয়েছে

অতএব এখন আপনারা পুনরায় সুষ্ঠুরূপে ঘর-সংসার করতে চাইলে নতুন মহর ধার্য করে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে নতুন করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবেন

প্রকাশ থাকে যে, এক্ষেত্রে তাকে নতুন করে বিবাহ করার পর ভবিষ্যতে আপনি কেবল দুই তালাকের অধিকারী থাকবেন তাই পরবর্তীতে তাকে দুই তালাক দিলেই পূর্বের এক তালাকসহ মোট তিন তালাক হয়ে আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন হয়ে যাবে এবং আপনারা একে অপরের জন্য পরিপূর্ণ হারাম হয়ে যাবেন এরপর আপনাদের পুনরায় বিবাহ করেও একসাথে থাকার সুযোগ থাকবে না তাই ভবিষ্যতে তালাকের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে

* >المحيط البرهاني< /৩৯০شرط صحة إضافة الطلاق قيام القيد فى المرأة نكاحا كان أو عدة، وقيام حل جواز العقد، ولا يكفي أحدهما لصحة الطلاق. ... وأما قيام حل جواز العقد وحده، فإنه بعد ما طلقها واحدة أو ثنتين، وانقضت عدتها وطلقها، لا يصح طلاقه.

আলমাবসূত, সারাখসী ৬/১৯; আলমুহীতুর রাযাবী ৩/২১২; আলজাওহারাতুন নাইয়িরা ২/৬৪; আননাহরুল ফায়েক ২/৪২০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৪৮; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৪০৯

শেয়ার লিংক

সিরাজ মিয়া - নাটোর

৬৮০৫. প্রশ্ন

আমি একজন কৃষক আমার চারটি ছাগল ছিল কিছুদিন আগে আমি জমিজমা সংক্রান্ত একটি বিষয় নিয়ে পেরেশানীতে ভুগছিলাম তখন আমি ওই ছাগলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় ছাগলটির ব্যাপারে মান্নত করি, যদি আমার পেরেশানী দূর হয়, তাহলে আমি আগামী বছর এই ছাগলটি কুরবানী করব আলহামদু লিল্লাহ কিছুদিন পর পেরেশানী কেটে যায় কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এর অল্প ক’দিন পরই ছাগলটি মারা যায়

মুহতারামের কাছে আমার জানার বিষয় হল, আমার জন্য কি এখন মান্নত আদায়ের উদ্দেশ্যে এই ছাগলটির পরিবর্তে অন্য কোনো ছাগল কুরবানী করা কিংবা এর সমমূল্য সদকা করা জরুরি?

উত্তর

না, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মান্নতটি আদায়ের জন্য অন্য কোনো ছাগল কুরবানী করা কিংবা এর মূল্য সদকা করা আপনার ওপর জরুরি নয় কেননা মান্নতের ওই ছাগলটি মারা যাওয়ার দ্বারা আপনার মান্নতও শেষ হয়ে গেছে সুতরাং এখন এর পরিবর্তে আপনার ওপর কোনো কিছু আবশ্যক নয়

* >بدائع الصنائع< /১৯৯ : إلا إذا كان عينها بالنذر، بأن قال: لله تعالى علي أن أضحي بهذه الشاة، وهو موسر أو معسر، فهلكت أو ضاعت، أنه تسقط عنه التضحية بسبب النذر؛ لأن المنذور به معين لإقامة الواجب، فيسقط الواجب بهلاكه.

আলমাবসূত, সারাখসী ১২/১৩; তুহফাতুল ফুকাহা ৩/৮৬-৮৭; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৫

শেয়ার লিংক

আবদুর রউফ - লালমনিরহাট

৬৮০৬. প্রশ্ন

 

আমাদের মহল্লার মসজিদটি বেশ ছোট জুমার দিন তাতে মুসল্লীদের স্থান সংকুলান হয় না তাই মসজিদ কমিটি মসজিদটি সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং এর জন্য মসজিদ সংলগ্ন পশ্চিম পার্শ্বস্থ জমিটি কেনার জন্য প্রাথমিক কথাবার্তাও হয়েছে তবে সমস্যা হল, ওই জমিতে প্রায় বিশ বছর আগের একটি কবর আছে নিয়মিত পরিচর্যার কারণে কবরের স্থানটি এখনো অক্ষত আছে

