মুহাম্মাদ আমীর হুসাইন - তারাপাশা, কিশোরগঞ্জ

প্রশ্ন

আল্লাহ তাআলা হুযুরকে সিহ্হত, আফিয়াত ও দীর্ঘ নেক হায়াত দান করুন এবং হুযুরের ইল্মী খাযানা থেকে আমাদের বেশি বেশি উপকৃত হওয়ার তাওফীক দান করুন।

আমার জানার বিষয় হল-

ক. ميزان الصرف কিতাবে বর্ণিত ফেয়েলে মাযীর ছয় প্রকার হওয়া এবং এগুলোর ব্যবহার আরবের স্বীকৃত কোনো কিতাবে রয়েছে কি না?

খ. কুরআন-সুন্নাহ্য় এগুলোর ব্যবহার হয়েছে কি না?

গ. ثلاثي مجرد ব্যতীত অন্য বাবগুলোর اسم التفضيل -এর গঠন-পদ্ধতিতে বলা হয়- ‘মাসদার’-এর শুরুতে أشد বা এজাতীয় শব্দ বৃদ্ধি করে মাসদারকে تمييز হিসেবে আনা- এমন ব্যবহার কোনো কিতাবে আছে কি না?

ঘ. منشعب অংশে صرف صغير -এর মধ্যে রয়েছে- الأمر منه والنهي عنهআমার জানা মতে- الأمر শব্দটির صلة হিসেবে ب ব্যবহৃত হয়। এখানে منه -এর ব্যবহার সঠিক কি  না? যদি সঠিক হয়, তো এখানে ه যমীর-এর مرجع কী? আর النهي-এর মধ্যে منه বাদ দিয়ে عنه কেন ব্যবহার করা হল?

উত্তর

ক. খ. হাঁ, কুরআন-সুন্নাহ্য় ও সালাফের বাণীতে এসবের ব্যবহার আছে। কোনোটার  বেশি, কোনোটার কম।

নাম ও উপস্থাপনের পার্থক্য একটি স্বীকৃত বিষয়। অতএব উল্লেখিত হাকীকত যখন সামনে চলে আসল তখন আরবের কিতাব থেকে এর হাওয়ালা বের করার প্রয়োজন নেই।

الفاظ کے پیچوں میں الجھتے نہیں دانا

غواص کو مطلب ہے گہر سے کہ صدف سے

গ. কুরআনে কারীমেই আছে। সূরা নিসার ৮৪ নম্বর আয়াত তিলাওয়াত করুন। এই আয়াতের শেষে আছে-

وَ اللهُ اَشَدُّ بَاْسًا وَّ اَشَدُّ تَنْكِیْلًا.

ঘ. الأمر منهএখানে منالأمر’-এর সিলা নয়। বরং উহ্য শিবহে ফেলের সিলা। এর মাফহুম এই-

"الأمر المشتق منه أي من هذا المصدر كذا"

النهي عنهএখানে منه’- ও বলা যায়। কিন্তু এটাকে সরাসরি النهي -এর সিলা বানিয়ে পেশ করা হয়েছে। সেজন্য عنব্যবহার হয়েছে। এর মাফহুম যেন এমন-

"إذا أردت نهي أحد عن الفعل الذي هو مفهوم هذا المصدر فقل كذا".

শেয়ার লিংক

ছামীম বিন যুবায়ের - শহীদবাড়িয়া

প্রশ্ন

শ্রদ্ধাভাজন হযরত! আল্লাহ তাআলা আপনাকে সালামাত ও আফিয়াতের সাথে রাখুন। আমি শরহে বেকায়া জামাতের একজন ছাত্র। আমি সাধারণভাবে উর্দূ পড়তে পারি, লিখতে পারি না, বলতেও পারি না। উর্দূ কাওয়ায়েদ জানি না। উদূর্ ভাষায় দক্ষতা অর্জন করতে চাই। উর্দূ ভাষায় যোগ্যতা ও পারদর্শিতা অর্জনের জন্য আমি কী করতে পারি? কী কী কিতাব পড়তে পারি? একটি পূণার্ঙ্গ পাঠ্যসূচীদিলে খুব উপকৃত হব।

আরেকটি বিষয়, উদূর্ আদর্শ পাঠ শিখতে চাই, এক্ষেত্রে আমার করণীয় কী?

উত্তর

সম্ভবত আপনার মত তালিবে ইলমের জন্যই হযরত আদীব হুযুর দামাত বারাকাতুহুম-এর الطريق الى الارديہ তৈরি হয়েছে। এর দুই খণ্ড প্রস্তুত হয়ে মাশাআল্লাহ প্রকাশও হয়ে গেছে। সামনে হযরতের পক্ষ থেকে উর্দূ ভাষা শিক্ষা সংক্রান্ত খেদমতের ধারা চলমান থাকবে ইনশাআল্লাহ।

শেয়ার লিংক

এহসানুল হক - অষ্টগ্রাম, কিশোরগঞ্জ

প্রশ্ন

ক. ইমাম সুয়ূতী রাহ. আলখাসায়েসুল কুবরায় হাকীম তিরমিযীর বরাতে একটি হাদীস উল্লেখ করেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোনো ছায়া ছিল না। মোল্লা আলী কারী রাহ. শরহুশশিফায় বলেছেন, হাদীসটি নাওয়াদিরুল উসূলেআছে। হাদীসটি কি নাওয়াদিরুল উসূলে আছে? থাকলে কোন্ অধ্যায়ে আছে? হাদীসটির তাখরীজ ও হুকুমসহ জানিয়ে উপকৃত করবেন।

খ. ইনবুল জাওযী রাহ. আলওয়াফায় রাসূলের ছায়া ছিল না প্রসঙ্গে ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত যে হাদীসটি উল্লেখ করেছেন, এটি ইবনে আব্বাস সূত্রে মুতুনে হাদীসের কোন্ কিতাবে আছে? ইবনুল জাওযীর আলওয়াফাকি নিজ সনদে বর্ণিত, নাকি মুজাররাদ আনিস সনদ? দয়া করে জানিয়ে উপকৃত করবেন।

উত্তর

ক. নাওয়াদিরে এই রেওয়ায়েত আছে। তবে তার সনদে আবদুর রহমান ইবনে কায়েস নামক একজন বর্ণনাকারী আছে, যে হাদীস জাল করত। দেখুন, ‘এসব হাদীস নয়খ. ১, পৃ. ১৭০, প্রকাশক : মরকাযুদ দাওয়াহ আলইসলামিয়া ঢাকা।

খ. ইবনুল জাওযী রাহ. এটাকে সনদ ছাড়া উল্লেখ করেছেন। তাছাড়া এর মতনও আপত্তিকর।

শেয়ার লিংক

মুআয হাসান - হবিগঞ্জ

প্রশ্ন

কয়েকটি বিষয়ে হযরাতুল উসতায থেকে ইসতেফাদা করার বিনীত আবেদন পেশ করছি।

১. তাকলীদ ও মাযহাবের হাকীকত ও ইতিহাস নিয়ে সুন্দর ও নির্ভরযাগ্যে আলোচনা কোথা থেকে মুতালাআ করতে পারি?

২. তাকলীদের ভাগ করতে গিয়ে যে দুই প্রকারের কথা বলা হয়, সে ভাগ সম্পর্কে বিস্তারিত দালীলিক সুস্পষ্ট কিতাব (বা লেখা ও মাকালা) কোথায় পেতে পারি?

৩. আমরা কোন্ প্রকারের তাকলীদ করি?

আমি আমার এক উস্তাযে মুহতারাম থেকে কেবল এতটুকু শুনেছিলাম, আমরা শখছে (অর্থাৎ, আশখাছে) মাযহাবের তাকলীদ করি। শখছে ওয়াহেদের নয়। তো এ সম্পর্কে যদি হুজুর (দলীলসহ বা দলীলের আলোকে) কিছু হেদায়েত পেশ করতেন!

৪. শেষে আমি যে বিষয়টি বারবারই অনেকের মুখ থেকে শুনেছি, তা হল-

সাহাবার যুগে নাকি তাকলীদে শখছী ছিল না(?); বরং তাকলীদে মুতলাক ছিল। কিন্তু আমার যেটা জানা আছে তা হল, সাহাবা ও তাবেঈদের যুগে আমভাবে তাকলীদে মুতলাকের নযীরপাওয়া যায় না। বরং তারাও তাকলীদে শখছী-ই করতেন। বাকি তখনকার তাকলীদটা মাযহাবের শিরোনামে হত না। তাঁরা মাদরাসাতুল ফিকহ ফীল ইরাক (বা কুফা বা বসরা ইত্যাদি)র তাকলীদ করতেন, যেমন কুফায় আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-এর তাকলীদ করতেন। আর আমরা আশখাছে মাযহাবের তাকলীদ করে থাকি।

তো এটা যদি পরিপূর্ণ সঠিক হয় তাহলে এর প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারলে কথাটির উপর পূর্ণ ইতমিনান ও আরো বেশি আত্মিক প্রশান্তি অর্জন হত। জাযাকুমুল্লাহু খায়রান।

উত্তর

১. এ বিষয়ে এক-দেড় বছর আগে মাওলানা ইমদাদুল হক কুমিল্লায়ীর কিতাব প্রকাশিত হয়েছে। ভালো কিতাব। নাম মাযহাব ও তাকলীদ : একটি সহজ-সরল উপস্থাপন। প্রকাশক : দারুল মুসান্নিফীন, চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা।

২. এই দুই প্রকারের হাকীকত যদি স্পষ্ট হয়ে যায় তাহলে আর কী চান?

৩. আমরা তাকলীদে শখছী করি। এই অর্থে যে, আমরা একটি নির্দিষ্ট ফিকহী মাযহাবের তাকলীদ করি, যার নাম আলমাযহাবুল হানাফী। তবে হানাফী মাযহাব শুধু ইমাম আবু হানীফা রাহ.-এর ফতোয়া ও রায়ের সমষ্টি নয়; বরং এর দ্বারা উদ্দেশ্য ওই ফিকহী মাযহাব, যেটা ইমাম আবু হানীফা রাহ.-এর তত্ত্বাবধানে সংকলিত হয়েছে। এতে নবী-যুগ, সাহাবী-যুগ ও কিবারে তাবেয়ীনের যুগ থেকে চলে আসা ফিকহে মুতাওয়ারাসও অন্তভুর্ক্ত। আবার ইমাম আবু হানীফা রাহ., তাঁর ফকীহ শাগরিদগণ ও এই মাযহাবের অনুসারী বড় ফকীহগণের ইসতিম্বাতকৃত ফিকহুল হাওয়াদিস ওয়ান নাওয়াযিলও অন্তভুর্ক্ত।

আর এই কথা তো সর্বজনস্বীকৃত যে, কোনো আলেমের যাল্লাত (অর্থাৎ যেসব ভুল তার থেকে অনিচ্ছাকৃত হয়েছে, তবে সেগুলো ভুল হওয়াটা নিশ্চিত) কখনো মাযহাবের অংশ নয়।

৪. এটা ঠিক যে, খায়রুল কুরূনে তাকলীদে শখছীরই প্রচলন ছিল। এর দলীল আপনি ওই ঘটনাতেই পাবেন, যেটা খলীফা মানসুর আব্বাসী ও ইমাম মালেক রাহ.-এর মধ্যে ঘটেছিল। এ সংক্রান্ত রেওয়ায়েত আপনি হয়ত শায়েখ মুহাম্মাদ আওয়ামার আদাবুল ইখতিলাফ ফী মাসাইলিল ইলমি ওয়াদ্দীনকিতাবে পড়ে থাকবেন। আরো দেখুন ইমাম মুহাম্মাদের কিতাবুল আছলে ওয়াফক অধ্যায়ের সেই শানদার আলোচনা, যেটা এই কিতাবের খ. ১২ পৃ. ৯৯-১০২ -এ আছে। এতে ফিকহে হানাফীর তাকলীদে শখছীর আলোচনা আছে।

অবশ্য এই কথা ঠিক যে, ‘তাকলীদে শখছীবা মাদরাসায়ে হেজাযের তাকলীদ’ ‘মাদরাসায়ে ইরাকের তাকলীদএজাতীয় পরিভাষা তখন ছিল না। তবে এর হাকীকত পুরোপুরি বিদ্যমান ছিল।

মাযহাবের অনুসারীদের কেউই কেবল ব্যক্তি ইমামের তাকলীদ করেন না। এই বিষয়টি সমস্ত মাযহাবের রসমুল মুফতী ও উসূলুল ইফতার কিতাবাদি মুতালাআ করলে জানা যায়।

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ মুহসিন উদ্দীন - কালিগঞ্জ, ঝিনাইদহ

প্রশ্ন

আল্লাহ তাআলা সিহ্হাত ও আফিয়াতের সাথে হযরতের হায়াতে বরকত দান করুন এবং ইলমের মধ্যেও বরকত দান করুন।

হযরতের কাছে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানতে চাচ্ছি। দয়া করে জানালে উপকৃত হব ইনশাআল্লাহ।

ক. হানাফী ফকীহদের সংক্ষিপ্ত জীবনী সম্বলিত দু-একটি নির্ভরযোগ্য কিতাবের নাম এবং সেটি কোন্ মাকতাবা থেকে ছেপেছে।

খ.

الفتاوى الهندية، تبيين الحقائق، البحر الرائق، فتح القدير.

এই কিতাবগুলোর কোনো মুহাক্কাক নুসখা কোনো মাকতাবা থেকে ছেপেছে কি না? ছেপে থাকলে সেগুলো কোন্ মাকতাবার?

গ. আল্লাহর রহমতে আমরা হযরতের বেশ কয়েকটি মূল্যবান রচনা পেয়েছি। جزاك الله خيراএখন আমরা শায়েখ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ রাহমাতুল্লাহি আলাইহির জীবনীগ্রন্থ আরবী ভাষায় হযরতের হাতে কামনা করছি। আল্লাহ তাআলা হযরতকে জাযায়ে খায়ের দান করুন।

উত্তর

ক. সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত কিতাব তো আল্লামা আবুল হাসানাত আব্দুল হাই লখনবী (১৩০৪ হি.) রাহমাতুল্লাহি আলাইহি-এর-

الفوائد البهية في تراجم الحنفية.

কদীমী কুতুবখানা করাচির পুরনো সংস্করণটি সম্ভবত বেশি ভালো। এর কোনো মানসম্মত মুহাক্কাক নুসখা ছাপা হয়েছে কি না- আমার জানা নেই।

এই কিতাবের হাশিয়া-

التعليقات السنية على الفوائد البهية.

অনেক উপকারী। এটাও হযরত লখনবী কর্তৃক লিখিত। এটি الفوائد البهية -এর সঙ্গে ছাপা হয়েছে।

তুলনামূলক বড় কিতাবগুলোর মধ্যে মাহমুদ বিন সুলাইমান কাফাবী (৯৯০ হি.)-এর কিতাব

كتائب أعلام الأخيار من فقهاء مذهب النعمان المختار .

আছে। এটি মাকতাবাতুল ইরশাদ ইস্তাম্বুল থেকে চার খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে। এটি الفوائد البهية -এর  মৌলিক উৎসগ্রন্থ।

সংক্ষিপ্ত কিতাবগুলোর মধ্যে কাসেম ইবনে কুতলুবুগা (৮৭৯ হি.) রাহমাতুল্লাহি আলাইহি-এর কিতাব তাজুত তারাজিমআছে। এর মুহাক্কাক নুসখা দারুল কলম দামেস্ক থেকে প্রকাশিত হয়েছে।

খ. আমার কাছে এগুলোর পুরনো মিশরী সংস্করণই তুলনামূলক বেশি সহীহ ও নির্ভুল মনে হয়।

গ. আলহামদু লিল্লাহ

سيدي الشيخ كما رأيته.

শিরোনামে সংক্ষিপ্ত একটি পুস্তিকা তৈরি হয়েছে। কিন্তু তা ছাপার চিন্তা এখনো আসেনি। তবে এর বাংলা অনুবাদ হয়েছে। সেটা ইনশাল্লাহ কোনো সময়ে ছাপা হবে।

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ কেফায়েত উল্লাহ - চরমোনাই মাদরাসা

প্রশ্ন

বিসমিল্লাহির রাহমানির রহীম

আসসালামু আলাইকুম ওয়রাহমাতুল্লাহ। হযরত আপনার কাছে দুটি বিষয়ে জানতে চাই।

১. আমি আরবী ভাষা ও সাহিত্য শিখতে আগ্রহী। প্রাথমিক আরবী শেখার জন্য আমাদেরকে এসো আরবি শিখি প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড পড়ানো হয়। মিযান জামাতে দ্বিতীয় খণ্ড পড়ানো হয়। আমি এসো আরবী শিখি-এর সাথে সাথে আততামরীনুল কিতাবী-এর মাধ্যমে মেহনত চালিয়েছি। এরপর নিজস্বভাবে তৃতীয় খণ্ড পড়েছি এবং মোটামুটি যথাযথভাবে পড়ার চেষ্টা করেছি। এখন আলহামদু লিল্লাহ ছোট ছোট আয়াত-হাদীস বুঝতে পারি। সহজ আরবী শিশু-সাহিত্যের কিতাবাদিও বুঝে আসে। এরপর নাহবেমীরে এসে পড়ানো হল, রওযাতুল আদব। এ সময় আমার কাছে দুটি প্রশ্ন দাঁড়ায় : 

