সফর ১৪৩৯ || নভেম্বর ২০১৭

মুহাম্মাদ মাহমুদ হাসান - সিলেট

৪২২৯. প্রশ্ন

জনাব মুফতী সাহেব! আমার এলাকায় একটি বড় ওয়াক্ফকৃত কবরস্থান আছে। আমাদের এলাকার লোকদের জন্য চার ভাগের এক ভাগ জায়গাই যথেষ্ট। তাই মুতাওয়াল্লী সাহেব চাচ্ছেন উক্ত অবশিষ্ট জায়গাতে গাছ রোপণ করতে এবং উক্ত

কবরস্থানে অনেক লম্বা লম্বা ঘাস থাকার কারণে তা বিক্রি করতে চাচ্ছেন। এদিকে কিছু আলেম বলেছেন, কবরস্থানের ঘাস কাটা মাকরূহে তাহরীমি। তা নিয়ে এলাকায় দ্বন্দ্ব চলছে। এখন হুযুরের কাছে জানার বিষয় হল,

ক. উক্ত কবরস্থানে গাছ লাগানো এবং তা কাটা জায়েয হবে কি না?

খ. ঘাস কাটা জায়েয হবে কি না? যদি জায়েয হয় তাহলে তা নিলামে (বিক্রি) করা যাবে কি না?

গ. গাছ বা ঘাস বিক্রি করে কোন্ খাতে ব্যয় করতে হবে। কবরস্থানের খাত ছাড়া অন্য খাতে তা ব্যয় করা যাবে কি না?

উত্তর

ক. প্রশ্নের বর্ণনানুযায়ী উক্ত কবরস্থানের যে অংশটুকু বর্তমান প্রয়োজন-অতিরিক্ত সে অংশে কবরস্থান কর্তৃপক্ষের জন্য গাছ লাগানো এবং তা কাটা জায়েয হবে। এক্ষেত্রে এই জায়গার আয় কবরস্থানেরই হবে। ভবিষ্যতে যখন এই জায়গা কবরের জন্য প্রয়োজন হবে তখন তা খালি করে দিতে হবে।

খ. প্রশ্নে কবরস্থানের যে ঘাস কাটার কথা বলা হয়েছে তা কোন্ অংশের ঘাস তা উল্লেখ করা হয়নি। যদি খালি জায়গার ঘাস হয় তবে তা কেটে কবরস্থান কর্তৃপক্ষ বিক্রি করতে পারবে। নিলামেও বিক্রি করতে পারবে। এবং এ টাকাও কবরস্থানের মালিকানা গণ্য হবে।

আর ঘাস যদি সরাসরি কবরের উপরের বা কবরের সাথে লাগানো জায়গার হয় এবং তাজা ঘাস হয় তাহলে তা না কাটাই উত্তম। কেননা, সরাসরি কবরের উপরের ও তার আশপাশের তাজা ঘাস বিনা প্রয়োজনে কাটা মাকরূহে তানযিহী তথা অনুত্তম।

প্রকাশ থাকে যে, যারা কবরস্থানের ঘাস কাটা মাকরূহে তাহরীমি বলেছেন তাদের কথা ঠিক নয়। ফুকাহায়ে কেরামের আলোচনাকে সামনে রেখে মুফতী কেফায়াতুল্লাহ দেহলভী রাহ. ও আল্লামা যফর আহমাদ উসমানী রাহ. বিনা প্রয়োজনে কবরের উপরের তাজা ঘাস কাটাকে মাকরূহে তানযিহী বলেছেন।

গ. ওয়াক্ফকৃত কবরস্থানের গাছ ও ঘাস ইত্যাদি যাই বিক্রি করা হোক তা কবরস্থানের সংরক্ষণ ও উন্নয়নের কাজেই ব্যয় করতে হবে। অন্য খাতে ব্যয় করা যাবে না। Ñফাতাওয়া খানিয়া ১/১৯৫, ৩/৩১১; আলমুহীতুল বুরহানী ৯/১৪৭; শরহুল মুনয়া পৃ. ৬০৭; ফতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৭৬; রদ্দুল মুহতার ২/২৪৫; ইমদাদুল আহকাম ৩/২৮৪; কেফায়াতুল মুফতী ১০/৫০০

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন