যিলকদ ১৪৩৬   ||   সেপ্টেম্বর ২০১৫

বড়দের মুখে বড়দের বেড়ে ওঠার কাহিনী : হাকীমুল উম্মত হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রাহ.-১১

 

আমি একজন তালিবুল ইলম

হাকীমুল উম্মত হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রাহ. বলেন, “আমি তো একজন তালিবুল ইলম। আমার নিকট কুরআন-হাদীসের কথাই জিজ্ঞাসা করা উচিত। আমি তো কুরআন-হাদীসের সাদাসিদা কথাই জানি।

উলামায়ে কেরামের প্রয়োজনীয়তা 

হযরত থানভী রাহ. বলতেন, উম্মতের জন্য উলামায়ে কেরামের প্রয়োজনীতাই সবচেয়ে বেশি। তিনি বলতেন, তাঁদের (উলামায়ে কেরামের) অস্তিত্বের উপরই দ্বীনের ভিত্তি। তাঁদের মাধ্যমেই দ্বীনের ইন্তেজাম (সুশৃংখল ব্যবস্থপনা) কায়েম থাকে। এমনটি না হলে, কেউ দ্বীনের বিধি-বিধান এবং সীমারেখাও জানতে পারতো না। 

বিনিময়ও নয়, বিনিময়ের আকৃতিতে হাদিয়াও নয়

হাকীমুল উম্মত হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রাহ. ওয়াজ করে কখনো কোনো প্রকার বিনিময় গ্রহণ করতেন না। এমন কি হাদিয়ার ক্ষেত্রেও যদি বিনিময়ের আকৃতি প্রকাশ পেতো, তাহলে সে হাদিয়াও গ্রহণ করতেন না।

একবার কানপুরে নবাব সিদ্দীক হাসান খান ছাহেবের কন্যা সুফিয়া বেগম হযরত থানভী রাহ.-কে ওয়াজের জন্য দাওয়াত করলেন। ওয়াজ শেষ হওয়ার পর বড় অংকের টাকা হযরতের খেদমতে পেশ করলেন। হযরত থানভী রাহ. গ্রহণ করতে পরিষ্কারভাবে অস্বীকৃতি জানালেন। তখন তিনি বললেন, “এটা বিনিময় নয়।হযরত থানভী রাহ. বললেন, পদ্ধতিটা তো বিনিময়েরই মতো। পরবর্তীতে হাদিয়া দেওয়ার সামর্থ্য না থাকলে, কেউ আর ওয়ায করানোর সাহস করবে না। এরপর সুফিয়া বেগম খানা খাওয়ার অনুরোধ করলে হযরত বললেন, আমার বাসায় পাঠিয়ে দিবেন। যাতে এতেও বিনিময়ের সন্দেহ না হয়। কারণ আমি এখন অন্য আরেকজনের মেহমান।

খানা বাসায় পাঠাতে বলাটাও  কেবল এ ভদ্র মহিলার খাতিরেই ছিলো। কারণ তাঁর ইখলাস সম্পর্কে হযরত রাহ. তাঁর পূর্বের আচরণেই অবগত হয়েছিলেন। (আশরাফুস সাওয়ানেহ ১ম খণ্ড ৬৪ পৃষ্ঠা)

ফরমায়েশী (অর্ডারী) ওয়াজ করতে পারি না

হাকীমুল উম্মত হযরত থানভী রাহ. কখনো কারো নির্দেশিত বিষয়ে ওয়াজ করতেন না। ওয়াজ করার সময় আল্লাহ্ পাকের পক্ষ হতে যে বিষয় মনে আসতো সেটাই বয়ান করতেন।

একবার এক লোক বললো, হযরত! ওয়াজে একটু ঢোল বাজানেওয়ালাদের খবর নিয়েন। হযরত থানভী রাহ. বললেন, “আমি কারো সমালোচনা করে কথা বলি না। এটা আমার অভ্যাস নয়। আমার যা বুঝে আসবে, তাই বয়ান করবো।

হযরত থানভী রাহ. আরো বলতেন, ওয়াজে সাধারণ মানুষের কল্যাণ ছাড়া অন্য কিছু উদ্দেশ্য হওয়া ঠিক নয়। ফরমায়েশী (অর্ডারী) বিষয় সাধারণত বিশেষ উদ্দেশ্যে হয়ে থাকে। ফলে ওয়াজের প্রতিক্রিয়াও খারাপই হয়ে থাকে। (আশরাফুল সাওয়ানেহ, ১ম খণ্ড, ৬৫ পৃষ্ঠা) 

 

 

 

advertisement