মাজহারুল ইসলাম - নরসিংদী

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম! আমি এই বছর হিদায়াতুন্নাহু জামাত পড়েছি। কিন্তু আমি আরবীতে দুর্বল। কোনো একটা লাইন সঠিকভাবে পড়তে পারি না এবং তরজমাও করতে পারি না। আরবীতে ভালোভাবে কথা বলতে ও লিখতেও পারি না। তাই আমি চিন্তা করছি, এই বছর কাফিয়া জামাত না পড়ে ভালো কোনো জায়গায় আরবী সাহিত্য কোর্স করে সামনের বছর শরহে বিকায়া জামাতে ভর্তি হওয়া যায় কি না? জানার বিষয় হল, এটা আমার জন্য ঠিক হবে কি না? আর যদি ঠিক না হয় তাহলে এ অবস্থায় আমি কী করতে পারি?

উত্তর

আপনার অবস্থা আপনার উস্তায ভালো জানবেন। তাই আপনি তার সঙ্গে পরামর্শ করুন। তিনি যদি আপনাকে পুনরায় হেদায়াতুন্নাহু জামাত পড়ার পরামর্শ দেন, তাহলে আপনি হেদায়াতুন্নাহু কিতাবটি গুরুত্বসহকারে পড়ুন। প্রথমে কিতাব থেকে মূল কায়েদা ভালোভাবে বুঝুন। এরপর কায়েদার আলোকে ব্যাপক তামরীন ও অনুশীলন করুন। তামরীনের একটি সুরত হল, যে কোনো আরবী কিতাব পড়ার সময় খেয়াল করবেন, নাহুর কায়েদাগুলো সেখানে কীভাবে প্রয়োগ হচ্ছে। প্রতিটি বাক্যে আমেল-মামূল নির্ণয়ের চেষ্টা করবেন। অর্থাৎ লফযে রফা হবে, নাকি নসব? রফা হলে কী কারণে রফা? এখানে রফার আলামত কী ইত্যাদি। কোথাও না বুঝলে উস্তায বা সাথীদের থেকে বুঝে নেবেন। এভাবে সবর ও হিম্মতের সঙ্গে মেহনত করতে থাকলে ইনশাআল্লাহ আপনার দুর্বলতা কেটে যাবে।

আর যদি আপনার উস্তায আপনাকে পুনরায় এসো আরবী শিখি থেকে শুরু করতে বলেন তাহলে সেটাও আপনার উস্তাযের পরামর্শে এমন কারো কাছে পড়বেন, যিনি এই কিতাবের পাঠদানের নিয়মনীতি সম্পর্কে অভিজ্ঞ। বলার অপেক্ষা রাখে না, এটিও তামরীনভিত্তিক একটি কিতাব। এ কিতাব পড়ার সময়ও ব্যাপক তামরীন ও অনুশীলন করতে হবে। সেজন্য আদীব হুজুরের আততামরীনুল কিতাবীও সঙ্গে রাখা চাই।

আর কাফিয়া জামাত না পড়ে পরবর্তী জামাতে চলে যাওয়ার যে চিন্তা করেছেন তা ঝুঁকিপূর্ণ। তাই নিজের সিদ্ধান্তে এমনটা করবেন না।

শেয়ার লিংক

মাহমুদুল হাসান - চট্টগ্রাম

প্রশ্ন

হুযুর! পড়তে বসলে অন্তরে শয়তানী ওয়াসওয়াসা এসে জড়ো হয়। এতে আমি খুব দুর্বল হয়ে পড়ি। মেহেরবানী করে সমাধান জানিয়ে বাধিত করবেন। জাযাকাল্লাহু খায়রান।

উত্তর

ওয়াসওয়াসা দূর করার একটি সাধারণ উপায় হল, নিজেকে সব সময় কাজে ব্যস্ত রাখা। সকল অপ্রয়োজনীয় বিষয় থেকে দূরে থাকা এবং যথাসম্ভব নিজেকে ইলম ছাড়া অন্য সকল ঝামেলা ও ব্যস্ততা থেকে মুক্ত রাখা। সাথে সাথে নিজের মধ্যে ইলমের মহব্বত পয়দা করার চেষ্টা করুন।  অন্তরকে আল্লাহর মহব্বতে পরিপূর্ণ করুন। দৈনিক কিছু নফলের ইহতেমাম করুন। চোখ কানের হেফাজত করুন। সকাল-সন্ধ্যার মাছুর দুআ-আমলগুলো নিয়মিত করুন। বেশি বেশি নিম্নোক্ত দুআটি পড়ুন

رَبِّ أَعُوذُ بِكَ مِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَعُوذُ بِكَ رَبِّ أَنْ يَحْضُرُونِ.

শেয়ার লিংক

নাজমুল ইসলাম - মোমেনশাহী

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। প্রিয় শায়েখ! আমি মেশকাত জামাতে পড়ি। আমি দাওরায়ে হাদীস শেষ করে উলূমুল হাদীস পড়ব ইনশাআল্লাহ। এখন থেকেই আমি কীভাবে প্রস্তুতি নিতে পারি?

