রবিউল আউয়াল ১৪৩৯ || ডিসেম্বর ২০১৭

আশরাফ উদ্দীন - লালখান বাজার, চট্টগ্রাম

প্রশ্ন

আল্লাহ হুযুরকে সিহহাত ও অফিয়াতের সাথে সুদীর্ঘ নেক হায়াত দান করুন এবং হুযুরের ইলমের ভা-ার থেকে আমাদের বেশি বেশি উপকৃত হওয়ার তাওফীক দান করুন।

আমাদের এক উস্তাযে মুহতারাম বলেছেন- ماضي قريب منفي -এ ما শব্দটি قد-এর পূর্বে আসবে। কিন্তু আমাদের সামনে علم الصرف-এর যে সমস্ত কিতাবাদি আছে তাতে ما শব্দটি  قد-এর পরে দেওয়া আছে। পরবর্তীতে আমি قد শব্দটির ব্যবহার খুঁজতে গিয়ে ماضي قريب-এর অর্থে قد শব্দটির ব্যবহার দেখিনি। হুযুরের কাছে আমার জানার বিষয় হল-

(ক) قد শব্দটি ماضي قريب অর্থে কুরআন-সুন্নাহ্য় ব্যবহার হয়েছে কি না...?

এবং আরবের স্বীকৃত ভাষা একাডেমীগুলো ماضي قريب অর্থে قد শব্দটির ব্যবহার করেছে কি না...?

(খ) যদি قد শব্দটি ماضي قريب-এর ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়ে থাকে তাহলে ما শব্দটি ماضي قريب منفي-এর ক্ষেত্রে قد -এর আগে আসবে না পরে।

উত্তর

قد এই হরফটির বিভিন্ন অর্থ রয়েছে। নাহব শাস্ত্রের ইমাম ইবনু হিশাম রাহ. (মৃত্যু : ৭৬১ হি.) ‘মুগনিল লাবীব’ কিতাবে قد শব্দের প্রায় সাতটি অর্থ বয়ান করেছেন। এই হরফটি যখন ফেয়েলে মাযীর শুরুতে আসে তখন সেখানে তিনটি অর্থের সম্ভাবনা থাকে। এক. তাহকীক ও তাকীদ অর্থাৎ ক্রিয়াটি বাস্তবে ঘটেছে একথা নিশ্চিত করা। দুই. তাওয়াক্কু‘ অর্থাৎ ক্রিয়াটি মুখাতাব ও শ্রোতার প্রত্যাশিত বা প্রতীক্ষিত বিষয় তা নির্দেশ করা। তিন. تقريب الماضي من الحال অর্থাৎ ক্রিয়াটি হাল ও বর্তমানের নিকটবর্তী সময়ে ঘটেছে বা ঘটতে যাচ্ছে এমন অর্থ প্রকাশ করা। এজন্য এই হরফটিকে حرف التحقيق বলা হয়। حرف التوقع বলা হয় এবং حرف التقريب নামেও অভিহিত করা হয়। তবে উপরোক্ত অর্থগুলো কোথাও একসঙ্গে তিনটিই উদ্দেশ্য হয়। কোথাও প্রথম দুটি অর্থ উদ্দেশ্য হয় এবং কোথাও কেবল ফেয়েলের সংঘটনকে তাকীদযুক্ত করা উদ্দেশ্য হয়।

ইমাম রযী আস্তারাবাযী (মৃত্যু : আনুমানিক ৬৮৬ হি.) কাফিয়ার ব্যাখ্যাগ্রন্থে এ প্রসঙ্গে বলেন-

هذا الحرف إذا دخلت على الماضي أو المضارع فلا بد فيها من معنى التحقيق، ثم إنه ينضاف في بعض المواضع إلى هذا المعنى، في الماضي : التقريب من الحال مع التوقع، أي يكون مصدره متوقعاً لمن تخاطبه واقعاً عن قريب كما تقول لمن يتوقع ركوب الأمير : قد ركب أي حصل عن قريب ما كنت تتوقعه، ومنه قول المؤذن قد قامت الصلاة، ففيه إذن ثلاثة معان مجتمعة : التحقيق، والتوقع والتقريب.

وقد يكون مع التحقيق : التقريب فقط، ويجوز أن تقول : "قد ركب" لمن لم يكن يتوقع ركوبه، ولا تدخل على الماضي غير المنصرف، كنعم، وبئس و عسى و ليس، لأنها ليست بمعنى الماضي حتى تقرب معناها من الحال. وتدخل أيضاً، على المضارع المجرَّد من ناصب وجازم وحرف تنفيس، نحو : إن الكذوب قد تصدق، أي بالحقيقة يصدر منه الصدق، وإن كان قليلا، وقد تستعمل للتحقيق مجرداً عن معنى التقليل نحو : قد نرى تقلب وجهك في السماء، وتستعمل أيضاً للتكثير في موضع التمدح...) كذا في شرح الرضي৩৮৭-৩৮৮

উপরোক্ত ইবারত থেকে বোঝা গেল, قد শব্দের প্রধান অর্থ হল, তাহকীক ও তাকীদ। অর্থাৎ ক্রিয়াটি বাস্তবে সংঘটিত হয়েছে সেকথা জোরালোভাবে পেশ করা। তবে ফেয়েলে মাযীর শুরুতে যখন তা দাখিল হয় তখন ক্রিয়াকে তাকীদযুক্ত করার পাশাপাশি কোনো কোনো ক্ষেত্রে সদ্যঅতীতকালে ক্রিয়া সংঘটিত হওয়া বোঝায়।

قد হরফটি মাযী করীব নির্দেশ করা প্রসঙ্গে ইবনু হিশাম রাহ. বলেন-

والثاني : تقريب الماضي من الحال، تقول : قام زيد، فيحتمل الماضي القريب، والماضي البعيد، فإن قلت "قد قام" اختص بالقريب، وانبنى على إفادتها ذلك أحكام.

قد হরফের উপরোক্ত অর্থ ইবনু হিশাম রাহ.-এর পূর্বে ও পরে লুগাত ও নাহবের আরো অনেক ইমাম উল্লেখ করেছেন। নাহব শাস্ত্রের অনেক মাসআলার তালীল ও বিশ্লেষণ قد শব্দের উপরোক্ত অর্থের ভিত্তিতে করা হয়েছে। এ ধরনের কিছু নাহবী মাসআলা ইবনু হিশাম রাহ. উপরোক্ত আলোচনার শেষ দিকে একসঙ্গে উল্লেখ করেছেন।

আমার জানামতে আধুনিককালের আরবী ভাষাবিদ ও ব্যকরণবিদগণও মাযী করীব অর্থে قد যুক্ত ফেয়েলে মাযীর ব্যবহারকে স্বীকার করেন। আধুনিককালে শায়েখ আব্বাস হাসান রচিত নাহবের বিশদ এবং ব্যবহারিক গ্রন্থ النحو الوافي, যাতে বিভিন্ন নাহবী মাসআলায় আরবী ভাষা একাডেমীগুলোর সিদ্ধান্তাবলী উল্লেখিত হয়েছে। এতে মাযী করীব অর্থে    قد হরফের ব্যবহার দেখানো হয়েছে। ফেয়লে মাযীর সীগার বিভিন্ন ব্যবহারিক অর্থ বর্ণনা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে-

فالماضي له أربع حالات من ناحية الزمن تتعين كل واحدة منها عند عدم قرينة تعارضها.

الأولى : (وهي الأصل الغالب) بأن يتعين معناه في زمن فات وانقضى أي قبل الكلام سواءً أكان قريباً من وقت الكلام أم بعيداً وهذا هو الماضي لفظاً ومعنى ولكن إذا سبقته : "قد"- وهي لا تسبقه في الأغلب إلا في الكلام المثبت- دلت على أن انقضاء زمنه قريب من الحال؛ فمثل : "خرج الصاحبان" يحتمل الماضي القريب والبعيد، بخلاف "قد خرج الصاحبان"؛ فإن ذلك الاحتمال يمتنع، ويصير زمن الماضي قريباً من الحال؛ بسبب وجود " قد". كذا في النحو الوافي ১/৫১-৫৩

শায়েখ মুস্তফা গালায়িনী (মৃত্যু: ১৩৬৪ হি.) যিনি গত শতকে বায়রূতের বিশিষ্ট কবি, লেখক, আরবী ভাষার অধ্যাপক এবং কাযী ও বিচারক ছিলেন তিনি তাঁর প্রসিদ্ধ গ্রন্থ ‘জামিউদ দুরূসিল আরাবিয়্যাহ’-এ মাযী করীব অর্থে قد হরফের ব্যবহার উল্লেখ করেছেন। নাহবের প্রসিদ্ধ নযম ‘আল-উজরূমিয়্যাহ’-এর আধুনিক শরাহ ও হাশিয়াতে আরবের সমসাময়িক আলেমগণও قريب من الحال অর্থে قد হরফের ব্যবহার উল্লেখ করেছেন। জর্ডান আরবী ভাষা একাডেমীর মাজাল্লায় এক আরবী ভাষাবিদ الزمن الماضي في اللغة العربية নামে একটি প্রবন্ধ লিখেছেন। তাতে তিনি মাযী করীব অর্থে قد فعل ওযনের ব্যবহার উল্লেখ করেছেন।

তবে বলার অপেক্ষা রাখে না, বিভিন্ন অর্থবিশিষ্ট শব্দের ক্ষেত্রে কোন্ অর্থটি কোথায় প্রযোজ্য তা বিচক্ষণ পাঠক ও শ্রোতাকে নির্ণয় করতে হয় বাক্যের পূর্বাপর আলামত থেকে বা পারিপার্শ্বিক অবস্থা থেকে। সুতরাং قد শব্দটি কোথায় নিকট অতীত অর্থে ব্যবহার হয় তা বাক্যের পূর্বাপর বিভিন্ন আলামত ও অনুষঙ্গ থেকে বুঝতে হবে। এধরনের কিছু ব্যবহারক্ষেত্র উদাহরণসহ এখানে উল্লেখ করা হচ্ছে-

১. যখন কোনো প্রত্যাশিত বা প্রতীক্ষিত বিষয় সংঘটিত হওয়ার সংবাদ قد যুক্ত ফেয়েলে মাযী দ্বারা দেয়া হয় তখন সেই قد সদ্যঅতীতকালে ক্রিয়া সংঘটিত হওয়ার ভাব প্রকাশ করে। ইমাম জামালুদ্দীন ইবনু মালিক আন্দালুসী (ওফাত ৬৭২ হি.) হরফে قد-এর তিনটি অর্থ বয়ান করেছেন, যার প্রথমটি সম্পর্কে তিনি বলেন-

أن تكون حرف تقريب، فتدخل على فعل ماضٍ متصرف متوقع، أي منتظر لتقريبه من الحال. كذا في "شرح التسهيل" لابن مالك ৪/১০৮

কুরআন কারীমের আয়াত থেকে এর দুটি উদাহরণ লক্ষ করুন-

قَدْ سَمِعَ اللهُ قَوْلَ الَّتِي تُجَادِلُكَ فِي زَوْجِهَا - قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ.

এই আয়াত দুটির তাফসীর কাশ্শাফ, তাফসীরে আবীসসাঊদ, নযমুদ-দুরার এবং তাফসীরে মাযহারী  থেকে দেখা যেতে পারে ।

২. لمّا হরফ দ্বারা যে ক্রিয়াকে নফী করা যায় বা নফী করা হয় তার মোকাবেলায় ইছবাতের জন্য قد হরফযুক্ত যে ফেয়েলে মাযী ব্যবহৃত হয় তা সদ্যঅতীতকালের ক্রিয়া বোঝায়। ইমাম সিবাওয়াইহ বলেন-

وأما قد فجواب لقوله : لما يفعل، فتقول : قد فعل وزعم الخليل أن هذا الكلام لقوم ينتظرون الخبر.

-কিতাবু সিবাওয়াইহ ৪/২২৩, আলমুফাস্সাল ফী সিনআতিল ই‘রাব, যমখশারী; পৃ. ৩৭৭

এর উদাহরণ হিসেবে কবি নাবেগার এই কবিতাটি পেশ করা যায়-

أفد الترحل غير أن ركابنا ... لما تزل برحالنا وكأن قد

এই কবিতায় كأن قد শব্দের পর ফেয়েলে মাযী ঊহ্য রয়েছে। এতে قد হরফটি সদ্যঅতীতের ভাব প্রকাশ করছে। (দ্রষ্টব্য : লিসানুল আরব قد মাদ্দা)

৩. কোনো ক্রিয়া এখনো সংঘটিত হয়নি তবে তা কিছুক্ষণের মধ্যেই সংঘটিত হতে যাচ্ছে এমন ক্ষেত্রে قد فعل মাযীর এই সীগাটি হালের নিকটতম সময় নির্দেশ করে। যেমন নামায শুরু হওয়ার আগমুহূর্তে ইকামতের এই বাক্য- قد قامت الصلاة

 ইমাম ইবনু জিন্নী আল মাওসিলী (মৃত্যু : ৩৯২) বলেন-

إن " قد" تقرب الماضي من الحال حتى تلحقه بحكمه أو تكاد، ألا تراهم يقولون : قد قامت الصلاة قبل حال قيامها، وإنما جاز ذلك لمكان "قد" وعلى قول الشاعر : أمَّ صبي له قد صبا أو دارج.

كذا في "سر صناعة الإعراب" لابن الجني ২/২৮৫ وكذا قاله ابن سيده في المحكم ৭/৩১৯ وابن منظور في "لسان العرب" في مادة (درج)

এ থেকে বোঝা যায়, قد হরফটি ফেয়েলে মাযীর শুরুতে দাখিল হলে কখনো সদ্যঅতীত নির্দেশ করে এবং কখনো আসন্ন ভবিষ্যত বা অব্যবহিত ভবিষ্যৎকালকে নির্দেশ করে। এজন্য আন-নাহবুল ওয়াফী গ্রন্থে কোনো এক প্রসঙ্গে বলা হয়েছে-

لأن "قد" تقرب ـ أحيانا ـ الماضي من الحال، كما تقرب المستقبل من الحال أيضاً.كذا في ১/৬৬১ منه

এই ব্যবহারক্ষেত্রের আরেকটি উদাহরণ সূর্যাস্তের পূর্বমুহূর্তে قد غابت الشمس বলা এবং দরসে উস্তায উপস্থিত হওয়ার পূর্বমুহূর্তে ঘোষণা করা- قد جاء الأستاذ দেখুন : জামিউদ দুরুসিল আরাবিয়্যাহ, পৃ. ২৬৬ আততুহফাতুস সানিয়্যাহ, মুহাম্মাদ মুহিউদ্দীন আব্দুল হামিদ, পৃ. ১১

৪. قد যুক্ত ফেয়েলে মাযী যখন নাহবী তারকীব অনুসারে حال হয় তখন তা সদ্যঅতীতকালে ফেয়েল সংঘটিত হওয়া এবং সেই ফেয়েলের নতীজা ও ফল বর্তমান পর্যন্ত বিদ্যমান থাকার ভাব নির্দেশ করে।

এই ব্যবহারক্ষেত্রটি قد হরফ সদ্যঅতীতকাল নির্দেশের বড় ক্ষেত্র। এর বহু উদাহরণ রয়েছে। কুরআন কারীমের যেসব আয়াতের ফেয়েলে মাযীকে নাহবী তারকীব অনুসারে حال ধরা হয় সেগুলোর নাহবী তারকীবের আলোচনা তাফসীরের কিতাবসমূহে মুতালাআ করা হলে قد শব্দের আলোচ্য অর্থটির উল্লেখ পাওয়া যায়। যেমন সূরা মায়েদার ৬১ নং আয়াত-

وَإِذَا جَاءُوكُمْ قَالُوا آمَنَّا وَقَدْ دَخَلُوا بِالْكُفْرِ وَهُمْ قَدْ خَرَجُوا بِهِ.

এই আয়াতের তাফসীরে আল্লামা জারুল্লাহ যমখশারী বলেন-

قوله : (بالكفر) و (به) حالان أي دخلوا كافرين و خرجوا كافرين وتقديره ملتبسين بالكفر وكذلك قوله : (وقد دخلوا) (وهم قد خرجوا) وكذلك دخلت (قد) تقريبا للماضي من الحال، ولمعنى آخر: وهو أن أمارات النفاق كانت لائحة عليهم وكان رسول الله صلى الله عليه وسلم متوقعا لإظهار الله ما كتموه فدخل حرف التوقع، و هو متعلق بقوله : (قالوا آمنا) أي قالوا ... وهذه حالهم.

৫. إذا এই হরফটি যখন مفاجأة বা আকস্মিকতার অর্থ প্রকাশ করে তখন এর পরে ফেয়েলে মাযী ব্যবহার হলে তার শুরুতে قد যুক্ত করা জরুরি হয় এবং সেই قد হরফটি الماضي القريب من الحال নির্দেশ করে। যেমন ‘আন্নাহবুল ওয়াফী’ গ্রন্থ ২/২৮০-এ বলা হয়েছে-

وقد تكون (إذا) للمفاجأة،- والأحسن في هذه الحالة اعتبارها حرفا-؛ فتدخل وجوباً إما على الجمل الإسمية نحو : اشتدت الريح، فاذا البحر هائج، وإما على الجمل الفعلية المقرونة بقد؛ لأن "قد" تقرب زمن الفعل من الحال- : نحو : اشتدت الريح، فاذا قد لجأت السفن إلى المواني- يضطرب البحر، فاذا قد يتألم  ركاب البواخر).

আশা করি এতক্ষণের আলোচনা থেকে আপনি বুঝতে পেরেছেন قد শব্দটি কোন কোন ক্ষেত্রে মাযী করীব অর্থে ব্যবহৃত হয়। তবে অবশ্যই মনে রাখতে হবে, قد হরফটি অনেক সময় মাযীর শুরুতে কেবল তাকীদের জন্যই ব্যবহৃত হয় এবং এই অর্থটিই এর প্রধান অর্থ এবং বহুল ব্যবহৃত অর্থ। সর্বোপরি মাযী করীব বোঝানোর জন্য قد فعل বা قد যুক্ত মাযীর ব্যবহার জরুরি বা একমাত্র পদ্ধতি নয়। বরং মাযী করীব বোঝানোর ভিন্ন পদ্ধতিও রয়েছে। যেমন ফেয়লে মাযীর সাথে عن قريب ـ الآن ـ أمس ـ البارحة ـ آنفاً ـ قبل قليل ـ اليوم ইত্যাদি নিকটবর্তী সময়নির্দেশক শব্দ ব্যবহার করা। যেমন কুরআনে কারীমের নি¤েœাক্ত আয়াতগুলো লক্ষ করুন-

الآن جئت بالحق (البقرة : ৭১)، الآن حصحص الحق (يوسف : ৫১)، اليوم أكملت لكم دينكم وأتممت عليكم نعمتي ورضيت لكم الاسلام دينا (المائدة : ৩)

এমনিভাবে أفعال المقاربة-এর মাধ্যমে মাযী করীব বোঝানো যায়। এছাড়া মাযী মুতলাকের সীগাও قرينة حالية-এর কারণে কখনো কখনো মাযী করীবের অর্থ প্রকাশ করে; শুরুতে قد যুক্ত না করা সত্ত্বেও। এ ধরনের ব্যবহার প্রসঙ্গে ইমাম ইবনু মালিক حال-এর আলোচনায় বলেন-

دلالتها (أي قد) على التقريب مستغنى عنها بدلالة سياق الكلام على الحالية كما أغنى عن تقدير السين و سوف سياق الكلام في مثل قوله تعالى "وكذلك يجتبيك ربك ويعلمك من تأويل الأحاديث" بل كما استغنى عن تقدير "قد" مع الماضي القريب الوقوع إذا وقع نعتا أو خبراً. كذا في شرح التسهيل لابن مالك.২/৩৭৩

সাধারণ কথাবার্তা থেকে এর একটি সহজ উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। যেমন কেউ ট্রেন ধরার জন্য হাঁপাতে হাঁপাতে ষ্টেশনে ছুটে আসল। কিন্তু সে পৌঁছার আগেই ট্রেন ছেড়ে চলে যায়। তখন আপনি ঐ ব্যক্তিকে লক্ষ করে বললেন- غادر القطار  এখানে আপনি চাইলে قبل قليل শব্দ যুক্ত করতে পারেন। কিন্তু আপনি যদি  قبل قليل এই শব্দ বা শুরুতে قد হরফ কিছুই যোগ না করেন, বরং শুধু বলেন- غادر القطار তারপরও তাৎক্ষণিক অবস্থা থেকে বোঝা যাবে, ট্রেন এইমাত্র ছেড়ে চলে গেল।

(খ) আপনার দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিল মাযী করীব মানফী সম্পর্কে। তো এ প্রসঙ্গে প্রথম কথা হল, قد হরফটি সাধারণত ফেয়েলে মুছবাতের শুরুতে আসে; ফেয়েলে মানফীর শুরুতে আসে না। এ কথাটি একটু আগে ‘আন্নাহবুল ওয়াফী’ কিতাবের হাওয়ালায় উল্লিখিত ইবারত- وهي لا تسبقه في الأغلب إلا في الكلام المثبت -এ বর্ণিত হয়েছে। المضارع المنفي بالحرف "لا"-এর শুরুতে قد  ব্যবহারের কিছু سماعي উদাহরণ পাওয়া যায়। কিন্তু মাযী মানফীর শুরুতে قد ব্যবহারের নির্ভরযোগ্য কোনো শাহেদ আছে কি না তা আমার জানা নেই। বরং ‘মুগনীল লাবীব’ কিতাবে قد হরফ সম্পর্কে বলা হয়েছে-

"قد" الحرفية مختصة بالفعل المنصرف، الخبري، المثبت، المجرد، من ناصب و جازم، وحرف تنفيس، وهي مع الفعل كالجزء. فلا تفصل منه بفاصل، اللهم إلا بالقسم...) انتهى.

অধিকন্তু মাযী করীব মানফী বোঝানোর জন্য হরফে নফীর সাথে قد ব্যবহারের কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ শুধু ما হরফে নফী মাযী মুতলাকের শুরুতে দাখিল হলে সাধারণত মাযী করীবের অর্থ প্রকাশ করে। এজন্য ফেয়েলে মাযীর আলোচনায় ‘আননাহবুল ওয়াফী’ কিতাবে বলা হয়েছে-

وإذا وجدت قبله ما النافية كان معناه منفيا، وكان زمنه قريبا من الحال؛ كأن يقول قائل : قد سافر عليّ، فتجيب : ما سافر علي، فكلمة "قد" أفادته في الجملة الأولى المثبتة قربا من الزمن الحالي، وجاءت كلمة : "ما" النافية فنفت المعنى، وأفادته القرب من الزمن الحالي أيضاً، ولا سيما مع القرينة الحالية السابقة.

এই সংখ্যার অন্যান্য শিক্ষা পরামর্শসমূহ পড়ুন