জুনাইদ আহমদ - নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা
৬৭৫৮. Question
আমাদের বাজারে সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার হাঁস, মুরগি ও এজাতীয় অন্য পশু-পাখির অস্থায়ী হাট বসে। সে হাটের অধিকাংশ ব্যাপারী চরাঞ্চল থেকে আসে। হাট শেষে তাদের কাছে কোনো পণ্য যদি অবিক্রীত থেকে যায়, তাহলে তারা এগুলোকে বাজার দর থেকে কিছু কম দামে, একটি নির্ধারিত দামে বিক্রি করে দেওয়ার জন্য স্থানীয় ব্যাপারীদের কাছে রেখে যায়। নির্ধারিত ঐ দামের অতিরিক্ত যত টাকা লাভে স্থানীয় ব্যাপারী বিক্রি করতে পারবে, তাই তার মজুরী হিসাবে গণ্য হবে। আর নির্ধারিত মূল্যটা মালিক নিয়ে যাবে।
উদাহরণস্বরূপ একটি মুরগির বাজার দর ৪০০ টাকা। মুরগির মালিক স্থানীয় ব্যাপারীকে বিক্রয়মূল্য ৩৭৫ টাকা নির্ধারণ করে দিল। এরপর স্থানীয় ব্যাপারী মুরগিটি বিক্রি করল ৪২০ টাকায়। তাহলে এর থেকে মুরগির মালিক নেবে ৩৭৫ টাকা। আর বাদ বাকি ৪৫ টাকা স্থানীয় ব্যাপারী তার শ্রমের বিনিময় হিসেবে রেখে দেবে।
জানার বিষয় হল, এভাবে কারবার করা জায়েয আছে কি?
Answer
না, স্থানীয় ব্যাপারীদের সাথে প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিতে চুক্তি করার প্রচলনটি শরীয়তসম্মত নয়। কেননা এক্ষেত্রে স্থানীয় ব্যাপারীরা হল বিক্রয় প্রতিনিধি। অন্যদের হাস-মুরগি বিক্রির শ্রম প্রদানের বিনিময়ে পারিশ্রমিকের হকদার হয়। আর শ্রমচুক্তি সহীহ হওয়ার জন্য চুক্তির সময় শ্রমদাতার মজুরী সুনির্ধারিত হওয়া জরুরি। কিন্তু প্রশ্নোক্ত চুক্তিতে তাদের পারিশ্রমিক অনির্ধারিত থেকে যায়।
তাছাড়া মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের সাথে এভাবে চুক্তি করার কারণে তারা ভোক্তাদের থেকে অধিক লাভ নেওয়ার সুযোগ পেয়ে যায়। ফলে ক্রেতাদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যার দরুন বাজার প্রভাবিত হওয়ার পথ তৈরি হয়। তাই এ পদ্ধতি থেকে বিরত থাকতে হবে।
এক্ষেত্রে শরীয়তসম্মত পন্থা হল–
১. চুক্তির সময়ই স্থানীয় ব্যাপারীদের পারিশ্রমিক সুনির্ধারিত করে দেবে। সে মুরগিটি বিক্রি করে দিলে তাকে এত টাকা দেওয়া হবে। যেমন একটি মুরগির জন্য ৩০ টাকা সে পারিশ্রমিক পাবে। এক্ষেত্রে মুরগির বিক্রীত মূল্য পুরোটাই মালিকের হবে।
২. তাদের কাছে বিক্রি করে দেওয়ার জন্য না রেখে মুরগিগুলো সরাসরি তাদের কাছেই সুনির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করে দিয়ে আসবে এবং তা বাকিতেও হতে পারে। এরপর এটি পাইকারগণ তাদের নিজের পণ্য হিসেবে অন্যের কাছে বিক্রি করবে, এবং মূল মালিককে পূর্বচুক্তি অনুযায়ী তার প্রাপ্য মূল্য আদায় করে দেবে। অতিরিক্ত মূল্য পেলে সেটি তাদের নিজেদের লাভ বলে বিবেচিত হবে।
* >الفتاوى الخانية< ২/৩২৬ : رجل دفع إلى رجل ثوبا، وقال بعه بعشرة، فما زاد فهو بيني وبينك، قال أبو يوسف رحمه الله تعالى : إن باعه بعشرة أو لم يبعه، فلا أجر له، وإن تعنى في ذلك وتعب. ... والفتوى على قول أبي يوسف رحمه الله تعالى.
–মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ২০৭৭৬, ২০৭৭৭; উমদাতুল কারী ১২/৯৩; আযযাখিরাতুল বুরহানিয়া ১১/৪৩০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৩/১২৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৪১০