আবরার মাসুম - বারিধারা, ঢাকা

৪০০৩. প্রশ্ন

 

বছর আমি আমার স্ত্রী হজ্ব করেছি। হজ্বের সময় ১০ যিলহজ্ব মীনা থেকে কংকর নিক্ষেপ করে এসে ক্লান্ত থাকায় দিন তাওয়াফে যিয়ারত করিনি। ইচ্ছা ছিল পরের দিন আমরা তাওয়াফ করব। কিন্তু সেদিন রাতেই আমার স্ত্রীর স্রাব শুরু হয়ে যায়। প্রতিমাসের ন্যায় আট দিন তার স্রাব চলে। তার স্রাবের সময় শেষ হওয়ার পূর্বেই আমরা মদীনায় চলে যাই। মদীনায় অবস্থান করার পর ফ্লাইট বিড়ম্বনার কারণে মক্কায় এসে মাত্র চারদিন অবস্থান করি। সময় আমার স্ত্রী পবিত্র ছিল। তাই সে তাওয়াফে যিয়ারত করে নেয়। এরপর আর কোনো তাওয়াফ করিনি। দেশে আসার পর একজন আলেম বললেন, আপনার স্ত্রীর দম দিতে হবে।

প্রশ্ন হল, আমার স্ত্রীর হজ্ব হয়েছে কি না? এবং তার উপর দম ওয়াজিব হয়েছে কি না? যদি দম ওয়াজিব হয়ে থাকে তাহলে এখন আমাদের কী করণীয়?

 


 

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার স্ত্রীর তাওয়াফে যিয়ারত যথাযথভাবেই আদায় হয়েছে। তবে তার হজ্বেরএকটি ওয়াজিব কাজ তাওয়াফে বিদা বাকি থেকে গেছে। আপনার স্ত্রী যেহেতু ওজর ছাড়াই এইওয়াজিব ছেড়ে দিয়েছেন তাই তার উপর একটি জরিমানা দম ওয়াজিব হয়েছে।

সুতরাং এখন কর্তব্য হলহেরেমে অবস্থানকারী অথবা গমনকারী কারো মাধ্যমে হেরেমেরএলাকায় একটি দম আদায় করে দেওয়া। 

-গুনইয়াতুন নাসিক ২৭৪; রদ্দুল মুহতার ২/৫১৯, ৫২৩; মানাসিকে মোল্লা আলী কারী ২৫০, ৩৪৯, ৩৯৩

শেয়ার লিংক

মানযুরুল কারিম - মিরপুর, ঢাকা

৪০০৪. প্রশ্ন

. কসমের কাফফারার রোযা কি লাগাতার ধারাবাহিকভাবে রাখতে হয়, নাকি মাঝে বিরতি দিয়ে ভেঙ্গে ভেঙ্গেও রাখা যায়।

. একাধিক কসমের জন্য কি একাধিক কাফফারাই লাগবে, নাকি একটি কাফফারাই যথেষ্ট হবে?

 

 

 

উত্তর

কসমের কাফফারা দরিদ্রদের খাবার বা কাপড় প্রদানের মাধ্যমে আদায় করার সামর্থ্য না থাকলে তিনটি রোযা ধারাবাহিকভাবে রাখতে হবে। কোনো কারণে ধারাবাহিকতা ছুটে গেলে তা কাফফারার রোযা হিসেবে আদায় হবে না। সেক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে তিনটি রোযা পূর্ণ করতে হবে।

প্রতিটি কসমের জন্য ভিন্ন ভিন্ন কাফফারা আদায় করতে হবে। একাধিক কসমের জন্য একটি কাফফারা যথেষ্ট নয়।

-ফাতহুল কাদীর /৩৬৬তাবয়ীনুল হাকায়েক /৪৩২ফাতাওয়াহিন্দিয়া /৬৮আলইখতিয়ার /৩৮৪আদ্দুররুল মুখতার /৭১৪বেহেশতী জেওর /৫৩;ইমদাদুল ফাতাওয়া /৫৪৬

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ বশির উদ্দিন - ঝালকাঠি, বরিশাল

৪০০৫. প্রশ্ন

) এক ব্যক্তির ছেলে খুব অসুস্থ ছিল। এক পর্যায়ে সে মানত করল যে, আমার সন্তান সুস্থ হলে একটা কুরবানী করব। এখন সে একটা গরুতে মানতের একভাগ দিতে চাচ্ছে। গরুতে অন্যদের কুরবানীর অংশ আছে। এভাবে কুরবানী করা কি জায়েয হবে?

) আর মানতের কুরবানী করার পর ব্যক্তিকে নিজ কুরবানীও কি আদায় করতে হবে? নাকি মানতের দ্বারাই তার নিজের কুরবানীও আদায় হয়ে যাবে?

 


উত্তর

হাঁকুরবানীর গরুতে মানতের অংশ দেওয়া জায়েয হবে এবং এর দ্বারা কুরবানী  মানতসবই আদায় হবে।

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মানতের জন্য আপনাকে একটি কুরবানী দিতে হবে। আর আপনার উপরকুরবানী ওয়াজিব হলে আপনাকে ভিন্ন করে আরেকটি কুরবানীও দিতে হবে।

-বাদায়উেস সনায়ে ৪/২০৯, ১৯৪; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬০

শেয়ার লিংক

ফাতিমা তাজনিন শিফা - উপশহর, যশোর

৪০০৬ . প্রশ্ন

আমার ছোট ছেলে যখন গর্ভে তখন আমি মানত করেছিলাম, যদি আমার গর্ভস্থ সন্তান ছেলে হয় তাহলে ওকে সিলেটের নির্দিষ্ট একটি মাদারাসায় পড়াব। পরবর্তীতে দেখা যায়, আমার ছেলে সন্তানই হয়েছে। কিন্তু ওর জন্মের মাস পরেই ওর আবক্ষু সরকারি চাকরির সুবাদে যশোর বদলি হয়ে যায়। যার কারণে আমরা সপরিবারে যশোরে এসে বসবাস শুরু করি। জানতে চাচ্ছি, আমার ছেলেকে কি এখন যশোরের কোনো মাদরাসায়ও পড়াতে পারব, নাকি যে মাদরাসার নামে মানত করেছিলাম সেখানেই পড়াতে হবে? বিষয়টি নিয়ে আমরা পরিবারের সবাই ভীষণ পেরেশানিতে ভুগছি। তাছাড়া লেখাপড়ার জন্য ছেলেকে একাকী সিলেট পাঠানোও আমাদের জন্য অসম্ভবপ্রায়। তাই আমাদের এখন কী করণীয়? জানিয়ে বাধিত করবেন।

 


উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ছেলেকে যশোরে বা অন্য কোথাও পড়াতে পারবেন। নির্দিষ্ট মাদরাসাতে পড়ানো জরুরি নয়। 

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৬/২৮১; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৮; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৬

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ শাফীন - কুড়িগ্রাম

৪০০৭ . প্রশ্ন

আমি এক মোবাইল সার্ভিসিং সেন্টারে একটি এন্ড্রয়েড সেট সার্ভিসের জন্য দেই। দোকানদার নিজেই মেরামত করে। সে মোবাইলটা খুলতে গিয়ে একটি সূক্ষ্ম যন্ত্র নষ্ট করে ফেলে। যার মূল্য দেড় হাজার টাকা। আমি তার কাছে এর জরিমানা চাইলে সে বলল, আমি তো ইচ্ছা করে নষ্ট করিনি। হঠাৎ হয়ে গেছে।

আমার প্রশ্ন হল, শরীয়তের দৃষ্টিতে এর ক্ষতিপূরণ নেওয়া আমার জন্য বৈধ হবে কি?

 


উত্তর

মেরামতকারীর হাতেই যেহেতু নষ্ট হয়েছে তাই আপনি তার থেকে এর ক্ষতিপূরণ নিতে পারবেন।এক্ষেত্রে মেরামতকারী ইচ্ছাকৃত নষ্ট করেছে কি না তা দেখার বিষয় নয়। 

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ২১৪৫৮; কিতাবুল আসার ২/৬৬১; কিতাবুল আছল ৩/৫৬১; মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়্যা, মাদ্দাহ ৬১১; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৬৬

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ কৌশিক - রাজশাহী

৪০০৮. প্রশ্ন

 আমি এক লোককে একটি অটো রিকশা কিনে দিয়েছি। তার সাথে এভাবে চুক্তি হয়েছে যে, এই রিকশা চালিয়ে তার যা আয় হবে তার অর্ধেক আমি আর অর্ধেক সে পাবে।

তার সাথে এভাবে চুক্তি করা আমার জন্য কি ঠিক হয়েছে?

 


উত্তর

প্রশ্নোক্ত চুক্তি বৈধ হয়নি। অটো রিকশা চালিয়ে  লোক যে ভাড়া পাবে তার একক মালিক সেনিজেই। আর আপনি রিকশার ন্যায্য ভাড়া পাবেন।

এছাড়া আপনি চালকের সাথে এভাবেও চুক্তি করতে পারেন যেসে নির্দিষ্ট সময় রিক্সা চালাবে।বিনিময়ে সে নির্দিষ্ট পারিশ্রমিক পাবে। এক্ষেত্রে রিক্সার যাবতীয় আয় আপনার হবে। কিন্তু এই দুইপদ্ধতি ব্যতীত উভয়ের মাঝে আয়ের অংশিদারিত্বের চুক্তি করা সহীহ হবে না। 

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ২৩৭৭৫; কিতাবুল আসল ৪/১৪০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৫/১১৬; আল মুহীতুল বুরহানী ১১/৩৩৭

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ মাহদী - মিরপুর,ঢাকা

৪০০৯. প্রশ্ন

আমার মা আমার ভাইয়ের জন্য এক লক্ষ টাকা এক মহিলার কাছে রেখেছেন। যখন রাখেন তখন আমাকে সাক্ষী করেছিলেন। মা কিছুদিন আগে মারা গেছেন। যার কাছে রেখেছিলেন সে মহিলা টাকা কাকে দিবে। টাকা আমার ভাইয়েরই প্রাপ্য? নাকি এটা মীরাস হিসেবে গণ্য হবে এবং সকল ওয়ারিস তাদের হিস্যা অনুযায়ী পাবে?

এখানে উল্লেখ্য যে, আমার ভাই এই টাকার ব্যাপারে কিছুই জানত না।


উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনার মা এই টাকা যেহেতু সরাসরি আপনার ভাইকে দেননি তাই  টাকাআপনার ভাই একা পাবে না।  টাকা মীরাস হিসেবে গণ্য হবে।

-শরহুল মাজাল্লাহ, খালিদ আতাসী ৩/৩৪৪; আলইখতিয়ার ২/৫৩৪; রদ্দুল মুহতার ৫/৫৯০

শেয়ার লিংক