রবিউল আখির ১৪৩১ || এপ্রিল ২০১০

মুহাম্মাদ মুহিউদ্দীন - গেন্ডারিয়া, ঢাকা

১৯২৮. প্রশ্ন

আমার বড় ভাইয়ের বিয়েশাদির আলোচনা চলছিল। পাত্রী দেখতে বিলম্ব হয়ে যায়। ইতিমধ্যে মুহররম মাস এসে পড়ে। কথা ছিল পাত্রী দেখে পছন্দ হলে ৫/১০ দিনের মধ্যে বিয়ে হয়ে যাবে। কিন্তু মুরব্বীগণ সতর্ক করে দিলেন, এটা মুহাররম মাস। এ মাসে বিয়ে অশুভ। তাই আমরা বিয়ের বিষয়টা স্থগিত রেখেছিলাম। জানতে চাই, এ ব্যাপারে শরীয়তের নির্দেশনা কী?

উত্তর

মুহাররম মাসে বিয়ে-শাদী অশুভ মনে করা একটি কু-ধারণা, যা সম্পূর্ণ অবাস্তব। কোনো দিন বা মাসকে অলক্ষুণে মনে করা জাহেলী যুগের ধারণা। শরীয়ত এ ধারণাকে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ও শিরকী ধারণা বলে অভিহিত করেছে। হাদীস শরীফে এসেছে, কুলক্ষণ গ্রহণ করা শিরক। (সুনানে আবু দাউদ ২/১৯০) মুহাররম মাসে হযরত হুসাইন রা.-এর শাহাদতের কারণে একশ্রেণীর লোক এ মাসকে অশুভ মনে করে থাকে, যা তাদের মনগড়া বিষয়। হযরত হুসাইন রা.-এর শাহাদত অবশ্যই মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত হৃদয় বিদারক, কিন্তু এ কারণে কোনো মাস বা সময়কে অশুভ মনে করার অবকাশ নেই। পৃথিবীতে যা কিছু ঘটে সব আল্লাহর ইচ্ছাতেই ঘটে। কোনো দিবস-রজনী, সপ্তাহ, মাসের এর সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। জাহেলী যুগে শাওয়াল মাসে বিবাহ-শাদি করাকে অশুভ মনে করা হত। উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রা. এই ধারণাকে এই বলে খণ্ডন করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে শাওয়াল মাসেই বিয়ে করেছেন এবং এ মাসেই বিবাহ-রজনী উদযাপন করেছেন। অথচ তাঁর অনুগ্রহ লাভে আমার চেয়ে অধিক সৌভাগ্যবতী স্ত্রী আর কে আছে? (সহীহ মুসলিম হাদীস : ১৪২৩) অতএব প্রমাণিত হল, কোনো দিন বা মাসকে কোনো কাজের জন্য অশুভ মনে করা ঠিক নয়। এ ধারণা সম্পূর্ণ অলীক, শিরকপ্রসূত।

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন