যিলকদ ১৪৩৭   ||   আগস্ট ২০১৬

আমরা শোকরগুযার ও বিনয়ী তালেবে ইলম ইহ

মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম

 

[তাখাসসুসের তালেবে ইলমদের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত বয়ান]

وَ الَّذِیْنَ یُؤْتُوْنَ مَاۤ اٰتَوْا وَّ قُلُوْبُهُمْ وَجِلَةٌ اَنَّهُمْ اِلٰی رَبِّهِمْ رٰجِعُوْنَ  . 

এবং যারা যে-কোন কাজই করে, তা করার সময় তাদের অন্তর এ ভয়ে ভীত থাকে যে, তাদেরকে নিজ প্রতিপালকের কাছে ফিরে যেতে হবে।-সূরা মুমিনূন (২৩) : ৬০ 

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বান্দাকে সর্বক্ষণ হাজারো নিআমতের ভেতরে ডুবিয়ে রাখেন। এ সম্পর্কে সবারই স্পষ্ট ধারণা আছে। একেকটা নিআমত এমন, কোনো বান্দার পক্ষেই তার যথাযথ শোকর আদায় সম্ভব নয়। এর মধ্যে কিছু কিছু নিআমত এমন, যেগুলো আল্লাহ তাআলার কিছু বাছাইকৃত বান্দাই লাভ করে থাকে। সকলে তা আশাও করে না। আর যারা আশা করে তাদেরও সকলে পায় না। ইলমে দ্বীনের নিআমত এরকমই একটা। সকলে আশা করে না। আশা করে না এই জন্য যে, সকলে এটার মূল্য বুঝে না।

আমাকে যখন মাদরাসায় আনা হয় তখন আমার চাচা যবরদস্তি আমাকে এনেছেন। আমাকে রাতে এশার পরে তার ঘরে এনে খাবার খাওয়ালেন। তারপর বললেন, বাবা! এখন কথা দিয়ে তারপর উঠতে হবে যে, মাদরাসায় পড়বে। তখন কথা দিতে আমার যে কী কষ্ট হয়েছিলো?! অনেক্ষণ গাই-গুই করার পরে শেষ পর্যন্ত কথা দিয়েছি, মনে হচ্ছিলো যে, আমাকে কড়াত দিয়ে চিড়ে ফেলা হচ্ছে, এত কষ্ট হচ্ছিল। যবরদস্তি আল্লাহ আমাকে নিয়ে এসেছেন। আল্লাহ তাআলা চাচাকে লাগিয়ে দিয়েছেন। আমার প্রতি চাচার যে ইহসান, কী দিয়ে আমি তার বদলা দেবো? আল্লাহ তাআলা কবরে তাঁকে কিয়ামত পর্যন্ত শান্তিতে রাখুন এবং তাঁর জন্য জান্নাতুল ফিরদাউসের ফায়সালা করুন। আমীন।

তো আমি চাইনি। একেতো সেই বুঝও ছিলো না তখন, ফাইভ পড়ার পরে সিক্সে ভর্তি হয়েছি কেবল। বুঝও তখন ছিলো না, আর বুঝ হলেও তো তখন এই বুঝ হতো না! ইলমে দ্বীনের বুঝ!! এটা কী পড়া, এই পড়ার মূল্য তখন বুঝে আসার কথা না! সারা জগৎই যেখানে বুঝে না! হিসাব করলে কয়জন হবে যারা এর মূল্য বুঝে বুঝে, এর গুরুত্ব বুঝে বুঝে তা শেখার আশা করে। এমন কয়জন পাওয়া যাবে? এরপর যাদের আশা আছে তাদেরও সবার নসীব হয় না। এমন তো অনেককেই দেখা যায় যে, আশা করে কিন্তু তারপরেও নসীব হয় না।

তারপরে আবার শেখার জায়গাটা যদি মুমতায হয়? তাহলে অনেকে আশা করে, কিন্তু সবার ভাগ্যে তা থাকে না। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের যাকে যাকে এখানে নিয়ে এসেছেন তাদের প্রতি এটা যে আল্লাহ তাআলার কত বড় মেহেরবানী, এটা তারা কতটুকু বুঝবে? এর জন্য জীবনভর শোকরগুযার হয়ে থাকা উচিত। আল্লাহ তাআলা নিআমত দেন শোকরগুযারি করার জন্যই। নিআমতের কদর যার বুঝে আসে সে শোকরগুযারি করে। নিআমতের কদর বুঝার ক্ষেত্রে আমাদের অনেক গলতি হয়ে যায়!

আল্লাহ তাআলা নিআমত দেন পরীক্ষা করার জন্য لِیَبْلُوَكُمْ اَیُّكُمْ اَحْسَنُ عَمَلًاতা না করে যদি নিআমতকে নিজের কৃতিত্ব মনে করি বা নিজের কামাই, স্বউপার্জিত মনে করি, إنما أوتيته على علم عندي এই যদি হয়ে যায়, তাহলে এই নিআমতটাই আমার জন্য দুর্ভোগের কারণ হয়ে যাবে। আমাদের অনেকের এই ভুলটা হয়ে যায়। এই জায়গায় এসে আমরা আহলে দুনিয়ার মত হয়ে যাই। যাদের টাকা-পয়সা আছে তারা এটাকে নিজেদের অর্জন মনে করে। গাড়ী-বাড়ী থাকলে অন্যদের উপর বাহাদুরী করে। তার দামী গাড়ী, সে কম দামের গাড়ীর মালিকের উপর বাহাদুরী করে যে, তার চেয়ে আমার গাড়ীটা দামী। আর আহলে ইলমও যদি এরকম মনে করে?

আমরা যারা এখানে দাখেলার সুযোগ পেয়েছি, আমরা যদি মনে করি, তার চেয়ে আমি ভালো জায়গায় ভর্তি হয়েছি। এটা যদি আমার বাহাদুরীর কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে তো সবই শেষ। ভর্তি হওয়ার চেয়ে না হওয়াই ভালো ছিলো। শুনেছিলাম শেখ সাদী রাহ.-এর কথা। তিনি বাবাকে বলেছিলেন, বাবা! আমরা তাহাজ্জুদ পড়ছি আর ঐ লোকগুলো ঘুমিয়ে আছে। ওরাও যদি তাহাজ্জুদ পড়তো কত ভালো ছিলো! বাবা বলেছিলেন, বাবা! তুমি যদি ঘুমিয়ে থাকতে তাহলেই বরং ভালো ছিলো।

ছোট সময়ে শুনতাম, শুনতাম বলতে দূর থেকে নয়, সরাসরিই শুনতাম, দেশের এক মাদরাসার কিুছ ছাত্ররা আমাদেরকে পাত্তা দিত না। বলতো, কী পড়ো তোমরা, এর চেয়ে অমুক মাদরাসার বারান্দায় ঘোরাও অনেক ভালো।

ঐ সময় ঢাকার এক মাদরাসার খুব সুনাম ছিল। জোয়ার ছিল। ছাত্ররা জামিয়াবলত। আর জামিয়ার ছাত্রদের আলাদা শান! অনেকের জামিয়া বলতে কেমন যেন ভাব মনে হতো।

আমাদের সময়ে একটা সংগঠনের মত ছিলো। যারা এই সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলো তাদের অনেকে এর বাইরের লোকদেরকে পাত্তা দিতো নাএমনকি কখনও এমনও হতো, বাইরের আসাতিযায়ে কেরামকেও পাত্তা দিত না। এমনিতে জিনিসটা খুব ভালো ছিলো। যারা এর সাথে জড়িত হয়েছিলো তারা পড়াশোনায় খুব মনোযোগী হয়েছিলো। তালীম ও তারবিয়াতের দিকে খুব গুরুত্ব দেওয়া হতো। কিন্তু তালীমের সঙ্গে তরবিয়াতটাকে যথাযথ মানায় নেওয়া হতো না। যে কারণে অনেক সমস্যাও হয়েছিলো। পরবর্তীতে আমি তো সরে আসি এবং যে সব সমস্যা সৃস্টি হয়েছিলো সেগুলো দূর করার জন্য অনেক মেহনত করতে হয়েছিলো। যাক, সে আরেক কাহিনী, তার মানে নিআমতকে যথাযথ দৃষ্টিকোণ থেকে গ্রহণ করা হয়নি। এটাকে গ্রহণ করা হয়েছে আহলে দুনিয়ার মত। এটা যে আমার প্রতি আল্লাহ তাআলার অনেক বড় ইহসান, এই বিষয়টা যেহেন থেকে উধাও হয়ে যায়। আর সে ইহসানের দাবি হলো শোকরগুযার হয়ে থাকা। বিনয়ী হয়ে থাকা যে, আমি তো আহ্ল ছিলাম না। আল্লাহ তাআলা মেহেরবানী করে সুযোগ দিয়েছেন। এই দৃষ্টিতে যদি নেওয়া হয় তাহলে কখনোই এ ভাবটা আসবে না।