এখন মসজিদ কমিটির জানার বিষয় হল, মসজিদ নির্মাণের জন্য ওই জমিটি ক্রয় করা হলে কবরটি ভেঙে সেখানে কি মসজিদ নির্মাণ করা যাবে? বিষয়টি দ্রুত জানালে ভালো হয়

উত্তর

হাঁ, মসজিদের জন্য জমিটি ক্রয় করার পর পুরোনো ওই কবরটি ভেঙে দিয়ে তার ওপর মসজিদ নির্মাণ করা জায়েয হবে এ ধরনের মালিকানাধীন পুরোনো কবর সমান করে সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে সেখানে মসজিদ নির্মাণ করতে অসুবিধা নেই

* >تبيين الحقائق< /৫৮৯ : ولو بلي الميت وصار ترابا جاز دفن غيره في قبره وزرعه والبناء عليه.

আলবাহরুর রায়েক ২/১৯৫; গুনইয়াতু যাবিল আহকাম ১/১৬৭; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃ. ৩৩৬; রদ্দুল মুহতার ২/২৩৩

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - বেলকুচি, সিরাজগঞ্জ

৬৮০৭. প্রশ্ন

শীতকালে আমাদের অঞ্চলে খেজুর গাছের মালিকরা গাছিদের সাথে এভাবে চুক্তি করে যে, গাছি খেজুর গাছ কাটবে ও ছিলবে এর বিনিময়ে মালিকের সাথে পালা বদল করে খেজুরের রস নেবে অর্থাৎ গাছের মালিক এক দিন রস নেবে আর গাছি তার পারিশ্রমিক হিসেবে এক দিন রস নেবে নিয়মটি আমাদের এলাকায় বহু বছর যাবৎ চলে আসছিল কিন্তু এ বছর আমাদের মসজিদের নতুন ইমাম সাহেব বললেন, এ ধরনের চুক্তি শরীয়তসম্মত নয় সহীহ পন্থায় এভাবে চুক্তি করা যেতে পারে যে, মালিক গাছির কাছে নির্ধারিত অর্থের বিনিময়ে খেজুর গাছ ভাড়া দেবে এরপর মালিক ভাড়াস্বরূপ সে অর্থ গ্রহণ করবে আর খেজুরের রস পুরোটাই গাছি নেবে

জানতে চাই, ইমাম সাহেব যে পদ্ধতির কথা বলেছেন সেটি কি সঠিক? এ পন্থা অবলম্বন করা কি শরীয়তসম্মত হবে?

উত্তর

না, গাছির জন্য মালিক থেকে খেজুর গাছ ভাড়া নেওয়ার প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিও শরীয়তসম্মত নয় কেননা গাছ থেকে রস গ্রহণ বা গাছের ফল লাভের জন্য গাছ ভাড়া নেওয়া জায়েয নয় এটি শরীয়তের عقد إجارة (ইজারা) নীতিমালার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়

এক্ষেত্রে শরীয়তসম্মত পন্থা হল, গাছি রসের জন্য গাছ প্রস্তুত করে দেওয়া এবং নিয়মিত তা পরিচর্যার বিনিময়ে গাছ-মালিকের সাথে নির্ধারিত পারিশ্রমিক গ্রহণের চুক্তি করবে এভাবে চুক্তি করার পর তার কাজের বিনিময়ে সে নির্ধারিত পারিশ্রমিক পাবে আর পুরো রস এককভাবে গাছের মালিকের হবে এভাবে চুক্তির পর কখনো গাছি ও মালিক সম্মত হলে পাওনা পারিশ্রমিকের টাকার বিপরীতে গাছের রসও তারা কেনা-বেচা করতে পারবে

* كتاب >الأصل< للشيباني /১২ : وقال أبو حنيفة: لا تجوز إجارة النخل والشجر والكرم، يقول الرجل للرجل: أستأجر منك هذا النخل والشجر والكرم عشر سنين بكذا كذا درهما، فما أثمر فهو لي. وكذلك قال أبو يوسف ومحمد.

