শাওয়াল ১৪৩০ || অক্টোবর ২০০৯

মুহাম্মাদ আহমদ আবদুল্লাহ - সিলেট

প্রশ্ন

ক) আমি আগামী বছর ‘কাফিয়া’ জামাতে পড়ব। হুজুরের কাছে পরামর্শ চাচ্ছি যে, মাহে রমযান কিভাবে কাটাব। কোন কিতাবগুলো পড়লে ভালো হবে? কাফিয়ার কোন শরাহটি পড়লে ভালো হবে? কার লেখা তরজমায়ে কুরআন পড়ব? জানিয়ে উপকৃত করবেন। এ জামাত সম্পর্কিত সকল পরামর্শ দান করবেন বলে আশা রাখি। খ) আলহামদুলিল্লাহ আমার পড়া তাড়াতাড়ি মুখস' হয়, কিন' বেশিক্ষণ স'ায়ী থাকে না, ভুলে যাই। এ সম্পর্কে করণীয় কী? জানালে খুশি হব।

উত্তর

ক) আপনি যখন এই লেখাটি পড়বেন তখন হয়তো শাওয়াল শুরু হয়ে গেছে। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে রমযানুল মুবারকের খায়র ও বরকত নসীব করুন। মূল উত্তরের আগে একটি বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তা এই যে, আপনি প্রথমে ‘কাফিয়া’র কথা উল্লেখ করেছেন। এরপর ‘তরজমায়ে কুরআন’ সম্পর্কে। অথচ উচিত ছিল, প্রথমে ‘তরজমায়ে কুরআন’কে উল্লেখ করা। বাংলা তরজমাসমূহের মধ্যে এমদাদিয়া থেকে প্রকাশিত তরজমা, যা মাওলানা হেদায়েতুল্লাহ রাহ. ও মাওলানা আবদুল মজীদ ঢাকুবী প্রমুখ আলিমগণ কর্তৃক সম্পাদিত একটি নির্ভরযোগ্য অনুবাদ। ইসলামিক ফাউণ্ডেশনের অনুবাদটিও তুলনামূলক ভালো। এখানে একটি বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন। তা এই যে, ‘তরজমাতুল কুরআন’ শব্দের চেয়ে ‘তরজমাতু মা‘আনিল কুরআন’ শব্দ ব্যবহার করা অধিক সমীচীন। কেননা, কুরআন কারীমের পূর্ণাঙ্গ ও যথার্থ অনুবাদ মানুষের সাধ্যের বাইরে। ‘কাফিয়া’র সঙ্গে ‘শরীফ’ যুক্ত করার প্রয়োজন ছিল না। কাফিয়ার সংক্ষিপ্ত হাশিয়াগুলোর মধ্যে আমার মতে ‘যীনী যাদাহ’ উপকারী হবে। তবে রযীউদ্দীন ইস-ারাবাদী কৃত শরাহটি, যা শরহুর রাযী নামে পরিচিত, কাফিয়ার ফন্নী শরাহ, যা বিস-ারিত ও প্রামাণিক আলোচনা সমৃদ্ধ। আসাতিযায়ে কেরাম নাহবী মা’লূমাত বৃদ্ধি ও ফনের পরিপক্কতার জন্য কাফিয়ার মূল সূত্র-‘আলমুফাসসাল’ ও তার শুরুহ অধ্যয়ন করতে পারেন। কাফিয়া জামাত হচ্ছে মৌলিক ইসতি’দাদ তৈরির শেষ জামাত। তাই নিজের তা’লীমী মুরব্বীর নির্দেশনা অনুযায়ী নিজের ইসতি’দাদ পরীক্ষা করুন এবং এ প্রসঙ্গে যা কিছু করণীয় যত্নের সঙ্গে করতে থাকুন। খ) মুখস'কৃত বিষয় ভালোভাবে মনে রাখার জন্য বারবার পড়া, অন্যদের সঙ্গে আলোচনা করা এবং বিভিন্ন প্রসঙ্গে তা আলোচনায় আনা-এই কৌশলগুলোই অনুসরণ করতে হয়। জরুরি বিষয়গুলো যদি আলোচনায় রাখা হয় খাতায় নোট করা হয় এবং মাঝে মাঝে তাতে নজর বুলানো হয় তাহলে ধীরে ধীরে স্মৃতিতে বসে যাবে ইনশাআল্লাহ। তবে ভুলে গেলেও সাহস হারানো ঠিক নয়। অতি প্রখর স্মৃতিশক্তির অধিকারী ব্যক্তিও সব কিছু স্মরণ রাখতে পারে না। কিছু জিনিস সেও ভুলে যায়। সর্বোপরি ‘ইনসান’ কীভাবে ‘নিসইয়ান’ থেকে পূর্ণমুক্তি পাবে?

এই সংখ্যার অন্যান্য শিক্ষা পরামর্শসমূহ পড়ুন