আমার চাচা খুব সমঝদার মানুষ ছিলেন। সেকালে হয়তো ফাইভ-সিক্সেই পড়েছিলেন। এর বেশি পড়ার কথা না। কিন্তু অনেক দ্বীনী মাসআলাও তার দ্বারা আমার হল হয়েছে। তিনি বলতেন, দেখো ভাতিজা! এক মন ইলমের জন্য দশ মন হিল্ম দরকার। আমাদের গ্রামের ভাষায় হেলেমমানে- তাহাম্মুল থাকা চাই, হজম করার শক্তি থাকা চাই। ইলম শিখে যদি হজম করতে না পারো তাহলে তুমি নিজেও মাহরুম হবে আর জনগণও তোমার থেকে কোনো ফায়দা পাবে না। হজম শক্তি থাকতে হবে। বদহজম যেন না হয়ে যায়।

তো আল্লাহ তাআলা একান্তভাবেই মেহেরবানী করে আমাদেরকে এখানে সুযোগ দিয়েছেন। কোনো অবস্থাতেই যেন ভাব না আসে। এবং এর বাইরে যত মাদারিস আছে তাদের প্রতি কখনোই যেন তাওহীনের নযর না আসে। সবচেয়ে বড় কথা, যেসব মাদরাসায় আমি পড়েছি, যে মকতবে আমি পড়েছি, যে আসাতিযায়ে কেরামের কাছে আমি পড়েছি, কখনোই যেন তাদের প্রতি এহানতের নযর না আসে। বেআদবী যেন যেহনানও না হয়ে যায়। প্রকাশ্যে তো নয়ই। মনে মনেও যেন কখনো কোনো বেআদবী না হয়ে যায়। অনেক সময় আমরা বলে বসি, “ইলম কী জিনিস, এতোদিনে তো বুঝে আসেনি, এখনই না বুঝলাম।” ‘এখন বুঝলামএইটুকু না বললে ঠিক ছিলো। এতদিন বুঝিনি; এখনো বুঝিনি ইলম কী জিনিস। অন্ধকারেই তো পড়ে থাকলাম। কীই-বা শিখলাম! কীই-বা এখন হাসিল করতে পারলাম!!

কিন্তু এতদিন ইলম কী জিনিস বুঝিনি, এখন বুঝলাম’, তার মানে, ‘এখন আমি একটা পজিশনে আসলাম, এতদিন আমি যাদের কাছে পড়েছি তারা আমাকে অন্ধকারে রেখে দিয়েছে, তাদের কাছ থেকে আমার কিছুই হাসিল হয়নি, অথচ তাদের কাছে থাকারই তো ফলাফল যে, আল্লাহ তাআলা আমাকে এখানে নিয়ে এসেছেন। তারই নতীজা। তাদের কাছে যদি থাকা না হতো তাহলে হয়তো এখানেও সুযোগ পাওয়া যেতো না, কাজেই তাদের শোকর আদায় করতে হবে। তারা কিছু জানত না, এ সমস্ত কিতাবের হদিস তাদের ছিলো না, তারা আমাদের মাঝে মুতালাআর যওক সৃষ্টি করতে পারেননি। এই জাতীয় ভাব ও ধারণা কখনোই যেন না আসে। এটা তো নাশোকরী, কুফরানে নিআমত।

