জুমাদাল আখিরাহ ১৪৪৭ || ডিসেম্বর ২০২৫

আবুল ফারাহ - লালবাগ, ঢাকা

৬৮৩৪. প্রশ্ন

গত বছর আমার পাঁচ হাজার টাকা যাকাত আসে যাকাতের হিসাব করার পর আমি নিয়ত করি, এখন থেকে গরিব-মিসকীনদের যত সাহায্য সহযোগিতা করব, সব যাকাতের টাকা থেকেই হিসাব হবে তবে আমি সে জন্য কোনো টাকাপয়সা আলাদা করে রাখিনি এরপর পুরো বছর বিভিন্ন সময়-সুযোগে দান-সদকা করি দান করার সময় কখনো যাকাতের নিয়ত করেছি আবার কখনো সাধারণ দান হিসাবেই সদকা করেছি সুনির্ধারিতভাবে যাকাতের নিয়ত ছিল না

জানার বিষয় হল, যেহেতু আমি বছরের শুরুতে সকল দান-সদকার ব্যাপারে যাকাতের নিয়ত করে নিয়েছি, তাই যেসব সদকা সাধারণ দান হিসাবে করেছি, দেওয়ার সময় সুনির্ধারিতভাবে যাকাতের নিয়ত ছিল না, তা কি যাকাত হিসাবে আদায় হয়েছে?

উত্তর

যাকাত আদায় হওয়ার জন্য উপযুক্ত ব্যক্তিকে তা যাকাতের নিয়তে দেওয়া জরুরি এ নিয়ত দুইভাবে করা যায়

১. প্রতিবার দেওয়ার সময় যাকাতের উদ্দেশ্যে দান করা

২. যাকাত আদায়ের উদ্দেশ্যে কিছু টাকা আলাদা করে রাখা, এ নিয়ত করে যে, টাকাগুলো দ্বারা শুধু যাকাত প্রদান করা হবে

দ্বিতীয় প্রকারের টাকা থেকে যাকাত দেওয়ার ক্ষেত্রে উপযুক্ত লোকদের দেওয়ার সময় প্রতিবার নিয়ত করা জরুরি নয়; বরং টাকাগুলো পৃথকভাবে সংরক্ষণ করার সময় যে নিয়ত করা হয়েছিল, তা-ই যথেষ্ট হবে কিন্তু যদি যাকাতের নিয়তে সম্পদ পৃথক করে না রাখে, তাহলে দরিদ্রদেরকে যাকাত দেওয়ার সময় প্রতিবারই যাকাতের উদ্দেশ্য করে দিতে হবে

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যেহেতু যাকাত আদায়ের নিয়তে যাকাতের টাকা পৃথক করে রাখেননি, তাই এক্ষেত্রে যেসকল দান-সদকা যাকাতের নিয়তে করেননি, ওই সকল দান যাকাত হিসেবে আদায় হয়নি; বরং নফল হিসাবে আদায় হয়েছে এক্ষেত্রে আপনার বছরের শুরুর ওই নিয়ত যাকাত আদায়ের জন্য যথেষ্ট নয় তাই আপনাকে ওই পরিমাণ টাকার যাকাত পৃথকভাবে আদায় করে দিতে হবে আপনি পূর্বের নফল দানের জন্য সওয়াবের ভাগী হবেন

* >بدائع الصنائع< /১৪৬ : وأما وقت النية، فقد ذكر الطحاوي: ولا تجزئ الزكاة عمن أخرجها إلا بنية مخالطة لإخراجه إياها، كما قال في باب الصلاة، وهذا إشارة إلى أنها لا تجزئ، إلا بنية مقارنة للأداء، ... والصحيح أن النية تعتبر في أحد الوقتين، إما عند الدفع وإما عند التمييز، هكذا روى هشام عن محمد في رجل نوى أن ما يتصدق به إلى آخر السنة، فهو عن زكاة ماله، فجعل يتصدق إلى آخر السنة، ولا تحضره النية، قال: لا تجزئه.

মুখতাসারুত তাহাবী, পৃ. ৪৫; শরহু মুখতাসারিত তাহাবী, জাস্সাস ২/২৬৮; উয়ূনুল মাসায়েল পৃ. ৩৩; তুহফাতুল ফুকাহা, পৃ. ১/৩১০-৩১১; আলমুলতাকাত, পৃ. ৭৩; শরহু মুখতাসারিত তাহাবী, ইসবিযাবী ১/৫২১; ফাতাওয়া বায্যাযিয়া ৪/৮৭; আননাহরুল ফায়েক ১/৪১৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৬৮-২৬৯

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন