একজন তালিবুল ইলম - ইফতা, প্রথম বর্ষ মিরপুর, ঢাকা

প্রশ্ন

গত জানুয়ারি ২০১২ আলকাউসারের ৪২ পৃষ্ঠায় ফাতাওয়ার কিতাবে একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে। আমরা তো আগে জানতাম যে, বাদায়েউস সানায়ে, ফাতহুল কাদীর, তাবয়ীনুল হাকায়েক ও ইমাম মুহাম্মাদ, তহাবী, জাসসাস রাহ.-এর কিতাবসমূহের গ্রহণযোগ্যতাও অনেক বেশি এবং ফাকাহাত তৈরির ক্ষেত্রেও বেশি উপযুক্ত।

এমনিভাবে শাখাগত মাসআলার দিক থেকে আলবাহরুর রায়েক, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ইত্যাদি কিতাব প্রসিদ্ধ এবং এগুলোর গ্রহণযোগ্যতাও কম নয়। এবং দলিলের আলোকেও উপরোক্ত কিতাবগুলো ভালো। তাহলে এই সকল কিতাব বাদ দিয়ে অন্য কিতাবের নির্বাচন করার কারণ জানতে ইচ্ছুক। এখানে কি অন্য কোনো দিক বিবেচনা করে তালিকা প্রস্ত্তত করা হয়েছে, নাকি বাস্তবে এই কিতাবগুলো থেকে ঐ কিতাবগুলো বেশি ভালো, কিন্তু আমাদের জানাটা ভুল? জানালে খুশি হব। এমনিভাবে আমরা জানি, উর্দু ফাতাওয়ার মধ্যে ইমদাদুল ফাতাওয়ার গ্রহণযোগ্যতা বেশি, কিন্তু ওটাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তাহলে আমাদের জানাটা কি ভুল? না অন্য কোনো কারণ আছে?

মওসূআতুল ফিকহিয়্যার গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু? এর কিছু বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করার দরখাস্ত করছি।

আল্লাহ তাআলা আপনার নেক হায়াতকে বাড়িয়ে দিন এবং আপনাকে সিহহত ও আফিয়তের সাথে রাখুন এবং ইলম-আমল, যুহদ ও তাকওয়ায় খুব বরকত দান করুন এবং আমাদেরকে আপনার থেকে খুব বেশি উপকৃত হওয়ার তাওফীক দান করুন। আমীন।


উত্তর

এই অধম সম্পর্কে আপনার দুআগুলো আল্লাহ তাআলা কবুল করুন এবং আপনাকে জাযায়ে খায়র দান করুন।

আপনি যদি উত্তরের পূর্বাপর লক্ষ্য করতেন তাহলে হয়ত এই প্রশ্ন সৃষ্টি হত না। সেখানে তো এই প্রশ্ন ছিল না যে, কোন কোন কিতাব দ্বারা তাফাক্কুহ অর্জন হয় আর কোন কোন কিতাব দ্বারা জুযইয়াতের জ্ঞান লাভ হয়। আবার সরাসরি মতন ও শরহ সম্পর্কেও প্রশ্ন ছিল না। প্রশ্ন ছিল, প্রশ্নকারীর বুঝতে সহজ হয় এমন কিছু ফতোয়ার কিতাব প্রশ্নকারী ক্রয় করতে চান।

রদ্দুল মুহতার ছাড়া অন্য সব কিতাবের ক্ষেত্রে সহজতার প্রতি লক্ষ্য রাখা হয়েছে। আর শায়খ ফুরফুরের তাহকীক ও টীকা সম্বলিত সংস্করণ হলে  রদ্দুল মুহতার থেকেও ইসতিফাদা অন্যান্য সংস্করণের তুলনায় সহজ। রদ্দুল মুহতার শুরূহের অন্তর্ভুক্ত হলেও তা ফতোয়ার এমন এক উৎসগ্রন্থ, যা থেকে এ যুগে কোনো হানাফী অমুখাপেক্ষী নয়। অথচ বাস্তবতা এই যে, দাওরায়ে হাদীসের তালাবা ফাতহুল কাদীর, তাবয়ীনুল হাকায়েক, শরহুল কানয, আলবাহরুর রায়েক অনেক সময় সংগ্রহ করলেও রদ্দুল মুহতারকে তাখাসসুসের সাথে খাছ মনে করে তার ধারেকাছেও যায় না। 

প্রশ্নের উদ্দেশ্যের প্রতি লক্ষ্য করে দেখুন তো এখানে এমন কোনো কিতাবের নাম দেওয়া হয়েছে কি যা মুনাসিব নয়?

চিন্তা করলে দেখা যাবে, প্রতিটি কিতাব উল্লেখ করার পেছনে কোনো না কোনো হেকমত রয়েছে, যেদিকে কখনো সংক্ষেপে ইঙ্গিতও করা হয়েছে।

ইসতিকসা ছাড়া কোনো কিছু উল্লেখ করার সময় কোনো একটিকে উল্লেখ না করার অর্থ কখনো এই নয় যে, তা থেকে বিমুখ থাকা হয়েছে। নাউযুবিল্লাহি তাআলা মিন যালিকা। এর একটি দৃষ্টান্ত এই যে, আপনি ইমদাদুল ফাতাওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন, কিন্তু ফকীহুন নফস হযরত মাওলানা রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী রাহ. (মৃত্যু : ১৩২৩ হি.)-এর ফতোয়া সংকলন-তালীফাতে রশীদিয়ার কথা উল্লেখ করেননি।

তারপরও আমরা আপনার পুরো প্রশ্নটি প্রকাশ করলাম। আশা করি, এতে তলাবায়ে কেরামের সামনে ঐসব কথাও এসে যাবে, যা জবাবে উল্লেখ করা হয়নি। ইনশাআল্লাহ এতেও ফায়েদা হবে। আল্লাহ তাআলা আপনাকে উত্তম বিনিময় দান করুন। আমীন।

আলমওসূআতুল ফিকহিয়্যাহ আলকুয়াইতিয়্যাহ সম্পর্কে এখন কিছু লিখলাম না। আল্লাহ তাআলা তাওফীক দিলে এ সম্পর্কে পরবর্তী কোনো প্রসঙ্গে কিছু লেখার ইচ্ছা আছে ইনশাআল্লাহ।

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ তালিব - কুমিল্লা

প্রশ্ন

আলমুতলাকু ইয়াজরী আলা ইতলাকিহীআলমুতলাকু ইয়ানছারিফু ইলাল ফারদিল কামিল এই কায়েদা দুটির বিধান কী? কোনটা কখন জারি হবে?


উত্তর

নূরুল আনোয়ার কিতাবেই বিষয়টির সুন্দর ব্যাখ্যা আছে। তা পাঠ করুন। এরপরও কিছু বোঝার থাকলে সুনির্দিষ্টভাবে লিখুন। ইনশাআল্লাহ হল করার চেষ্টা করব। 

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ শেখ আবু বকর বিন হারুন - জামিআ রাহমানিয়া আরাবিয়া

প্রশ্ন

বর্তমানে আমি জামাতে সানাভী আউয়ালে অধ্যয়নরত। দীর্ঘদিন যাবত তাকরার করার প্রতি আমার একটা অনিহা রয়ে গেছে। এছাড়া তাকরার দ্বারা আমার খুব একটা ফায়েদা হয় এমন নয়। বরং ঘণ্টায় সবক শোনা এবং জিজ্ঞাসা করা দ্বারা যতটুকু বুঝে আসে ততটুকুই। তাকরার দ্বারা বিশেষ কোনো ফায়েদা আমি অনুভব করি না। তবে যতটুকু বুঝে আসে তা অন্যকে বুঝাতে কোনো জড়তা বা সংশয় সৃষ্টি হয় না। এজন্য বর্তমানে আমি শুধু কঠিন বা একটু জটিল সবকগুলো তাকরার করছি এবং তাকরারের বাকি সময়টুকু আরবী ইনশা, বাংলা সাহিত্য ও ইংরেজি অনুশীলনের জন্য নির্ধারণ করে নিয়েছি। এতে ধীরে ধীরে উল্লেখিত বিষয়গুলোতে উন্নতি লাভ করছি এবং এতে কিতাব বুঝার ক্ষেত্রে তেমন কোনো প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে না। তো আমি কি এভাবেই মেহনত চালিয়ে যাব, না প্রতিটি কিতাব তাকরার করার পেছনে সময় ব্যয় করব। পরামর্শের মাধ্যমে দ্বীনী সহায়তা  প্রদান করলে কৃতজ্ঞ থাকব।


