জুমাদাল উলা ১৪৩৪ || মার্চ ২০১৩

মুহাম্মাদ ফাহীম - চান্দগাও আ/এ, চট্টগ্রাম

প্রশ্ন

বিগত কোনো আলোচনায় আপনি বলেছিলেন, দরসী তালীমের প্রথম উদ্দেশ্য হবে তাফাক্কুহ ফিদ্দীন ও রুসূখ ফিল ইলম হাসিল করা। কিন্তু আমি অধম এখনো জানি না  তাফাক্কুহ ফিদ্দীন ও রুসূখ ফিল ইলম দ্বারা কী বোঝানো হয়? আর সেগুলো কীভাবে অর্জন করতে হয় তা তো জানি-ই না। তাই হযরতের নিকট সবিনয় আরয, তাফাক্কুহ ফিদ্দীন ও রুসূখ ফিল ইলম-এর বিষয়টি বুঝিয়ে দিয়ে তা অর্জনের পন্থাটিও বলে আমাকে ধন্য করবেন।

আল্লাহ তাআলা আপনাকে দ্বীনী খিদমতের সাথে সুন্দর-দীর্ঘ জীবন দান করুন। আমীন। ছুম্মা আমীন।

 

উত্তর

‘আততাফাক্কুহ ফিদ্দীন’ অর্থ ‘দ্বীনী বোধ’ লাভ করা। এখানে ‘বোধ/সমঝ’ দ্বারা উদ্দেশ্য হল স্পষ্ট/স্বচ্ছ, পূর্ণ, গভীর ও ভারসাম্যপূর্ণ বোধ-চিন্তা। এই বোধ ও চিন্তার বিভিন্ন স্তর ও বিভিন্ন দিক রয়েছে। এই সকল দিক ও সর্বোচ্চ স্তর অর্জন করা সকলের জন্য জরুরি নয় এবং সাধারণভাবে তা সম্ভব নয়। তবে তালিবানে ইলমের এদিকে লক্ষ্য রাখা উচিত যে, তলব যত বাড়বে বোধ ও

চিন্তার গভীরতাও যেন সে অনুপাতে বাড়ে।

এই তাফাক্কুহের প্রাথমিক স্তর হল আমাদের মধ্যে শিষ্টাচার ও ভারসাম্য সৃষ্টি হতে থাকা। আমি নির্দিষ্টভাবে ওয়াদা করছি না। তবে ইনশাআল্লাহ কয়েক মাসের মধ্যে আলকাউসারে ‘আলফিকহুল আম লিদ্দীন’ এবং ‘তাওয়াসসুত ও ভারসাম্য’ সম্পর্কে দুটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হবে। আশা করি, তা মুতালাআ করার দ্বারা আপনার এই বিষয়টি বুঝতে সহজ হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তাওফীক দান করুন। আমীন।

‘আররুসূখ ফিল ইলম’-এর অর্থ হল ইলমটা দৃঢ় ও পরিপক্ক হওয়া। অর্থাৎ কোনো বিষয়ে এত দৃঢ় ও প্রামাণিক ইলম অর্জন করা যে, এর বিপরীতে যত সংশয়ই ছড়ানো হোক কিংবা যত অপপ্রচার করা হোক নিজের ইলমের মধ্যে কোনো সংশয় সৃষ্টি হয় না এবং কোনো দোদুল্যমানতা বা অস্থিরতার শিকার হতে হয় না; বরং যারা এসবের শিকার হয়েছে আল্লাহ তাআলার মদদ ও রহমতে তাদেরকে ইলমীভাবে আশ্বস্ত করা যায়। তবে রুসূখ ফিল ইলমের এই স্তর তখনই অর্জিত হয় যখন তালিবে ইলমের মধ্যে ‘তাফাক্কুহ ফিদ্দীন’ ও তাকওয়া পয়দা হবে। সুতরাং এই বৈশিষ্ট্য লাভের জন্য আমাদেরকে তাকওয়ার জীবন অবলম্বন করতে হবে এবং আহলে দিল ও আহলে ফিকহ উলামা-মাশায়েখের সোহবত লাভ করতে হবে। জীবিতদের সোহবত তো সরাসরি আর যারা ইন্তেকাল করেছেন তাদের সোহবত তাদের মুহাক্কাক ও মুতকান কিতাবসমূহের মাধ্যমে গ্রহণ করতে হবে।

আপনি আমার জন্য যে দুআ করেছেন আল্লাহ তাআলা তা আমার জন্য, আপনার জন্য এবং সকল তালিবে ইলমের জন্য কবুল করুন। আমীন। 

এই সংখ্যার অন্যান্য শিক্ষা পরামর্শসমূহ পড়ুন