যিলহজ্ব ১৪২৭ || জানুয়ারি ২০০৭

আব্দুল হাই - মনপুরা, কচুয়া, চাঁদপুর

৯৬২. প্রশ্ন

শুনেছি একটি হাদীস আছে যে, কোন ব্যক্তি যদি ইমামের আগে রুকু সেজদা থেকে উঠে যায় তবে তার চেহারা গাধার মত করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে একটি ঘটনাও শুনেছি যে, কোন ব্যক্তি নাকি এমন করায় তার চেহারা আল্লাহ গাধার মত করেও দিয়েছেন। কথাগুলো সঠিক কি না জানাবেন।

উত্তর

সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমসহ অনেক কিতাবেই এরকম একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে,

أَمَا يَخْشَى الَّذِي يَرْفَعُ رَأْسَهُ قَبْلَ الْإِمَامِ، أَنْ يُحَوِّلَ اللهُ رَأْسَهُ رَأْسَ حِمَارٍ.

যে ব্যক্তি ইমামের আগে মাথা উঠিয়ে ফেলে তার কি ভয় হয় না যে, আল্লাহ তার আকৃতি গাধার মত করে দিতে পারেন!

ব্যাখ্যা : হাদীসের উদ্দেশ্য হল, যে ব্যক্তি নামায আদায়ের সময় ইমামের অনুসরণ করার পরিবর্তে তার আগে আগে রুকু-সেজদায় চলে যায় এবং রুকু-সেজদা থেকে উঠে যায়, সে এত বড় অন্যায় করল, যার শাস্তিস্বরূপ তার মানবাকৃতি বিকৃত করে দেওয়া যেতে পারে। হাদীসের অর্থ এমন নয় যে, কেউ এ অন্যায় কাজ করলেই তার আকৃতি গাধার আকৃতি হয়ে যাবে; বরং এ শাস্তি আল্লাহ ইচ্ছা করলে কাউকে দুনিয়াতেই দিতে পারেন, আবার কাউকে আখেরাতেও দিতে পারেন।

আপনি এ প্রসঙ্গে যে ঘটনাটির প্রতি ইঙ্গিত করেছেন, এমন একটি ঘটনা মেশকাত শরীফের ব্যাখ্যাগ্রন্থ মেরক্বাতে উক্ত হাদীসের আলোচনায় আল্লামা ইবনে হাজার মক্কী রাহ.-এর বরাতে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ঘটনাটির কোন সনদ উল্লেখ করা হয়নি।

ঘটনাটি হচ্ছে, এক ব্যক্তি বলেন, আমি যখন এই হাদীসটি পেলাম তখন আমি বিষয়টিকে দূরূহ মনে করলাম এবং হাদীসের বিরুদ্ধাচরণ করলাম। তখন আল্লাহ আমার চেহারা গাধার মত করে দিলেন। -মেরকাত ৩/৯৮

বলা বাহুল্য, এটা অসম্ভবের কিছু নয়। বিশেষ করে লোকটি যেহেতু হাদীসের বিধানটি অমান্য করেই ক্ষান্ত হয়নি; বরং রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথায় সন্দেহ পোষণও করেছে তাই তার এমন শাস্তি হওয়াই স্বাভাবিক।

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন