জুমাদাল উলা ১৪৩১ || মে ২০১০

মুহাম্মাদ ওমর ফারূক - ফরিদাবাদ মাদরাসা

প্রশ্ন

ক) আল্লামা তাকী উসমানী দামাত বারাকাতুহুম তাঁর জাহানে দীদাহ গ্রন্থে কনস্টান্টিনোপলের বিজয় সম্পর্কে একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। হাদীসটি কোন কিতাবে আছে এবং তার সনদ কোন পর্যায়ের?
খ) নাসবুর রায়া’র মুকাদ্দামায় যে হাদীসগুলো ‘তাখরীজ’ করা হয়েছে, সেগুলো সবই কি সহীহ?

উত্তর

ক) জাহানে দীদাহর ঐ স্থানে দুটি হাদীস উল্লেখিত হয়েছে। কায়সারের (রোম) শহর বিজয় নিয়ে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ভবিষ্যদ্বাণী বর্ণিত হয়েছে হযরত উম্মে হারাম বিনতে মিলহান রা.-এর সূত্রে, যা সহীহ বুখারীর কিতাবুল জিহাদের রোমের সাথে যুদ্ধ সংক্রান্ত অধ্যায়ে (১/৪০৯-৪১০, হাদীস ২৯২৪) রয়েছে। আর হযরত বিশর খাসআমী রা. হতে বর্ণিত দ্বিতীয় হাদীসটি হল, لتفتحن القسطنطنية فلنعم الأمير أميرها ولنعم الجيش ذلك الجيش সম্ভবত আপনি এই হাদীসটি সম্পর্কেই জানতে চেয়েছেন। এই হাদীসটি মুসনাদে আহমদ ৪/৩৩৫, হাদীস : ১৮৯৫৭; মুসতাদরাকে হাকেম ৫/৬০৩, হাদীস : ৮৩৪৯; মুজামে কাবীর, তাবারানী, হাদীস : ১২১৬ ইত্যাদি কিতাবে রয়েছে। হাফেয নূরুদ্দীন হায়সামী রাহ. ‘মাজমাউয যাওয়ায়েদ’ কিতাবে (৬/২১৯, হাদীস : ১০৩৮৪) বলেন, ‘রিজালুহূ সিকাত’।
খ) নাসবুর রায়া’র মুকাদ্দামা বলতে আপনি কি বুঝিয়েছেন জানি না। আমার জানা মতে, হাফেয যায়লায়ী রাহ. তাঁর কিতাবের কোনো মুকাদ্দিমা লিখেননি। শায়খ মুহাম্মাদ আওয়ামা দামাত বারাকাতুহুম-এর তাহকীকে সৌদী থেকে ‘নসবুর রায়া’র যে সংস্করণটি প্রকাশিত হয়েছে-যা এই কিতাবের সর্বোত্তম সংস্করণও বটে-এর শুরুর প্রথম খণ্ডটিতে ভূমিকা স্বরূপ তিনটি পূর্ণাঙ্গ কিতাব সন্নিবেশিত হয়েছে। আল্লামা যাহিদ কাওছারী রাহ., শায়খ মুহাম্মাদ আওয়ামা দামাত বারাকাতুহুম ও হাফেয কাসেম ইবনে কুতলুবুগা রাহ.-এর যথাক্রমে ‘ফিকহু আহলিল ইরাক’, ‘দিরাসাহ’ ও ‘মুনয়াতুল আলমায়ী’ দিয়েই এই প্রথম খণ্ডটি সমাপ্ত হয়েছে। তেমনি শেষ খণ্ডটিতে হল শুধু ফাহারিস। এই দুই খণ্ড ছাড়া মূল ‘নাসবুর রায়া’ হল চার খণ্ডে। আমার মনে হচ্ছে, মুকাদ্দিমা নয়; বরং মূল নাসবুর রায়ায় তাখরীজকৃত হাদীসগুলো সম্পর্কে আপনি জানতে চেয়েছেন। সে হিসাবে আরয করব, হিদায়া ফিকহে মুকারানের কিতাব। তাই হিদায়ায় প্রায় সব মাযহাবের দলীল নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সে নকলী দলীল হোক কিংবা আকলী। সে জন্য যায়লায়ী রাহ.ও হিদায়ার সব হাদীসের তাখরীজ বিশদভাবে করেছেন-তা যে মাযহাবের দলীলই হোক না কেন। চাই ঐ হাদীসটিকে সরাসরি মাযহাবের ইমাম দলীল হিসেবে পেশ করুন কিংবা ঐ ইমামের অনুসারী পরবর্তী কোনো ফকীহ পেশ করুন। এই হিসাবে তাঁর তাখরীজে সহীহ, হাসান, যয়ীফসহ প্রায় সব মানের হাদীসই রয়েছে। আর স্বয়ং যায়লায়ী রাহ.ও অনেক জায়গায় হাদীসের মান ও রাবীদের ‘জারহ-তা’দীল নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করে থাকেন। এগুলো দেখে আপনি আঁচ করতে পারবেন যে, এই হাদীসগুলোর সবগুলোর মান একপর্যায়ের নয়। অতএব সুনির্দিষ্ট কোনো হাদীসের মান জানতে যায়লায়ী রাহ. আলোচনা পড়া ও অন্যান্য কিতাবে এই সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ মুতালাআ কিংবা বিজ্ঞ কোনো আহলে ফনের দ্বারস্ত হতে হবে।

এই সংখ্যার অন্যান্য শিক্ষা পরামর্শসমূহ পড়ুন