শাবান-রমযান ১৪৩৬   ||   জুন-জুলাই ২০১৫

একটি মারাত্মক ভুল চিন্তা : হারাম মাল ভক্ষণ বলতে কি শুধু হারাম মাল দ্বারা পানাহার বুঝায়

কিছু ভাইকে বলতে শোনা যায়, তার উপার্জনের মধ্যে হালাল-হারাম উভয় প্রকার উপার্জন আছে, কিন্তু সে নিজের ও পরিবারের খাওয়া-দাওয়ার খরচ কেবলমাত্র হালাল উপার্জন থেকে করে আর হারাম টাকা বাসা ভাড়া, পোশাক-পরিচ্ছদ ও অন্যান্য কাজে ব্যয় করে। এবং এতে সে সন্তুষ্ট। (নাউযু বিল্লাহি মিন যালিক)

তার ধারণা হল, হারাম মাল ভক্ষণ করা অর্থ শুধু হারাম মাল খাওয়া অর্থাৎ খাদ্যদ্রব্য হারাম মাল দ্বারা ক্রয় করা। বাসাভাড়া, বাহন, পরিধেয় বস্ত্র ইত্যাদি যদি হারাম মালের হয় তাতে সমস্যা নেই।

হারাম মাল ভক্ষণ বলতে যে শুধু হারাম-মাল দ্বারা পানাহার বুঝায় না, বরং সবকিছুই অন্তর্ভুক্ত, একটি প্রসিদ্ধ হাদীস থেকে তা স্পষ্ট বুঝা যায়-

এক ব্যক্তি দীর্ঘ সফর করেছে। চুল উষ্ক খুষ্ক। সে আসমানের দিকে হাত উঠিয়ে হে আমার রব!... হে আমার রব!!... বলে আল্লাহর কাছে দুআ করছে, (মুসাফিরের দুআ আল্লাহ কবুল করেন, সে হিসেবে তার দুআও কবুল হওয়ার কথা। কিন্তু তা হচ্ছে না। এর কারণ হিসেবে নবীজী বলেন,) কীভাবে তার দুআ কবুল হবে? অথচ তার খাদ্য হারাম, তার পানীয় হারাম, তার পোশাক হারাম অর্থের...। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১০১৫; জামে তিরমিযী, হাদীস ২৯৮৯; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৮৩৪৮

এ হাদীসে তার দুআ কবুল না হওয়ার একটি কারণ বলা হচ্ছে, তার পোশাক হারাম অর্থের। এ থেকে বোঝা যায়, হারাম-ভক্ষণ শুধু হারাম মাল দ্বারা পানাহার বুঝায় না, বরং জীবন নির্বাহের সবকিছুকেই অন্তর্ভুক্ত করে। তাছাড়া শরীয়ত শুধু হারাম ভক্ষণকে নিষেধ করেননি বরং হারাম গ্রহণ করা এবং হারাম ব্যবহার করাকেও হারাম করেছে।

সুতরাং জীবন নির্বাহের যে কোনো অনুষঙ্গই হারাম থেকে মুক্ত হতে হবে। এমন নয় যে, পানাহার হবে হালাল মাল দ্বারা আর জীবনের অন্যান্য প্রয়োজন সারা হবে হারাম মাল দ্বারা। এটি চিন্তার একটি মারাত্মক ভুল। দ্বীনী সহীহ ইলমের অভাবে মানুষ হয়ত এমন মনে করে।

আল্লাহ সকলকে হারাম থেকে রক্ষা করুন, হালাল দ্বারা জীবন যাপনের তাওফীক দান করুন। দ্বীনী সহীহ ইলম হাসিল করার তাওফিক দিন। সকল প্রকার চিন্তার ভ্রান্তি থেকে রক্ষা করুন।

 


 

 

advertisement