আলমাবসূত, সারাখসী ১৬/৩২; বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৬; শরহুল জামিউস সগীর, কাযীখান ৩/৯০৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৫/১৪৫; ফাতাওয়া খাইরিয়া ২/২১০; দুরারুল হুক্কাম ১/৪৫১

শেয়ার লিংক

তামীম হাসান - ওয়েব থেকে প্রাপ্ত

৬৮০৮. প্রশ্ন

আমি কোনো ব্যক্তি থেকে ব্যবসার জন্য টাকা নিব ব্যবসার শর্ত অনুযায়ী সে লাভ বা ক্ষতি মেনে নেবে আমি সেই টাকা দিয়ে বিদেশ যাব চাকরি করতে বিদেশ গিয়ে চাকরি করে যদি বেতন উঠাতে পারি তখন ব্যবসায়িক লাভ হিসেবে তার টাকার অনুপাতে তাকে পার্সেন্ট দেব যতদিন পর্যন্ত তার টাকা ফিরিয়ে না দেব ততদিন তার পার্সেন্ট সক্রিয় থাকবে আর যদি বিদেশ গিয়ে কোনো কারণে চাকরি কনফার্ম না হয় কিংবা যদি যে কোনো ধরনের প্রতারণার শিকার হয়ে বিদেশ যাওয়া না হয় অথবা অন্য কোনো কারণে যদি বিদেশ যাওয়া না হয়, যেমন ভিসা রিজেক্ট, মেডিকেল আনফিট, তাহলে যে টাকা ক্ষতি হবে তার ভার সে বহন করবে তার টাকার অনুপাতে

উপরোক্ত চুক্তিটি মুশারাকা বা মুদারাবা হিসেবে গণ্য হবে, নাকি সুদী কারবার হবে?

উত্তর

না, প্রশ্নোক্ত চুক্তিটি মুশারাকা বা মুদারাবার কোনোটিই নয় কেননা মুশারাকা এবং মুদারাবা হল ব্যবসা তথা পণ্য ক্রয়-বিক্রয় নির্ভর চুক্তি যেখানে বিনিয়োগের অর্থ ব্যবসায় খাটানো হয় সে ব্যবসা থেকে মুনাফা আসলে তা উভয় পক্ষের মধ্যে বণ্টিত হয় কিন্তু প্রশ্নের প্রস্তাবিত চুক্তির মধ্যে এর কোনো কিছুই নেই এখানে যা আছে তা হল, ব্যক্তির শ্রম ও পরিশ্রম এবং তার প্রাপ্ত বেতন-ভাতা

সুতরাং এ চুক্তিতে কারো থেকে টাকা নেওয়া হলে শরীয়তের দৃষ্টিতে তা হবে মূলত ঋণ চুক্তি ঋণ বাবদ নেওয়া ওই টাকার ওপর অতিরিক্ত যা কিছুই দেওয়া হোক এবং যে নামেই দেওয়া হোক, তা সম্পূর্ণ সুদ হবে তাই এ শর্তে কারো থেকে ঋণ গ্রহণ করা বৈধ হবে না

* >المحيط البرهاني< ১৮/৩৩৬ : ومن دفع إلى آخر ألف درهم مضاربة، على أن يشتري بها الثياب ويقطعها ويخيطها بيده، على أن ما رزقه الله تعالى من شيء فهو بينهما نصفان، أو على أن يشتري بها الجلود والأدم ويخرزها خفا، فهو جائز على ما شرطا؛ لأن في المضاربة معنى الشركة ومعنى الإجارة، وأي ذلك اعتبرنا أمكن تجويزها على هذه الأعمال، وهذا بخلاف ما لو دفع إليه ألف درهم، على أن يحتطب أو يحتش، على أن ما رزق الله من شيء فهو بينهما نصفان، فإن المضاربة لا تجوز، وإن كانت الإجارة على الاحتطاب أو الاحتشاش جائزة؛ لبطلان الشركة فيهما.