আমার কোনো কোনো ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করি, কোথায় আছো? কী করো? তখন বলে, হুজুর একটা ছোট মাদরাসায় আছি। আমি তখন বলি, তুমি যেখানেই আছো, ঐ মাদরাসাকে ছোট বলার এখতিয়ার তোমাকে কে দিলো? অথচ সে এটা খারাপ দৃষ্টিতে বলেনি। সে বলেছে গায়ে-গতরে ছোট। জামাত ছোট। ঘর ছোট। ছাত্র সংখ্যা কম- এদিকে লক্ষ্য করে। কিন্তু তারপরেও আমার একদম পছন্দ হয় না, কোন মাদরাসাকে ছোট- এই লফয দ্বারা তাবীর করা। কোনো মাদরাসাই ছোট নয়। আমাদের মাকসাদ যদি হয়ে থাকে আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি, রিযায়ে এলাহী, তাহলে আর কোনো মকতব ছোট নয়, কোনো কিছুই ছোট নয়। যদি মাকছাদ এটা না হয় তাহলে এই মাদরাসাও তো কিছুই নয়। মাকসাদ যদি আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি না হয় তাহলে এই মাদারাসা এবং এখানে ভর্তি হওয়াটাও কিছু নয়। যেটাকে সে ছোট মাদরাসা বলে বলছে,  ছোট দ্বারা তাবীর করছে; সেই মাদরাসা যে কত বড় কাজ করছে এটা সে চিন্তা করে না। এরই তো ফসল যে, এখন আমি এখানে সুযোগ পেলাম। এখানে যারা যারা আছে এদেরকে তো বড়শি দিয়ে তারা শিকার করেছে, ঐ মাদরাসাগুলো শিকার করেছে বড়শি বেঁধে বেঁধে। বাড়ীতে বাড়ীতে গিয়ে। বাবাকে বুঝিয়েছে, চাচাকে বুঝিয়েছে। আমার উস্তায হযরত মাওলানা সিকান্দার আলী রাহ. বটতলী জনাবওয়ালার ছাত্র। আল্লাহ তাআলা দুজনকেই জান্নাতের আলী মাকাম দান করুন। আমীন। তো তিনি বাড়ীতে বাড়ীতে যেতেন  আর বুঝাতেন। আমার আব্বাকে কত বুঝিয়েছেন! আমার আব্বার একটা ঝোঁক ছিলো আলিয়া মাদরাসার দিকে। আমার আব্বাকে কত বুঝিয়েছেন। এরকম বাড়ীতে বাড়ীতে গিয়ে বুঝিয়েছেন। তাঁর মাদরাসা নাহবেমীর পর্যন্ত ছিল। কিন্তু তাঁর কারণে আমাদের গ্রামে, আশেপাশের কত গ্রামে কওমী মাদরাসার আলেম-উলামা তৈরী হচ্ছে। এটা তাঁর মেহনতের ফসল। তাহলে ঐ মাদরাসাগুলো জাল, জাল দিয়ে শিকার করা হয়। বড়শি দ্বারা শিকার করা হয় এবং এরপরে তারা আস্তে আস্তে পড়তে পড়তে এই সকল মাদরাসায় এসে পড়ছে। এখন আমি এখানে এসে ফিকহ পড়ছি, হাদীস পড়ছি, আর আমার ঐ সমস্ত আসাতিযায়ে কেরাম, তাঁরা ঐ রকম মুতালাআর যাওক রাখতেন না, কিতাবের খবর রাখতেন না, তাদের কী ইলম ছিলো, তার কাছে পড়ে কী শিখেছি- এরকম যদি এখন ভাবি, তাহলে এটা কত বড় কুফরানে নিআমত হবে?

খোলাসা কথা এই, নিআমতের কদর বুঝি এবং নিজেকে না আহ্ল মনে করি। আল্লাহ তাআলাই একান্ত মেহেরবানী করে আমাকে এখানে নিয়ে এসেছেন। আমার কাজ হবে এর শোকরগুযারী করা। নিজের যবান ও নিজের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সবকিছুর দ্বারা বিনয়ী হয়ে থাকা। যদি এটা হতে পারি, শোকরগুযার হতে পারি, বিনয়ী হতে পারি, ইনশাআল্লাহ আমি যাই হাসিল করি, যাই আমার হাসিল হয় এর দ্বারা আমারও ফায়দা হবে, উম্মতেরও ফায়দা হবে।

একটা কথা মনে রাখতে হবে-  অহংকারীকে কেউ পছন্দ করে না। অহংকারী নিজেকে নিজে পছন্দ করে। জগৎ তাকে পছন্দ করে না। হযরত তাকী উসমানী দামাত বারাকাতুহুম বলেছেন, বা অন্য কারো হাওয়ালায় বলেছেন, অহংকারী ব্যক্তি হলো পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়ানো ব্যক্তির মত। পাহাড়ের চূড়ায় যে দাঁড়ানো থাকে তার দৃষ্টিতে সবাই ছোট। নীচে তাকায় আর সাবইকে দেখে ছোট ছোট। সে একা নীচে যারা আছে সবাইকে ছোট মনে করছে। আর নীচের যত মানুষ আছে সবাই তাকে ছোট দেখছে। তাহলে সে একা সবাইকে ছোট মনে করছে আর সকলে তাকে ছোট মনে করছে। তাহলে অহংকার করে তার ফায়দা এই হয়েছে যে, জগতের সবার কাছে সে ক্ষুদ্র হয়ে গেছে। আর এই ক্ষুদ্রের কাছে কে আসবে? এই ক্ষুদ্রের কথায় কী ওজন থাকবে? এর আযমত তো তার অন্তরে থাকবে না, এই জন্য যে অহংকারী হয় সে নিজেও বঞ্চিত হয়, আর সে যা কিছু হাসিল করে, তা থেকে উম্মত কোনো ফায়দা পায় না।

আমরা যদি নিজের জন্য এবং আল্লাহর মাখলুকাতের জন্য নাফিহতে চাই তাহলে নিজের মধ্যে বিনয় ও তাওয়াযুয়ের গুণ অর্জন করতে হবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে তাওফীক দান করুন।

وآخر دعوانا أن الحمد لله رب العالمين 

 

ধারণ ও লিখন : আনাস বিন সাদ

২৩/১০/১৪৩৭ হি.

 

 

 

 

advertisement