উত্তর

তাকরার করা ও শ্রবণ করা দু টোই উপকারী। বিশেষত তাকরার করার উপকারিতা তো খুবই স্পষ্ট। কোনো বিষয় সহজ ও সাধারণ শ্রোতার বোধগম্য করে উপস্থাপনের যোগ্যতা এমন এক গুণ, যাতে সামান্য উন্নতিও অনেক ভালো। এটা তো হল একটি ফায়েদা। এছাড়া চিন্তাশীলদের জন্য তাকরারের আরো ফায়েদাও আছে, যা এর চেয়েও বেশি।

তবে বিশেষ অবস্থায় এমন হতে পারে যে, আপনি কোনো কিতাবের তাকরারে অংশগ্রহণ করলেন আবার কোনোটিতে করলেন না। তবে এজন্য আপনার মাদরাসার উসূল ও নিযাম অনুসরণ অপরিহার্য। আর নিজ তালীমী মুরববীর সাথে পরামর্শ করা তো সর্বাবস্থায় আবশ্যক।

আল্লাহ তাআলা আপনার সহায় হোন। তাফাক্কুহ ফিদদীন, রূসুখ ফিল ইলম এবং তাকওয়া ও তহারাত নসীব করুন। আমীন। 

শেয়ার লিংক

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক - কামরাঙ্গীরচর, ঢাকা

প্রশ্ন

 ...।


উত্তর

আপনি নাম প্রকাশে ইচ্ছুক নয় তাই আপনার প্রশ্নটিও প্রকাশ করছি না।

প্রিয় ভাই! আপত্তির প্রবণতা ভালো নয়। কিছু বোঝার থাকলে আদবের সাথেও জিজ্ঞাসা করা যায়। আর যোগ্যতা থাকলে আদবের সাথে নকদও করা যায়, কিন্তু আপত্তি ও দোষ ধরার প্রবণতা কোনো অবস্থাতেই কাম্য নয়।

আমাকে মাফ করবেন, আমার মনে হচ্ছে, আপনার মধ্যে এই প্রবণতাটা আছে। এটা দূর করতে হবে। আল্লাহ আপনাকে তাওফীক দিন এবং কবুল করুন। আপত্তির স্বভাব দূর করে আল্লাহ তাআলা আপনাকে বুদ্ধি ও বিনয় দ্বারা গুণান্বিত করুন।

আপনি চেষ্টা করুন যেন উস্তাদের সাথে উনস ও ভাব পয়দা হয়। তাদের উপর আপনার কী হক্ব আছে সে চিন্তার পরিবর্তে আপনি তাঁদের কী হক্ব আদায় করছেন সে মুহাসাবা করুন।

আপনি চিঠিতে যে আপত্তিটি করেছেন এ ধরনের চিন্তাও তো উস্তাদদের হক্ব তালাফির শামিল। তাঁদের মুহাসাবা তাঁরাই করবেন। আর আপনি যে বিষয়টির উপর আপত্তি করেছেন তা আমাদের সময়েও-অথচ আমি তো এ যুগেরই মানুষ-উস্তাদদের ইহসান মনে করা হত। আপনি এটাকে তাঁদের শফকতও মনে করতে পারতেন।

আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে নিজের দোষ আর অন্যের গুণ, বিশেষত বড়দের গুণ দেখার তাওফীক দান করুন। আমীন।

আপনার উপর যখন তাদরীসী যিম্মাদারী আসবে তখন যেন আল্লাহ আপনার সাহায্য করেন এবং নিয়মানুবর্তিতা ও সময়ানুবর্তিতার তাওফীক দান করেন। আল্লাহ করুন, ঐ সময় যেন এই চিঠির কথা আপনার মনে পড়ে। আমীন ইয়া রাববাল আলামীন।

শেয়ার লিংক

আবদুল কাইয়ুম - ঢালকানগর, ঢাকা

প্রশ্ন

 ...।


উত্তর

আপনার ৭-৫-১১ ঈ. তারিখের চিঠিটি পেলাম। আল্লাহ তাআলা আপনাকে জাযায়ে খায়ের দান করুন এবং আপনার নেক জযবা কবুল করুন। মারকাযুদ দাওয়াহ সম্পর্কে আপনার সুধারণা আল্লাহ তাআলা সত্য করুন। আমীন।

আপনি জনসাধারণকে জিহাদ ও জঙ্গিবাদের পার্থক্য বোঝানোর চেষ্টা করতে বলেছেন। আমরা আপনার মশোয়ারা অনুযায়ী আমল করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তাআলা তাওফীক দান করুন। আমীন। 

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ ইবাদ - মিরপুর, ঢাকা

প্রশ্ন

আশা করি ভালো আছেন। আল্লাহ পাক আপনাকে চিরজীবন ভালো রাখুন। হুজুর! আমি তাখাসসুস ফিলফিকহের সালে আওয়ালের একজন ছাত্র। আমি ফন্নী মাহারাত হাসিল করতে চাই এবং এ ফন্নকে আমার গোটা জীবনের সাথীরূপে গ্রহণ করতে চাই। এই ফন্নকে আমি অর্জন করবই ইনশাআল্লাহ। তা যেভাবেই হোক এবং যতদিনেই হোক। আর এর জন্য যা কিছু করার প্রয়োজন আমি তা করতে প্রস্ত্তত। কিন্তু আমি তো বুঝি না এবং কিছুই জানি না যে, আমাকে কি করতে হবে? হুজুরের কাছে বিনীত দরখাস্ত, দয়া করে আমাকে রাহনুমায়ি করবেন। আমাকে আমার অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য কি করতে হবে? আমাদের এ ফাতরায় মুতালাআর কিতাব হল, ফাতাওয়া উছমানী (প্রথম খন্ড), রদ্দুল মুহতার (কিতাবুত তাহারাত), ইখতিলাফে উম্মত আওর সিরাতে মুসতাকীম, ইখতিলাফুল আইম্মাহ, আলমুখতার (প্রথম ও দ্বিতীয় খন্ড) এবং ফিকহু আহলিল ইরাক ওয়া হাদীসুহুম।

আর দরসের কিতাব হল, উসূলুল ইফতা, আদ্দুররুল মুখতার (ভূমিকা), আলইহকাম লিলকারাফী। কিতাবগুলো কীভাবে পড়লে ভালো হবে এবং এগুলো মুতালাআর সময় কোন বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে? এই মানহাজের বাইরে আমাকে আর কী কী কাজ করতে হবে? বিস্তারিত লিখলে এই গাফেলের জন্য সহজ হবে। আল্লাহ তাআলা আপনাকে ইলম, আমল, তাকওয়া, সিহহত ও আফিয়ত সব দিক দিয়ে সর্বোচ্চস্তরে পৌঁছে দিন। জাযাকুমুল্লাহু খাইরান ফিদদুনয়া ওয়াল আখিরাহ। আরো অনেক দুআ করতে ইচ্ছা হয়, কিন্তু কী দুআ করব জানি না।


উত্তর

তাখাসসুসের কোনো তালিবে ইলমের পক্ষ হতে এ ধরনের চিঠি সম্ভবত এটিই প্রথম। অথচ এ বিভাগে পত্র পাঠিয়ে কোনো কোনো মুদাররিসও বিভাগটিকে ধন্য করেছেন।

প্রথম কথা এই যে, এই উপমহাদেশের, বিশেষত আমাদের দেশে তাখাসসুস শিরোনামে যা কিছু হচ্ছে একে সফল অনুশীলন বলাও কঠিন। এ কারণে শুধু নামের দ্বারা প্রতারিত হবেন না।

দ্বিতীয় কথা এই যে, আপনি অতি ভারি প্রশ্ন করেছেন। এর জবাব অনেক দীর্ঘ। আপাতত এটুকু আরজ করছি যে, আপনি উসূলুল ইফতার ঐ নুসখা পাঠ করুন, যা হযরতুল উস্তাদের রচনা, উসূলুল ইফতা ওয়া আদাবুহু নামে প্রকাশিত হয়েছে। এটি মনোযোগের সাথে পাঠ করলে আপনার প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত উত্তর পেয়ে যাবেন। ফাতাওয়া উছমানী থেকে ফতোয়া লেখার ভঙ্গি শেখার চেষ্টা করুন। ইখতিলাফে উম্মত আওর সিরাতে মুস্তাকীমথেকে আদাবুল ইখতিলাফ বোঝার চেষ্টা করুন। মতভেদপূর্ণ মাসআলার গভীরে পৌঁছার এবং তা সহজ ভাষায় আলোচনা করার যোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করুন। আরো কিছু করতে চাইলে মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ও শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ইমাম আবু বকর জাসসাস থেকে দৈনিক দশ-পনের মিনিট করে মুতালাআ করুন।

সাথে সাথে ইহতিমামের সাথে দুআ করুন-

اللهم علمني الكتاب والحكمة وفقهني في الدين، اللهم اجعلني من الراسخين في العلم، اللهم إني أسألك علما نافعا ورزقا طيبا وعملا متقبلا وشفاء من كل داء، اللهم إني أعوذ بك من علم لا ينفع ومن قلب لا يخشع ومن نفس لا تشبع ومن دعوة لا يستجاب لها ونعوذ بك من هؤلاء الأربع رب زدني علما.

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ নেয়ামতুল্লাহ - হাটহাজারী, চট্টগ্রাম

প্রশ্ন

হুজুরের দীর্ঘায়ু ও নেক হায়াত কামনা করে বলছি, আপনার পরামর্শ ও লেখাগুলো আমার খুব ভালো লাগে। এজন্য নিম্নোক্ত বিষয়ে পরামর্শ চাচ্ছি।

ক) বর্তমানে ফুনূনাত পড়ার প্রয়োজন কতটুকু?


খ) উসূলে ফিকহ সহজে আয়ত্ব করার পদ্ধতি কী? এই বিষয়ে ইসতিদাদ হয়েছে কখন বুঝব? এবং এই বিষয়ে কোন কোন কিতাব বেশি উপকারী। পরিশেষে হুজুরের শিক্ষাজীবন জানিয়ে বাধিত করবেন।


উত্তর

ক) ফুনূনাত (ফুনূন)-এর তালিকা দিন। কোন কোন ফন্ন ও কোন কোন কিতাব সম্পর্কে জানতে চান লিখে পাঠালে ইনশাআল্লাহ জবাব লেখার চেষ্টা করব।

খ) আপনি উসূলুল ফিকহের কী কী কিতাব পড়েছেন লিখে পাঠান। ইনশাআল্লাহ মশোয়ারা দিব।

আমি নিজের জন্য দুআ করি, আল্লাহ তাআলা আমাকে যেন ইলমী জীবন দান করেন। এমন ইলম, যা আমার জন্য উপকারী হবে, আমার প্রক্ষে দলীল হবে, আমার বিপক্ষে দলীল হবে না। জাযাকুমুল্লাহ তাআলা। 

শেয়ার লিংক

ইবনে সাইর - ইসলামপুর রোড, নওগা

প্রশ্ন

 

আমি আপনার পরামর্শ অনুযায়ী উসূলে হাদীসের কিতাব নুখবাতুল ফিকারের (হাফেয ইবনে হাজার রাহ. (মৃত্যু : ৮৫২ হি.) সাথে তাদরীবুর রাবী (জালালুদ্দীন সুয়ূতী রাহ. (মৃত্যু : ৯১১ হি.) মুতালাআয় রেখেছি। আলহামদুলিল্লাহ, অনেক ইস্তিফাদা করছি। বারাকাল্লাহু ফী হায়াতিকা ওয়া ইলমিকা। ইবনে হাজার রাহ. তাঁর কিতাবে যে আততাকসীমুস সাবয়ী করেছেন সে সম্পর্কে হযরতের মন্তব্য জানতে চাই।

খ) সন্ত্রাস দমনে ইসলাম-এ বিষয়ে কোন আরবী কিতাব থেকে আমরা মাওয়াদ সংগ্রহ করতে পারি? বাংলা ভাষায় লিখিত কোনো নির্ভরযোগ্য কিতাব থাকলে তাও জানতে চাই। একটি ফিহরিস্ত জানালে চিরকৃতজ্ঞ থাকব।

 

 

উত্তর

ক) তাকসীমে সাবয়ী বিষয়ে আপনি তাওযীহুন নাযার-এর হাশিয়া এবং ছালাছু রাসাইল ফী মুসতালাহিল হাদীছ-এর হাশিয়াগুলো মুতালাআ করুন। আর সংক্ষিপ্ত চাইলে ফতহুল কাদীরের বাবুন নাওয়াফিল ও বাবুল ঈলা মুতালাআ করতে পারেন।

খ) ইচ্ছা করলে আপনি নিজেও এ বিষয়ে মাওয়াদ জমা করতে পারেন। জিহাদ, আমর বিল মারুফ, নাহি আনিল মুনকার, তালীম, তাযকিয়া, দাওয়াত ইত্যাদি বিষয়ে আয়াত-হাদীস ও সালাফের ঘটনাবলী অধ্যয়ন করুন। হুকুকুল ইবাদ ও হুকুকুল খালক সংক্রান্ত আয়াত-হাদীস জমা করুন। এগুলোই তো মাওয়াদ

তিলাওয়াতের সময় প্রাসঙ্গিক আয়াতগুলো নোট করুন এবং তাফসীরের কিতাব মুতালাআ করুন। এভাবে হাদীস-সীরাত ও হায়াতুস সাহাবার কোনো কিতাব মুতালাআয় রাখুন। ড. খলীল ইবনে ইবরাহীম মোল্লা খাতির রাহ.-এর এ দুটি কিতাবও পাঠ করতে পারেন-

الرحمة المهداة صلى الله عليه وسلم

رحمة النبي الكريم صلى الله عليه وسلم بالكفار


শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - বায়তুস সালাম মাদরাসা উত্তরা, ঢাকা

প্রশ্ন

আমি মাদানী নেসাবের চতুর্থ বর্ষের একজন ছাত্র। এ বছর দ্বিতীয় ছয় মাসে আমাদের নেসাব অনুযায়ী আমরা মুখতাসারুল মাআনী পড়ব। হেফযখানা থেকেই শুনে আসছি, এ কিতাব খুবই দুর্বোধ্য। এজন্য কিতাবটি কীভাবে পড়লে বেশি ফায়েদা পাব এবং কিতাবের উদ্দেশ্যও অর্জিত হবে সে সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দিলে খুব উপকৃত হব ইনশাআল্লাহ।

আরেকটি বিষয় হল, কোনো কোনো মাদরাসায় কিতাবটি থেকে শুধু মুকাদ্দামাই পড়ানো হয় (যেমন আমাদের এখানে)। আবার কোনো কোনো মাদরাসায় মুকাদ্দিমা রেখে মূল আলোচনা পড়ানো হয়। তাহলে আসলে কোনটি উচিত ও মুফীদ জানালে খুশি হব। আল্লাহ তাআলা আপনার খায়র করুন। আমীন।


উত্তর

মুখতাসারুল মাআনী খুব মজাদার কিতাব। উসলুব কিছুটা কঠিন হলেও কিছুদিন পর যখন ভাব হয়ে যাবে তখন শুধু আনন্দ আর আনন্দ। আপনি যা শুনেছেন তা সঠিক নয়। এর শরহ তাজরীদ ও শায়খুল হিন্দ রাহ.-এর হাশিয়া কিতাব হল্ করার জন্য যথেষ্ট। এর পর কোথাও কিছু বুঝে না আসলে অন্যান্য কিতাবের সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।

এই কিতাব সম্পর্কে মূল প্রশ্ন হচ্ছে, এর দ্বারা ফন্নী যওক পয়দা হয় কি না। এই প্রশ্নের সমাধানের জন্য মাআনী ও বায়ানের অনুশীলনযুক্ত কোনো কিতাব সাথে রাখতে পারেন। ইবনুল কাইয়্যিমের দিকে মানসূব-আলফাওয়াইদও মুতালাআ করতে পারেন।

আমি বারবার বলেছি, নেসাব কী হবে-এ বিষয়ে তালিবে ইলমের চিন্তা-ভাবনার প্রয়োজন নেই। এটা বড়দের ও দায়িত্বশীলদের কর্তব্য।

من حسن إسلام المرء تركه ما لا يعنيه

 

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ নেসার উদ্দীন - কামিল ১ম বর্ষ নোয়াখালি ইসলামিয়া কামিল মাদরাসা

প্রশ্ন

ক) আমি কামিল ১ম বর্ষের একজন ছাত্র। আমাদের নেসাবের একটি কিতাব তিরমিযী শরীফ। তিরমিযী শরীফের শরাহ হিসেবে দরসে তিরমিযী ও মাআরিফুস সুনান নিয়েছি। কিন্তু কোনোটিই পূর্ণ শরাহ হিসেবে বের হয়নি। তাই একটি পূর্ণাঙ্গ আরবী শরাহ হিসেবে তোহফাতুল আহওয়াযী নিয়েছি। কিন্তু তাতে বিভিন্ন স্থানে ইমাম আবু হানীফা রাহ.-এর মাযহাব সম্পর্কে বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করা হয়েছে। তাই তিরমিযী শরীফের কিছু পূর্ণাঙ্গ আরবী শরাহর নাম জানতে চাই, যা আমাদের মাযহাবের মুয়াফিক। শরাহ হিসেবে তোহফাতুল আহওয়াযী থেকে ফায়েদা হাসিলের প্রয়োজনীয় দিকগুলো জানানোর আরজ করছি।


খ) সুনানে আবু দাউদের শরাহ হিসেবে বাযলূল মাজহূদআওনুল মাবূদ সম্পর্কে আপনার মন্তব্য জানতে চাই। বর্তমানে যে সমস্ত কুতুবখানা থেকে কিতাব দুটি ছাপা হয়েছে তাদের কোনটি নির্ভরযোগ্য এবং সংগ্রহে রাখতে পারি। উপরোক্ত দুটি শরাহ ছাড়া আমাদের জন্য মুফীদ আরবী শরাহ আর কী আছে তাও জানানোর আবেদন রইল।


উত্তর

ক) মাআরিফুস সুনানের তাকমিলা লেখা হচ্ছে। ফয়সালাবাদের মাওলানা যাহিদ ছাহেব লিখছেন। এর এক খন্ড প্রকাশিত হয়েছে, মাশাআল্লাহ চকৎকার কিতাব।

দরসে তিরমিযী যদিও পুরা হয়নি, কিন্তু যদ্দুর জানি, মুফতী সায়ীদ আহমদ পালনপুরী দামাত বারাকাতুহুমের তুহফাতুল আলমায়ী পুরা হয়েছে। তা থেকে ইস্তিফাদার চেষ্টা করুন।

তোহফাতুল আহওয়াযী শরহ হিসেবে মাঝারি মানের মনে হয় তবে ইখতিলাফী মাসায়েলের ক্ষেত্রে আদব ও ইনসাফের সাথে আলোচনা করার তাওফীক সবার হয় না। এরপরও ইলমী মুনাকাশা ও বিতর্ক দেখে বিরক্ত হওয়া কিংবা কারো সম্পর্কে কুধারণা পোষণ করা ও নিন্দা-সমালোচনা করা ঠিক নয়। এসবের দ্বারা চিন্তা-ভাবনার সুযোগ হয়। আর ইখলাস থাকলে উভয় পক্ষের জন্য প্রান্তিকতা পরিহারের সুযোগ সৃষ্টি হয়।

 

খ) এ বিষয়ে আপনি বযলুল মাজহূদের শুরুতে শায়খ বানূরী রাহ. (মৃত্যু : ১৩৯৬ হি.) ও শায়খ আবুল হাসান আলী নাদাভী রাহ. (মৃত্যু : ১৩২০ হি.)-এর ভূমিকা মনোযোগের সাথে পাঠ করুন। আর সব ক্ষেত্রে তুলনার কী প্রয়োজন। যেখানে যে ফায়েদা পাওয়া যায় সেখান থেকে তা গ্রহণ করুন।

বাযলুল মাজহূদের সাহারানপুরের ছয় খন্ডের নুসখাটিও ভালো। বৈরুত থেকে তাকী উদ্দীন নদভী ছাহেবের তাহকীককৃত নুসখাও সম্ভবত মুনাসিব।

আউনুল মাবূদের প্রাচীন হিন্দুস্তানী নুসখা পাওয়া গেলে ভালো হত। এখন আমার জানা মতে, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ বৈরুতের নুসখা ভালোই হবে।

শুনেছি, ইবনে রাসলানের শরহটি সুনানে আবু দাউদের ভালো শরহ, যার একটি মাখতূতা (পান্ডুলিপি) মাযাহিরুল উলূম সাহারানপুরে সংরক্ষিত আছে। সম্প্রতি প্রকাশিতআলমানহালুল আযবুল মাওরূদ শরহটিও মুনাসিব হবে। খাত্তাবী রাহ. (মৃত্যু : ৩৮৮ হি.)-এর মাআলিমুস সুনান দ্বারা তাফাককুহের ক্ষেত্রে সহযোগিতা হয়। 

শেয়ার লিংক