ক. এসো আরবী শিখির বর্ণনাশৈলী এবং উপস্থাপনা-পদ্ধতি থেকে অনুভূত হয় আরবী শুধু পড়ে পড়ে বুঝতে পারা নয়; বরং আরবীকে মুখের ভাষা এবং কলমের লেখার মাধ্যমরূপে গ্রহণ করতে হবে। এক কথায় আরবী ভাষায় বলা এবং লেখার যোগ্যতা অর্জন করা। কিন্তু রওযাতুল আদবে বলা এবং লেখার যোগ্যতাকে প্রাধান্য দেয়া হয়নি; বরং কুরআন-হাদীস পড়ে বুঝতে পারার বিষয়টিকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। যেমন এসো আরবী শিখির যে কয়টি দরস প্রতিটি দরস শেষ করার পর সে অনুপাতে বাক্য তৈরি করা, বাংলা থেকে আরবী করা অত্যন্ত সহজ, কিন্তু রওযাতুল আদবে এটা প্রায় অসম্ভব। সেখানে বাংলা থেকে আরবী করতে বলা হলে দুর্বোধ্য ছেলার এবং শব্দের মারপ্যাঁচে পড়েই সব সাঙ্গ প্রায়।

খ. শুনেছি, রওযাতুল আদব নাকি আরবী ভাষা শেখার জন্য নয়; বরং তারকীব শেখার জন্য। হুজুরের কাছে আবেদন, কিতাবটির আসল উদ্দেশ্য ও মাকসাদ কী এবং তা অর্জনের পদ্ধতি কী- জানিয়ে বাধিত করবেন।

২. প্রায়ই একটা কথা শোনা যায়- ‘নলেজ রাখতে হবেএজন্য নিয়মিত দৈনিক পত্র-পত্রিকা পড়া চাই। দেশ-বিদেশের খবর এবং দেশীয় হালচাল জানা চাই। কোথায় কী হচ্ছে তা জানা চাই। হুজুরের কাছে আবেদন, আকাবিরের দৃষ্টিতে ছাত্রদের জন্য পত্রিকা পাঠ কেমন? জানিয়ে বাধিত করবেন। আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন- আমীন।

উত্তর

১. ভাষা শেখার অনেক দিক রয়েছে। রওযাতুল আদব থেকে যে দিকটি নেয়ার সেটি নেবেন। উসতাযের দরস ও দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কিতাবটি পড়বেন; ইনশাআল্লাহ অনেক ফায়দা হবে। কোনো কোনো উসতায এই কিতাবকে নাহবেমীর ও মীযান-মুনশায়িব ও পাঞ্জেগাঞ্জের নিয়মকানুনগুলোর তামরীনের স্থান হিসেবে গ্রহণ করে থাকেন। আমার আব্বাজান রাহ. এই কিতাবকে গুরুত্ব দিতেন। আমার উস্তায মামাজান মাওলানা সাইফুল্লাহ ছাহেব দামাত বারাকাতুহুম আমাকে বলেছেন, ‘আমরা তোমার আব্বার কাছে রওযাতুল আদব পড়েছি; ফলে আমার নাহবেমীরও হল হয়ে গেছে। এই কিতাবে অনেক কালিমাতুল হিকমা (প্রজ্ঞাপূর্ণ বাণী)ও আছে। সেগুলো অনেক উপকারী।

الطريق إلى العربية যেহেতু অনেক চিন্তা-ভাবনা ও মেহনত-মুজাহাদার পর তৈরি হয়েছে এবং ক্রমাগত এর উপর মেহনত হতেই রয়েছে সেইসঙ্গে এর রচয়িতা শিক্ষাকারিকুলাম বিষয়ে তাজদীদী মাহারাত রাখেন সেহেতু এর উপকারিতা যেমন ব্যাপক তেমনি পূর্ণাঙ্গ। এর দ্বারা যেভাবে আরবী বলা ও লেখার স্বভাবজাত রুচি তৈরি হয়, আরবী বোঝার সঠিক যোগ্যতাও হয়। এই কিতাব কুরআন কারীম ও হাদীস শরীফ বোঝার প্রথম পর্যায়ের চাবিকাঠি হিসেবেই লেখা হয়েছে। অবশ্য এর তিন খণ্ডেরই পাঠ গ্রহণ মুসান্নিফের উসূল মোতাবেক হওয়া উচিত এবং আততামরীনুল কিতাবীসহ হওয়া উচিত।

২. তালিবে ইলমীর যামানায় অত্যন্ত একাগ্রতার সঙ্গে তলবে ইলমের কাজে লেগে থাকা উচিত। এ সময় পত্রিকা পড়া নয়; বরং এ থেকে দূরে থাকা জরুরি।

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবদুল ওহ্হাব - মাদরাসা এমদাদুল উলূম <br> লক্ষণদিয়া, সালথা, ফরিদপুর

প্রশ্ন

বাদ সালামে মাসনূন, আমরা প্রচলিত ভুলকিতাব থেকে জানতে পেরেছি যে-

اِنْ اَوْلِیَآؤُهٗۤ اِلَّا الْمُتَّقُوْنَ.

-এর তরজমা শুধু মুত্তাকীরাই হল আল্লাহর ওলীকরা ভুল। অথচ হাফেজ ইবনে কাছীর রাহ. তার তাফসীর গ্রন্থে উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে একপর্যায়ে উল্লেখ করেছেন-

وَقَالَ الْحَافِظُ أَبُو بَكْرِ بْنُ مَرْدُويه فِي تَفْسِيرِ هَذِهِ الْآيَةِ: حَدّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ أَحْمَدَ -هُوَ الطّبَرَانِيّ-حَدّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ إِلْيَاسَ بْنِ صَدَقَةَ الْمِصْرِيّ، حَدّثَنَا نُعَيْم بْنُ حَمّادٍ، حَدّثَنَا نُوحُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ الْأَنْصَارِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، رَضِيَ اللهُ عَنْهُ، قَالَ: سُئِلَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ مَنْ آلُكَ؟ قَالَ: كُلّ تَقِيٍّ، وَتَلَا رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ:

 اِنْ اَوْلِیَآؤُهٗۤ اِلَّا الْمُتَّقُوْنَ.

অতএব, হুজুরের নিকট আকুল আবেদন এই যে, উক্ত বিষয়টি পরিষ্কার করে দিবেন।

উত্তর

আপনি যে বর্ণনাটি উল্লেখ করেছেন তার সনদ দুর্বল। (فنعيم وشيخه تُكُلِّمَ فيهما)যদি এর সনদ সহীহও হয়, তবু এর দ্বারা এই কথা প্রমাণিত হয় না যে, আয়াতে যমীরের মারজে হল ইসমুল জালালাহ। কারণ আয়াতের তিলাওয়াত এ প্রেক্ষাপটে করা হয়েছে যে, ইসলামে সমস্ত কল্যাণের ভিত্তি আল্লাহ তাআলার প্রতি অন্তরে লজ্জা ও ভয় পোষণ করে তাকওয়ার যিন্দেগী গ্রহণ করার উপর। কোনো দ্বীনী দায়িত্ব পালনে যেমনিভাবে তাকওয়া শর্ত তেমনি সঠিক অর্থে আলে মুহাম্মাদহওয়ার জন্যও তাকওয়া শর্ত...।

তবে একথা স্পষ্ট যে, মসজিদে হারামের ওলী (অভিভাবক) হতে হলে যদি মুত্তাকী হওয়া শর্ত হয় তাহলে আল্লাহর ওলী (বন্ধু) হতে হলে অবশ্যই মুত্তাকী হতে হবে। ইরশাদ হয়েছে-

اَلَاۤ اِنَّ اَوْلِیَآءَ اللهِ لَا خَوْفٌ عَلَیْهِمْ وَ لَا هُمْ یَحْزَنُوْنَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ كَانُوْا یَتَّقُوْنَ.

স্মরণ রেখ, যারা আল্লাহর বন্ধু তাদের কোনও ভয় থাকবে না এবং তারা দুঃখিতও হবে না। তারা সেইসব লোক, যারা ঈমান এনেছে এবং তাকওয়া অবলম্বন করেছে। -সূরা ইউনুস (১০) : ৬২-৬৩

শেয়ার লিংক