কিতাবুল আছার, ইমাম মুহাম্মাদ, বর্ণনা ৭৬০; আলমুহীতুর রাযাবী ৬/১৬১; বিদায়াতুল মুজতাহিদ ৪/২১

শেয়ার লিংক

আবদুল্লাহ সাদ - ওয়েব থেকে প্রাপ্ত

৬৮০৯. প্রশ্ন

আমার এক প্রতিবেশী মান্নত করেছেন যে, তার ছেলের ঘরে যদি নাতি (পুত্র সন্তান) হয়, তাহলে তিনি তার নাতির জন্মের সপ্তম দিন তার নামে দুইটি বকরি জবাই করে আকীকা করবেন এখন তার ছেলের ঘরে পুত্র সন্তানই জন্মগ্রহণ করেছে কিন্তু ইদানীং তার কিছুটা আর্থিক সংকট চলছে

তাই এখন তিনি জানতে চাচ্ছেন, তার জন্য সপ্তম দিন আকীকা না করে পরে সুবিধামতো সময়ে আকীকা করার সুযোগ আছে কি না? এক্ষেত্রে সপ্তম দিন আকীকা না করলে কি তিনি গুনাহগার হবেন?

উত্তর

আকীকার মান্নত করলে তা ওয়াদা বলে ধর্তব্য হয়; আবশ্যকীয় হয় না সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সন্তান জন্মের সপ্তম দিনে বা অন্য কোনো দিনে আকীকা করা তার ওপর আবশ্যক নয় তিনি চাইলে সুবিধামতো অন্য যে কোনো সময় নাতির আকীকা করতে পারবেন

বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৮; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭৩৫; ইমদাদুল আহকাম ৪/২০৭

শেয়ার লিংক

মাসউদুল কাদীর - রামু, কক্সবাজার

৬৮১০. প্রশ্ন

আমি অমুসলিমদের মাঝে দাওয়াতী কাজ করে থাকি আমাদের একটা দাওয়াহ সেন্টার আছে সাথে একটি মসজিদও আছে একদিন এক হিন্দু যুবককে দাওয়াতের উদ্দেশ্যে আমাদের মসজিদে নিয়ে আসি সেখানে বসে তার সঙ্গে কথা বলি ও তাকে ইসলামের দাওয়াত দিই পরে স্থানীয় এক লোক বলল, অমুসলিমদের জন্য মসজিদে প্রবেশের সুযোগ নেই তাকে মসজিদে নিয়ে এসে আপনি ঠিক করেননি

মুহতারামের কাছে জানার বিষয় হল, তার কথা কি ঠিক? এক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান কী? দলীলসহ জানানোর অনুরোধ করছি

উত্তর

না, লোকটির ওই কথা ঠিক নয় মসজিদের আদব-সম্মান রক্ষা করে অমুসলিমদের জন্যও মসজিদে প্রবেশ করার অনুমতি আছে আর দাওয়াতী উদ্দেশ্যে হলে তো কোনো সমস্যাই নেই সুতরাং আপনি তাকে মসজিদে এনে কোনো অন্যায় করেননি

উসমান ইবনে আবিল আস রা. বর্ণনা করেন

أنَّ وَفْدَ ثَقِيْفٍ لَمَّا قَدِمُوْا عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أنْزَلَهُم الْمَسْجِدَ، لِيَكُوْنَ أرَقَّ لِقُلُوْبِهِمْ.

অর্থাৎ যখন ছাকীফ গোত্রের প্রতিনিধিদল নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আসল, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের মসজিদে থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন যেন তাদের দিল নরম হয় (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩০২০)

* >المحيط الرضوي< /৪২ : (المبسوط) ولا بأس بدخول أهل الذمة المسجد الحرام وسائر المساجد.

সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস ১৩২৮; আহকামুল কুরআন, জাস্সাস ৩/৮৮; শরহুস সিয়ারিল কাবীর, সারাখসী ১/৯৭; তাকমিলাতুল বাহরির রায়েক ৮/২০৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৪৬; রদ্দুল মুহতার ৬/৩৮৭ 

শেয়ার লিংক