সফর ১৪৪০ || নভেম্বর ২০১৮

মুহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম - মাদারীপুর

৪৬০৯. প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় মাদরাসার জন্য জমির প্রয়োজন ছিল। এলাকার এক ব্যক্তি একদিন জুমার পর মসজিদে মুসল্লিদের উপস্থিতিতে তার একটি জমি মাদরাসার জন্য দান করেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি আমার অমুক জমিটি মাদরাসার জন্য দান করলাম। আপনারা সাব-কবলা করে নিবেন’। সে সময় এ লোকের ছেলেরা বিদেশে ছিল। তারা বিষয়টি জানত না। ঐ লোকের মৃত্যুর পর তারা দেশে আসে এবং তখন বিষয়টি জানতে পারে। কিন্তু তারা জমিটি দিতে চাচ্ছে না। তারা বলছে, জমিটি আমাদের প্রয়োজন। আব্বা না বুঝে দান করে দিয়েছিলেন। আমাদের জন্য এটা দেওয়া সম্ভব নয়।

আমরা জানতে চাচ্ছি, তাদের জন্য এ দান প্রত্যাহার করা জায়েয হবে কি না?

উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত জমিটি মাদরাসার নামে রেজিষ্ট্রি করা হয়নি। আর ঐ ব্যক্তি যখন জমিটি দান করেছিলেন তখন তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে অনেক মানুষের উপস্থিতিতে জমিটি দান করেছিলেন।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত বর্ণনামতে ঐ ব্যক্তির ছেলেদের জন্য পিতার ওয়াকফকৃত জমিটি ফেরত নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কারণ তাদের পিতা মুসল্লীদের সামনে মৌখিকভাবে ঘোষণা করার দ্বারাই জমিটির ওয়াকফ সম্পন্ন হয়ে গেছে এবং তা মাদরাসার জন্য নির্ধারিত হয়ে গেছে।

এখন এলাকাবাসীর কর্তব্য হল, লোকটির সন্তানদেরকে বিষয়টি বুঝিয়ে জমিটি মাদরাসার নামে রেজিষ্ট্রি করিয়ে নেওয়া। সহীহ বুখারীতে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবদ্দশায় উমর রা. নিজের কিছু সম্পত্তি সদকা করেছিলেন। আর তা ছিল ছামগ নামক একটি খেজুর বাগান। উমর রা. বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি একটি সম্পদ পেয়েছি, যা আমার নিকট খুবই পছন্দনীয়। আমি এটি সদকা করতে চাচ্ছি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-

تَصَدّقْ بِأَصْلِهِ، لاَ يُبَاعُ وَلاَ يُوهَبُ وَلاَ يُورَثُ.

মূল সম্পদটি এভাবে সদকা কর যে, তা বিক্রি করা যাবে না, দান করা যাবে না এবং কেউ এর ওয়ারিশ হবে না। (সহীহ বুখারী, হাদীস ২৭৬৪)

-মাজমাউল আনহুর ২/৫৭১; আলমুহীতুল বুরহানী ৯/১৪২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৪৬৫; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৩৪৯

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন