জুমাদাল উলা ১৪৪০ || ফেব্রুয়ারি ২০১৯

মুহাম্মাদ মিজানুর রহমান - সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম

৪৭০৬. প্রশ্ন

আমাদের দেশে অনেক মসজিদে ইমাম সাহেবকে দুআর জন্য টাকা দেওয়া হয়। যেমন বলে হুযুর আমার ছেলে বিদেশ যাবে তার জন্য একটু দুআ করবেন। এই বলে কিছু টাকা দেয়  এই টাকা নেওয়া জায়েজ হবে?

কেউ কেউ বলেন এই টাকা নেওয়া নাজায়েয। আবার কেউ কেউ বলেন, যদি খতমে শেফা বা বরকতের জন্য ঘরে বা দোকানে খতমে কুরআন পড়ে টাকা নেওয়া জায়েয হয় তাহলে এই টাকা জায়েয হবে না কেন? বিস্তারিত জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।

উত্তর

হাদিয়ার একটি আদব হল, সব ধরনের বিনিময় ও উদ্দেশ্য থেকে মুক্ত হওয়া। তা হবে শুধু মহব্বত ও ইকরাম হিসেবে একমাত্র আল্লাহকে রাজি-খুশি করার জন্য। হাদিয়া প্রদান করে দুআ চাওয়ার প্রচলনটি আসলেই সংশোধনযোগ্য। তবে হাদিয়া প্রদান করে দুআ চাইলে এর অর্থ হয় না যে, হাদিয়াটি দুআর বিনিময় হিসেবে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে কারো নিয়ত যদি বাস্তবেই এমন হয়ে থাকে তাহলে তা খুবই আপত্তিকর। কারণ, দুআর কোনো বিনিময় হয় না। দুআ খালেছ ইবাদত। তা দুনিয়ার জন্য হোক বা আখেরাতের জন্য- সেটি ইবাদত। তাই দুআর বিনিময় হিসেবে কোনো কিছু নেওয়া যাবে না।

আর দুনিয়াবী বৈধ উদ্দেশ্যে খতম ইত্যাদি পড়ে পারিশ্রমিক নেওয়া জায়েয হওয়ার কথা ফিকহের কিতাবে উল্লেখ রয়েছে। সেটির সাথে দুআর বিনিময়কে তুলনা করা ঠিক নয়। দুআ করে পারিশ্রমিক নেওয়া বৈধ হওয়ার কথা কেউ বলেননি।

দুআ মুসলমানগণ একে অপরের জন্য বিনিময়হীনভাবেই করে থাকে এবং তাই করা উচিত।

-জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৩৭২; বাযলুল মাজহুদ ৭/৩২৪; মাজমুউ রাসাইলি ইবনি আবিদীন ১/১৫৪; রদ্দুল মুহতার ২/৫৯৫; ইমদাদুল ফাতাওয়া ৩/৩৩৪

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন