মুহাম্মাদ - মুন্সিগঞ্জ

৩৭২৯. প্রশ্ন

আমাদের কিছু দোকান আছে। আমরা সেগুলো একবছর বা তার চেয়ে বেশি সময়ের জন্য ভাড়া দিয়ে থাকি। ভাড়া দেওয়ার সময় ভাড়াগ্রহীতা থেকে দোকানের সাইজ হিসাবে দুই-তিন লক্ষ টাকা সিকিউরিটি মানি নিয়ে থাকি। শুনেছি, এ টাকা নাকি ব্যবহার করা যায় না। কিন্তু কিছুদিন পূর্বে এক আলেমের কাছে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, সিকিউরিটির টাকা অগ্রিম ভাড়া না ধরেও ব্যবহার করা যায়। তাই জানতে চাই, সিকিউরিটি বাবৎ ভাড়াগ্রহীতা থেকে যে টাকা নেওয়া হয় তা ব্যবহারের কোনো বৈধ পদ্ধতি আছে কি? একজন পরামর্শ দিয়েছেন, সিকিউরিটি মানি না নিয়ে ভাড়াগ্রহীতা থেকে ঐ টাকা করয হিসাবে নিলে তা ব্যবহার করা যাবে। এ কাজ বৈধ হবে কি না? যদি বৈধ না হয় তাহলে অতীতে কেউ এ টাকা ব্যবহার করে থাকলে তার করণীয় কী? বিষয়গুলো দলীল-প্রমাণসহ জানিয়ে বাধিত করবেন।

 


উত্তর

ভাড়াগ্রহীতা থেকে ভাড়া চুক্তির সময় অগ্রিম কিছু অর্থ গ্রহণের দুটি পদ্ধতি প্রচলিত আছে।

১. ভাড়াদাতা জামানত হিসেবে ভাড়াগ্রহীতা থেকে একটি অংকের অর্থ গ্রহণ করে থাকে। ভাড়া-চুক্তি শেষে তা আবার ভাড়াগ্রহীতাকে ফেরত দিয়ে দিতে হয়। যাকে সিকিউরিটি মানি বলে। ২. ভাড়ার অগ্রিম হিসেবে ভাড়াগ্রহীতা থেকে এককালীন কিছু অর্থ গ্রহণ করা হয় এবং প্রতি মাসেই এর থেকে কিছু কিছু করে ভাড়া কাটা হয়। যাকে এ্যাডভান্স বলে।

সিকিউরিটি মানি তথা জামানত হিসেবে যে অর্থ ভাড়াদাতার নিকট জমা রাখা হয় তা বন্ধক হিসেবে থাকে। আর বন্ধকী বস্তু ব্যবহার করা জায়েয নয়। তা ব্যবহার করা সুদের অন্তর্ভুক্ত। মুহাম্মাদ ইবনে সীরীন রহ. থেকে বর্ণিত আছেতিনি বলেনআবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. এর নিকট এক ব্যক্তি এসে বললআমার নিকট এক ব্যক্তি একটি ঘোড়া বন্ধক রেখেছে। আমি এতে আরোহন করেছি। (এর কী হুকুম?) তখন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বললেনতুমি এর পিঠ থেকে (আরোহন করে) যে উপকৃত হয়েছ তা সুদের অন্তর্ভুক্ত। ( মুসান্নাফে আবদুর রাযযাকহাদীস ১৫০৭১)

সুতরাং ভাড়াদাতার জন্য সিকিউরিটি মানি ব্যবহার করা কোনোভাবেই জায়েয নয়। অতীতে এ টাকা ব্যবহার করে থাকলে এজন্য আল্লাহ তাআলার নিকট তওবা-ইসতিগফার করতে হবে এবং এ টাকা দ্বারা কোনো লাভ অর্জন করে থাকলে তা সদকা করে দিতে হবে।

আর এক্ষেত্রে সিকিউরিটির টাকা ভাড়াগ্রহীতা থেকে ঋণ হিসেবে নিলে তা ব্যবহার করা যাবে বলে যে কথা প্রশ্নে উল্লেখ করা হয়েছে তা ঠিক নয়। কেননা সিকিউরিটি মানির টাকাকে ঋণ ধরা হলে যেক্ষেত্রে সিকিউরিটি মানির কারণে ভাড়া কম নেওয়া হবে সেক্ষেত্রে ঋণের কারণে ভাড়া কম নেওয়া হয়েছে বলে ধর্তব্য হবে। আর ঋণের কারণে কোনো সুবিধা ভোগ করা সুদের অন্তর্ভুক্ত।

তাছাড়া এভাবে একটি চুক্তির সাথে আরেকটি চুক্তি শর্তযুক্ত করে কারবার করাও নাজায়েয। হাদীস শরীফে এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। তাই সিকিউরিটির টাকা ভাড়াগ্রহীতা থেকে করয হিসাবে নেওয়ারও কোনো সুযোগ নেই। বরং ভাড়াদাতা নিজে ব্যবহারের জন্য ভাড়াগ্রহীতা থেকে এককালীন কিছু অর্থ নিতে চাইলে তা এ্যাডভান্স তথা অগ্রিম ভাড়া হিসাবে নিতে পারবে। যা চুক্তি অনুযায়ী ভাড়া হিসেবে কর্তিত হবে।

উল্লেখ্যপ্রথম পদ্ধতি অর্থাৎ সিকিউরিটি মানি নিয়ে যেহেতু অনেকেই নাজায়েযভাবে তা ব্যবহার করে গুনাহে পড়েন তাই আমরা এক্ষেত্রে এ্যাডভান্স তথা অগ্রিম ভাড়ার পদ্ধতিটি গ্রহণ করার প্রতি উৎসাহিত করে থাকি। এতে করে দোকান বা বাড়ির মালিক একত্রে বেশি টাকাও নিতে পারে এবং তা শরীয়তের দৃষ্টিতে বৈধও বটে।

Ñমুসনাদে আহমদ, হাদীস ৬৬২৮; শরহুল মাজাল্লা, খালিদ আতাসী ৩/১৪৫, ১৯৬; মাবসূত, সারাখসী ১৪/৩৫, ২১/১০৮; কিতাবুল আসল ৩/১৬৩; মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়া, মাদ্দাহ : ৪৬৮

শেয়ার লিংক

এহতেশামুল হক - চন্দ্রঘোনা

৩৭৩০. প্রশ্ন

আমার এক ভাই সৌদী আরব থাকে। গত কুরবানীর সময় সে তার পক্ষ থেকে কুরবানী করার জন্য ৫০ হাজার টাকা পাঠায়। আমরা আমাদের কুরবানী প্রথম দিনেই করে ফেলি। কিন্তু  তার কুরবানীটা করেছি তৃতীয় দিনে। প্রশ্ন হল, আমাদের তৃতীয় দিনে তো সৌদী আরবে কুরবানীর সময় ছিল না। এ অবস্থায় আমার ভাইয়ের কুরবানী আদায় হয়েছে কি?

 


উত্তর

যেখানে কুরবানী দেওয়া হয় মূলত ঐ স্থানের সময়ই ধর্তব্য হয়। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বাংলাদেশে যেহেতু কুরবানীর সময়েই হয়েছে তাই ঐ কুরবানী সহীহ হয়েছে। অবশ্য যার পক্ষ থেকে কুরবানী করা হচ্ছে তার ওখানেও কুরবানীর সময় থাকে- এটা লক্ষ রেখে কুরবানী করা ভালো।

Ñফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৪৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৬; ফাতাওয়া শরইয়্যাহ ১১/১৫৯

শেয়ার লিংক

মাহদী হাসান - গাজীপুর

৩৭৩১. প্রশ্ন

আমার আব্বা যৌবনে একবার আর্থিক সংকটে পড়েছিলেন। তখন একজন দয়ার্দ্র ব্যক্তি আব্বাজানকে কিছু আর্থিক সহযোগিতা করেছিলেন। এখন সে ব্যক্তি দুনিয়াতে নেই। তার প্রতি কৃতজ্ঞতাস্বরূপ আব্বাজান প্রতি বছর তার নামে একটি কুরবানী দিয়ে থাকেন। প্রশ্ন হল, ঐ ব্যক্তির নামে আব্বাজান যে কুরবানী দিয়ে থাকেন তা থেকে আমরা খেতে পারবো, না পুরোটাই সদকা করে দিতে হবে?

 


উত্তর

ঐ মৃত ব্যক্তির সওয়াবের উদ্দেশ্যে আপনার পিতা যে কুরবানী করেন তা থেকে আপনার পিতা এবং আপনারা সকলেই খেতে পারবেন। এবং অন্যকেও দিতে পারবেন। কেননা অন্যের ইসালে সওয়াবের উদ্দেশ্যে নিজ অর্থ দ্বারা কুরবানী করলে এই গোশতের হুকুম সাধারণ কুরবানীর মতোই। তা নিজে খেতে পারবে এবং অন্যকে দিতে পারবে।

Ñফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩২২; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ৩/২০১

শেয়ার লিংক

ইমরুল কায়েস - দিনাজপুর

৩৭৩২. প্রশ্ন

আমার আম্মার বয়স সত্তরের ঊর্ধ্বে। গত দুমাস আগে তিনি আমাকে অসিয়ত করেছিলেন, তিনি মারা গেলে তার নামে ছয় কাঠা জমি গ্রামের মাদরাসায় ওয়াকফ করতে। কিন্তু কিছুদিন আগে আমার ছোট বোন একটি বিপদে পড়ে, যা সারতে অনেক টাকার প্রয়োজন। এখন আম্মা চাচ্ছেন, সেই ছয় কাঠা জমির দুই কাঠা বিক্রি করে টাকাটা বোনকে দিতে। জানতে চাই, তার জন্য ঐ জমি বিক্রি করা জায়েয হবে কি না?

 


উত্তর

কেউ কোনো ওসিয়ত করলে তা কার্যকর হয় ঐ ব্যক্তির মৃত্যুর পর। সুতরাং জীবদ্দশায় সে চাইলে তার কৃত ওসিয়ত বাতিল করতে পারে। অতএব প্রশ্নোক্ত অবস্থায় আপনার আম্মার জন্য জমির ঐ অংশ বিক্রি করে আপনার বোনকে টাকা দেওয়া জায়েয হবে। 

Ñমুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৩১৪৪৯; বাদায়েউস সানায়ে ৬/৪৯৩; হেদায়া, ফাতহুল কাদীর ৯/৩৬৪; রদ্দুল মুখতার ৬/৬৫৮; মাবসূত, সারাখসী ২৭/১৬২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৬/৯২

শেয়ার লিংক

মুহিব্বুল্লাহ - নীলফামারী

৩৭৩৩. প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় কিছু লোক নিম্নোক্ত হাদীসটির ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে। তাই জনাবের সমীপে আকুল আবেদন যে, নিম্নোক্ত হাদীসটি তাহকীক করে তা আমলযোগ্য কি না তা জানানোর জন্য সুমর্জি কামনা করছি। হাদীসটি হল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী রা.কে বলেছেন, হে আলী! প্রত্যেক রাতে পাঁচ কাজ করে ঘুমাও। যথা : ১. চার হাজার দিনার সদকা করে ঘুমাও ২. এক খতম কুরআন পড়ে ঘুমাও ৩. জান্নাতের মূল্য আদায় করে ঘুমাও। ৪. দুজনের মাঝে বিবাদ মিটিয়ে ঘুমাও ও ৫. একটি হজ্ব আদায় করে ঘুমাও। আলী রা. বললেন, এটা তো অসম্ভব। কীভাবে আমি তা আদায় করব? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, চার বার সূরা ফাতিহা পড়ে ঘুমাও তাহলে চার হাজার দিনার সদকার সওয়াব পাবে। তিন মর্তবা সূরা ইখলাস পড়ে ঘুমাও তাহলে একবার কুরআন খতম করার সওয়াব পাবে। তিন বার দুরূদ পড়ে ঘুমাও তাহলে জান্নাতের মূল্য আদায় হয়ে যাবে। দশবার ইস্তেগফার পড়ে ঘুমাও তাহলে দুজনের বিবাদ মিটানোর সওয়াব পাবে। চারবার কালিমায়ে তামজীদ পড়ে ঘুমাও তাহলে একটি হজ্বের সওয়াব পাবে। হযরত আলী রা. বলেন, আমি প্রত্যহ রাতে এ আমল করে ঘুমাব।

 

 


উত্তর

প্রশ্নোক্ত বর্ণনাটি ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। হাদীসের নির্ভরযোগ্য কোনো কিতাবে উক্ত বর্ণনা নেই। এ ধরনের জাল ও ভিত্তিহীন কথা বর্ণনা করা এবং মানুষের মাঝে তা প্রচার করা মারাত্মক গুনাহ। আর রাসূলের হাদীস হিসেবে প্রচার করার গুনাহ তো আরো ভয়াবহ। হাদীস শরীফে এসেছেরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,নিঃসন্দেহে আমার উপর মিথ্যারোপ করা (এর ভয়াবহতা) অন্যের উপর মিথ্যারোপ করার মতো নয়। যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত আমার উপর মিথ্যারোপ করল সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামকে বানিয়ে নেয়। Ñসহীহ বুখারীহাদীস ১২২৯

তাই মুসলমানের কর্তব্য হলএ ধরনের বর্ণনা প্রচার করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকা এবং আল্লাহ তাআলার দরবারে তওবা-ইস্তিগফার করা।

প্রকাশ থাকে যেসূরা ফাতিহাসূরা ইখলাসদরূদইস্তেগফার ও কালিমার বিভিন্ন ফযীলত সহীহ হাদীস দ্বার প্রমাণিত আছে। সেসব ফযীলতসমূহই মানুষের মাঝে প্রচার করা কর্তব্য।

Ñফাতাওয়া লাজনায়ে দায়েমা ৩৭৮৯১; শায়েখ সালেহ আল উসাইমিন

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ ইউসুফ - বরিশাল

৩৭৩৪. প্রশ্ন

পুরুষের জন্য অলঙ্কার ব্যবহারের হুকুম কী? তারা কি যে কোনো ধাতবের অলঙ্কার এবং যে কোনো ধাতবের আংটি ব্যবহার করতে পারবে? মহিলারা কী সোনা-রূপা, তামা-পিতল, কাঁচ-হীরা এবং ইমিটেশনের আংটি ব্যবহার করতে পারবে? দয়া করে জানাবেন।

 

 


উত্তর

পুরুষের জন্য সকল প্রকার অলঙ্কার নিষিদ্ধ। আর আংটির মধ্যে কেবলমাত্র রূপার আংটি ব্যবহার করা জায়েয আছে। তবে তা এই শর্তে যেরূপার পরিমাণে এক মিসকালের চেয়ে কম অর্থাৎ সাড়ে চার মাশার চেয়ে কম হতে হবে। গ্রামের হিসাবে এক মিসকালের পরিমাণ হল ৪.৩৭৪ গ্রাম। রূপা ছাড়া অন্য কোনো ধাতব বা বস্তুর আংটি ব্যবহার করা পুরুষের জন্য নিষেধ। হাদীস শরীফে এসেছেআবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. বলেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে স্বর্ণের আংটি পরিহিত দেখে তার থেকে তিনি মুখ ফিরিয়ে নিলেন। লোকটি দেখে তা খুলে ফেলল। এরপর সে লোহার আংটি বানাল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনএটা তো আরো মন্দ,এটা জাহান্নামীদের অলঙ্কার। তখন ঐ ব্যক্তি তা খুলে ফেলল এবং একটি রূপার আংটি বানাল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন নিরব থাকলেন।Ñমুসনাদে আহমদহাদীস : ৬৫১৮

সুনানে আবু দাউদের এক বর্ণনায় আছেএক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি তবে কিসের আংটি বানাবতিনি বললেনরূপার আংটি বানাও। তবে এক মিসকাল পূর্ণ করো না।

আর মহিলাদের জন্যও লোহাতামা ও পিতলের আংটি ব্যবহার করা নিষেধ। এসব ধাতবের আংটি ব্যতীত তাদের জন্য সোনা-রূপার আংটি ব্যবহার করা জায়েয। তদ্রƒপ পাথরহীরামাটিপুতিকাঁচ ও ইমিটেশনের আংটিও তারা ব্যবহার করতে পারবে। আর আংটি ছাড়া অন্যান্য অলঙ্কারের ক্ষেত্রে তারা যে কোনো ধাতব বা বস্তু ব্যবহার করতে পারবে।