উত্তর

এ বিষয়ে আগেও একাধিকবার বলা হয়েছে। আপনি তালেবানে ইলম : পথ ও পাথেয়-এর ৩৪০-৩৪২ পৃষ্ঠায় সংশ্লিষ্ট প্রশ্নোত্তরটি দেখুন।

উলূমুল হাদীসের মুমারাসাতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল, জামে তিরমিযী, সুনানে আবু দাউদ ও সুনানে নাসাঈর আসমাউর রিজাল, জারহ্ ও তাদীল, তাসহীহ ও তাযয়ীফ এবং ইলালুল হাদীস সংক্রান্ত আলোচনাসমূহ গুরুত্বের সঙ্গে পড়া এবং ফন্নীভাবে বোঝার চেষ্টা করা। সম্প্রতি প্রকাশিত হযরত মাওলানা আবদুল মতিন দামাত বারাকাতুহুম রচিত কিফায়াতুল মুগতাযী কিতাবটি জামে তিরমিযীর গুরুত্বপূর্ণ শরহ। এটি আপনাকে ইমাম তিরমিযী রাহ.-এর কথাগুলো ফন্নী আন্দাযে বুঝতে সাহায্য করবে।

হাদীস অধ্যয়নের উসূল ও আদাব সম্পর্কে জানুয়ারি ২০১২ ঈ. সংখ্যায়  হযরত মাওলানা আবদুল মতিন ছাহেবের এবং সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর ২০১৬ সংখ্যাদ্বয়ে বান্দার আলোচনা প্রকাশিত হয়েছিল। এখানে যে উসূল ও আদাবের বিষয়ে বলা হয়েছে সেগুলোর প্রতি লক্ষ রাখার চেষ্টা করুন।

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ জিন্নুন - বসুন্ধরা

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম। আমি দাওরায়ে হাদীসের ছাত্র। আমার আরবী ভাষায় অথার্ৎ নাহু ও সরফে দুর্বলতা রয়েছে। সেজন্য আরবীতে ভালোভাবে লিখতে ও পড়তে পারি না। এখন জানার বিষয় হল, আমি সামনের বছর আদব বিভাগে ভর্তি হব, নাকি কাফিয়া-শরহে জামী জামাতে আবার পড়ব? এ বিষয়ে হুজুরের পরামর্শ কামনা করি।

উত্তর

এ বিষয়ে সুনির্ধারিত কোনো পরামর্শ দেওয়ার আগে আপনার তালীমী অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা দরকার। আপনি আপনার উস্তাযের সঙ্গেই পরামর্শ করুন।

শেয়ার লিংক

জহিরুল ইসলাম - মোমেনশাহী

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম! একটি পরামর্শের আবেদন। আমি মোমেনশাহী বড় মসজিদে ইফতা পড়েছি। উলূমুল হাদীসের প্রতি আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও পারিবারিক সমস্যার কারণে তা পড়তে পারিনি। বর্তমানে আমাদের শহরে আহলে হাদীসদের বেশ প্রভাব লক্ষ করছি। তাই এ শাস্ত্র নিজে নিজে পড়তে চাচ্ছি। আমি কী কী কিতাব পড়তে পারি? কাছাকাছি উস্তাযগণের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করছি তারপর আরো কিছু বেশী মুতালাআর প্রয়োজন মনে করছি। উল্লেখ্য, ব্যক্তিগত মুতালাআর পর্যাপ্ত সময় আমার রয়েছে; কিন্তু কোথাও ভর্তি হয়ে পড়ার তেমন সুযোগ নেই।

উত্তর

আপনি প্রাথমিকভাবে আলমাদখাল ইলা উলূমিল হাদীসিশ শরীফ, ইমাম ইবনে মাজাহ আওর ইলমে হাদীস, লামাহাত মিন তারীখিস সুন্নাহ ওয়া উলূমিল হাদীস, মাবাদিউ ইলমিল হাদীস ওয়া উসূলিহী (মুকাদ্দিমা ফাতহুল মুলহিম), আছারুল হাদীসিশ শরীফ, আদাবুল ইখতিলাফ মাকানাতুল ইমাম আবী হানীফা ফিল হাদীস দলীলসহ নামাযের মাসায়েল দিয়ে আপনার মুতালাআ শুরু করতে পারেন।

এগুলো মুতাআলার মাধ্যমে ইনশাআল্লাহ আপনি অন্যান্য কিতাবের সন্ধান পাবেন এবং অগ্রসর হওয়ার পথও দেখতে পাবেন। তবে কোনো ফন শুধু নিজে নিজে মুতালাআর দ্বারা হাসিল হয় না। বরং এর জন্য ফনের মাহের কারো তত্ত্বাবধানে মেহনত করতে হয়। সেজন্য আপনাকে মুতালাআর পাশাপাশি আহলে ফন কোনো উস্তাযের নেগরানি গ্রহণ করতে হবে। 

শেয়ার লিংক