রবিউল আউয়াল ১৪৩৬   ||   জানুয়ারি ২০১৫

ছোটদের প্রতি কোমল হব

আমাতুল্লাহ

আমার বড়দের কাছ থেকে আমি ভালো ব্যবহার প্রত্যাশা করি, আমার ছোটদের প্রতি কেন আমি তা করি না? আমি যদি আমার ছোটদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করি আমার বড়রাও আমার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করবেন।

আসলে এখন আমাদের একটা জিনিসই বেশি প্রয়োজন, তা হল প্রত্যেক ব্যক্তিকেই নববী আদর্শে গড়ে ওঠতে হবে। কারণ, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতিটি কাজই ছিল ভালাই এবং কল্যাণের প্রতীক। তাঁর কোনো কাজেই বিন্দুমাত্রও মন্দের প্রভাব ছিল না। সে হিসেবে ছোটদের প্রতিও তাঁর ব্যবহার ছিল অতুলনীয় ও সর্বোৎকৃষ্ট। নবীজী ছোটদের প্রতি যে অনুপম আচরণ দেখিয়ে গেছেন তার নযীর দ্বিতীয়টি নেই।

অধীনস্তদের প্রতি কেমন ছিল নবীজীর ব্যবহার তার অনুমান আনাস রা.-এর বক্তব্য থেকে পাওয়া যায়। হযরত আনাস রা. বলেন, আমি দশবছর নবীজীর খেদমত করেছি। কিন্তু তিনি কখনও আমাকে এ কথা বলেননি যে, এটা কেন করেছ এবং এটা কেন করনি।

হযরত আনাস রা. অল্পবয়স্ক ছিলেন। আট বছর বয়স থেকে নবীজীর খেদমত করেছেন। এতটুকুন বালকের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের ভুলত্রুটি হওয়া একান্তই স্বাভাবিক। কিন্তু নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনও তার কাছ থেকে কোনো কৈফিয়ত চাননি।

এই ছিল প্রিয় নবীর আখলাক। আর আজকে কীরূপ আমাদের ব্যবহার। আসলে শয়তানই আমাদেরকে কঠোরতার দিকে ধাবিত করে। সহজ পথ ছেড়ে কঠিন পথের দিকে উদ্বুদ্ধ করে। অথচ নবীজীর শিক্ষা হল, কোমলতা অবলম্বন কর। কঠোরতা পরিহার কর। বাস্তবেও দেখা যায় কোমলতায় যে ফায়দা হয়, কঠোরতার দ্বারা তা হয় না। বরং অনেক সহজ বিষয়ও আরও কঠিন হয়ে যায়। এটা বড়দের ক্ষেত্রে যেমন সত্য তেমনি ছোটদের ক্ষেত্রেও।

সুন্দর করে বুঝিয়ে বললে ছোটরা সব কথাই শোনে। আর ধমক দিয়ে কিছু বললে তারা আরও বেঁকে বসে। তবে বুঝিয়ে বলার জন্য কিছুটা ধৈর্যের প্রয়োজন। যা সব সময় আমাদের থাকে না। আমরা অধৈর্য হয়ে কঠোর ব্যবহার করে ফেলি। যার ফল হয় উল্টো। এজন্য সবসময় ধৈর্যকে সাথী করে নেওয়ার চেষ্টা করা উচিত। এটা তখনই সম্ভব হবে যখন প্রতিদানের দিকে আমাদের খেয়াল থাকবে। ধৈর্যের বিনিময় কী তা আল্লাহ তাআলাই বলে দিয়েছেন।

 إن الله مع الصابرين  নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন। আল্লাহ যার সাথে আছেন তার তো আর কোনো চিন্তা নেই। 

 

 

advertisement