Ñমুআত্তা ইমাম মুহাম্মাদ ৩/৩৭৬; কিতাবুল আসার ২/৭২৬; ফাতাওয়া কাযী খান ৩/৪১৩; হেদায়া ৪/৪৪১; ইমদাদুল আহকাম ৪/৩৫৮ ফাতাওয়া রহীমিয়া ১০/১৫৮

শেয়ার লিংক

আলী মুর্তজা - ছাতক, সুনামগঞ্জ

৩৭৩৫. প্রশ্ন

 

মসজিদের ভেতর টিভি, চ্যানেলযুক্ত মোবাইল দিয়ে ক্রিকেট খেলা দেখা ও খরব শোনা কি জায়েয বা সওয়াবের কাজ? নাকি জঘণ্যতম অপরাধের কাজ? যদি অপরাধ হয়ে থাকে তবে অপরাধীর করণীয় কী?

খ) যদি কেউ মসজিদের ভেতরে মাল্টিমিডিয়া মোবাইলে খেলা, খবর শোনা বা দেখা জায়েয বলেন তাহলে তার এ কথা কি সঠিক?

 

 

 

 

উত্তর

মসজিদ আল্লাহ তাআলার ঘর। এটি ইবাদত-বন্দেগীনামাযকুরআন তিলাওয়াতযিকির-আযকারের স্থান। খেলাধূলার স্থান নয়। মসজিদের আদাব ও সম্মান রক্ষা করা জরুরি। মসজিদের ভেতরে মোবাইল স্ক্রীনে ক্রিকেটফুটবল ইত্যাদি খেলা দেখা গুনাহর কাজ। মোবাইলের স্ক্রীনে খেলা দেখা আর টিভি স্ক্রীনে খেলা দেখার গুনাহ সমান। সর্ম্পূণ নাজায়েয। বর্তমানে টিভি ও মোবাইলে ক্রিকেট বা ফুটবল ইত্যাদি যে খেলা সম্প্রচার করা হয় এতে বহু গুনাহ ও শরীয়তবিরোধী কর্মকা- রয়েছে। মসজিদের বাইরেও কোনো মুসলমানের জন্য এগুলো দেখা বৈধ নয়। আর মসজিদে দেখা তো আরো মারাত্মক গুনাহ। আর  মসজিদে টিভি দেখা কতটা জঘন্য কাজ তা তো বলার অপেক্ষা রাখে না। 

প্রকাশ থাকে যেমসজিদ এমন এক পবিত্রতম জায়গাযেখানে দুনিয়াবী অনেক বৈধ কাজও নিষিদ্ধ হয়ে যায়। যেমনব্যবসা-বাণিজ্যক্রয়-বিক্রয় ইত্যাদি। 

অনুরূপ মসজিদের বাইরে বৈধ দুনিয়াবী গল্প-গুজব ও আলাপচারিতা নাজায়েয নয়। কিন্তু মসজিদের ভেতরে গল্প-গুজবকারীর প্রতি কঠোর ধমকি এসেছে।

তাই যেখানে সাধারণ অবস্থার বৈধ কাজকর্মই নিষিদ্ধ সেখানে ক্রিকেট খেলা দেখা যাতে একাধিক গুনাহর কাজ রয়েছে তা কত বড় অন্যায় ও গুনাহর কাজ হবে তা সহজেই অনুমেয়। তাই কেউ মসজিদে খেলা দেখে থাকলে তার কর্তব্য হলআল্লাহ তাআলার নিকট খাঁটি মনে তওবা করা এবং ভবিষ্যতে এমন অন্যায় ও গুনাহর কাজ থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকা।

আর কোনো ব্যক্তি যদি বাস্তবেই মোবাইল স্ক্রীনে এ ধরনের খেলা দেখাকে জায়েয বলে থাকেন তবে তার এ বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়।

 

 

শেয়ার লিংক